somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

বেদে সম্প্রদায়ঃ দুর্বিষহ জীবন ধারায় ভ্রাম্যমান

০২ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





মোরা এক ঘাটেতে রান্দি বাড়ি আরেক ঘাটে খাই, মোদের সুখের সীমা নাই, পথে ঘাটে ঘুরে মোরা সাপ খেলা দেখাই, মোদের ঘর বাড়ি নাই।

যে যাযাবর যূথচারী মানবগোষ্ঠীগুলোকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষত জলবহুল-বিলবহুল-নদীবহুল অঞ্চলে দেখা যায়, তাদেরই প্রচলিত নাম বেদে। বৈদ্য থেকে বেদে শব্দটির উদ্ভব। সাধারণত, অধিকাংশ বেদে পুরুষ এবং নারী নানা রকম ঝড়িবুটি এবং টোটকা চিকিৎসার সাথে জড়িত বলে এদের নাম হয়েছে বেদে বা বাইদা। এই সম্প্রদায়ের লোকেরা মোট নয়টি শাখায় বিভক্ত। এগুলো হলোঃ লাউয়ো, চাপাইলা, বাজিকর, বেজ, গাইন, মেল্লছ, বান্দাইরা, মাল ও সাপুড়িয়া। বেদেরা আমাদের সমাজের এতই প্রান্তিক একটি অবস্থানে রয়েছে যে আমাদের জাতীয় পরিসংখ্যানে পর্যন্ত তাদের কোনো গুরুত্ব নেই, আমাদের জাতীয় নীতি-নির্ধারণী বৈঠকগুলোতে তাদের কথা কখনোই উঠে আসে না।




ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিঃ


পৃথিবীব্যাপী রহস্যময় একদল মানুষ হলো জিপসি। এরা যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় এখানে-ওখানে। দেশে দেশে বা অঞ্চলভেদে তাদের একেক নাম, আর বেঁচে থাকার জন্য বিচিত্রসব পেশা। ১৪২৭ সালের দিকে প্যারিস নগরীতে হঠাত্ হাজির হয় একদল মানুষ। নর-নারী, শিশু—অদ্ভুত তাদের চেহারা, অদ্ভুত তাদের কথাবার্তা, উত্কণ্ঠিত প্যারিসকে তারা আশ্বস্ত করে লিটল ইজিপ্ট হিসেবে। পরে ইউরোপের নানা শহরে এদের দেখা যায়। পরিচয় দেয় লিটল ইজিপ্টের মানুষ হিসেবে। ইউরোপ তখন একবাক্যে মেনে নেয় এরা ইজিপ্টের মানুষ। ওদের পোশাক, ওদের ভাষা, ওদের চালচলন সব ইজিপশিয়ানদের মতোই বটে। এই ইজিপশিয়ান থেকে ক্রমেই এদের নাম হয়ে গেল জিপসি। আমাদের অঞ্চলের জিপসিরা বেদে নামেই পরিচিত, বেদে মানেও ভ্রমণশীল বা ভবঘুরে। নদীনির্ভর বাংলাদেশে বেদেদের বাহন তাই হয়ে ওঠে নৌকা। নৌকায় সংসার আবার নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো দেশ-দেশান্তরে।

বেদেরা দাবি করে তারা মোগল আমলে ১৬৩৮ সালে আরাকান থেকে এ দেশে এসেছিলো। এ জন্যই তাদের কথায় কিছুটা আরাকানী টান আছে। তারা নিজেদের মধ্যে যখন কথাবার্তা বলে তখন এই টান স্পষ্ট বুঝা যায়। আমাদের বেদে সম্প্রদায় নিজেদের মধ্যে সাঙ্কেতিক ‘ঠের ভাষা’য় কথা বলে। শুধু কথাই বলে না, এই ভাষাতে বিভিন্ন শ্লোক-মন্ত্র-সংগীতের উচ্চারণও তাদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে। তাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অঙ্গ সংগীত। বেদে বলতেই আমাদের দেশে সাপ-সাপুড়ে, সাপের বিষ নামানোর মন্ত্র, সাপখেলা দেখানোর কথা চলে আসে। তবে আমাদের দেশে সাপুড়ে বা সাপের ওঁঝা মানেই বেদে নয়। বেদে-সম্প্রদায় বহির্ভূত অনেক মানুষের পেশা এখন এই একই। একাদশ শতকে সেন আমলে বল্লাল সেন হিন্দু সমাজের যে বর্ণবিভাগ করেছিলেন, তাদের মধ্যে জল-অচল শূদ্রদের একটি অংশের পেশা ওঁঝাবৃত্তি।

বেদে শুধু শিল্প্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিকে নিজেদের মধ্যে লালন করছে না, পাশাপাশি তারা যে আলাদা বৈচিত্র্যের ধারক অন্যতম নৃ-গোষ্ঠী, সহজেই তা অনুমেয়। বেদেরা তাদের জীবনকে একঘেয়ে মনে করেন না। প্রকৃতির মাঝেই এরা জীবনের বৈচিত্র্যের সন্ধান করেন। আর বেদেদের এই সন্ধানই আমাদের লোকসাহিত্যের উপজীবী অংশ হয়ে যুগ যুগ ধরে আদৃত হয়ে আসছে আজ পর্যন্ত।

লোকসাহিত্যের এক বৃহত্ অংশ ‘বেদে সম্প্রদায়’। ‘বেদে নারী ও সংস্কৃতি’ দেখে বোঝা যায় তাদের বৈচিত্র্যময় জীবনে অনেক কিছু সাংসারিক উপাদান রয়েছে, যা আমাদের কাছে শিক্ষণীয় হতে পারে। বিশেষ করে বেদে নারীদের কঠোর সংগ্রাম, সাহস, মমত্ব, ভালোবাসা এবং নেতৃত্বগুণাবলি।



ধর্মীয় অনুশাসনঃ

অন্য অনেক আদিবাসীর মতো বেদেরাও এই জললগ্ন ভূমিরই সন্তান। বেদে সম্প্রদায় কোনো আনুষ্ঠানিক ধর্ম পালন করে না। তবে লোকজ অনেক দেব-দেবী, যেমন মনসা বা বিষহরির পূজা করে থাকে। তবে সেই পূজা পদ্ধতির সঙ্গে যতটা না অর্চনার সাদৃশ্য, তার চেয়ে বেশি সাদৃশ্য লোকজ ব্রত-পার্বণের সঙ্গে। বেদেরা নিজেদের মুসলমান দাবি করলেও ঈদ কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় আচার-রীতি পালন করে না। অন্যান্য বেদের সাথে মেল্লেছ বেদেদের বিয়ে-শাদী বা সামাজিক আদান-প্রদান নাই বললেই চলে। শুধু মেল্লছ গোষ্ঠীর সাথেই মেল্লছ গোষ্ঠীর বিবাহ হয়। বেদে সম্প্রদায়ের অন্যান্য গোষ্ঠীর বিবাহ মুসলিম ধর্মীয় মতে হলেও তাদের রীতিনীতি বিচিত্র।



আবাসস্থলঃ

সময়ের প্রভাবে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গোষ্ঠীভুক্ত হয়ে বাস করে এরা। ঢাকার সাভার, মুন্সীগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, গাজীপুরের জয়দেবপুর, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, মিরসরাই, তিনটুরী, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনা, এনায়েতগঞ্জ, ফেনীর সোনাগাজী, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় এসব বেদের আবাস। তাদের পারস্পরিক যোগাযোগ এখনও টিকে আছে। সুনামগঞ্জের সোনাপুরে বাস করে বেদে সমাজের বৃহত্তর একটি অংশ।
আবদুল্লাহপুর, মীরকাদিম, চিতলীয়, মাকহাটি এলাকায় বেদেদের আদি বাস ছিলো- এই সব এলাকা থেকেই সম্ভবত তারা ভাটপাড়া, বক্তারপুর, আমিনবাজার প্রভৃতি স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে।

আধুনিক সভ্যতার চরম উৎকর্ষের পরও বেদেদের জীবন প্রবাহ আজো পশ্চাদপদ। সামাজিক ও নাগরিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত। বেদে সমাজ ভবঘুরে যাযাবর জীবনের শিকলে আবদ্ধ হয়ে দুর্বিষহ গতিধারার ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে। সেই আদিকাল থেকেই এ বেদে সমাজ দেশের রাজধানী. বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এদের বিচরণ। নদীমাতৃক বাংলাদেশের সব নদীতে ছুটে বেড়ায় ওরা। নদী, খালের কিনার ঘেঁষে চোখে পড়ে বেদেনিদের নৌকার বহর। ঠিকানাবিহীন, অপরিচিত, অজানা, অচেনা ও সম্পূর্ণ অপরিচিত ঘাটে এসে নৌকা ভেড়ায়। আবার একদিন সেখান থেকেও উধাও। এভাবেই কাটছে ওদের দিন, মাস, বছর ও যুগ। কাটছে ওদের জীবনের মূল্যবান মুহূর্তগুলো এবং তা অনেকটাই অনিশ্চিতভাবে।



বৈবাহিক রীতিনীতিঃ

উপার্জনের মৌসুম শেষ হলে বেদে পরিবারে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়েতেই তারা সবচেয়ে আনন্দ করে। তবে বেদেদের বিয়েতে আপ্যায়ন কিংবা উপহার প্রদানের কোনো নিয়ম নেই। সাধারণ বর-কনে একে অপরকে পছন্দ করে বিয়ে করে। পছন্দের ব্যাপারটা তারা সেরে নেয় বিয়ের অনুষ্ঠানে। বেদেদের বিয়েতে বর-কনে সহ উপস্থিত সবাইকে নৃত্যগীত করতে হয়। বহিরাগত কেউ এলে তাকেও নাচতে হয়। এসব নাচ-গান একান্তই বেদে সম্প্রদায়ের। এ সময় অবিবাহিত মেয়েরা খুব আকর্ষণীয় সাজগোজ করে। অন্য যুবকের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে নিজেদের শারীরিক সৌন্দর্য তুলে ধরে। কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে এভাবেই তরুণ-তরুণীরা নিজেদের বিয়ের সঙ্গী খুঁজে নেয়। বেদেদের বিয়েতে বিশেষ কোনো ধর্মের রীতিনীতি নেই। বেদেদের বিয়ের আগে হবুবর একটি গাছে উঠে সবচেয়ে উঁচু ডালে গিয়ে বসে আর কনে দাঁড়িয়ে থাকে গাছের নিচে, কনে বরকে নেমে আসার জন্য বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও বর নেমে আসে না। তখন সে বরকে প্রলোভন দেখাতে শুরু করে আমি তোমার সংসারের কাজ করবো। শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করবো। ছেলেমেয়েদের লালন পালন করবো। বর নির্বিকার সে উঁচু ডালে বসেই আছে নামার কোনো লক্ষণ নেই। কনে এবার বলে আমি তোমার বিরুদ্ধে কোনো সময় অভিযোগ করবো না। তুমি যা বলবে তাই শুনবো
বর তবু বসে থাকে¬
শেষে যখন কনে বলে- তোমাকে আমার ভরণ-পোষণ করতে হবে না, বরং আমিই তোমাকে সারাজীবন রোজগার করে খাওয়াব তখন বর গাছের মগডাল থেকে নেমে আসে- এরপর তাদের বিয়ে হয়। একাধিক বিবাহ এবং বাল্যবিবাহের প্রচলন এদের মধ্যেও আছে।

বিয়ে করতে হলে কনেকে অর্থ দিতে হয়। যার যেমন সামর্থ্য, সে তা-ই দেয়। এ অর্থ বেদেনীর কাছে গচ্ছিত থাকে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো কারণে ছাড়াছাড়ি হলে সম্পত্তি, ছেলে-মেয়েও ভাগাভাগি হয়। সর্দাররা বিচার করে যা রায় দেয়, উভয়পক্ষকে তা মেনে নিতে হয়। বিয়ের রাতে স্বামীকে সন্তান পালনের জন্য প্রতিজ্ঞা করতে হয়। যতদিন স্ত্রী উপার্জনের জন্য বাইরে থাকে, ততদিন স্বামী-সন্তানের প্রতিপালন করে। বিয়ের পর স্বামী স্ত্রীর ঘরে যায়। স্ত্রীর ঘরই স্বামীর ঘর।

বেদে নারীরা স্বামীদের আঁচলে বেঁধে রাখতে তুলনাহীন। পুরুষ বশে রাখতে তারা শরীরে সাপের চর্বি দিয়ে তৈরি তেল ব্যবহার করে। স্বামীর শরীরে তা নিয়মিত মালিশ করে। কোনো পুরুষের পক্ষে বেদে নারীর এই কৌশল উপেক্ষা করা সম্ভব হয় না। বেদে নারীর মায়ার জালে পড়লে তাকেও গোত্রের হয়ে থেকে যেতে হয়। তাছাড়া পুরুষকে ঘরে রাখার জন্য তারা তন্ত্রমন্ত্র, তাবিজ-কবজ করে। পুরুষ বেদে নারীর কাছে দেবতার মতো। সব ঝামেলা থেকে তারা স্বামীকে আগলে রাখে।



মাতৃতান্ত্রিক বেদে সমাজ ব্যবস্থাঃ

বেদে সম্প্রদায়ের মেয়েদেরও ক্ষমতা অপরিসিম হলেও একটি বহরে সর্দার হন একজন পুরুষ। বহরের অভ্যন্তরীন যে কোন সমস্যা বহরের সর্দারই সমস্যা সমাধান করে থাকেন। প্রধানত বেদে সম্প্রদায়ের মহিলারাই সংসার চালায়। বহরের কিছু পুরুষ সাপ খেলা দেখানো, সাপ ধরা ও কবিরাজি পেশায় যুক্ত হলেও মূলত মেয়েরাই শহর, গাঁও, গ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গৃহস্থের ঘরে ঘরে নিরক্ষর ও দরিদ্র মানুষের দাতের পোকা বের করা, জাড় ফুক, সিঙ্গা লাগিয়ে তন্তর-মন্তর করে যা আয় করে তা দিয়েই সংসার চালায় তারা।

বেদে সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। বেদে নারীরা যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে। উপার্জন, বিয়ে ও সন্তান প্রতিপালনে তারাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। বেদে পুরুষরা অলস হয়। কায়িক পরিশ্রমকে তারা ঘৃণা করে। ফলে সংসারের ব্যয় নির্বাহের জন্য বেদে মেয়েদেরই বের হতে হয়। এতে তাদের সাংঘাতিক ভোগান্তি পোহাতে হয়। স্বামী-সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে সব দায়িত্ব পালন করে। স্বামীর প্রতি বেদে নারীদের অঢেল মায়া। তাই সব ধরনের ঝামেলা থেকে স্বামীকে সে আগলে রাখে।



যাযাবর বলেই এদের জীবন বৈচিত্র্যময়। বেদে সম্প্রদায়ের নারীরা যথেষ্ট শ্রম দেয়। নারীদের মমত্ববোধ, প্রেম-ভালোবাসা লোক-কাহিনীতে জুগিয়েছে বাড়তি খোরাক। প্রাগৈতিহাসিক কাল ধরেই মনুষ্য চিত্তাকর্ষণ করার লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন চটুল গান রচনা করেছেন। এটা করতে বেদে নারীদের শরীরী ভাষাও প্রকাশ হয়েছে। তাদের শরীরী ভাষা প্রকাশের শিল্পিত উপস্থাপন যা সহজেই অন্যকে প্রলুব্ধ করে। গানের ভাষায় উঠে এসেছে তাদের নিত্যকার জীবনে ব্যবহার্য জিনিসের নাম, সাপের নাম, বিভিন্ন উপাসক দেব-দেবীর নাম, বিপরীত লিঙ্গ স্তবক, বিরহ, বৈরাগ্য প্রভৃতি।

বেদেরা যাযাবর জাতি। তারা সাধারণত নদীর আশপাশে সমতল ভূমিতে মাচা করে বসবাস করে। তবে নৌকায় বসবাসই তাদের ঐতিহ্য। তারা এক জায়গায় বেশিদিন থাকে না। নৌকায় গ্রামগঞ্জে পরিভ্রমণ করে। বিশেষ করে ফসল ওঠার মৌসুমে ও হাটবারে তারা বেশি যায়। বেদে নারীরাই দলবদ্ধভাবে এ পরিভ্রমণে যায়। এ সময় বেদে নারীদের সঙ্গে সাপের ঝাঁপি ও ওষুধের ঝুলি থাকে। হাটবাজারে সাপের খেলা দেখিয়ে ও ওষুধ বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে থাকে। তাছাড়া দাঁতের পোকা তোলা, সিঙ্গা ফুঁকা, শরীরে উল্কি এঁকেও তারা আয় করে। এ সময় বেদেনীরা বেশ সাজগোজ করে, কোমরে বিছা আর গায়ে ইমিটেশন গহনা পরে, খোঁপায় ফুল গুঁজে রাখে। মানুষকে আকর্ষণ করার জন্যই এমন সাজগোজ। উপার্জনের মৌসুম শেষ হয়ে গেলে ফেরে নিজ ডেরায়, স্বামী-সন্তানের কাছ।



বেদেরাই সাধারণত সাপ ধরে। বন-জঙ্গল, ঝোপঝাড় থেকে পুরুষ বেদেরা সাপ ধরে নিয়ে আসে। বেদেনীরাও সাপ ধরতে পারে। ঢোঁরা সাপ, ঘরচিতি, লাউডগা, কালনাগিনী ইত্যাদি সাপ সাবলীলভাবে ধরতে পারে। তবে সবাই সাপ ধরতে পারে না। উগ্র মেজাজের এবং ভয়ঙ্কর বিষাক্ত দাঁড়াশ, কালকেউটে, গোখরা, শঙ্খিনী জাতের সাপ তারা অন্য বেদের কাছ থেকে কিনে নেয়। সাপ খেলা দেখানোর জন্য এ ধরনের সাপের দরকার হয়। সুরেলা গলায় গান গেয়ে তারা সাপের খেলা দেখায়। সাপ খেলা দেখানোর সময় কালনাগিনী সাপকে বেদেনী বাহুতে বিংবা গলায় পেঁচিয়ে রাখে। কালনাগিনী বেদেনীদের ভীষণ পছন্দের সাপ। এই সাপের রঙ-রূপ-স্বভাব বেদেনীরা অনুকরণ করে। তাদের সাজসজ্জায় ও আচরণে তার প্রকাশ ঘটায়। এমনকি হাঁটার সময় পা দু’টি সমান্তরালে এগিয়ে কোমর দুলিয়ে চলতে দেখা যায়।

বেদিনীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখের চিকিৎসা করে; তারা দাঁতের পোকা খসায়, রস- বিষ-খসায় এমনকি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অমিল থাকলে তাদের মধ্যে মেলবনের জন্য তাবিজ দিয়ে থাকে। বেদে পুরুষেরা পাখি শিকার, সাপ ধরা এবং পানিতে কারো সোনা বা রূপার গহনা হারিয়ে গেলে- টাকার বিনিময়ে সেগুলো খুঁজে দেয়। এরা নৌকা বহরে থাকে, প্রত্যেক বহরের মধ্যে একজন সর্দার বিদ্যমান দেখা যায়। কেউ কোনো অপরাধ করলে সর্দার তার বিচার করে। এ ক্ষেত্রে সর্দারের কাছে দু'পক্ষেরই টাকা জমা রাখতে হয়, যে পক্ষ বিচারে হেরে যায়- সর্দার তার টাকা দিয়ে বহরের লোকজনকে খাওয়ে থাকে।

বহরের ব্যবসা ও নিরাপত্তার পারিপার্শিক অবস্থা বিবেচনা করে বেদের বহর এক জায়গায় এক সাপ্তাহ থেকে এক মাসের বেশি থাকে না। এর কারণে বেদে পলহ্মীর শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। সময় বাস্তবতা আর সচেতনতা বৃদ্ধি, দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবন যাপনে হিমসিম খাচ্ছে বেদে যাযাবর মানুষগুলো।



বেদে সম্প্রদায়ের পেশাগত পরিবর্তনঃ

এদের প্রধান পেশা চুড়ি-ফিতা-খেলনা বিক্রি, সিঙ্গা লাগানো, দাঁতের পোকা তোলা, তাবিজ-কবজ বিক্রি, সাপেকাটা রোগীর চিকিৎসা, সাপের খেলা দেখানো, সাপের ব্যবসা করা, আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যসেবাদান, ভেষজ ওষুধ বিক্রি, মৃত পশুর শরীরের অংশ এবং গাছগাছড়া ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি করে বিক্রি করা, বানর খেলা দেখানো, জাদু দেখানো, মাছ ধরা, পাখি শিকার ইত্যাদি। জীবনের তাগিদে পেশায় থাকলেও বর্তমানে তারা ধীরে ধীরে পেশার পরিবর্তন করছেন। সাভারের কাঞ্চনপুর, অমরপুর, বড় অমরপুর ও পোড়াবাড়ি এইসব অঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার বেদে পরিবারের বসবাস। প্রতিটি পরিবারে গড়ে ৬ থেকে ৭ জন সদস্য রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকটি পরিবার সাপের ব্যবসা করে থাকেন। তবে এদের অনেকেই শুধু চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য সাপ ভাড়া দিয়ে থাকেন। আর অনেকেই সাপ ধরা আর বিক্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছেন। এছাড়া বেশিরভাগ বেদে স্থানীয় বাজারে দোকান কেনা, ভাড়া, কবুতর পালন, মৎস্য চাষ আর দোকান ব্যবসার মাধ্যমে পেশার পরিবর্তন এনেছেন।

বিনোদনের নতুন নতুন ব্যবস্থার প্রচলন হয়েছে। আগের মতো মানুষ সাপ খেলা দেখে এখন আর আনন্দ পায় না। তাছাড়া বেদেদের ওষুধে এখন বিশ্বাস নেই। বন-জঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ায় আগের মতো সাপও পাওয়া যায় না। তাই বেদেদের ঐতিহ্যগত পেশায় ধস নেমেছে। এতদিনকার সংস্কার-বিশ্বাসে আঘাত এসেছে। অভাবের কারণে সংসারে ভাঙন লেগেছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেদে নারীরা। বাধ্য হয়ে তাই তারা পঙ্কিল পথে পা বাড়িয়েছে। নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে তারা হারিয়ে যাচ্ছে কোনো এক অজানা অন্ধকারে। কালের আবর্তে আজ বেদে সম্প্রদায়ের চিরাচরিত জীবন-প্রণালী ধ্বংসের মুখে।



ভাসমান বেদে সমাজ বাঁচার জন্য যুদ্ধ করছেঃ

বর্তমানে বেদেরা সম্পূর্ণ ঠিকানাবিহীন ও অনিশ্চিত জীবনযাপন করছে। এদের কুঁড়ে ঘরের ছাউনি হয় শত ছিন্ন পলিথিন কিংবা নাইলনের অথবা সিমেন্টের ব্যাগে। আর খেজুর পাতার পাটি দিয়ে তৈরি বিছানা। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ হেমন্ত ও বসন্ত সব ঋতুতেই ছেলেমেয়ে, স্ত্রী, পরিজন নিয়ে অবস্থান করে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। জীবিকার সন্ধানে ওরা খুঁজতে থাকে আরো কত কিছু। পুকুর, ডোবা বা জলাশয়ে কারো স্বর্ণ-রূপা হারিয়ে গেলে উদ্ধার করে দেয় তারা। নানা প্রতিকূলতার মোকাবেলা করে বেঁচে থাকে এরা। অবহেলিত এই বেদে-বেদেনিরা সভ্য মানুষের চোখের সামনে দিয়ে অবলীলাক্রমে এদের জীবন কাটলেও কোনো মানুষই তাদের জীবন নিয়ে ভাবে না অথবা তাদের পুনর্বাসনের কথা কেউ চিন্তাও করে না। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করানোর ইচ্ছা থাকলেও পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয় না। যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে দিন কাটে। কঠিন রোগ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ঝাড়ফুঁকে সারলে তো ভালোই অন্যথায় মৃত্যু অনিবার্য।

নদীর রূপ বদলের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চলার পরিধি ছোট হয়ে আসছে৷ আর তাই তার মতো আরো অনেকে ছাড়তে শুরু করেছে নদী৷ নদী ছেড়ে কোথায় যাবে এই বেদেরা৷ তাদের নেই কোন শিক্ষা, নেই কোন কাজের বিশেষ যোগ্যতা৷ বাংলাদেশের সমাজে শ্রেণি বিভাজন না থাকলেও বেদেদের দেখা হয় কিছুটা আলাদা চোখে৷ আর তাই সমাজের মূলস্রোতে মেশাটাও খুব একটা সহজ নয় তাদের জন্য৷ তবে বেদেরা হারিয়ে গেলে বাংলাদেশের পুরাতন ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির একটি অংশ হারিয়ে যাবে৷ তারা খুব দ্রুতই পানি ছেড়ে ডাঙ্গায় আবাস গড়তে শুরু করেছে৷ অথচ ১৫ বছর আগেও পুরো বেদে সম্প্রদায় বাস করতো পানিতে৷ খুব শিগগিরিই হয়তো তেমন দিন আসবে, যখন আর কোন বেদেকে নৌকাবাড়িতে করে নদীপথে ঘুরতে দেখা যাবে না৷



জীবন প্রবাহের ধারা ও মূল্যবোধঃ

পৃথিবীতে সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে। জীবনপ্রবাহের ধারা বদলে গেছে। জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু আজো মানুষ পারল না বেদে সমাজের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করতে। তারা অজ্ঞতার যুগেও যেমন অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল আজো তেমনি অন্ধকারে রয়ে গেল তাদের জীবন। ওদের জীবনে আজো আসেনি সামাজিক মর্যাদা, ওরা আজো পায়নি নাগরিক অধিকার। এমনকি শিক্ষা, চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। সময়ের আবর্তে উন্নতির পরিবর্তে বেদে সমাজের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দিন। বেদেরা যাযাবর একটি উপজাতি হলেও কোনোভাবেই তারা মূল বাঙালি সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। এ দেশের প্রতি মমত্ববোধ এবং এ দেশের অন্যান্য সম্প্রদায়কে তারা কোনো সময়ই প্রতিপক্ষ মনে করে না।

বেদেদের দেখা হয় নিচু জাতের মানুষ হিসেবে। সমাজ তাদের উপকার দুই হাত পেতে নিলেও তাদেরকে কিছু দেয় না। মুসলিম প্রধান এই দেশে বেদে নারীদের ‘বেপর্দা’ ঘোরাফেরা অনেকের পছন্দ নয়। বেদে নারীদের চিকিৎসা নিতে অনেকের মনে বাধে। ফলে ভাগ্য পরিবতন হচ্ছে না এই সম্প্রদায়ের।

নৌকায় বসবাসকারী বেদে সমাজ চিকিৎসা ও শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকাসমূহ থেকে বঞ্চিত। আধুনিক সমাজ তাদেরকে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। বর্তমান সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলা এবং সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য তাদের জন্য কেউ এগিয়ে আসছে না। এই সমাজের শিশু, কিশোর ও নারীরা সব ধরনের টিকা থেকে বঞ্চিত। অথচ এক সময় এই বেদেরা ঘুরে ঘুরে মানুষকে সেবা দিত এমন কি মুখ দিয়ে সাপের বিষ বের করত। বেদে সমাজের শিশুরা স্কুলে পড়া ও কোন প্রকার স্বাস্থ্য সুবিদা নেবার সুযোগ পায় না।

বেদেরা আমাদের সমাজে তাদের মৌলিক সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত। একটি অংশকে বাদ দিয়ে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই গোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকার উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।

বেদে আমাদের সমাজে বৈষম্যের স্বীকার। তাদেরকে সমাজে সাধারন মানুষের ন্যায় জীবন যাপন করার সুযোগ করে দিতে হবে। তাদের অর্থিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য পেশা পরিবর্তনের সুযোগ করে দিতে হবে। বেদেদেরকে সমাজের মূল স্রোতে আসার সুযোগ করে দিতে হবে।



সূত্রঃ

• পোস্টটির তথ্য সংগৃহীত হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা যেমনঃ দৈনিক সমকাল, দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক কালের কণ্ঠ, দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকা থেকে।
• এছাড়া বিশেষ কৃতজ্ঞতায় রয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা।
• ছবি কৃতজ্ঞতায় গুগল সার্চ ইঞ্জিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৫২
৫৪টি মন্তব্য ৫৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×