somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন

৩০ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়টা ১৯৯৯ সাল। একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমি প্রথমবারের মতো মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে যাই। আমরা ৬০ থেকে ৭০ জন। এক ঘরে দেখতে পাই সেই বিখ্যাত ঘোষণাটির রেকর্ড। আমরা সেই রেকর্ডটা বাজিয়ে শোনাতে বলি। তারা শোনায়। শুনি আর পূর্বের সেই ধারণা ভেঙ্গে যায়। এতকাল শুনে এসেছি, তিনি স্বাধীনতার ঘোষক। তখন বুঝি আসলে তিনি ঘোষক নন, তিনি একজন পাঠক মাত্র। অন্য জনের পক্ষ থেকে তিনি ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন। তার আগেই আরেক জন এই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান। যদি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠকারী বলে কাউকে স্বীকৃতি দিতে হয় তবে তা এম এ হান্নানের প্রাপ্য। আর স্বাধীনতার মূল ঘোষণাকারী শেখ মুজিবুর রহমান।
অন্য দিকে ১০ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে যেই অস্থায়ী সরকার সৃষ্টি হয়, সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। সেই সরকারের প্রধান ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সুতরাং স্বাধীনতার ঘোষণার সঙ্গে শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতা জড়িত। জিয়ার ঘোষণাপত্র পাঠ করাটা একটি কাকতালীয় ঘটনা মাত্র। সেই সময়ের চট্টগ্রাম কালুরঘাট স্টেশনে যেই ব্যক্তিটি জিয়াউর রহমানকে ডেকে আনেন, সেই বেলাল মোহাম্মদ অসংখ্য সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তিনি প্রত্যেকবারই বলেছেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন।
যারা এখনও মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে যান নি, তাদের অনুরোধ করব কমপক্ষে জিয়াউর রহমানের এই রেকর্ড শোনার জন্য মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে যান। সেই ঘোষণায় জিয়াউর রহমান পরিষ্কার বলেছেন, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা করছেন। তাহলে তিনি কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হন ? তিনি তো কেবলমাত্র বঙ্গবন্ধুর আহবানটা পাঠ করেছেন।
বিএনপির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াত বা রাজাকারপন্থী লোকজন শেখ মুজিবুর রহমানকে অপমান করার জন্য এবং বিতর্ক ও বিভক্তি সৃষ্টি করার জন্য স্বাধীনতার ঘোষক বানালেন জিয়াউর রহমানকে। তিনি বেঁচে থাকতে কোনদিনও এরকম দাবি করেন নি। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর এই থিউরি আবিষ্কৃত হয়।
গতকালও সংসদে এই স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়েছে। আমরা মনে করি, আমরা এই সব বিতর্ক করে সময় নষ্ট না করে প্রকৃত সত্যটা জানি। তবে কেউ কেউ বিশেষত যারা '৭১ এ রাজাকার ছিলেন, তারা এই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এবং তারা চান এই বিতর্ক চলতে থাকুক। তাতে করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যে জনদাবি উঠেছে, সেটা চোখের আড়ালে চলে যাবে। এই বিতর্কে আসলে তাদেরই লাভ। ক্ষতি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তির। তাই অনর্থক বিতর্ক না করে সত্যকে মেনে নেয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:৩৮
৫১টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×