somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বিজ্ঞান মনস্ক ছোটবেলা !

১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি ছিলো আমার প্রচন্ড আগ্রহ ! ছোটদের জন্য বিজ্ঞানীদের জীবনী পড়তে আমার খুব ভালো লাগতো । যখন বই পড়ে জানলাম তারা ল্যাবরেটরিতে দিন রাত প্রচুর পরিশ্রম করতেন তাই আমি ঠিক করলাম আমিও একটা ল্যাবরেটরি বানাবো । আমাদের ঘরে স্টিলের একটি বাক্স ছিলো শুরু করলাম এর ভিতরে বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম জমানো । নাট, বল্টু, ব্লেড, কাঁচি, ম্যাচ যাই পেতাম ওখানে জমাতাম(পর্দাথ বিভাগে) । তাছাড়া হোমিও শিশির ভিতরে লবন, সোডা, তুত, গন্ধক .... (রসায়ন বিভাগ) রেখে বোতলে গায়ে লেবেল লাগিয়ে দিতাম ।

যখনই সময় পেতাম আমার ল্যাবরেটরির সব যন্ত্র পাতি নামাতাম নাড়াচড়া করতাম আবার সব তুলে রাখতাম। তখন আবার আমার, মনের সুখে মুখে গুন গুন করে গান চলে আসতো। মাঝে মাঝে গানের ভলিউম বেরে যেতো । আমার কাজ করবার দেখে পরিবারের সদস্যরা হাসতো বিশেষ করে মেজো আপা । বলতো তুই এই সব কি করস , শুধু একবার নামাস আর একবার তুলস ? কিন্তু আমিতো জানি এই ভাবে ল্যাবরেটরিতে পরিশ্রম করে কতো লোক বড় হয়ে বিজ্ঞানী হয়েছে B-)

একটা ঘটনা বলি : বাড়ির পাশে মুদির দোকানে গেছি তেল কিনতে। দেখি এক লোক টর্চ এর বাল্ব কিনতে এসেছে । দোকানদার দশ পয়সার সাথে গুনার এক মাথা বেঁধে আরেক মাথা বাল্বের প্যাঁচ কাটা সোনালী অংশে বাঁধে । তার পর একটি চাঁন্দা ব্যাটারির নিচে দশ পয়সাটা রেখে বাল্বের চোখা মাথাটা যেমনি ব্যাটারির উপরে ধরলো সাথে সাথে বাল্ব জ্বলে উঠে । আমিতো অবাক বিষয়টা আমি ভালো করে খেয়াল করলাম আর ভাবলাম তাহলে তো আমি একটি ব্যাটারি কিনে আমাদের ঘরের বড় বাল্ব গুলিও জ্বালাতে পারি । (তখন আমি ফোর / ফাইভে পড়ি ওয়াট, ভোল্ট, এম্পিয়ার, এসি, ডিসি এগুলির ধারনা ছিলো না )

মাকে গিয়ে ধরলাম মা' ছয়টা টাকা দাও না । মা বললেন ছ..ছ..ছয় টাকা কি করবি । ( তখন আইসক্রিম বা চকলেট, বাদাম খেতে এক টাকার বেশি লাগার কথা না ) বললাম একটি চাঁন্দা ব্যাটারি কিনবো । এই ব্যাটারি দিয়ে আমাদের ঘরের বড় লাইট গুলি জ্বালানো যাবে । মা কথাটা বিশ্বাস করলেন বলে মনে হলো না । বললেন যা টাকা নাই । এক কথাতেই যে কাজ হবে না এটা আমি জানতাম । তাই মনে মনে আগে থেকেই দীর্ঘ স্থায়ী গ্যাংঙ্গানোর জন্য তৈরী ছিলাম । শুরু করলাম আমার কার্যক্রম ! দাও না ...... দাও .....মা...... ও মা......... দাও ...... ( মা আমাকে একটু বেশি ভালোবাসতেন এখনও বাসে । কাজ যে হতে পারে এই বিশ্বাসে আমার কার্যক্রম চালাতে থাকি )

অবশেষে ত্যাক্ত হয়ে মা বললেন দাঁড়া খুঁজে দেখি । আলমারির ভিতরে চিনামাটির প্লেটের নিচে নিচে খুঁজে এক টাকা আট আনা এই ভাবে ছয় টাকা মিল করে দিলেন । টাকাটা পেয়ে উড়াল দিয়ে দোকান থেকে ব্যাটারি কিনে আনলাম ।

আমাদের ঘরের কোনায় বাহিরে ১০০ ওয়াটের বাল্ব ছিলো , মই দিয়ে সেটা নামালাম । তারপর ধারনা মত কানেকশন করলাম কিন্তু না । আবার চেষ্ট করলাম ! না । আমার তো ঘাম বের হয়ে গেলো ছয়, ছয় টা টাকা । আবার সেই দোকানে গেলাম ব্যাটারি নিয়ে । বললাম আপনার ব্যাটারি ভালো না । দোকানদার আমার সামনে টেষ্ট করে দেখালো জ্বলে । আবার বাসায় এসে কিছুক্ষণ ট্রাই করলাম । কিন্তু যে লাউ সেই লাউই :((। এর ভিতরে মা একবার এসে আমার কাজের অগ্রগতি দেখে গেছেন।

সবশেষে যখন রেজাল্ট আসলো শূন্য , আমার পিঠকে তৈরী করছিলাম এই বিজ্ঞান গবেষনার প্রতিক্রিয়া ঠেকাবার জন্য কিন্তু আমার মমতাময়ী মা আমার মুখের হতাশা দেখে আমার বিরুদ্ধে কোনো একশনে যান নাই ।

মাকে নিয়ে আমার আর একটি লেখা : আমার সাহসী মা

সবশেষে একটি বিজ্ঞাপন, আপনি এই জরিপে অংশগ্রহন করেছেন কি ?
জরিপ! জরিপ!! বিবাহিত ব্লগার জরিপ!!! ২০১৩
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অল্প পুঁজিতে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার সন্ধান, যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৫



কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×