somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছবি ব্লগ ( মহাস্থানগড় )

২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি । পূর্বে এর নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর । এক সময় মহাস্থানগড়ও বাংলার রাজধানী ছিল । এখানে মৌর্য গুপ্ত, পাল, সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন রয়েছে । এর অবস্থান বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় । এটি বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত ।


সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন ১০৮২ সাল থেকে ১১২৫ সাল পযন্ত যখন গৌড়ের রাজা ছিলেন তখন এই গড় অরক্ষিত ছিল । মহাস্থানের রাজা ছিলেন নল যার বিরোধ লেগে থাকত সব সময় তার ভাই নীলের সাথে । এসময় ভারতের দাক্ষিণাত্যের শ্রীক্ষেত্র নামক স্থান থেকে এক অভিশপ্ত ব্রাহ্মণ এখানে অসেন পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে । কারণ তিনি পরশু বা কুঠার দ্বারা মাতৃহত্যার দায়ে অভিশপ্ত ছিলেন । পরবর্তীতে তিনিই এই দুই ভাইয়ের বিরোধের অবসান ঘটান এবং তিনি রাজা হন । ওই ব্রাহ্মণের নাম ছিল রাম । ইতিহাসের পাতায় বলে তিনি পরশুরাম নামে পরিচিত । কথিত আছে পরশুরামের সাথে ফকির বেশী আধ্যাত্মিক শক্তিধারী দরবেশ হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র:) এর যুদ্ধ হয়েছিল । কত সালের যুদ্ধে মারা যান তার কোন সঠিক তথ্য না মিললেও ধারণা করা হয় ১২০৫ সাল থেকে ১২২০সালের মধ্যে যে যুদ্ধ হয় সে যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত হয় এবং তার মৃত্যুও হয় ।


তবে মহাস্থান গড় বেড়াতে গেলে অনেক কিছু দেখার আছে । এ স্থানটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাচীন পর্যটন কেন্দ্র । এখানে মাজার জিয়ারত করতে এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান হতে অনেক লোক সমাগম ঘটে। এখানকার দানবাক্সে সংরক্ষিত অর্থ বছরে কয়েক হাজার টাকা হয় । যা দিয়ে মাজার মসজিদের কর্মচারীদের বেতন এবং অন্যান্য উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত হয়।
মহাস্থান বাস স্ট্যান্ড থেকে কিছুটা পশ্চিমে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী এর মাজার শরীফ আছে । অনেকের ধারনা বা জানা যায় তিনি মাছের পিঠে আরোহন করে তিনি বরেন্দ্র ভূমিতে আসেন । তাই তাকে মাহী সওয়ার বলা হয় । হযরত মীর বোরহান নামক একজন মুসলমান এখানে বাস করতেন । তিনি পুত্র মানত করে গরু কোরবানী দেয়ার অপরাধে রাজা পরশুরাম তার বলির আদেশ দেন এবং তাকে সাহায্য করতেই মাহী সওয়ারেরর আগমন ঘটে ।


গড়ের পশ্চিম অংশে রয়েছে ঐতিহাসিক কালীদহ সাগর এবং পদ্মাদেবীর বাসভবন । গড়ের পূর্বঅংশে রয়েছে করতোয়া নদী এর তীরে শীলাদেবীর ঘাট । শীলাদেবী ছিলেন পরশুরামের বোন । এখানে প্রতি বছর হিন্দুদের স্নান হয় এবং একদিনের একটি মেলা বসে ।এই ঘাটের পশ্চিমে জিউৎকুন্ড নামে একটি বড় কুপ আছে । এক সময় নাকি সেই কুপের পানি পান করে পরশুরামের অসুস্থ সৈন্যরা সুস্থ হয়ে যেত । তবে এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি । এটা লোক মনের ধারণা ।


মহাস্থান গড় খননের ফলে মৌর্য, গুপ্ত, পাল এবং সেন যুগের বিভিন্ন দ্রব্যাদিসহ অনেক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে যা গড়ের উত্তরে অবস্থিত জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে । মহাস্থান গড় ছাড়াও আরও বিভিন্ন স্থানের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এখানে সংরক্ষিত রাখা আছে ।
মহাস্থানগড় বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে একটি বৌদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে যা সম্রাট অশোক নির্মাণ করেছিলেন বলে মনে করা হয় । স্তম্ভের উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট । স্তম্ভের পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোন বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি গোসল খানা । এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই বেশি পরিচিত । মহাস্থানগড় জাদুঘরের ঠিক সামনেই গোবিন্দ ভিটা অবস্থিত ।



ছবি তথ্য ইন্টারনেট ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:০১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×