ল্যাপটপের (Laptop) নাম শুনতে আমরা অভ্যস্ত। আবার নোটবুক (Note Book) ও নেটবুকের (Net Book) নামও শুনে থাকি। অনেকেই ল্যাপটপ নোটবুক আর নেটবুকের মধ্যে এমন তালগোল পাকিয়ে ফেলি যে অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়ে যাই
ল্যাপটপ আর নোটবুক
আসলে ল্যাপটপ আর নোটবুক একই জিনিস। এগুলোর কোনো পার্থক্য নেই। যেমন ধরুন অ্যাপলের ল্যাপটপের নাম ম্যাকবুক, বেনকিউ তাদের উত্পাদিত ল্যাপটপকে বলে জয়বুক। তার মানে এই নয় যে ম্যাকবুক বা জয়বুক নতুন কোনো ধরনের মোবাইল কম্পিউটার। বাস্তবে মোবাইল কম্পিউটারগুলো শুধু উন্নত বিশ্বে নয়, এখন আমাদের দেশেও নোটবুক হিসেবে ব্যাবহার হচ্ছে। আমরা আজ প্রায় সব ধরনের লেখাপড়ার কাজ ল্যাপটপ কম্পিউটারেই করতে পারছি, যা কিনা আগের খাতা কলমের বিকল্প হিসেবে। তাই অনেক ক্ষেত্রেই ল্যাপটপকে নোটবুক হিসেবে অভিহিত করা হয়।
নেটবুক
অনেকেরই ধারণা, নোটবুক (Notebook) আর নেটবুক (Netbook) একই জিনিস। বাস্তবে তা নয়। এটা মোবাইল পিসির একটা ক্ষুদ্র সংস্করণ আর মোবাইল পিসিগুলোকে আমরা হয়তো সবাই ল্যাপটপ বলেই ডাকি। এর পোর্টেবিলিটি ‘ল্যাপটপ বা নোটবুক’ অপেক্ষা অনেক বেশি (বহন করার সুবিধার্থে ও আকার অনুযায়ী)। এক্ষেত্রেও উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, যেমন ধরুন অ্যাপল তাদের নেটবুকের নাম দিয়েছে আই-বুক। অর্থাত্ বিভিন্ন কোম্পানি তাদের স্বকীয়তা প্রকাশের জন্য বিভিন্ন নামে বাজারজাত করতে পারে কিন্তু তাদের প্লাটফর্ম কিন্তু একই থাকছে।
এদের তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য
প্রসেসর : নেটবুক-ইন্টেল অ্যাটম/সেলেরন Gg/Via c7/ARM (কম শক্তিসম্পন্ন ও এনার্জি সেভিং)
ল্যাপটপ/নোটবুক : সেলেরন এম(পুরনো মডেলের ক্ষেত্রে)/ডুয়াল কোর থেকে কোর আই ৭ সহ সব
আধুনিক প্রসেসর (অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডেস্কটপের মতো)
স্ক্রিন সাইজ : নেটবুকে সাধারণত ৮-১১.২”
ল্যাপটপ/নোটবুক : ১২.১-১৯”
অপটিক্যাল ড্রাইভ : নেটবুকে থাকে না।
ল্যাপটপ/নোটবুক : সিডি রম থেকে শুরু করে ব্লু-রে (পর্যন্ত)
গ্রাফিক্স : নেটবুকে বিল্ট-ইন (সাধারণ মানের)
ল্যাপটপ/নোটবুক : গ্রাফিক্স কার্ড থাকে (সব ক্ষেত্রে নয়)
কানেক্টিভিটি : দুটোতেই একই ধরনের সুবিধা থাকে (যেমন—ওয়েব ক্যাম, ওয়াই ফাই, ব্লুটুথ, ল্যান
আজকাল কোনো কোনোটিতে বিল্ট-ইন ঊউএঊ/৩এ/৪এ ডরসধী মডেম থাকে) তবে নেটবুকে ইউএসবি/
ভিজিএ/এইচডিএমআই ইত্যাদি পোর্ট কম থাকে।
— ল্যাপটপ/নোটবুক বেশি থাকে। [সাধারণত ভিজিএ/এইচডিএমআই পোর্ট উভয় ক্ষেত্রেই একই ধরনের থাকে]
ওজন : নেটবুকের ওজন ১.৫ কেজির কম হয়। ল্যপটপ/নোটবুকের তুলনামূলক বেশি ওজন হয়।
চার্জিং ব্যাকআপ : — নেটবুকের ব্যাকআপ টাইম বেশি হয়। ৪ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
— ল্যাপটপের/নোটবুকের ব্যাকআপ তুলনামূলক কম হয়। ২ ঘণ্টা থেকে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত।
কার্যক্ষমতা
— নেটবুকের ক্ষমতা খুবই কম। সাধারণ মাল্টিমিডিয়া ফাংশন ও অফিসের ছোটখাটো কাজ করা ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে এই কার্যক্ষমতা সীমাবদ্ধ। উচ্চমানের গ্রাফিক্সের কাজ করা যায় না।
— ল্যাপটপ/নোটবুকের কার্যক্ষমতা অনেক বেশি হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডেস্কটপ পিসির সমমানের হয়ে থাকে।
নেটবুকের সুবিধা : ওজনে কম ও আকারে ছোট, তাই সহজে বহনযোগ্য। একটানা দীর্ঘক্ষণ ব্যাকআপ দেয়। দামে সস্তা।
নেটবুকের অসুবিধা : নতুন পার্টস্ সংযোজন করা যায় না। অর্থাত্ কনফিগারেবল নয়। উচ্চমানের কাজ করা যায় না। অনেক সময় প্রিলোডেড ওএসের চেয়ে আপগ্রেড করা যায় না। অনেক সময় সফ্টওয়্যার ব্যবহারের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা থাকে।
ল্যাপটপ/নোটবুকের সুবিধা : কনফিগারেবল, র্যাম, হার্ডডিস্ক প্রভৃতি বাড়ানো যায়। অনেক ক্ষেত্রেই শক্তিশালী গ্রাফিক্সের কাজ করা যায়। গেমিং ল্যাপটপ বাজারে পাওয়া যায়।
ল্যাপটপ/নোটবুকের অসুবিধা : দাম অনেক বেশি (নেটবুকের তুলনায়), আকারে বড় আর ওজনেও বেশি। তাই নেটবুকের তুলনায় বহন কিছুটা কঠিন। ব্যাকআপ টাইম অনেক কম হয়।