somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান

১২ ই মার্চ, ২০১৩ ভোর ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আমি রেশমিকে ভীষণ ভালোবাসি। ওকে ছাড়া এক মুহূর্ত কল্পনা করতে পারিনা। আমার বেঁচে থাকার প্রেরনা এই রেশমি। তোমাকে আমি এই পৃথিবীতে না পেলেও তুমি জেনে রেখ তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে যেদিন আমার লাশ যাবে তুমি একটু হলেও কাঁদবে, তারপর হয়ত জানি তুমি পৃথিবীতে সংসার করবে নিত্য আনন্দে কিন্তু যেনে রাখ আমি এক বিন্দু পরিমান রাগ করব না কারন তোমার আনন্দ আমার আনন্দ, তোমার আনন্দে আমি মিশে আছি, আমি যে সত্যিকারের শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।

এভাবে ধরণীর প্রেম ছোঁয়া গোলাপি শাড়িতে;
তুমিত আমরন লাগবে শুভ্র,
প্রেমিকার মত ।
এভাবে চোখে যদি কোনে – কোনে চেয়ে থাকো ;
মৃত্যুও হেমন্তের বাতাসে সিক্ত অশ্রু খুঁজে বেড়াবে ।
ওভাবে চুলগুলো বেঁধে রেখনা খোঁপায় গেঁথে;
বাতাসও মৃত্যুর মরনে শোঁকতাপ করবে ।
ঠোঁটে ঘুমন্ত জীবন তোমার,
নারী তুমি পূর্ণ নৈসর্গিক প্রেম নিয়ে;
এভাবে বসে থেকনা;
আমি পূর্ণিমা খুঁজে পাবোনা ধরণীতে ।
দৈহিক রূপ তোমার কলিকার মত,
গোলাপি – সাদা রূপ মিশে একাকার,
তোমাকেই প্রেম শিখায়েছে;
আমি ব্যাকুল তাই অধিক হরসে ।
আমার বুকে কি কাকনের বাঁধনে;
হাত রেখে, ভালোবাসা শেখাবে – রেশমি তুমি । ।


রেশমি আমাকে অনেক বোঝাল বলল, “প্লীজ লক্ষ্মীটি শোন আমরা পরে মিটমাট করে নিব। এটা নিয়ে আবার মন খারাপ করতে হয় নাকি বোকা ছেলে !!! জীবন আসলে অনেক জটিল একটা যায়গা। তাই এখানে আবেগের চেয়ে বাস্তবতার মুল্য বেশী। ধর কয়েক বছর প্রেম করার পর আমি বিয়া করতে চাইলে তোমার টাকা নেই , কি করবে তখন, ভীরু পুরুষের মত বলবে আমি দুঃখিত। তাহলে তখন আমাকে হারাবে আর অমানুষ না হলে সারা জীবন কাঁদবে। আর যদি সেই অবস্থায় বিয়া করেও ফেলি আমরা বড়জোর বছর খানেক ভালো থাকব তারপর পৃথিবীর সকল যন্ত্রণা আমাদের। সবচেয়ে বড় কথা প্রিয় মানুষের মন কি চায় যদি সত্যি ভালোবাস বুঝবে , আর যদি সত্যি বোঝ তানা করতে পারলে খুব কষ্ট পাবে । নিজেকে অসহায় লাগবে। সারা জীবন নিজের কাছে ছোট থাকবে যদি তোমার আত্নসম্মান থাকে তাহলে। তাই বলি অভাব যখন দরজায় এসে দাড়ায় ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়”

আমি গেয়ে উঠলাম;

যখন আমার ঘরেতে আঁধার নেই এক ফোঁটা কেরোসিন
পাওনা দারের অভিশাপ ঝেলে বুড়ো বাপ
তখন আমি তোমার সাথে পারবনা খেতে চাইনিজ বা চাওমিন
হেই তুমি কি আমায় ভালোবাস !
যদি না বাস তবে পরোয়া করিনা !!!


এবার বুঝি রেশমির অভিমান ভাঙল সে আমায় অবাক করে দিয়ে বলল, “আমি তোমাকে কত্ত ভালোবাসি,কোনোদিন টাকা চেয়েছি তোমার কাছে? সেদিন তুমি আমাকে এটা সেটা কিনে দিলে কতবার নিষেধ করলাম তবুও শুনলে না তুমি। আর খালি মাঝে মাঝে নিচে যেতে ভালোলাগে না বলে তোমাকে দিয়ে ফ্লেক্সি করাই, আর মাঝে মাঝে তোমার সাথে একটু লান্চ করতে যাই,আর একটু এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করি,এইতো। তোমার যদি খারাপ লাগে তো বলে দিও।আমি অন্য কারো সাথে বের হবো”

আমি তখন ক্ষোভে শ্লোগানে শ্লোগানে কাঁপিয়ে তুললাম আকাস - বাতাস

ভ তে ভালোবাসা
তুই হাহাকার, তুই হাহাকার !!
ভ তে ভ্যালেন্টাইন
তুই হাহাকার, তুই হাহাকার !!


রেশমি আমাকে বলল, “তুমি কিন্তু এসব কথা বলবা না। একে তো আমার জন্মদিনে কম দামি মোবাইল কিনে দিছো।হোক না হয় শুধু তোমার সাথে কথা বলার জন্য,তাই বলে কি একটা আই-ফোন কিনে দেওয়া যেত না ?”

আমি গাইলাম;

তোমার জন্য মরতে পারি ও সুন্দরী
তুমি হৃদয়ের তালা
মানিব্যাগের পুরুত্ব নয় যে আমার ভারী
কিনে দেব তোমায় ফুলের মালা
কন্যা ফিরা চাও, চল আমরা ভালোবাসি


রেশমি আমাকে শোনাল;

হায়রে হায় কান্ডারী শুনালো এ কোন কথা
কথা শুনে হৃদয়ে জেগে উঠলো পুরানো ব্যাথা
চাইনা আমার মানিব্যাগ ,চাইনা ফুলের মালা
বাসবো ভালো তোমায় যদি দাও কিনে শাড়ি ,চুড়ি আর বালা


আমি শেষে গাইলাম;

কিনে দিব রেশমি চুড়ি
চলে যেওনা বাপের বাড়ি
আলতা দেব, কাজল দেব আনব গরুর গাড়ি
তবু কেন প্রেমের জন্য কর বাড়াবাড়ি


আমার তখন শুধু মনে পরল;

আমার বৌ বলেছে মরতে হবে জীবন রাখতে পারব না
রেল লাইনে বডি দেব মাথা দেব না






কিছু তর্ক-বিতর্ক

কেউ কেউ মনে করেন ছেলেদের ভালোবাসা নাকি মেয়েদের অর্থ উপার্জনের ক্ষমতা ও মেয়ের বাবার টাকার সমানুপাতিক।যেমন আজকালকার ছেলেরা প্রেম করে মেয়ে ভালো কোথাও চাকরী করে কিনা সেটা দেখে । ছেলের যেটুকু যোগ্যতা তার দ্বিগুণ যোগ্যতার মেয়ে খুজে প্রেম অথবা বিয়ে করতে। ঠিক তেমনি ছেলের পরিবারের আর্থিক অবস্থা যা ঠিক তার দ্বিগুণ ভালো আর্থিক অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের মেয়েকেই বর্তমানে ছেলেরা প্রেম অথবা বিয়ে করতে চায়। আজকালকার ছেলেরা বউ চায় কর্মজীবী নারী । মেয়েকে ঘরে বসে ঘরকন্যা করতে দিতে ছেলেরা একদম নারাজ। অনেকটা কাজের বিনিময়ে খাদ্য টাইপ ।

আবার দেখা গেছে কেউ কেউ মনে করেন মেয়েদের ভালোবাসা যদি ছেলেদের মোটা মানিব্যাগ এর উপরই নির্ভর করতো তাহলে তো আর কেউ স্কুলে বা কলেজে সমবয়সী কারো সাথে প্রেম করতো না যেটা আজকাল অনেক কমন........ বরং মেয়েদের ভালোবাসা নাকি ছেলের মানিব্যাগের পুরুত্বের সমানুপাতিক। পৃথিবীর সেরা সেরা প্রেমিকারা, রাধা, লাইলী, শিরি, জুলেখা, জুলিয়েট সবাই প্রেমের জন্য ঘর ছেড়েছে। প্রেমিকের হাত ধরে রাস্তায় আসতে যে মেয়ে রাজি না, তার প্রেম দুই নাম্বার।অনেক ছেলেই দেখা যায় যে বড়লোকের মেয়ে দেখে প্রেম করে আর মেয়ের থেকে টাকা নেয় এবং শ্বশুরের টাকায় বড়লোক হবার স্বপ্ন ও দেখে...সেখানে কি এটা বলা যায় না যে..ছেলেদের ভালোবাসা মেয়ের বাবার মানিব্যাগের পুরুত্বের সমানুপাতিক রাধা কি চেয়েছিল চিকেন ফ্রাই খেতে? জুলিয়েট কি চেয়েছিল শপিংমলে যেতে? যে মেয়েকে শপিং করার টাকা দেয়ার জন্য খালি পেটে থাকে, টাকা ফুরালে সেই মেয়েও ফুরুৎ করে; ছি ছি, আধাপেট খাওয়া ছেলেরা গার্লফ্রেন্ড এর শপিং বজায় রাখার জন্য শেষমেষ কি তবে রোজা রাখা শুরু করলো নাকি? মেয়েদেরকে ভালবাসা দিয়েই জয় করতে হয়।





এমন তর্ক-বিতর্কের পর আমার কেবলই মনে হল আমার নিজের প্রেম এবং বিয়ের ইতিহাস। আমি প্রায় দশ বছরের কিছু বেশী সময় প্রেম করার পর বিয়ে করেছিলাম সম্পূর্ণ বেকার অবস্থায় ঘর থেকে পালিয়ে। আমাদের দুজনের পরিবার উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবার ছিল। তবে বিয়ে করে যখন আমি প্রায় এক বছর বেকার জীবন যাপন করেছি পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়ে আমার সদ্য বিয়ে করা স্ত্রীকে সাথে নিয়ে পথে পথে ঘুরেছি তখন দেখেছি প্রেম কি আর ভালোবাসার জন্য দুজন মানুষ কি করতে পারে। তাই ভাবছি আমার নিজের জীবন থেকে নেয়া সেই অদ্ভুত রকম প্রেম-ভালোবাসার কাহিনী নিয়ে একটি পোষ্ট দিব। সেই পোষ্ট পড়ার জন্য অগ্রিম দাওয়াত রইল এই সামহোয়্যার ইন ব্লগের সকল সহ ব্লগারগনের প্রতি।



পোস্টটি উৎসর্গ করলাম ব্লগার না পারভীন কে কারন উনি আমাকে বলেছিলেন, “রাজনীতি মুক্ত ভাল ভাল লেখার প্রত্যাশায় রইলাম”

এই পোষ্টটির জন্য সম্পূর্ণ রূপে আমি কৃতজ্ঞ ব্লগার কাল্পনিক_ভালোবাসা ভাইয়ের কাছে।

কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - ১ম পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - ২য় পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - ৩ য় পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - চতুর্থ পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - পঞ্চম পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:১৪
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×