somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা সম্পর্কে জানতে চান ?

২৯ শে মে, ২০০৯ রাত ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নুরুজ্জামান০৮ বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া। শুনে হাসব না কাঁদব ভেবে পাচ্ছিলাম না। এখনও পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ স্রষ্টাকে স্মরণ করে। যদিও সবাই একই স্রষ্টাকে বিভিন্ন নামে ডাকে। একই স্রষ্টাকে কেন যুগে যুগে ভিন্ন্ ভিন্ন নামে ডাকা হল সেটাই একটা বিরাট রহস্য।
আমি তার একপেশে লেখা পড়ে হাসলাম। যারা ধর্মপ্রচার করার জন্য কিছু বলে বা লেখে তাদের বলাটা বা লেখাটা এমন একপেশে হবে তাতে অবাক হওযার কিছু নাই।
আজকের পৃথিবীতে মহান বুশ যেই যুদ্ধ শুরু করে গিয়েছেন, সেটা একটা ধর্মযুদ্ধ। তিনি খ্রিস্টান ও ইহুদী ধর্মের গুরু হিসেবে মুসলমান ধর্ম অনুসারীদের সাইজ করার জন্য ইরাক ও আফগানিস্তানে তার বাহিনী নামিয়ে দিয়েছেন। এই যুদ্ধের সাথে বাণিজ্যের পাশাপাশি ধর্মীয় ঘৃণাও কাজ করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নামের এই জঘন্য যুদ্ধের মাসুল আমরা সারা পৃথিবীর মানুষ দিচ্ছি।
পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ ঘৃণার ইতিহাস নিঃসন্দেহে ইহুদী ও মুসলমানদের সম্পর্ক। ইসরাইল ও প্যালেস্টাইন নামের দুটি রাষ্ট্রের মানুষ কেন পরস্পরকে ঘৃণা করে ? তাদের ধর্মীয় বিভাজনের জন্য নয় কি ? দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা এই অসম যুদ্ধে কত মানব সন্তান মারা গেছে ? ধর্মীয় পার্থক্য না থাকলে তারা কি পরস্পর শত্রু হত ?
আরবের একই বংশ থেকে সকল নবী বা রসুল পয়দা হয়েছে। তারা ১০৪ টি আসমানী কিতাব লাভ করেছেন। যুগে যুগে তারা একাধিক আসমানী কিতাব লাভ করাতে আজ পৃথিবীর প্রধানতম ৩টি ধর্ম সৃষ্টি। যেমন : ইহুদী ধর্মবলম্বীদের জন্য যবুর, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ইঞ্জিল এবং মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য কোরআন। এই ৩টি গ্রন্থ ৩ বারে নাযিল না হলে ৩টি ধর্ম সৃষ্টি হত না। হত না মানুষে মানুষে এত ব্যবধান। হত না এত শত্রুতা। হত না এত যুদ্ধ।
যদি স্রষ্টা ১ জন হয়, তবে কেন তার এত আসমানী কেতাব ? ১টি কেতাব দিয়ে ১টি ধর্ম পাঠালেই তো এত হানাহানি হত না।
বাস্তব জীবনে ধর্মীয় বিশ্বাস কি কাজে লাগে ? মানুষ কি কর্মঠ হয় কোন ধর্ম পালনের জন্য ? তাহলে তো কর্মক্ষেত্রে সেই ধর্মের লোকদেরই চাকুরি হত। তাদের বেতন হত বেশি । কোন ধর্ম যদি মানুষকে কর্মদক্ষ ও কর্মঠ বানাত, তবে সবাই সেই ধর্মের অনুসারী হতে আগ্রহ বোধ করত।
ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য কি মানুষ মেধাবী হয় ? তাহলে তো সেই ধর্মের মানুষরাই হত বড় বিজ্ঞানী বা শিল্পী। বাস্তবে তো যে কোন ধর্মের মানুষই বিজ্ঞানী বা শিল্পী হওয়ার মতো মেধাবী হয়। কোন ধর্ম পালন করলে যদি মেধাবী হওয়া যেত, তবে সবাই সেই ধর্মের প্রতি উৎসাহী হত।
ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য কি মানুষ ধনী বা গরীব হয় ? না, ধনী বা গরীব হওয়ার সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই। যে কোন লোকই ধনী বা গরীব হতে পারে। যদি কোন ধর্ম গ্রহণ করলে মানুষ ধনী হয়ে যেত, তবে সবাই সেই ধর্ম গ্রহণ করত।
ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য কি মানুষ রোগমুক্ত থাকে ? না, বাস্তবে ধর্মের সাথে রোগের কোন সম্পর্ক নাই। যে কোন ধর্মের লোক যে কোন রোগে আক্রান্ত হয়। ইমাম সাহেবেরও ডায়াবেটিক হয়, পাদ্রী সাহেবেরও ডায়াবেটিক হয়। কোন ধর্ম পালন করলে যদি রোগমুক্ত থাকা যেত তবে সবাই সেই ধর্মই পালন করত।
কোন ধর্ম পালন করলে কি মানুষ চির যৌবন পায় ? না, যৌবন স্থায়ী করার সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই। যে কোন ধর্ম পালনই করি না কেন একটা সময়ের পর আমাদের বুড়ো হতেই হবে। কোন ধর্ম পালন করলে যদি চিরযৌবনা হওয়া যেত, সেই ধর্ম বাদে আর কোন ধর্ম থাকত না।
কোন ধর্ম পালন করলে কি মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা থেকে বাঁচে ? না, যখন ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস হয়, তখন সবার ঘরই ভাংগে। মসজিদও ভাংগে, মন্দিরও ভাংগে। সবাই যার যার স্রষ্টাকে ডেকেও সেই দুর্যোগ থামাতে পারে না। যদি কোন ধর্ম পালন করলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা যেত, মানুষ সেই ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম পালন করত না।
আসলে বাস্তব জীবনে আমাদের যা যা ঘটার তার সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নাই। বরং ধর্মের বিভিন্নতা থাকার জন্য মানুষে মানুষে বিভেদ ও ঘৃণা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ তো স্রষ্টা বিশ্বাসী হয়ে কোন লাভ পায় নাই, বরং অপরের সাথে হানাহানি করে রক্তপাত করেছে। যুদ্ধ করেছে, ধর্ষণ করেছে, খুন করেছে। ধর্মের নামে সবই বৈধ হযে গেছে।
অন্য দিকে অপরাধ করার ক্ষেত্রে কোন ধর্মের লোকেরা অপরাধ বেশি করে এবং অন্য কোন ধর্মের লোকেরা অপরাধ কম করে তা কিন্তু নয়। সব ধর্মের লোকের মধ্যেই অপরাধী আছে। এমনকি ধর্মগুরুরাও নানা রকম কদর্য ধরনের অপরাধ করে থাকে।
যদি কোন ধর্ম পালনের জন্য অপরাধ না থাকত তবে তো পৃথিবীটাই বেহেস্তখানা হয়ে যেত। বাস্তবে তো সেটা হয় না। আমাদের মতো মুসলিম প্রধান ইমানী দেশেও সবচেয়ে বড় সমস্যা কিন্তু দুর্নীতি। দাড়িওয়ালা লোকও ঘুষ খায়। সুদে টাকা খাটায়। তার মানে ধর্ম কোন মানুষকে অপরাধ থেকে দূরে রাখতে পারে নাই।
আমার মতে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা
০১) একই স্রষ্টার নাম দিয়া একাধিক ধর্মের অবতীর্ণ হওয়া
০২) প্রত্যেকটি ধর্ম নিজেকে সঠিক, শ্রেষ্ঠ ও একমাত্র ধর্ম এবং অপরকে বেঠিক ও খারাপ মনে করা
০৩) এক ধর্মের অনুসারী অপর ধর্মের অনুসারীকে ঘৃণা করা
০৪) শান্তি প্রতিষ্ঠার নাম দিয়া অপর ধর্মের অনুসারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, হত্যা করা এবং আর যা যা কুকর্ম করা যায় সবই করা
০৫) ধর্মের বিরুদ্ধে গেলে সেটা যতই আধুনিক ধ্যান ধারণা হোক সেটাকে বেঠিক ও খারাপ বলে প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগা।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০০৯ রাত ১১:২২
৬০টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×