somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য আপনার যদি কোন দায়বদ্ধতা থাকে, তাহলে এই লেখাটা পড়ুন

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আপনাকেই বলছি, হ্যাঁ, আপনি - যিনি এই মুহূর্তে এই লেখাটা পড়ছেন, তাকে বলছি। দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য আপনার যদি কোন দায়বদ্ধতা থাকে, তাহলে এই লেখাটা পড়ুন। নচেৎ আর পড়ার দরকার নাই।
পৃথিবীর সব দেশেই নানা স্বাদের চলচ্চিত্র হয়। ভিন্নধারার চলচ্চিত্র হয়। এই সব চলচ্চিত্র দর্শক দেখে। আগ্রহ নিয়ে দেখে। আমাদের দেশে দেখে না। আমাদের দেশের মানুষ মুখে মুখে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য মাস্টার প্লান করে ফেলে, কিন্তু যখন ভালো ও ভিন্নধারার চলচ্চিত্র মুক্তি পায়, তখন সেটা টিকেট কেটে দেখে না। অপেক্ষায় থাকে কবে টিভিতে আসবে এবং ফ্রি দেখে নেবে। আমাদের এই মানসিকতার জন্য সুসভ্য ভদ্র চলচ্চিত্রের কোন বাজারই তৈরি হল না আমাদের দেশে। একটা জাতির শিক্ষিত ভদ্রলোকদের জন্য এটা খুবই লজ্জার ব্যাপার।
এমনকি যারা চলচ্চিত্রকার হতে চায়, তাদেরও বিকল্পধারার বা বাণিজ্যিক কোন চলচ্চিত্র টিকেট কেটে দেখার অভ্যাস তৈরি হয় নি। তারা অপেক্ষায় থাকে ফ্রি পাস পাওয়ার জন্য।
আচ্ছা, আপনি একটা প্রশ্নের উত্তর দেন তো ? এক কোটি টাকা খরচ করে আপনি একটা চলচ্চিত্র বানালেন। কেউ টিকেট কেটে দেখল না। সবাই ফ্রি দেখে দেখে আপনাকে খুব বাহবা দিল। আপনার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলল, দারুণ একটা সিনেমা। আপনি অনুপ্রাণিত হলেন। কিন্তু পরের বছর কি আপনি আবারও এক কোটি টাকা খরচ করে চলচ্চিত্র বানাবেন ?
এই জন্য আমাদের দায়িত্ব হল বিকল্পধারার চলচ্চিত্রকে প্রমোট করা। সেই প্রমোট করার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার টিকেট কেটে চলচ্চিত্রটি দেখা। আসুন, আমরা সেই কাজটা করি।
আজ বিকেল ৫টায় শাহবাগ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ‘জীবনঢুলী’ দেখলাম। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটা ব্যতিক্রমধর্মী গল্প। প্রচলিত ঢঙের বাইরের একটি চলচ্চিত্র। সরকারী অনুদানে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটির পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল। নির্মাতা হিসেবে তানভীর মোকাম্মেলকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নাই।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হল, আজ বিকেল ৫টার শোতে মাত্র ৬২ জন দর্শক ছিলেন।
আশা করি, আমার এই লেখাটা পড়ার পর আগামী কালে শোতে দর্শক সংখ্যা বাড়বে। কেবল মিষ্টি মিষ্টি করা বলে দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়ন হবে না। যদি দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রতি আপনার কোন দায়বদ্ধতা থাকে, তবে টিকেট কেটে চলচ্চিত্র দেখার অভ্যাস করুন। নয়তো দেশীয় চলচ্চিত্রের দুর্ভোগ কখনও কাটবে না।

আপনাদের অবগতির জন্য ‘জীবনঢুলী’ সম্পর্কে সামান্য কিছু তথ্য দিলাম :

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র
জীবনঢুলী
পরিচালনা : তানভীর মোকাম্মেল

কাহিনী সংক্ষেপ :
১৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের আগে নিম্নবর্ণের গরীব ঢাকি জীবনকৃষ্ণ দাস বা ‘জীবনঢুলী’-র গ্রাম পাকিস্তান সেনাবাহিনী আক্রমণ করলে ভারতে পলায়নের সময় জীবনঢুলীর স্ত্রী ও সন্তানেরা পাকিস্তানী সৈন্যদের হাতে চুকনগর গণহত্যায় নিহত হয়। জীবনঢুলী সীমান্ত পার না হয়ে গ্রামে ফিরে আসে। সেখানে তখন রাজাকার বাহিনী দোর্দন্ড প্রতাপ। রাজাকাররা জীবনঢুলীকে বাঁচিয়ে রাখে এই শর্তে যে, ওকে রাজাকার বাহিনীর বাজনাদার হিসেবে ঢোল বাজাতে হবে।
যুদ্ধের আগে পাশের গ্রামের স্বচ্ছল দত্তদের বাড়িতে দূর্গাপূজায় ঢাক বাজাতে যেত জীবনঢুলী। ওখানে সে দত্তদের বাড়ির সুন্দরী তরুণী বৌটিকে দেখেছিল - যার শুচিতা ও সৌন্দর্য জীবনঢুলীকে মুগ্ধ করেছিল। যুদ্ধের সময় রাজাকারদের হাতে বন্দী হয় দত্তবাড়ির সেই বৌটিও। জানালার শিকের ফাঁকে মাঝে মাঝে সেই বন্দী নারীর মুখ দেখতে পায় জীবনঢুলী.....

অভিনয়ে :
শতাব্দী ওয়াদুদ, রামেন্দু মজুমদার, ওয়াহীদা মল্লিক জলি, চিত্রলেখা গুহ, জ্যোতিকা জ্যোতি, তবিবুল ইসলাম বাবু, প্রাণ রায়, উত্তম গুহ, রাফিকা ইভা, ইকবাল হোসেন, পরেশ আচার্য, রিমু খন্দকার, ইকবাল আহমেদ প্রমুখ।
নিবেদক : সাইফুর রহমান
চিত্রগ্রহণ : মাহফুজুর রহমান খান
শিল্প নির্দেশনা ও প্রধান সহকারী পরিচালক : উত্তম গুহ
সম্পাদনা : মহাদেব শী
সঙ্গীত পরিচালনা : সৈয়দ সাবাব আলী আরজু
তারিখ : ১৪-২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪
স্থান : শওকত ওসমান মিলনায়তন (পাবলিক লাইব্রেরি) শাহবাগ।
সময় : ৩টা, ৫টা, ৭টা (প্রতিদিন)
২১ ফেব্রুয়ারি - ১০টা, ১২টা, ৩টা, ৫টা, ৭টা।
প্রবেশপত্র শোয়ের আগে মিলনায়তনে পাওয়া যাবে। টিকেটের মূল্য - ১০০ টাকা।
যোগাযোগ : ০১৭১২০৮৬১০২, ০১৭১১৪০১৬৩
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×