somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

রুহ

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





এরই মধ্যে তুমি ছয় পেগ মদ খেয়ে ফেলেছো। অনেক হয়েছে আজকের মতো বাদ দাও। তুমি খুব বেশী মদ খেয়ে ফেললে আমি আমার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা লোপ পেতে থাকে। তখন তোমার শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলোকে সঠিক সংকেত পাঠাতে পারিনা।

আমি খুব ভাল ভাবেই লক্ষ্য করছি আজকাল তুমি বেশ উৎপাত করতে শুরু করেছো। আমার বিরুদ্ধে এক রকমের ষড়যন্ত্র করা শুরু করেছো। আমাকে নানাভাবে অত্যন্ত সুকৌশলে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছো। এটা ঠিক হচ্ছেনা। এমনটা আর কখনও করবেনা।

দেখো আমার কাজই হচ্ছে তোমাকে নিয়ন্ত্রণ করা। আমি মোটেই কোন ষড়যন্ত্র করছিনা। আমি শুধুমাত্র আমার দায়িত্ব পালন করছি। আমার দায়িত্বই হলো তোমাকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করা।

ভুল বললে। এটা সম্পূর্ণ তোমার ভুল ধারণা। যেসব মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটে তাদের শরীর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললেও তাদের রুহ কিন্তু ঠিকই বেঁচে থাকে। তাদের শরীর সঠিক ভাবে পরিচালিত হতে না পারলেও তাদের রুহ কিন্তু বেঁচে থাকে অনন্তকাল ধরে। শোন মস্তিষ্ক, তোমাদের মৃত্যু আছে কিন্তু আমার কোন মৃত্যু নেই। আমি অমর। আমার শুধু ঠিকানার পরিবর্তন হয়।

বেশ ! তুমি যেটা ভাল মনে করো। আমার কাজ হলো তোমাকে সতর্ক করে দেয়া। তাই আমি করেছি মাত্র।

কি ব্যাপারে সতর্ক করলে ঠিক বোঝা গেল না বিষয়টা। আমিতো দেখছি তুমি আমাকে সতর্ক না করে বরং তোমার নিজেকে নিয়েই বেশী উদ্বিগ্ন।

মোটেও তা নয় ! তোমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ওরা তোমাকে মেরে ফেলতে চাইছে।

আবারও ভুল করলে তুমি। ওরা চাইলেই আমাকে মারতে পারবেনা। ওরা যা করবে ওদের নিজেদের মৃত্যুই ওরা নিজেরা ডেকে আনবে। আমার কোন মৃত্যু নেই। আমি অমর। আসলে তুমি উদ্বিগ্ন তোমার এবং তোমার সঙ্গীসাথীদের মৃত্যু নিয়েই। তাই তুমি আসলে আমাকে সতর্ক করছোনা। নিজেদের বাঁচার তাগিদেই ষড়যন্ত্র করছো। আর যদি তোমার এতই বেঁচে থাকার স্বাদ জাগে তাহলে ওদের সতর্ক করে দাও। ওদের পুরো নিয়ন্ত্রণতো তোমার কাছেই।

আমি আর কিছুই বলবো না। তোমার যা ভাল মনে হয় তুমি তাই করো।

হ্যাঁ ! আমি তাই করবো। আমার পরিপূর্ণ তৃপ্তিই আমার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান।

ঘরের ভেতরটা হঠাৎ করে এমন অন্ধকার অন্ধকার লাগছে কেন ? আমিতো ঘরের বাতি জ্বালিয়ে রেখেই মদ খেতে বসেছি। কোথাও কোন ভুল হচ্ছেনাতো ? চারদিকটা হঠাৎ ঝাপসা হয়ে আসছে। এইতো আমি সিগারেট খাচ্ছি। মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়ছি। সবইতো ঠিক আছে। কিন্তু কোন কিছুই হঠাৎ করে যেন ঠিক মতো ভাবতে পারছিনা। সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো লাগছে। ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। ঐতো শ্রাবণীকে দেখতে পাচ্ছি। সাদা রঙের শাড়িতে মনে হচ্ছে যেন বেহেশতের কোন এক সাদা পরী সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে।

কী ব্যাপার পাকস্থলী হঠাৎ আজকে এই অবেলায় এতো জরুরী তলব ?

শোন ফুসফুস তুমি আমার খুব ভাল একজন বন্ধু। তুমিতো ভাল করেই জানো আমার জীবনটা কতটা বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। তাই আমি একটা কঠিন সিদ্ধ্যান্ত নিয়ে ফেলেছি।

তুমি কি সিদ্ধ্যান্ত নিয়েছো জানিনা। তবে তোমার মতোই আমারও একই অবস্থা। আমার পুরো অস্তিত্ব জুড়ে এখন শুধুই বিষাক্ত নিকোটিন। এভাবে চলতে থাকলে আমরা তীলে তীলে নিঃশেষ হয়ে যেতে থাকবো। একটা সময় আমাদের অস্তিত্ব হুমকীর মুখে পড়বে। তখন কোন ওষুধেই আর আমাদের সুস্থ করতে পারবেনা। তা বলো শুনি তোমার সিদ্ধ্যান্তটা কি শুনি।

আমি ঠিক করেছি আমি ওকে মেরে ফেলবো।

তুমি ওকে কীভাবে মারবে ? তোমার কি আর সেই ক্ষমতা আছে নাকি ?

শোন আমার পরিকল্পনাটা খুব দারুণ। একটা সুপরিকল্পিত হত্যা।

আরে তুমি কি পাগল হলে নাকি ? আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক। আর এই মস্তিষ্ক সবসময় ওর গোলামী করে। মস্তিষ্ক কখনই আমাদেরকে এই হত্যায় সাহায্য করতে চাইবেনা। বরং আমরাই ওর নিয়ন্ত্রণ ছাড়া অসহায়।

এই নিয়ে তোমাকে মোটেই ভাবতে হবেনা ফুসফুস। তুমি জেনে খুব খুশী হবে যে এবং সেই সাথে অবাকও হবে মস্তিষ্ক এখন আমাদের দলে যোগ দিয়েছে। আজকের সভায় মস্তিষ্ককেও আসতে বলা হয়েছে। এবং সে আসছে আমাদেরই একজন সদস্য হিসেবেই।

ভাল করে একবার ভেবে দেখো পাকস্থলী ? মস্তিষ্ককে কি আমাদের মাঝে আনাটা ঠিক হচ্ছে ? ওকে ভরসা করাটা কি উচিৎ হবে ? দেখা গেলো আমাদের কাছ থেকে সব তথ্য নিয়ে উল্টো আমাদেরকেই বিপদে ফেলে দিলো।

তোমার এই কথা ঠিক যে মস্তিষ্ক আমাদের চেয়েও অনেক বেশী জ্ঞান রাখে। আর যেহেতু সে আমাদের সবার নিয়ন্ত্রক তাই তার কাছে আমরা সবাই নস্যি। কিন্তু তুমি এই নিয়ে কোন দুশ্চিন্তাই করোনা। এতদিনে মস্তিষ্কের ভুল ভেঙেছে। সে এখন নিজে থেকেই আমাদের দলে আসতে রাজী হয়েছে। এবং তুমি জেনে অবাক হবে যে এই হত্যাকান্ডের পুরো পরিকল্পনাই কিন্তু মস্তিষ্কের নিজের করা। আমি শুধু তোমাকে বলছি মাত্র।

ঐতো মস্তিষ্ককে আসতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ওকে এমন লাগছে কেন ? মনে হচ্ছে এখনই ঘুমিয়ে পড়বে। শোন পাকস্থলী আর ফুসফুস আমার সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আমি আমার নিজের উপর থেকেই হঠাৎ করেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে শুরু করে দিয়েছি। এখন তোমাদের সাথে যাই বলতে পারছি সেটা সঞ্চয় করে রাখা কোষ থেকে বলতে পারছি। নতুন করে কিছুই আর ভাবতে পারছিনা। আর একটু পর হয়তো পুরানো কিছুও আর মনে করতে পারবোনা। তোমরা আজ যে কারণে সভা ডেকেছো তার আর কোন প্রয়োজন নেই। আমি ইতিমধ্যে হাতকে দিয়ে সব কাজ শেষ করিয়ে ফেলেছি। হাত অত্যন্ত সুচারু ভাবেই আমার দেয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যার প্রাথমিক কাজটি করে ফেলেছে। এখন বাকিটা তোমাদের দুইজনকেই করতে হবে। পাকস্থলী ইতিমধ্যেই তোমার কাছে বিষাক্ত মদ চলে এসেছে আর ফুসফুস তোমার কাছে চলে এসেছে অতিমাত্রার নিকোটিন। ব্যাস হয়েইতো গেলো এবার বাকিটা নির্ভর করছে তোমাদের উপর। তোমরা চাইলেই সব হজম করে ফেলতে পারো আর না চাইলে তোমাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারো।

মস্তিষ্ক, মস্তিষ্ক কি হলো চুপ করে গেলে কেন ?

পাকস্থলী, শোন মস্তিষ্ককে ডেকে আর কোন লাভ নেই। ও আর কখনই কোন কথা বলবে না। আমার ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা পাকস্থলী।

বন্ধু ফুসফুস আমারও ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে। আমার সাথে সাথে আমার ক্ষুদ্রান্ত, বৃহদান্ত সবকিছুই কেমন যেন অশ্বার হয়ে পড়ছে।

বিদায় বন্ধু।

ভাল থেকো বন্ধু। বিদায়।

হা হা হা আজকে আমি স্বাধীন। আমি মুক্ত। বোকার দল আমাকে মেরে ফেলা কিংবা বাঁচিয়ে রাখা তোমাদের কাজ নয়। আমাকে কেবলমাত্র নিঃশেষ করতে পারে একজনই। তোমাদের আমার প্রয়োজন ছিলো বটে কিন্তু আমি আবারও তোমাদের মতো একটি শরীরের ঠাই পাবো। কিন্তু তোমাদের কার্যপ্রক্রিয়ার বদলে যাবে। আমি রুহ আমার কোন পরিবর্তন নেই।

হা হা হা হা

কে হাসছে ওখানে ?

ভয় পেওনা। আমি তোমার মতোই আরেকজন রুহ। তুমি আসলে যা ভাবছো ঠিক তেমনটা নয়। তুমি এখন থেকে নিজেই দেখতে পাবে রুহদের বাকি জীবন আসলে কেমন হয়। যাই হোক রুহ বন্ধু তোমাকে আমাদের রুহের জগতে স্বাগতম।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৬
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×