মনে একটু সতেজ ভাব আনতে কিংবা মুখ জুড়ে মৃদু শীতলতার এক কোমল পরশ ছড়িয়ে দিতে মাঝে মাঝেই আমরা মেন্থল জাতীয় বিভিন্ন চকলেট খেয়ে থাকি। কিন্তু কেন এসব চকলেট খেলে এমন হয়? মেন্থলের উপস্থিতির জন্য যে এটা হয় তা নাহয় বুঝলাম, কিন্তু মেন্থল এমন কী-ই বা করে যার ফলে কৃত্রিম শীতলতার এ অনুভূতির উদ্রেক হয়?
এ ঘটনার জন্য দায়ী আসলে একটি প্রোটিন। মুখে শীতলতার জন্ম দিলেও প্রোটিনটির নাম কিন্তু মাথা গরম করে দেয়ার মতোই খটমটে- ট্রানজিয়েন্ট রিসেপ্টর পটেনশিয়াল ক্যাটায়ন চ্যানেল সাবফ্যামিলি এম মেম্বার ৮(Transient receptor potential cation channel subfamily M member 8, সংক্ষেপে TRPM8)। TRPM8 একটি আয়ন চ্যানেল প্রোটিন অর্থাৎ এটি সেল মেমব্রেনের (কোষঝিল্লী) ভেতর দিয়ে আয়নের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। একটি নির্দিষ্ট চাবি যেমন একটি নির্দিষ্ট তালা খুলতে পারে, তেমনই এ প্রোটিনকে সক্রিয় করতেও বিশেষ রাসায়নিক উদ্দীপকের দরকার। TRPM8 এর বেলায় এ উদ্দীপক হলো তাপমাত্রা। যখন তাপমাত্রা কমে যায়, তখন এর আকারও পরিবর্তন হয়ে যায়। ফলে স্নায়ু কোষে প্রবেশ করে ক্যালসিয়াম আয়ন। এ আয়নের চলাচলের কারণে এরপরই আমাদের মস্তিষ্কে সিগনাল চলে যায় যে, তাপমাত্রা কমে গেছে। ফলে আমরা শীতলতার অনুভূতি পেয়ে থাকি।
এখন আসা যাক মেন্থলের কথায়। তাপমাত্রার মতো মেন্থলও TRPM8-কে সক্রিয় করে। ফলে মুখ থেকে ব্রেনে সিগনাল চলে যায় বলেই আমাদের মুখ জুড়ে শীতলতার এক চমৎকার অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে। চকলেট যখন শেষ হয়ে যায় তখনও মুখে কিছু মেন্থল থেকে যায়। তখন পানি পান করলে কিংবা মুখে বাতাস টেনে নিলে নিউরনগুলো আবারো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ফলে আবারো মুখে ঠান্ডা লাগে আমাদের।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৭