somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানবচরিত্র

১৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই দীর্ঘ একজীবনে মানুষ অনেকবার জন্মায় এবং অনেকবারই মৃত্যু বরণ করে চুড়ান্ত মৃত্যুর আগে। প্রতিটি জন্মের প্রতিটি অধ্যায়ই আলাদা আলাদা ---- ভিন্নরকম। এই সাদৃশ্যহীন এক জীবনের ভিন্ন ভিন্ন জন্মের অধ্যায় গুলোর সাদৃশ্য খোঁজা জীবনকে কেবল বিড়ম্বিতই করে।এ অঞ্চলের জীবন খুব বেশী মাত্রায় স্থবির তা বলা যায় না, তবে ধীর তো বটেই।এই ধীরতা থেকে ক্রমশ বেরিয়ে আসা প্রয়োজন । জীবনের প্রতিটি অধ্যায় সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করার আকাঙ্খা সবার জন্যেই স্বাভাবিক, হয়তো সাফল্য ধরাও দেয় না, কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় চেষ্টা করা প্রয়োজন। তা না হলে, নিজের কাছেই আত্মপক্ষ সমর্থন করার কোনো সুযোগ থাকে না। প্রতিটি মানুষেরই নিজের কাছে সৎ থেকে নিজের ভেতরের মনুষ্যত্ব বোধ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করা উচিৎ। তা হলে পৃথিবীতে এত অশান্তি থাকতে পারতো না। তা হয়তো পুরোপুরিভাবে সম্ভব নয়, কিন্তু এতটাই অসম্ভব নয় যে মানুষ তার জন্যে চেষ্টা করতে পারবে না। কিছু কিছু সমস্যা আছে কেমন যেন হঠাৎ আসতেই ভালোবাসে এবং স্বভাবতই মানুষকে বেশ ঝামেলায় ফেলে দেয় ---- সমস্যা সমাধানের পথ হয়তো পাওয়া যায়,কিন্তু তা বিচলিত মানুষগুলোর অনেক স্বপ্নই ভেঙ্গে দেয়। এই স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়া থেকে যে মানুষ উঠে দাঁড়াতে পারে, সে মোটামুটি একটা সাফল্যের পথে হাটতে পারে, অন্যথায় ডুবে যেতে হয় আকন্ঠ অন্ধকারে।কখনও জীবনের মানে বেঁচে থাকা আবার কখনও এর মানে আঁকড়ে থাকা। বেশীরভাগ মানুষই হয়তো জীবনে বেঁচে থাকতে চায়, কিন্তু সত্যিকার অর্থে তাকে বেশীরভাগ সময়েই জীবনকে আঁকড়ে থাকতে হয়।

জীবনের সবক্ষেত্রেই মুগ্ধতার একটা শেষ আছে। একটা সময় মানুষ তন্ময় হয়ে যা দ্যাখে, ঠিক পরমুহূর্তেই বা তার সেই সময়ের অন্যকারো একইরকম মুগ্ধতা তাকে ঠিক আগের মত আচ্ছন্ন করে না।হতে পারে সেটা, মানুষের নতুনের/ অজানার প্রতি অনির্বচনীয় আকর্ষণ বা আনন্দ কিংবা অবস্থান - কাল - পাত্রের প্রভাব ; আসলে মানুষের নিজের মতোই, সব বোধগুলোরও একটা সমাপ্তি থাকে, হয়তো বৃহৎ অর্থে নয়।
সমস্ত জীবন সব মানুষের সব সম্পর্ক একই রকম থাকে না, সম্পর্কের ধরণ পাল্টায়, বোধ পাল্টায়, উপলব্দি পাল্টায় এবং সর্বোপরি একটা সময় পুরো জীবনের কাঠামোটাই বদলে যায়। এই এতসব পরিবর্তনের পথে ঠিক কতগুলোর ( পরিবর্তন) জন্য মানুষ তৈরি থাকে? হিসাবের হয়তো এক শতাংশ, আর বাকী বিশাল পরিবর্তনের সাথে মানুষ ক্রমশ অভিযোজিত হয়ে ওঠে। তাই কখনোকখনো মনে হয়, জীবনের সত্যিকার কোনো মানে নেই, মৃত্যুটার মতোই। জীবনের একান্ত সময়গুলো কেবল বিক্রি করা জীবনের প্রয়োজনেই।

কিছু প্রাণী আছে যারা সঞ্চয় করে, অবশ্য তারা কেবল তাদের দুর্দিনের কথা ভেবেই সঞ্চয় করে হয়তো। হতে পারে এদের বুদ্ধিবৃত্তি কম বলেই তা করে। অন্যদিকে কেবলমাত্র মানুষই সঞ্চয় করে প্রথাবিরোধী ভাবে, দুর্দিনের হিসেবে একটা জৈবিক তাড়না হয়তো আছে,কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এই সঞ্চয় প্রক্রিয়া মানুষের নেশা হয়ে দাঁড়ায়। একটা দূরদৃষ্টি হয়তো মানুষের আছে, কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এই দৃষ্টি প্রসারিত হয় না, সর্বোচ্চ এক প্রজন্মান্তর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে।তাই মানুষের এই সঞ্চয়, হস্তান্তরের চেয়ে খুব বেশী কাজে লাগে না।

সময় অত্যন্ত দ্রুত চলে যায় আর তার সাথে সাথে পরিবর্তনের স্রোতে রচিত হয় ব্যবধান, একজনের সাথে অপরজনের, অবস্থানের সাথে অবস্থানের এমন কি ব্যক্তিগত মানসিক সত্ত্বায়। এর ব্যতিক্রম প্রায় অসম্ভব --- কারণ বিশ্বভ্রমাণ্ড যে কটি মুল ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে এ প্রক্রিয়াটি তার অন্যতম। অতিক্ষুদ্র ক্ষমতার মানুষ কিভাবে এর মুলসুর পাল্টাবে।হয়তো তার প্রয়োজনও অতটা নেই। যদিও ব্যাপারটা বাস্তবিকের চেয়ে মানসিক ভাবেই মানুষকে দগ্ধ করে বেশী।

বাস্তবিকভাবে আমরা সভ্যতার যে উৎকর্ষতার দাবি করি, প্রকৃতপক্ষে তার পরিমান খুব সামান্য। সভ্যতার প্রারম্ভিক ধাপের পরবর্তী ধাপেই আমরা এখনও বর্তমান। এখন অবশ্য আমরা মুখোশ ব্যবহার করে আমাদের প্রকৃত অবস্থান আড়ালে রাখতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।আর তাই এখনো এখানে সবল আরো পরিপুষ্ট আর দুর্বল অত্যাচারিত হয়। যা কিছু গঠনের কথা বলি বা করি তা মুলত বাইরের, মানসিক গঠন পরিবর্তনের চেষ্টা কারো মাঝেই তেমন প্রবল নয়। আসলে আমাদের চরিত্রগত খারাপদিক গুলো বেশীর ভাগপ্রয়োজনে সময় প্রাধান্য পেয়ে এসেছে এবং এখনও পাচ্ছে।

মানুষের অবস্থানটাই অনেকক্ষেত্রে কিংবা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে তার আচরণ নির্ধারক। তার পরিচিত পরিবেশের অভ্যস্ত আচরণ তাই অনেকক্ষেত্রে অপরিচিত জায়গায় তার অস্বস্তির কারণ হয়ে দেখা দেয়। অবশ্য প্রতিনিয়ত অবস্থানের পরিবর্তন মানুষকে প্রাথমিক অবস্থা থেকে অনেকটাই বদলে দেয়। মানুষের কাছে অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ কখনোই বর্তমানের মতো গুরুত্ববহ হয়ে উঠতে পারেনা। যদিও মানুষ নষ্টালজিক হয় অতীতমুখীতায় আর আশাবাদী বা আশংকিত হয় ভবিষ্যৎ নিয়ে, কিন্তু সজ্ঞাত ভাবেই সে তার বর্তমানেই বসবাস করে। মানুষ যেভাবে যেখানেই থাক,সেখানকার পরিবেশ পরিস্থিতি, প্রয়োজন অপ্রয়োজন, এমন কি ছোটখাটো ঘটনা মানুষকে যতটা আলোড়িত করে, সত্যি বলতে কি অতীত কিংবা ভবিষ্যতের ( নিকট ভবিষ্যৎ ছাড়া) কোনো ঘটনার স্মৃতি বা কল্পনা তাকে এতটা আলোড়িত করে না। মানুষের পারিপার্শ্বিকতা তার মানসিক অবস্থানের অনেকটাই ছাপ ফেলে। তার উদ্বিগ্নতা, আনন্দ, বেদনা এবং অস্থিরতা তার পারিপার্শ্বিক ছোট খাটো অনেক ঘটিত ঘটনা দিয়েই বহুলমাত্রায় আলোড়িত হয়, যা আসলে না হলেও পারতো। কারণ এইসব সামান্য ঘটনাগুলো সচেতনভাবে চিন্তা করলে সে খুব সহজভাবেই অতিক্রম করে আসতে পারে / পারতো।

মানুষ যদি কোথায়ও শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে, তবে সে সেই অবস্থানেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে অবস্থানের পরিবর্তন তার কাছে বেদনার মনে হলেও, ধীরে ধীরে সে তার নুতন অবস্থানে অবস্থা অনুযায়ী অভিযোজিত হয়ে যায়। যদি সে চরমতম দুঃসময়ও পার করে তবুও একটা পর্যায়ে অভ্যস্ততার জন্য মাঝে মধ্যে আক্ষেপ ছাড়া আর তেমন কোনো দুঃখবোধ তাকে তাড়িত করে না। তবে প্রতিটি অবস্থানের উপলব্দি বোধ সবসময় নির্দিষ্ট। নির্দিষ্ট অবস্থানের এ বোধের কতটা মানুষ উপলব্দি করতে পারে বা পারবে তা নির্ভর করে, তার মানসিক গ্রহণ ক্ষমতা ও পরিপূর্ণতার উপর।

প্রতিটি মানুষ আলাদা। পারস্পারিক সহবস্থানে থেকে মানুষেরা হয়তো অনেক কিছুই করতে পারে কিন্তু তা একক ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেয়ে কতটা বেশী বা কম তা অবশ্য প্রশ্ন সাপেক্ষ। মানুষের ক্ষমতার ব্যবহার নির্ভর করে তার নিজ ক্ষমতার সম্যক ধারণার উপর, অন্যথায় ক্ষমতার পরিপূর্ণ ব্যবহার হয় না কিংবা অপব্যবহার হয়। যদিও বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ তার নিজ সম্পর্কে পুরোটা অবগত নয়।

একজন মানুষের পক্ষে নিজের দোষ খুঁজে বের করা যতটা কঠিন, তার চেয়ে অনেক কঠিন অবগত দোষগুলো শোধরানো। কারণ, বহুদিন যাবৎ কোনো কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে, সে অভ্যাসকে অনভ্যাস করার যে চেষ্টা, সেটা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং কষ্টকর। যদিও এটা একটা দীর্ঘমেয়াদী বিষয়, তবুও এর শুরু করাটাই বেশী কঠিন। একটা প্রক্রিয়া যদি আরম্ভ করা গেলে, তার গতি চালু রাখাটা তুলনামূলক ভাবে সহজ। কিন্তু সে সহজ পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য, যে কঠিন ধাপটি পার হওয়া প্রয়োজন তা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দুঃসাধ্য ভেবে, বেশীরভাগ মানুষ তার দোষগুলো পরিত্যাগ করে বা করার চেষ্টা করে একজন পরিপূর্ণ সুস্থ মানুষের সৌন্দর্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে না সহজেই। সত্যিকার অর্থে যা মানুষের বাস্তবিক ভাবে নেই কিন্তু কল্পনাবিলাসী হয়ে চিন্তা করে থাকতে পারত, কখনো কখনো তার অপ্রাপ্তিও মানুষকে দুঃখ দেয়। " সাফল্য সবাই চায়, তবে সাফল্যের চাষ যে পরিশ্রম ও দুঃখ, সেটা ভোগ করতে পারে কয়জন? "

একমাত্রিক একটা জীবন কাঠামোতে চলতে চলতে মানুষ খানিকটা অভ্যস্ত হয়ে যায়, মনের বেশীরভাগ অংশই হয়তো এই কাঠামো মেনেও নেয় কিন্তু হঠাৎ যদি এই অবস্থানেই অন্য কোনো সুযোগ বা কোন সম্ভব কল্পনার সম্ভাবনার তৈরি হয়, তখন মানুষ তার নিজ অবস্থানে অস্থির হয়ে ওঠে, এবং একটা অবস্থানগত পরিবর্তন আশা করে। পরিবর্তন যদি না হয়, ক্রমশ সে আবার মানিয়ে নেয়, অনেকটাই শান্ত পুকুরে একটা ছোড়া ঢিলের তরঙ্গ মিলেয়ে যাওয়ার মতো। তবে, তীব্র ঘূর্ণি যে তৈরি করতে পারে সে ই পারে ক্রমাগত জীবন পাল্টাতে, পারে একজীবনে অনেক জীবনের স্বাদ নিতে।
মানুষেরা অবস্থানগত পরিবর্তনে পরিবর্তিত হবে স্বাভাবিক তবে মানুষের এই পরিবর্তন নিজেরাও কখনো সাথেসাথে বুঝতে পারে না, হঠাৎ একদিন সে আবিষ্কার করে যে, প্রারম্ভিকতা থেকে সে এক পরিবর্তিত, আলাদা মানুষ। কিন্তু নিজস্ব পরিবর্তনের কারণেই সে আর অবাক হয়না তখন।

যে ভাবেই ব্যাখ্যা করা যাক না কেন, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষের চাহিদা ব্যাপারটা একটা বস্তুকেন্দ্রিক ব্যাপার। এটা ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত উন্নতির সোপান হিসেবে কাজ করে, যতক্ষণ এই ব্যাপারটা মানুষের লোভের সীমারেখা অতিক্রম না করে। এই সীমানা যদিও সবার জন্য এক নির্দিষ্ট অবস্থানের ধ্রুব নয়, কিন্তু সীমানা অবশ্যই একটা আছে ; এবং এই সীমানা যে মানুষেরা জানে না তাও নয়, তবুও কি এক মোহে জেনে বুঝেই তারা এই সীমানা অতিক্রম করে।এই অতিক্রান্ত মোহ মানুষের সবচেয়ে প্রথমে যে ক্ষয়/ ক্ষতি করে তা হলো, মনুষ্যত্ব ধবংস করে দেয়া। একটা মোহনীয় ফাঁদে স্বেচ্ছায় ধরা দিয়ে, নিজের অজান্তেই মানুষ, মানুষ থেকে অমানুষ হয়ে যায়।
আসলে সব কিছুর জন্যেই কিছু সামঞ্জস্যতা প্রয়োজন। অন্য কারো সাফল্য বা ব্যর্থতা দেখে, বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। জীবন হতে পারে একটা পথের মতো, প্রতিটি জীবনপথ প্রত্যেকের জন্যেই আলাদা। এই রাস্তার প্রতিটি অচেনা বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন অনিশ্চয়তা, সাফল্য বা ব্যর্থতা অপেক্ষা করে আছে। এই পথে চলার জন্যে যদি কিছু ছক বা প্ল্যান করা যায় তবে নিজের অবস্থানের সাথে পারিপার্শ্বিকতার একটা সামঞ্জস্য অবস্থান তৈরি করা সম্ভব। এতে করে মানুষ সফল হবেই ( যদিও সফলতা ব্যাপারটাই একটা আপেক্ষিক বিষয়) এটা বলা যায় না, তবে তাতে করে মানুষের নিজের কাছে গ্রহনযোগ্যতা যে বাড়বেই এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

যে জাগতিক দুঃখ কষ্ট মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে, তার প্রায় বেশীরভাগ অংশ থেকেই, মুক্ত থাকা / হওয়ার উপায় হলো আত্মনিয়ন্ত্রণ। ব্যাপারটা অত্যন্ত কঠিন, এজন্যই যে, বিশেষকরে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ নিজেকে নিজের কাছে ছাড়া, অন্যান্য আনুসাঙ্গিক বিষয়ের কাছে নিজেকে সমর্পণ করে এবং দুঃখজনকভাবে সত্য হলো একটা পর্যায়ে মানুষ ওই বিষয়গুলো দ্বারা এতটাই প্রভাবিত হয় যে, নিজে তখন নিজের কাছে গৌণ হয়ে যায়, নিজের অবস্থানের এই পরাজয় / ছোট হয়ে যাওয়া, সহ্য করতে কোনোভাবেই প্রস্তুত থাকে না মানুষেরা আবার নিয়ন্ত্রণহীনতার চর্চার জন্য, সত্যিকার বিপদে বেশীরভাগ মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, দিশেহারা হয়ে যায়, সর্বোপরি সে তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে, প্রভাবিত হতে থাকে এবং আরো বেশী পঙ্কিলতায় ডুবে যায়।

যে কোনো কাজে, বিশেষকরে সৃষ্টিশীল কাজে, সফলতা না পাওয়ার জন্য অনভ্যাস অবশ্যই একটা বড় ব্যাপার।অনেকবৎসরের তৈরি হওয়া একটি অভ্যাস যদি পরর্বতী আরও অনেক বৎসর, তবে দক্ষহাতও ক্রমশ তার দক্ষতা হারায় এবং ব্যাপারটা পুনরায় শুরু করার ব্যাপারে অনাগ্রহী করে তোলে মানুষকে। আর মানুষ পড়ে অতীত আর বর্তমানের টানাপোড়নে।

জীবনের গতিপথ সর্বদা একমুখী আর বেশীরভাগ সময়ের জন্যেই এটা মনেহয় একঘেয়ে একটা যাত্রা,মাঝেমধ্যে কিছু আনন্দপাঠ আসলেও তা পিছিয়ে পড়া পথেরই একটা অংশ হয়ে যায়, চাইলেও পেছানো সময়ে ফেরা যায় না, কিংবা যদি ফেরার সুযোগ পাওয়া গেলেও ঘটনা তার মুগ্ধতা হারাতো।
যদিও প্রতিনিয়ত পাল্টায় সব............ প্রেম বদলায়, জীবন বদলায়, অবস্থান বদলায় আর শেষ পর্যন্ত বদলায় ব্যক্তিসত্ত্বা। এই পালাবদলের খেলায় একটা মানুষ বদলে কখন যে অন্যমানুষ হয়ে যায় তা সে নিজেও জানেনা। রূপান্তরিত প্রতিটি ধাপের পরর্বতী আরাধ্য ধাপে পৌছতে পারলে সেটাও আকর্ষণহীন হয়ে যায়। হয়তো এটাই এগিয়ে যাওয়া। তবুও বড় ব্যাতিক্রমহীন মানব জীবন।

হে মানুষ, তাকাও তোমারই দিকে আর দেখ কী অদ্ভুত সুন্দর তোমার গঠন; এবার একবারমাত্র ভাবো তোমার মৃত্যুর কথা, তোমার সবকিছুই আছে যথাস্থানে অথচ তুমি নেই। কেন এত গর্ব তোমার? কিসের এত অহঙ্কার? অতিক্রান্ত সময়ে কি কখনো ফিরে যেতে পারো তুমি কিংবা নিশ্চিত বলতে কোথায় তোমার গন্তব্য অথচ তুমি বড়াই করো তোমার অবস্থানের, তোমার চতুরতার,অন্যকে ফাঁকি দেবার‍ ফিকির তোমার সারাক্ষণ কিন্তু তুমি কি জান না এ তোমার নিজকেই ফাঁকি দেয়ার এক উপলক্ষ্য বা আড়াল। স্মরণ কর নিজের মহাপ্রয়াণের আর অনুভব কর তোমার ক্ষুদ্রতা এবং নিজেকে সমর্পণ কর মানুষের কল্যাণে।

দায় মোচনঃ মানবচরিত্র বড় জটিল, রহস্যময় এবং প্রত্যেকের জন্যেই আলাদা। এখানে যা বলা হয়েছে তা একান্তভাবেই আমার ব্যক্তিগত মতামত। আপনাদের দ্বিমত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। নিজের মত ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করার চেষ্টা ছিল, যদি কিছু মুলসুর ছোঁয়া যায় সেলক্ষ্যেই।

যারাই কষ্ট করে পড়েছেন, সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবাই।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×