গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন নিয়ে এত ঝামেলাই ছিলাম ব্লগে আস্তে পারি নাই । কিন্তু ফেইসবুকে এক রামছাগলের লেখা পড়লাম, ভাবছিলাম সময় পেলে উত্তর দিবো কিন্তু তার আগেই দেখি পোস্ট হাপিস হয়ে গেছে । এরপরেও অনলাইনে ঐ রামছাগলের লেখাটা পেলাম তাই ভাবলাম উত্তরটা দিয়ে দিই ।
অনিয়মের আরেকটি রূপ হলো আগে থেকেই চাকরিরতদের মধ্যে বৈষম্য। কতদূর করেছেন জানি না, কিন্তু যদি করে থাকেনও মূলত এজন্যই আমরা তাঁকে সমর্থন করি। আন্দোলনরতদের থেকেই যতদূর শুনেছি, তিনি জামাতী শিক্ষকের বয়স বাড়াতে গড়িমসি করেছেন কিংবা কন্সালটেন্সীতে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি করেছেন। তিনি জামাতপন্থী যে শিক্ষকরা বাইরে পড়তে যাবার জন্য ছুটির আবেদন করেছেন, তাদের কে ছুটি দেন নি বা দিতে চান নি; যাতে তাদের কে বাইরে যেতে হলে বুয়েট ছেড়েই যেতে হয়। জোর গলায় বলছি, জামাতীদের কে এভাবে বঞ্চিত করাটাকে আমরা সমর্থন করি। আমাদের পক্ষে জামাতীদের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলন করা সম্ভব নয়।
পাঠক খেয়াল করেন লাইনগুলো । এটা হচ্ছে একটা সূক্ষ চাল মামা বাহিনীর । এত দিন ধরে তারা পাবলিক রুটি হালুয়ার কাহিনী শুনিয়ে টান্তে পারে নাই । তাই নতুন ভাবে টানার একটা অপপ্রয়াস ।
এই রামছাগল এই লাইনগুলর মাধ্যমে ২ টা খেলা খেলল।
১। বুয়েট শিক্ষকদের জামাতি আখ্যায়িত করা।
২। যারা নৈতিকতার প্রশ্নে এই আন্দোলঙ্কে সাপোর্ট করছিল তাদের মিসগাইডেড করা।
বুয়েট সিস্টেম বড়ই অমানবিক । এই সিস্টমের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট প্রজাতিকে বেশি প্রেফার বা কাঊকে কম প্রেফার করা হয়নি। বুয়েট সিস্টেম বিষয়ক একটা কাল্পনিক উদাহারণ দিই ।
ধরুণ একজন তালেবান যে লেখা-পড়ায় খুব দক্ষ তার ইচ্ছা হল বুয়েটে পড়ার । সে যথারীতি অনলাইনে ফরেন কোটায় আবেদন করল । ধরে নিলাম সকল ক্রায়টেরিয়া সে ফুলফিল করে পরীক্ষা দেবার চান্স পেল । সে ভর্তি পরীক্ষায় যথারীতি উতরে গেল। এরপর সে প্রতিটা একাডেমিক পরীক্ষায় যথারীতি ভাল রেসাল্ট করল এবং একাডেমিক রেসাল্ট এর উপর ভিত্তি করে সে তার ডিপার্টমেন্টে ১ম,২য় এবং ৩য় যে কোন একটা স্থান অধিকার করল। বুয়েট রীতি অনুসারে সে ঐ বিভাগের শিক্ষক হতে বাধ্য যদি তার ইচ্ছা হয়। আমাদের রীতি হল প্রতি বিভাগের ১ম,২য় ,৩য় কে টিচার হিসেবে নিয়োগ দেয়া । এখন কেঊ তালেবান বলে যদি তাকে তাকে শিক্ষক হতে বাধা দেয় তার পরিশ্রম আর মেধার প্রতি কি তাহলে অবিচার করা হবে না ?
এরপর আসি ঐ রামছাগলের এই কথার আরেকটা দিকে । “চাকরির মেয়াদ না বাড়ানো”এর মাধ্যমে সে ভিসি তথাপি নিজেকে ছাগু বিরোধী এবং মুক্তিযুধের চেতনয়ায় বিশ্বাসী বলে তুলে ধরার চেষ্টা করল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কখন বলে গিয়েছিল নিজের অক্ষমতাকে ঢাকার জন্য অন্যের মেধাকে এভাবে ইগ্নোর করতে । বুয়েটের প্রতিটা শিক্ষককের এই ধরণের ছুটি পাওয়ার নৈতিক অধিকার আছে ।
তাহলে এদের (মেধাবী ছাগু) থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন উপায় নেই । অবশ্যই আছে এবং তা হল পড় । তুমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী বলে যদি না পড়ে বাইক নিয়ে শুধু ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াও তাহলে তোমার পাছায় একটা লাথি দেয়া দরকার বঙ্গবন্ধু আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এভাবে কলঙ্কিত করার জন্য।
আর এত কিছুর পড়েও যাদের মনে হবে তথাকথিত জামাতিদের এভাবে বঞ্চিত করা ঠিক তারা মনে রাখবেন আপ্নারা জামাতিদের হাতে নিজেদের লাথি মারার আরেকটা অস্ত্র তুলে দিলেন এবং একি ঘটনা বংগবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশবাসীদের ক্ষেত্রেয়ো ঘটতে পারে। সিস্টেমকে নিজের মত চলতে দেয়া ঊচিত তথাকথিত দেশপ্রেম দেখাতে গিয়ে যাতে উল্টো নিজেদের কোন ক্ষতি না হয়।
[এই সুবিধাপ্রাপ্ত ছাত্রটির নাম মোকাম্মেল হোসাইন।
> সে পানিকৌশল বিভাগের ’০৬ ব্যাচের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।
> তার বাবা বরিশাল জামায়াতে ইসলামী’র একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা।
> বুয়েটে তার এডভাইজর হচ্ছেন ডঃ আতাউর রহমান, কোষাধ্যক্ষ, বুয়েট শিক্ষক সমিতি।
> ডঃ আতাউর রহমান ব্যক্তিগত জীবনে একাত্তরের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গ্রেফতার মুক্তিযুদ্ধকালীন আলবদর বাহিনীর কমাণ্ডার ও পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেম আলী’র ভাগ্নে।
এই রামছাগ্লের লেখা পড়ে আরেকটা বুঝলাম হাসিনা আপার কথা ১০০% ঠিক। ছাত্রলীগের মধ্যে জামাতি ঢুকে গেছে এবং সেই জামাতিকে অনৈতিক সুবিধা দিয়েছে বংগবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ভিসি স্যার। ।জামাত জামাতকে যেখানে সুযোগ দেয় নাই সেখানে তিনি দিলেন।পদত্যাগের এর থেকে বড় কারণ আর হতে পারে না]
২। চিন্তা করলাম আমাদের এই দাবি মানতে কেন এই অবস্থা করছে সরকার । যারা জাবির কথা ধরে ষড়যন্ত্র তত্তব খুজছে তাদের বলি জাবিতে আন্দোলনরতদের একটা বড় বাঁশ দেয়ার সুযোগ ছিল তাদের যা নির্বাচনের মাধ্যনে ওপেনলি দিয়ে দেয়াও হয়েছে । কিন্তু আমাদের ইউনিতে যেহেতু নির্বাচনের কোন সুযোগ নাই তাই পাব্লিক্লি বাঁশ দেয়ারও কোন সুযোগ নাই । তাই এই মনোবল দুর্ব্লকরণ তথা সময় ক্ষেপণ ।
আরো একটা কারণ হল এই ধরণের হার্ডকোর পা চাটা লোকের অভাব । বাল করে অনেকে কিন্তু এই ধরণের হার্ডকোর লোক হয়ত আর নাই । তাই তাদের এত অনীহা।
৩। এই লেখা যখন লিখছি তখন হাতে একটা লিফলেট পেলাম মামা বাহিনীর । একটা জিনিস বাকি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র এটাও তারা ইনক্লুড করে দিয়েছে।আরো একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম ১+১=২ এই তত্তব অনুসারে প্যাচানোর চেষ্টা।
৪। খবর পেলাম বিব্রত মন্ত্রী নাকি আবার শর্ত দিয়ে মিটিং ডেকেছে । একবার তাকে সম্মান দেখাতে গিয়ে যে পরিমাণ বাঁশ আমারা খেয়েছি এরপর তার কোন শর্ত মানার মানে হল কূড়ালের বাড়ী খাওয়ার জন্য নিজের পা এগিয়ে দেয়ার মত অবস্থা । আন্দোলনের এই চরম সময়ে কোন দাবি মানার দরকার নাই (মামলা আর মামা বাহিণীর হামলা ছিল ভয় দেখানোর অপপ্রয়াস)
৫। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রতি একদলা থুথু দিলাম আমাদের হয়ে কথা বলার জন্য । সনি আপুর হত্যা আপনাদের আমলেই হয়েছিল আপনারা বুয়েট বিষয়ক কোন কথা না বলে অফ গেলেই আমরা চরম খুশি হই । মড়ার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে আবার ঢাবির শিক্ষকগুলোও জুটছে । আপ্নারা সরাসরি আমাদের ব্যাপারে নাক না গলালেই খুশি হব । আপানার নাক গ্লাবেন মানে আমাদের ক্ষতি । সো বেটার আপনারাও অফ জান । (এইখানে কাউকে খাটো করার জন্য কিছু বলা হয় নাই ।সরকারের সব জায়গায় গন্ধ খোজার অভ্যাসের জন্য আমরা অসহায় । )
আজকের রাতের মিটিং এ সিদ্ধান্তঃ প্রো ভিসি যাচ্ছে , ভিসির ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত । Mahbubur Razzaque স্যার এর স্ট্যাটাস-------
"গলায় ছুরি ধরে আলোচনা "ফলপ্রসূ" দেখানো হলেও সমস্যার সমাধান হবেনা। ন্যায় নীতি নিয়ে কথা বলার নৈতিক অবস্থা আমাদের আর থাকলো না।"
- বুয়েট ভিসির দায়ের করা চুরি মামলার এক আসামী।
লজ্জা ! লজ্জা ! এ লজ্জা আমাদের । এ লজ্জা সারা দেশের ছাত্র সমাজের যারা মনে করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় সম্ভব । আমিও দেখতে চাই আমার রক্তে ভেজা সিড়ি দিয়ে তিনি কিভাবে তার গদিতে বসে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:৩৬