somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার গার্মেন্টস জীবন ২

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্বের পর ।
প্রথম পর্ব এখানে
হান্নান ভাই আমাকে নিয়ে গেলো আইটি রুমে । একটি কম্পিউটার এর সামনে বসিয়ে বললো এখানে আপনার বায়োডাটা তৈরী করেন এ কথা বলে তিনি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওপেন করে দিতি চাইলেন । আমি বললাম আমি কম্পিউটার জানি ওপেন করে নিতে পারবো । তিনি মনে হয় খুশি হলেন । (২০০০ সালে যুব উন্নয়ন থেকে আমার কম্পিউটার কোর্স করা ছিল)
বায়োডাটা প্রিন্ট করে কাদরি স্যার এর কাছে নিয়ে গেলাম সাথে হান্নান ভাইও গেলেন । হান্নান ভাই স্যারকে বললেন কারও হেল্প ছাড়াই এটা আমি তৈরী করেছি । স্যার বায়োডাটা ভালো করে দেখে বললেন কবে জয়েন্ট করতে চাও ? ( আমার চোখ-মুখ তখন খুশিতে ঝলমল করছে)B-)
আমি বললাম আজতো বুধবার , শনিবারে জয়েন্ট করতে চাই । স্যার বললেন ঠিক আছে । তারপর বললেন তোমাকে যে সেকশনে কাজ দেবো সেটা গার্মেন্টস এ সবচেয়ে ভালো জায়গা । প্রথমে বেতন কম , সব মিলিয়ে ৩০০০ টাকা কিন্তু ভালো করতে পারলে ছয় মাস পর বেতন বাড়িয়ে দেওয়া হবে । আর এই কাজ শিখলে তখন নাকি আমাকে চেনাই যাবে না ! আর বললেন , যাবার আগে যেখানে কাজ করবে দেখে যাও ! একথা বলে তিনি পিয়নকে ডেকে বললেন একে ক্যাড সেকশনে নিয়ে যাও !
ক্যাড সেকশনে গিয়ে দেখলাম- ছোট একটি এসি রুম । তিনটি কম্পিউটার সাজানো , একজন লোক কম্পিউটারে কাজ করছে । একটি উঁচু ডিজিটাইজার টেবিল ( তখন নাম জানতাম না )। আরও একটি চেয়ার-ডেস্ক, মনে হলো এখানে সেকশন প্রধান বসে । রুমে সুন্দর এয়ার ফ্রেশনার এর গন্ধ, খুব ভালো লাগলো আমার ।
পিয়ন কম্পিউটারে বসা ইকবাল স্যারকে বললো স্যার, কাদরি স্যার ইনাকে আপনার কাছে পাঠিয়েছেন । (ক্যাড সেকশনে একটা ছেলে নেওয়া হবে আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছিল) । এখানে একটু বলে রাখি-তখন খুব কম গার্মেন্টসেই ক্যাড ছিল, বড় বড় কম্পানি ছাড়া । ক্যাড সফ্টওয়্যার এর অনেক দাম এখন অবশ্যয় চাইনিজ বের হয়ে দাম কমেছে । তখন ক্যাডে কাজ জানা লোক খুব কম ছিল । আর ধারনা করা হতো এই কাজ অনেক কঠিন! সবাইকে দিয়ে সম্ভব না

ইকবাল স্যার আমার দিকে তাকালেন ! আমার আপদমস্তক তখন গ্রামের ছেলের ছাপ । চেয়ারে বসতে বলে নাম, গ্রাম আর কিছু প্রশ্ন করে কাজে মনোযোগ দিলেন । আমি চুপচাপ বসে স্যার এর কাজ দেখতে লাগলাম কিন্তু কিছু বুঝতে ছিলাম না । স্যার ছোট ছোট কিছু পার্সকে এদিক ওদিক নাড়া চাড়া করছিলেন ( মার্কার করছিলেন ) । ২০-৩০ মিনিট পর বললেন কি কিছু বুঝতেছ না ? আমি বললাম না । বললেন আস্তে আস্তে হবে । আমি বললাম আজকে যাই । তিনি বললেন কবে থেকে আসবে ? বললাম শনিবার থেকে ! বললেন ঠিক আছে মাহমুদ ভাই ( বস ) ছুটিতে আছে , শনিবারে তোমার সাথে দেখা হবে ।
রুম থেকে বের হয়ে কাদরি স্যার এর সাথে আবার দেখা করে ছুটলাম মিরপুরে দাদার বাসায় । সেখানে রাত থেকে পরের দিন ময়মনসিংহ হোস্টেলে । হোস্টেলে সঙ্গী সাথীদের বললাম – আমার চাকরি হয়ে গেছে , আমি সব ছেড়ে-ছুড়ে চলে যাচ্ছি এবং সেটা আগামী কালই ।
হোস্টেলে ৩৪ নং রুমে থাকতাম আমরা চার জন । শামিম ভাই, মস্তোফা ভাই , জিল্লু ভাই আর আমি । তাছাড়া আশে পাশের অনেক টিচার এর সাথেও এই সাড়ে তিন মাসে বেশ ঘনিষ্ট হয়ে গেছি । হোস্টেলে সবাই মিলে একটা পরিবারের মত হয়ে থাকতাম । এখানে বলে রাখি ট্রিচার ট্রেনিং হোস্টেল বিশির ভাগই ট্রিচার আর অল্প কিছু নন ট্রিচার । তার ভিতরে আমি ছিলাম সবার জুনিয়র । সবাই আমাকে আদর স্নেহ করতো । শামিম ভাইতো আমকে বড় ভাই এর মত গাইট করতো । (এ গল্প অন্য আর এক দিন করবো ইনশাআল্লাহ )
হোস্টেলের সবাই আমকে ঘিরে ধরলো , কোথায় চাকরি কিসের চাকরি ..... আমি বললাম গার্মেন্টস এ , কম্পিউটারে চাকরি ! শামিম ভাই বললেন , এই কম্পিউটার অপরেটর চাকরির জন্য তুমি বিএড শেষ না করেই চলে যাচ্ছ ! বিএড এ ভালো করতে পেলে তো তোমার একটি ভালো স্কুলে চাকরি হবে ! আমি বললাম এই নিশ্চয়তা আমাকে কে দিবে ? তাছাড়া যে দাদা চাকরির খবরটা দিয়েছেন তার উপর আমার ও আমার পরিবারে অগাধ বিশ্বাস যে তিনি জেনে বুঝেই চাকরির খবরটা দিয়েছেন ।
বিএড এর কিছু গাইড বই কিনেছিলাম , দোকানে গেলাম সেগুলি ফেরত দেবার জন্য যদি কিছু টাকা পাওয়া যায় ! কিন্তু তারা দাম দিতে চাইলো ২০% এর মত তাই ফেরত দিলাম না ।
যেহেতু হোস্টেলে থাকি বেডিং-পত্র ( তোষক,বালিশ,মশারি,খাবার প্লেট-গ্লাস,.......) সব আগে থেকেই রেড়ি ছিলো । পরের দিন (শুক্র বার ) সকাল সকাল ছুটলাম অনাগত ভবিষ্যতের দিকে । যাবার সময় গাঙ্গিনা-পাড় ফুটপাথ থেকে কিনলাম দুই বুকে পকেট ওলা নীল রং এর একটি শার্ট আর ইমারজেন্সি ছবি তুলা হয় স্টুডিও থেকে চার কপি ছবি করে নিলাম । ( এখান কার মত ডিজিটাল ক্যামেরায় ৫ মিনিটে ছবি ! এত সহজ ছিল না )

চলবে......


সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×