somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - পঞ্চম পর্ব

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আগের পর্বগুলো যারা ধারাবাহিক ভাবে পড়ে আসছেন তারা হয়ত ধরেই নিয়েছেন আহারে আমি হয়ত প্রেমের এক মহান সৎ আদর্শবান মানুষ। না ঠিক সেইরকম কিছুই নয়। আমিও অন্যান্যদের মতই খুব সাধারন একজন প্রেমিক। আমারও রক্ত মাংসের শরীর। জীবনে দুঃখ নিয়ে বেঁচে থাকার মত বোকা আমি নই। যখন দেখলাম যাকে এত ভালোবাসি সেই কিনা আমার ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করে অন্যের হাত ধরে চলে গেছে দূরে আমি তখন শিল্পী আসিফের মত গাইতে পারিনা ও প্রিয়া, ও প্রিয়া তুমি কোথায় ?............ অনেক নষ্ট করেছি জীবনটাকে মাদকদ্রব্যের মতন জীবন নাশক ভয়াবহ সব কিছু সেবন করে; কিন্তু আর না আমাকেও জীবন গড়তে হবে। আমি নেশার জগত থেকে ফিরে এলাম। এই স্বপ্ন থেকে জীবনে প্রেমের স্বরূপ বদলে ফেলার চেষ্টা করলাম। আর কবি জীবনানন্দর কাছে ক্ষমা চাইলাম। কবি লিখেছিলেন;

সুরঞ্জনা ওইখানে যেওনাকো
বোল নাগো কথা ওই যুবকের সাথে
কি কথা তাহার সাথে ?


আমি এমন ভাবে ভাবতে আর পারবনা হে কবি। আমি সব কিছু ভুলে নতুন রঙে জীবন সাঁজাতে চাই। আর তাই ঠিক করলাম এখন আমি ভার্সিটিতে পড়ছি আর এখানে নিশ্চয় মেয়ের অভাব হবে না। খুব আধুনিক এবং সেক্সি দেখে একজন মেয়েকে খুঁজে নিয়ে প্রেম করব কিন্তু তার জন্য নিজেকে বিলীন করে দেয়া যাবেনা। হায়রে আমার পোড়া কপাল যখন একদিকে রেশমি একজনকে ভালোবেসে সুখি হয়েছে অন্যদিকে এই অথর্ব প্রেমের সন্ধানে কেবল কাঙ্গালই হয়ে ঘুরে ফিরেছে। যাই হোক যেমন কর্ম তেমন ফল পেলাম।

আমি তখন ভার্সিটিতে প্রথম বর্ষের একজন দুর্দান্ত ছাত্র। পুরোপুরি অন্যরকম একটা ভাব ধরলাম। যেন আমি মেয়েদের পাত্তাই দেইনা কিন্তু কেউ হাসি মুখে কাছে এলে আবার ফিরিয়েও দেই না। আমার কয়েকজন খুব ভাল বন্ধু জুটে গেলো। তারমধ্যে বেশ কিছু মেয়ে বন্ধু ছিল। তাদেরই একজনের নাম শিমুল। আধুনিক যুগের মেয়েদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ঠিক যেন সেই আদি কালের শকুন্তলা। আহারে কি ভাবলাম আর কি হল ! ভাবলাম খুব আধুনিক সেক্সি দেখে একজন মেয়ের সাথে প্রেম করব শেষে কিনা জীবনে এলো শকুন্তলা। যাই হোক বিধির বিধান না যায় খণ্ডন। আমার প্রথম বর্ষের রেজাল্ট ছিল সেইরকম আলোড়ন জাগান। ব্যাস আমার পেছনে মেয়েদের লাইন লেগে গেলো। আমাকে একটু ওই নোট, সেই নোট কিংবা আরও কত যে নোট করে দেয়ার জন্য মিনতি আহারে ! কেউ ফাস্ট ফুডের দোকানে নিয়ে গিয়ে কিছু খেতে না চাইলেও খাওয়াত ভর পেট, আবার কেউ নিয়ে যেত এখানে সেখানে কত জায়গায় ঘুরতে এসি গাড়িতে করে। একদিনত একজন আমাকে তার হোস্টেলে নিয়ে গেলো। মহিলা হোস্টেল সেইরকম অভিজ্ঞতা হয়ে গেলো ওইদিন। তবে অন্যকিছু ভাবার কোন অবকাশ নেই। আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো তার নিজের হাতের রান্না করা ভুনা খিচুড়ি আর বেসম্ভব ঝাল ডিম ফ্রাই খাওয়াতে। পরে অবশ্য ওর সাথে আমার খুব ভাল বন্ধুত্ত হয়ে যায় যা এখনো অটুট রয়েছে। ওর কাছেই জানতে পারি যে শিমুল নাকি আমার প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে পুরোপুরি অতলে তলিয়ে গেছে। এখন আমাকে সেই অতলে ডুবুরী হয়ে ডুব দিয়ে তাকে উদ্ধার করতে হবে। আমিও আর কালবিলম্ব না করে উদ্ধার কাজে মনোনিবেশ করলাম। আহারে কি মায়া কি মমতা ! কি আঁচল বিছিয়ে দিল বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে ! কথায় আছে যে প্রেম করতে দুই দিন ভাঙ্গতে একদিন এমন প্রেম করোনা; আমিও কি অবুঝ এমন প্রেমই কিনা করে ফেললাম !

কত যে নদীতে নৌকা করে ঘুরেছি শিমুলের সাথে, কত যে বৃষ্টিতে ভিজেছি দুজনে একসাথে সেই সব রোম্যান্টিক স্মৃতি কি আজো ভোলা যায় ! শিমুল চোখে খুব কাজল পরত আর বৃষ্টিতে ভিজলেই সেই কাজল ধুয়ে ওর সুন্দর গোলাপি গাল দুটো বেয়ে পরত সেই কাজল আর আমার মনের মাঝে জন্ম নিত হাজারো গান সেই করুন চেহারার দিকে তাকিয়ে থেকে। একদিন ওকে বাসায় এনে হাজির করলাম। আমার মা তাকে পুত্র বধু মনে করে রিমান্ডে নিয়ে নিল। আর একটু হলে হয়ত ওর জান ফানা ফানা করে ফেলত। শেষে বাইরে এসে কেঁদেই ফেলল বলল তোমার মা আমার চৌদ্দ গুষ্টির খবর নিয়ে ছেড়েছেন কেন বলত ? আমি শুধু হাসলাম। কাহিনীর এখানেই শেষ নয় আমার সুখের দিনে আরও এক বড় রকমের সুখ এসে হাজির হল। আল্লাহ যখন দেন তখন নাকি ছাপ্পার ফাড়কে দেন ! আর হোলও তাই। আমি একবার আমার এক বন্ধুর সাথে ওদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ গিয়েছিলাম এক সপ্তাহের জন্য বেড়াতে। সেখানে আমার বন্ধুর এক ভাগ্নির সাথে পরিচয় হয় আমার। মেয়েটির নাম রুক্সি। দেখতে ঠিক যেন আমার মনের সেই অদ্ভুত বাসনার প্রতিফলন এই যুগের আধুনিক সেক্সি মেয়ে। আমি প্রথম দেখাতেই প্রেমে পরে গেলাম। আসলে প্রেম না খুব সম্ভব মোহ হবে হয়তবা। আসার সময় আমার ফোন নাম্বার দিয়ে এসেছিলাম। ততদিনে আমার হাতেও মোবাইল ফোন চলে এসেছিলো। তারপর কত রাত জেগে জেগে কথা হয়েছে রুক্সির সাথে এখন মনে হলে ভাবি সেইসময় বেকার থাকা কালীন এত মোবাইল বিল দিতাম কি করে ? ওহ মনে পরেছে আমি তখন অনেক গুলো ছাত্র পড়াতাম। বেশ ভালই রোজগার ছিল আমার সেই সময়। একদিকে দিনের বেলাতে শিমুলের সাথে প্রেম চলত অন্যদিকে রাতে ফোনে প্রেম চলত রুক্সির সাথে। এমন অস্থির পাগল প্রায় প্রেমের অভিনয় করতে করতে আমি যখন মাতাল প্রায় ঠিক সেই সময় আমার জীবনে এসে জুটল আরও এক কঠিন প্রেমলীলা।

আমার বড় খালার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম একবার প্রায় পনের দিনের জন্য। সেখানে এসেছিলো আমার আর এক খালার মেয়ে নিপা। মানে আমার খালাত বোন। তার রূপের বর্ণনা দিতে হলে শুধু বলতে হবে ভারতীয় চলচিত্রের নায়িকা মাধুরী দীক্ষিতের সাথেই তার রূপের তুলনা চলে। অবিকল দেখতেও মাধুরীর মতই। বয়সে আমার এক বছরের বড়। এক রাতের কাহিনী মনে হলে আজো আমি বেশ পুলকিত হয়ে উঠি। সেই রাতে ভীষণ ঝড় হচ্ছিল বাইরে। খুব সম্ভবত কালবৈশাখী ঝড় ছিল। আমার খালার বাড়িটি ছয় তলা পুরো ছাদে মোজাইক করা। নিপা বলল চল ছাদে যেয়ে ভেজা যাক। আমি বললাম এত রাতে ছাদে ভিজবি। আরে তাতে কি হয়েছে ভেজার জন্য দিন কি আর রাত কি ? আমিও ওর কথায় শ্বায় দিলাম। ছাদে যেয়ে দুজনে ভিজলাম প্রায় অনেক ক্ষণ। দুটি ভিন্ন লিঙ্গের মানুষ যখন রাতের বেলা এইভাবে বৃষ্টির শীতল পরশের মাঝে একাকার হয়ে যায় তখন পৃথিবীর কোন শক্তি আছে যে তাদেরকে একটু উষ্ণতা এনে দেবার জন্য ব্যাকুল না হয়ে উঠে ! আমার জানা নেই। আর হোলও তাই। ঠোঁটের সাথে ঠোঁটের স্পর্শ আর আকাশে বার বার বজ্রপাতের আলোক বিস্ফোরণ; কেউ যদি হেরোইন সেবন করে থাকেন তবে যেরূপ মাতাল লাগবে আমিও যেন তেমনি মাতাল হয়ে রইলাম সেই রাতে। সকালে ঘটল আসল বিপত্তিটি। আমরা দুইজন আর দুইজনের সামনে লজ্জায় যেতে পারিনা। কথা সেত হিরোশিমায় ফেলা সেই পারমানবিক বোমা ফেললেও বের হবার মতন অবস্থা রইল না। নিপা দুপুরে চলে গেলো আমাকে খুব খুব অবাক করে দিয়ে বিদায় বেলায় শুধু বলে গেলো, “তুই যদি বয়সে আমার বড় হতি অথবা সমানও হতি তবে তোকে আমি আমার জীবনের সবটা দিয়ে ভালোবেসে সুখি করতাম, ভালো থাকিস আমাকে ভুল না বুঝে যদি পারিস তবে ক্ষমা করে দিস” আমার তখন কেবলই মনে হল আরেকটি কালবৈশাখী ঝড় আমার সেই মুহূর্তে বড় বেশী প্রয়োজন ছিল। আমি সেই ঝড়ে ভিজে ভিজে খুব চিৎকার করে যদি কাঁদতে পারতাম!

আমিও সেই দুপুরে চলে এলাম খালার বাসা থেকে। পরদিন ভার্সিটিতে গেলাম এবং সেখানেও আমার জন্য অপেক্ষা করছিল আরও একটি ঝড়। আমাকে চমকে দিয়ে শিমুল তার বিয়ের একটি নিমন্ত্রন পত্র ধরিয়ে দিয়ে বলল আমাকে ওর বিয়েতে যেতেই হবে। কারন ওর সব বন্ধুরা নাকি বিয়েতে আসছে তাই আমি না গেলে একজন খুব ভাল বন্ধুর দোয়া সে কম পাবে। আমি এবার আর কাঁদলাম না শুধু হাসলাম খুব উচ্চ স্বরেই হাসলাম আর আমার হাতের মোবাইল ফোনটিকে খুব জড়ে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিলাম যেন ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে যায়।


কেন এত ! কষ্ট দিতে শিখেছ ?
কেন এত ! কাঁদাতে শিখেছ ?
কাছে এসো,
কথা দিও,
বুঝে নিও,
তোমাকে আমি ভালোবাসি,
শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।
মধুর স্মৃতিগুলো কেন বিধুর বিস্মৃতি হয়ে যায়;
বুঝেছে সেই,
যে ভালোবেসেছে কাউকে জীবনে একবার,
তারপর বহুবার।
ভালোবাসা যায় কি আমাকে ?
ভালোবাসা যায় কি তোমাকে ?
বলবে কি সময় করে এসে
আজকের এই সাঁঝের লগনে ।

কেন এত ! কষ্ট দিতে শিখিয়েছ ?
কেন এত ! কাঁদাতে শিখিয়েছ ?
স্রষ্টা তুমি,
বলবে কি আমাকে
স্বপ্নের মধুর ধূসরতায় এসে;
কাকে ভালোবাসা যায় ?
কাকেইবা ভালোবাসব আর কে আমাকে ?
যদি নাইবা কাঁদালে সুখের স্মৃতি দিয়ে
চোখের মায়াকে পূর্ণ করে,
ভালোবাসার বর্ণালীতে এঁকে সিক্ত ঠোঁটকে
যদি নাইবা হাসালে মধুর স্মৃতি দিয়ে;
তবে – তবে !
কেন এত ! কষ্ট দাও ?
কেন এত ! কাঁদাও ?
ভালোবাসার মাঝেও কেন কর এত ! সাম্যের ব্যবধান ?
কেন এত ! নীতি খোঁজো ?
কেন এত ! পৃথিবীর জঞ্জাল বাঁধো ভালোবাসার দেহে ?

তুমি কি পারনা আমার মত হৃদয় নিয়ে,
আমাকে ভালোবাসতে ?
তুমি কি পারনা আমার মত মন নিয়ে,
আমাকে ভালোবাসতে ?
অথচ ! তোমাকে আমি ভালোবাসি,
ঘুমের মত,
ঘুমের মত মায়াবী অলিক স্বপ্নে হারিয়ে।
তবু – তবু !
কেন এত ! কষ্ট দিতে শিখেছ ?
কেন এত ! কাঁদাতে শিখেছ ?
অথচ !
আমার এই দুচোখ শিখেছে,
শুধু তোমাকেই ভালোবেসে কাঁদতে।
আমার এই দুঠোঁট শিখেছে,
শুধু তোমাকেই ভালোবেসে হাসতে।



তবে হে প্রেম ভিখারি এবার তোমার প্রেমের ভিক্ষার স্বরূপ বদলে ফেল। তোমাকে দিয়ে আর প্রেম করা হবে না। এই সব ভাবছিলাম আর বার বার নচিকেতার সেই বিখ্যাত গানটি গাইছিলাম; হাজার কবিতা বেকার সবিতা, তার কথা কেউ বলেনা; সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা............। আমিও আমার জীবনের সেই প্রথম প্রেম ভুলতে পারি নাই। আমি সব কিছু ছেড়ে দিয়ে দীনের পথে অগ্রসর হলাম। দাঁড়ি রাখলাম বেশ বড় করে। পরিধান করা শুরু করলাম পাঞ্জাবী। শুরু করলাম পেন্টের নীচের অংশ টাকনুর উপরে গুটিয়ে পরা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে মসজিদে যেয়ে আদায় করা শুরু হল। তবে তাবলীগে যাই নাই। মসজিদে অনেকেই আমাকে বলেছিল চিল্লায় যাবার জন্য কিন্তু আমি যাই নাই কখনো। বাবা – মা, বন্ধুবান্ধব সবাই দেখি খুব অবাক হল আমার এই রূপ দেখে। কিন্তু আমি অবিচল থেকেছি। দেখা যেত নামাজ শেষ হলেও অনেক সময় মসজিদে বসে থেকেছি রাতে জেগে থেকে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেছি। এই সময় আমার প্রচুর ধর্ম বিষয়ক পড়াশোনার কারনে ধর্ম নিয়ে অনেক জ্ঞান অর্জন হয়েছিলো। এভাবে আরও দুটি বছর কেটে গেল আমার জীবনের। আমি তখন ভার্সিটিতে শেষ বর্ষের ছাত্র। এই সময় আকস্মিক ভাবে পুনরায় আমার মাথার তার সব ছিঁড়ে গেল। আমি দীনের মহিমান্বিত আলোকের পথ থেকে আবারো ফিরে এলাম নেশার অন্ধকার জগতে। আমার রেজাল্ট খুব খারাপ হতে থাকল। আগে যাও ছাত্র পড়িয়ে বেশ রোজগার হত কিন্তু আমি আর কেন যেন পড়ানোর জন্য ছাত্র পেলাম না। কিন্তু আমার তখন নেশার চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজন হয়ে পরল টাকার। টাকার প্রয়োজনে কিছুদিন খারাপ সঙ্গের সাথে মিশে গেলাম। আমার এক বন্ধুর সাথে পরিচয় হয়। সে তখন একটি রাজনৈতিক দলের একনিষ্ঠ কর্মী। আমিও ওর সাথে সেই দলে যোগ দিলাম। শুরু হল আমার রাজনৈতিক জীবনের। মাঝে মাঝে মিছিলে যেতাম। দারুন লাগত শ্লোগান দিতে। হরতালে পিকেটিং করার স্মৃতি ভোলার মতন নয়। হাতে উপহার হিসেবে নেতার কাছ থেকে একটি পিস্তল পেয়েছিলাম। তাই দিয়ে কিছুদিন আমার বন্ধুটির সাথে চাঁদাবাজি করেছি। একবার বিপক্ষ দলের সাথে চরম মারামারি বেঁধে গেলে ডান পায়ে রডের আঘাতে শেষে হাসপাতালে ভর্তি হলাম। হাসপাতালে একরাত ছিলাম। আর চোখ বন্ধ করে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি যা করছি আসলে সেটাকে রাজনীতি বলে না সেটাকে বলে রাজনীতি নিয়ে যারা ব্যাবসা করে তাদের দ্বারা ব্যবহৃত হয়ে বিপথগামী পথে কিছু টাকা উপার্জন করার নষ্ট খেলা ছাড়া আর কিছুই না। আমি আমার বাংলাদেশটাকে বড় বেশী ভালোবাসি। তাই আমার দ্বারা দেশের কোন ক্ষতি হোক সেটা হতে পারেনা। আমি ফিরে এলাম সেই সব তথাকথিত রাজনীতি থেকে। আমার এই বিপথগামী হবার পেছনে যে কারন ছিল সেটাও রেশমি। একসময় আমি জানতে পারলাম রেশমিও আমারই মতন ভীষণ অভাগী। সে যাকে ভালোবাসা ভেবেছিলো সেটা ছিল মিছে মরীচিকা। ব্যাস আর যাই কোথায় আমার মাথার সব তার ছিঁড়ে গেল। রেশমির দুঃখে আমিও দুঃখী হলাম। কারন তার সুখেই আমার সুখ তার দুঃখেই আমার দুঃখ।

আমি আমার বাম হাতে লিখে নিলাম আমার প্রিয়া রেশমির নামের আদ্যক্ষরটি। দিয়াশলাইয়ের কাঠির মাথা থেকে বারুদগুলো চেঁছে নিলাম প্রথমে। তারপর হাতে সেগুলো হালকা আঠা দিয়ে এমন ভাবে লাগিয়ে দিলাম যেন সেই আদ্যক্ষরটির রূপ নেয়। তারপর দিয়াশলাইয়ের একটি কাঠিতে আগুন জ্বালিয়ে সেই হাতে লাগানো বারুদে আগুন ধরিয়ে দিলাম। খুব জ্বলছিল কিন্তু আমার হৃদয়ের ভেতরটার জ্বালা করা ক্ষতের কাছে সেটা কোন জ্বালাই তখন আর মনে হচ্ছিল না। আজো আমার বাম হাতে সেই ক্ষত রয়ে গেছে হয়ত আজীবন তেমনই থাকবে প্রিয়তমা রেশমি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার স্মৃতি হয়ে।

(চলবে.....................)



কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - চতুর্থ পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - ৩ য় পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - ২য় পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান - ১ম পর্ব
কান্ডারী অথর্ব ও রেশমির প্রেমের উপাখ্যান
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:১৩
৪৪টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

Testimony of Sixty- By Edward Kennedy বাংলাদেশের রক্তাক্ত সত্যের এক আন্তর্জাতিক স্বীকারোক্তি

লিখেছেন কিরকুট, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩




১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর বৈপরীত্যের বছর। এটি যেমন ছিল অন্ধকার ও রক্তাক্ত, তেমনি ছিল সত্যের প্রতি অবিচল এক সময়কাল। এই বছরের গণহত্যা, শরণার্থী স্রোত ও মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×