somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

উত্তরণ

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





I am Horus and I traverse millions of years.
- মিশরীয় পৌরণিক ধর্মগ্রন্থ বুক অফ দ্যা ডেড

সুপ্রিয় কথা সাহিত্যিক শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন আহমেদ স্যারের অত্যন্ত সুলিখিত বিখ্যাত সাই-ফাই গল্প ইরিনার অনুপ্রেরণায় মূলত এই গল্পটি লেখা। তবে ইরিনা গল্পটি আর আমার এই গল্পটি সম্পূর্ণ দুটি ভিন্ন মাত্রার গল্প।

[১]

শামু একমনে মাংস কোপাচ্ছে। তার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছলছল চোখে ক্রমাগত লেজ নাড়িয়ে যাচ্ছে একটি কুকুর। মাঝে মাঝে কুকুরটা জিহবা বের করে তার ক্ষুধার কথা জানান দিচ্ছে। শামু মাঝে মাঝে হুশ ! হুশ !! বলে তাড়া করতেই কুকুরটা দৌড়ে পালাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর আবারও আগের অবস্থানে এসে হাজির হচ্ছে কুকুরটা। যতবারই কুকুরটা আসে শামু তাকে তাড়িয়ে দেয়। একপর্যায় আর না পেরে শেষে হাতের কাছের চাপাটিটাই ছুঁড়ে মারে কুকুরটার দিকে। শামুর হাতের নিশানা নির্ভুল। চাপাটিটা সোজা কুকুরটার ঘাড়ের উপর বসে যায়। মুহূর্তের মধ্যে পিচকারীর মতো রক্ত বের হয়ে আসতে থাকে। গোঙানির শব্দ তুলে দেখতে দেখতেই কুকুরটা মারা যায়। রক্তে ভেসে যাচ্ছে পুরো রাস্তা। শামুর মনে এসব কিছুই কোন প্রভাব ফেলেনা। প্রতিদিন এমন রক্ত দেখে দেখে সে অভ্যস্ত। নির্বিকার ভাবে সে চাপাটিটা সহই কুকুরটাকে নিয়ে গিয়ে ঢিল দিয়ে ফেলে আসে বড় রাস্তায় রাখা আবর্জনার কন্টেইনারটিতে। ফিরে এসে সে আবারও মাংস কোপানতে মনযোগী হয়ে ওঠে।

এই শহরের আইন কানুন সম্পর্কে শামুর অজানা কিছুই নেই। এই শহরের সবাইকে আইন মেনেই বেঁচে থাকতে হয়। সে এই শহরের বাজারটির সবচেয়ে পুরান কসাই। এক নামেই সবাই তাকে চেনে। তার সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো সে কখনও মাংসে পানি দেয় না। ধারা ৩৪ এর অনুচ্ছেদ (ঘ) অনুযায়ী মানবের খাদ্য উপযোগী পশু ব্যতীত অন্য যে কোন প্রাণী হত্যা একটি শাস্তি যোগ্য অপরাধ। কিন্তু শামু আজকে আইন ভঙ্গ করেছে অতএব তার শাস্তি অবধারিত। দেখতে দেখতে দুটি রোবট পুলিশ এসে শামুকে ধরে নিয়ে গেলো। রোবট পুলিশরা অপরাধীদের ধরে কোথায় নিয়ে যায় সে সম্পর্কে সাধারণ মানবদের কোন ধারণা নেই। এই যে এত কিছু ঘটে গেলো কারও মনে কোন প্রতিক্রিয়া নেই। কেউ কোন কিছু দেখছেও না। যে যার কাজে ব্যাস্ত রয়েছে। রাস্তা দিয়ে নির্বিকার ভাবে পথচারীরা হেটে যাচ্ছে ঘটনাস্থলের সামনে দিয়েই। অথচ কেউ ফিরেও তাকাচ্ছেনা। এই শহরের মানবগুলো এভাবেই বোধ জ্ঞানহীন ভাবে বেঁচে থাকে। তাদের কাছে সময়ই সবকিছু। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করার মতো সময় কারও নেই। এখানে সবার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তাই এই নির্ধারিত সময়ের মাঝেই সবকিছু করতে হয়। কোথাও দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করার মতো সময় তাই কারও থাকেনা।

অথচ আজকে আমি বেশ কিছুটা সময় নষ্ট করে ফেলেছি। অবশ্য এই শহরে একমাত্র আমিই আছি যার কিছুই করার নেই। তাই সময় নষ্ট করতে পারলেই দ্রুত মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবো বলেই আমার ধারণা। মৃত্যুর পর মানবকে দেয়া হয় অমরত্ব। তবে অমরত্ব দেয়া হয় শুধুমাত্র সেইসব মানবদেরকেই যারা সম্পূর্ণভাবে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে বেঁচে থাকে। আমি অমরত্ব পেতে চাইনা বলেই নির্দ্বিধায় সময় নষ্ট করে যাচ্ছি। খুব সম্ভবত শামুরও অমরত্ব পাওয়ার ইচ্ছা নেই। তাই সে আইন ভঙ্গ করেছে। আইন ভঙ্গ করলেও অমরত্ব দেয়া হয়না।

[২]

আমি এখন যাচ্ছি বাঘা হোরের দরবারে। বাঘা হোর এই শহরের সবচেয়ে বেশী সময় পাওয়া একজন মানব। বেঁচে থাকার জন্য দীর্ঘ সময় পেতে হলে মানবকে সময় নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল রপ্ত করতে হয়। এটা কোন সাধারণ মানবের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু বাঘা হোর সেটা করতে পেরেছেন। অতএব তিনি অবশ্যই কোন সাধারণ মানবের পর্যায় পরেননা। বাঘা হোরের দরবারে যাওয়ার পেছনে আমার দুটি উদ্দেশ্য আছে। প্রথমত তার সময় নিয়ন্ত্রণের কৌশলের রহস্য জানা, দ্বিতীয়ত আমার জীবন থেকে আরও কিছু সময় নষ্ট করা। এই শহরের কোন মানবকে জিজ্ঞাসা করলেতো আর রহস্যটা জানা যাবেনা। কেউ এই নিয়ে সময়ও নষ্ট করতে চাইবেনা। কিন্তু আমার খুব দ্রুত সময় নষ্ট করার প্রয়োজন। আমি অমরত্ব চাই না, চাইনা বেঁচে থাকতেও। এই শহরে মানবদের জন্য আত্মহত্যার কোন অপশন রাখা হয়নি। শুধুমাত্র নির্ধারিত সময় শেষ হলেই মানবের সময় শেষ হয়ে যাবে। মারা যাবে। তাই আমার কাছে মনে হয়েছে সময়গুলো খুব দ্রুত নষ্ট করতে পারলেই কেবলমাত্র মারা যাওয়া সম্ভব। যেখানে নিয়ম আছে সেখানে অবশ্যই নিয়ম ভাঙার কোন না কোন উপায়ও আছে। এভাবে সময় নষ্ট করে মরতে পারাটাও এক রকমের আত্মহত্যা। এই শহর আর শহরের মানবদের যে বা যারা বানিয়েছে তারা আত্মহত্যা যে এভাবেও করা যেতে পারে সেটা নিয়ে নিশ্চয় ভাবেনি। ভাবলে এভাবেতো আমার সময় নষ্ট করতে পারার কথা না। তবে এটাও হতে পারে যে অমরত্ব পাওয়া আর না পাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই এই দিকটায় ইচ্ছা করেই একটা ফাঁক রাখা হয়েছে।

বাঘা হোরকে দরবারে পাওয়া গেলো না। কিন্তু তার দরবারে টেবিলের উপর একটা বইয়ের দিকে নজর যেতেই ভীষণ আকৃষ্ট হোলাম। বইয়ের নাম অজানা একজন মানুষের রহস্য। বইটা হাতে নিয়ে দুই তিন পাতা করে উল্টাতে উল্টাতে পুরোটাই যে কখন শেষ করে ফেললাম টের পাইনি। অজানা একজন মানুষের রহস্যের সার সংক্ষেপ করলে মোটামুটি যা দাঁড়ায় তা অনেকটা এইরকম।

তিনি পৃথিবী নামক এক গ্রহের মানুষ সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন নিষিদ্ধ মানুষ। তিনি হঠাৎ করেই একদিন উধাও হয়ে যান। পৃথিবীবাসীর কাছে তাঁর রহস্য ভীষণ জটিল হিসাবেই থেকে যায়। যতটুকু জানতে পারা যায় তিনি সময়কে নিয়ন্ত্রণ করার এক বিশেষ যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। সেই যন্ত্রের মাধ্যমে তিনি এক হাজার বছর পেছনের অতীতে চলে আসেন। এরপর থেকে তিনি অতীত সেই সময়ের মাঝেই থেকে যান। সেখানে গড়ে তুলেন নিজস্ব এক শহর। শহরের মানবদের জন্য সম্পূর্ণ নিজের মতো করে আইন তৈরি করেন। তাঁর কাজের সুবিধার জন্য তিনি তৈরি করেন রোবট। এইসব রোবট শুধুমাত্র তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে থাকে। এদের কার্যত কোন বোধ শক্তি দেয়া হয়না। খাদ্য গ্রহণেরও কোন প্রয়োজন হয়না। অতীত সময়ের মানবদের নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি তৈরি করেন বিশেষ সময়ের এক অভিনব কৌশল। যা অতীত সময়ের প্রতিটি মানবের শরীরে তিনি একটি অতি ক্ষুদ্র মাইক্রো চিপ সংযুক্ত করার মাধ্যমে করেন। তিনি নিজের থাকার জন্য ত্রিভুজ আকৃতির একটি ঘর বানান। যা ঠিক কোথায় অবস্থিত সে রহস্য ভেদ করার সাধ্য তিনি মানবদের মধ্যে রাখেননি। তবে সেই ত্রিভুজ আকৃতির ঘরের সম্পর্কে ধারণা করা হয় যে ঘরটির ভেতরের দেয়াল জুড়ে অঙ্কিত রয়েছে পৃথিবীবাসীদের জীবন যাপনের নানা রকম চিত্রলিপি। খুব সম্ভবত তিনি তাঁর পৃথিবীর স্মৃতি চিহ্ন ধারণ করতে চান বলেই এসব চিত্রলিপি এঁকে রেখেছেন। আর বাইরের দেয়াল ধাপে ধাপে বিন্নস্ত। তাঁর এই ত্রিভুজ আকৃতির ঘরের নাম তিনি রেখেছেন পিরামিড।

বইটা পড়া শেষ হতেই হঠাৎ বাঘা হোরের দরবারের দেয়ালে চোখ পড়লো। ভীষণ চমকে উঠলাম। অজানা এক শঙ্কা মনে দানা বাঁধতে শুরু করেছে। বইটির বর্ণনার সাথে এই দরবারের হুবহু মিল আছে। কিন্তু দেয়ালে যেসব চিত্রলিপি আঁকা রয়েছে সব এই শহরের মানবদের জীবন যাপনের স্বরূপ। আর বাইরের দেয়াল ধাপে ধাপেই বিন্নস্ত। এমনকি এই দরবারটিও ত্রিভুজ আকৃতির। মনে হচ্ছে যেন এই বইয়ের বর্ণনা অনুযায়ীই বাঘা হোর তাঁর দরবার গড়ে তুলেছেন। বাঘা হোর এখনও ফিরে আসেননি। আমারও এখন ভীষণ ভয় করছে। তাই বইটি রেখে যত দ্রুত সম্ভব দরবার থেকে বের হয়ে এলাম।

[৩]

রাস্তা দিয়ে হাটছি এমন সময় দুটি রোবট পুলিশ এসে আমার পথ আটকালো। একটা রোবটের হাতে ভাইব্রেটর টিউব আর অন্যটার হাতে আরপি-৭১ লেজার গান। ভাইব্রেটর টিউব কোন মানবের মাথায় স্পর্শ করলে সেই মানব মুহূর্তের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যায়। রোবট পুলিশরা সাধারণত অপরাধীদের এই ভাইব্রেটর টিউবের মাধ্যমে অজ্ঞান করে নিয়ে যায়। যেন তারা জানতে না পারে তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়। আরপি-৭১ লেজার গান এমন এক উন্নতমানের লেজার গান সিরিজের গান যার থেকে এক ধরণের তেজস্ক্রিয় রশ্মি বের হয়। যা পুরো প্রাণী জগতের প্রকৃতি পরিবর্তন করে ফেলতে সক্ষম। রোবট পুলিশ দুটি দুই দিক দিয়ে আমার দুই হাত ধরে মাথায় ভাইব্রেটর টিউব স্পর্শ করিয়ে দিলো।

চোখ খুলতেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম একটা কাঁচের কফিনের ভেতর। বাইরে থেকে নানা রকম তার লাগানো রয়েছে। সবগুলো তার একটা যন্ত্রের সাথে লাগানো। পর্দায় নানা রকম রেখা আর লেখা উঠছে আবার সেগুলো মুছে যাচ্ছে, একটা মানব আকৃতির রেখা চিত্র উঠে আছে পর্দায়। একটা রোবট এসে সেই যন্ত্রটায় একবার হাত ছোঁয়াতেই পর্দায় লেখা উঠলো অথোরিটি রিকগনাইযড। আমার কাঁচের কফিনের দরজাটা মুহূর্তে খুলে গেলো।

মিঃ লুসিফার এখন কেমন অনুভব করছেন ? কথা বলার সাথে সাথে রোবটটির চোখে নানা রঙের আলো জ্বলতে শুরু করলো। আমি একজন মানব। আমাকে এখন কথা বলতে হবে একটা রোবটের সাথে। মানব কথা বলছে রোবটের সাথে। ব্যাপারটা মোটেও সুখকর বলে মনে হচ্ছেনা। তবু এখন আমাকে কথা বলতে হবে। মানবের ইচ্ছার বাইরে অনেক কিছুই করতে হয় এখানে। তবে আমি যেমন ধরণের মানব তাতে করে এই রোবটের সাথে শুধু কিছু বোধগত পার্থক্য নেই বলেই আমার ধারনা।

ভাল।

আপনার জন্য একটি সুংবাদ আছে !

বলুন কি সেই সুসংবাদ।

আপনি মনে মনে যা চাচ্ছিলেন তা পূর্ণ করে দেয়া হয়েছে। আপনার সময় নষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

তাহলে আমি এখনও বেঁচে আছি কি করে ?

কিছুটা সময় রাখা হয়েছে। যেন আপনি মারা যাওয়ার আগে আপনার সৃষ্টির উদ্দেশ্য জেনে যেতে পারেন। আপনার হিসাব আপনাকে পরিপূর্ণ ভাবে বুঝিয়ে দেয়া হবে। মানবদের অমরত্ব কিংবা মৃত্যু দেয়ার আগে তাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য এবং জীবনের সম্পূর্ণ হিসাব বুঝিয়ে দেয়া হয়। একে বলা হয় জাজমেন্ট। আপনার এখন যেটুকু সময় রাখা আছে তা জাজমেন্টের জন্যই।

এই জাজমেন্টটা করেন কি আপনারাই ?

না, এটা করেন তিনি স্বয়ং যিনি আমাদের সবাইকে সৃষ্টি করেছেন। আপনি কি এখন কিছু খাবেন?

একটা সিগারেট খেতে খুব ইচ্ছা করছে।

রোবটটি আমার হাতে একটি সিগারেট ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো। আমি নীরবে বসে সিগারেট টানছি আর অপেক্ষা করছি আমার জাজমেন্ট পাওয়ার জন্য। সিগারেট টানতে টানতে পুরো জায়গাটা ঘুরে দেখা যেতে পারে। আসলে পুরোটা একটা বিশাল ত্রিভুজ আকৃতির ঘর। সেই বইয়ের বর্ণনা আর বাঘা হোরের দরবারের মতোই পুরো ঘরটা। বাইরের দেয়াল ধাপে ধাপে বিন্নস্ত আর ভেতরের দেয়ালে মানুষের জীবন যাপনের চিত্রলিপি আঁকা। মানুষের সাথে দেখা যাচ্ছে মানবের আকৃতিগত খুব একটা পার্থক্য তেমন কিছুই নেই। একটা গোলাকার বস্তুর ছবি আঁকা আছে যেটার ভেতর থেকে সিঁড়ি বেয়ে মানুষ নামতে দেখা যাচ্ছে, কারও কারও হাতে আরপি লেজার গান নিশানা করা অন্য আরও মানুষদের দিকে, মানুষ কাজ করছে এক যন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে যেমনটা কিছুক্ষণ আগে রোবটটা এসে যে যন্ত্রটির সামনে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলো, কাঁচের কফিনের ভেতর মানুষ, ইত্যাদি আরও নানা রকম চিত্রলিপি আঁকা রয়েছে ঘরটির পুরো দেয়াল জুড়েই।

[৪]

হে মহারাজ, লুসিফারের সময় নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এখন সে আপনার জাজমেন্টের জন্য অপেক্ষা করছে। খুব বেশী সময় তার নেই।

কোর তুমি কাজটি মোটেও ঠিক করোনি ?

কিন্তু মহারাজ আমিতো আপনার নির্দেশ ছাড়া কোন কিছুই করি না।

এমনটাই নির্দেশ দেয়া ছিলো নাকি কোর ?

হ্যাঁ, মহারাজ।

বুঝলে কোর আমার আজকাল খুব ভুলে যাওয়ার রোগে ধরেছে। খুব সম্ভবত আমি আর আমার সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিনা। তাই হয়ত বয়স বেড়ে যাচ্ছে। যদি এভাবে নিজের সময়ের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে থাকি তাহলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে কোর। এই শহরের সব মানবের সময় শেষ হয়ে যাবে, এই শহর পরিত্যাক্ত হয়ে যাবে। নতুন করে কোন মানবের আর জন্ম হবেনা কোন দিন।

হে মহারাজ যদি সত্যি এমনটা হয় তাহলে আমাদের কি করণীয় থাকবে ?

তোমাদের স্বেচ্ছায় কিছু করার প্রোগ্রাম করা নেই। তাই তোমরাও আর কিছুই করার না পেয়ে সময়ের একটা পর্যায় বিকল হয়ে যেতে শুরু করবে। তোমাদের পাওয়ার সোর্স স্থবির হয়ে পড়তে শুরু করবে। এক পর্যায় তোমরা পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়বে।

হে মহারাজ আপনিতো চেষ্টা করলে পুনরায় আপনার সময়ের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে পারেন ?

হুম ! পারি। কিন্তু সেটাও করতে পারছিনা। আমি মূল সিস্টেমের পাসওয়ার্ড কিছুতেই মনে করতে পারছিনা।

আমি যতদূর জানি, হে মহারাজ আপনার হৃদপিণ্ড স্ক্যান করলেই সময় নিয়ন্ত্রণ সক্রিয় হয়ে ওঠে।

হুম ! তুমি ঠিকই জানো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অতিমাত্রায় সিগারেট খাওয়ার ফলে আমার হৃদপিণ্ডের সাথে সংযুক্ত ফুসফুস এর অধিকাংশ স্থান ক্ষয়ে যাওয়ার কারণে এখন হৃদপিণ্ড তার মূল অবস্থায় নেই। যা দিয়ে সর্বপ্রথম পাসওয়ার্ড করে ছিলাম। এখন সে রিড করতে পারেনা। বারবার ম্যাসেজ দেয় অথোরিটি মিস ম্যাচড।

মহারাজ পাসওয়ার্ড বদলে নেয়ার কোন অপশন নেই ?

না আমি তৈরি সময় ইচ্ছা করেই সেটা রাখিনি। ভেবেছিলাম তার প্রয়োজন হবেনা। আমার পুরো নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।

তাহলেতো মহারাজ এখন আমাদের ধ্বংস অনিবার্য এবং এর জন্য এখন শুধু আমাদের অপেক্ষার প্রহর গোণা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

হুম ! কোর তুমি হলে আমার আবিষ্কৃত সবকিছুর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান আবিষ্কার। তোমাকে ঠিক আমার আদলে, আমার কিছু বিশেষত্ব দিয়ে তৈরি করা। তোমার সাথে সংযুক্ত করা আছে আমার অন্যান্য সব সৃষ্টি।

আমি জানি হে মহারাজ। আমি এও জানি আপনি আমাকে ভীষণ রকম ভালোবাসেন। আপনি আমাকে আপনার নিজের সন্তান বলেই বিশ্বাস করেন।

তুমি এখন যাও কোর। আমাকে কিছুক্ষণ একা থাকতে দাও। আমার সিগারেট শেষ। আমার জন্য কিছু সিগারেট এনে রেখে যেওতো।

মহারাজ আমি কি লুসিফারের কিছুটা সময় বাড়িয়ে দিব ?

কোর দেখতো আমার আর কতটা সময় অবশিষ্ট আছে ? আমার যতটা সময় অবশিষ্ট আছে ঠিক ততটা সময় তুমি লুসিফারকে দিয়ে দাও।

কোর সিগারেট এনে রেখে গেছে। আমি সিগারেট ধরালাম। আজ খুব মিরিন্ডার কথা মনে পড়ছে।

আমি তখন তিন হাজার সালের একজন মানুষ। আমার কাজ হলো সমস্ত সময় ধরে সময় নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল উদ্ভাবন করার প্রয়াসে ব্যাস্ত থাকা। মিরিন্ডার সাথে প্রথম পরিচয় হয় আমার এক বন্ধুর বাসায়। রক্সি খুব ভাল একজন চিত্রশিল্পী। ওর কাছে সময়ে সময়ে যেতাম আঁকাআঁকি শেখার জন্য। মিরিন্ডা জনপ্রিয় একজন সংগীত শিল্পী। আমার সংগীতের প্রতি কখনই কোন আকর্ষণ নেই। তাই মিরিন্ডার সংগীত পরিচিত সম্পর্কে প্রথম রক্সির বাসায় জানতে পারি। মিরিন্ডার শখ হয়েছে তার পুরো নগ্ন শরীরের একটি পোট্রেট আঁকাবে রক্সিকে দিয়ে।

মিরিন্ডা পুরো নগ্ন হয়ে সোফায় বিশেষ ভঙ্গিতে শুয়ে আছে। একটি স্ক্রীনে তার শরীরের একটা স্ক্যান কপি নিয়ে রক্সি এডিটিং এর কাজ করছে। স্ক্রীনে কি হচ্ছে সেই দিকে আমার কোন আগ্রহ নেই। আমি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি মিরিন্ডার দিকে। মেয়েটাকে কৃষ্ণ সুন্দরী বলা যেতে পারে। গায়ের রং কালো হলেও খুব পরিষ্কার। তবে মিরিন্ডার আসল রূপ হলো তার মায়াবী মুখ। এমন মায়াবী মুখের কাছে অনন্ত সময়কাল যেন নস্যি ! মেয়েটা ভীষণ রকমের অভিমানী।

আমি আমার আবিষ্কার নিয়েই সারাক্ষণ ব্যাস্ত থাকতাম বলে তাকে সময় দেয়া হয়ে উঠত না। আমি মিরিন্ডাকে কখনও বোঝাতে সক্ষম হয়নি আমি তাকে কতটা ভালোবাসি। তারপর একদিন সময় নিয়ন্ত্রণের স্পেশ শীপ বানাতে সক্ষম হোলাম। স্পেস শীপে করে এক হাজার বছর পেছনের অতীত সময়ে চলে আসার সময় তাকে আর জানানো হয়নি। ইচ্ছা ছিলো খুব মিরিন্ডাকে সাথে করে নিয়েই সময় নিয়ন্ত্রণের স্পেস শীপ ভ্রমণের। কিন্তু কেন জানি সেটা আর করতে পারিনি। বারবার মন চাইছিলো কিন্তু যতবারই ভাবছিলাম ততবারই মনঃটাকে শেষ পর্যন্ত আর মানাতে পারিনি। সময়ের একটা পর্যায় এসে আমার কেবলই মনে হয়েছে মিরিন্ডা আমাকে ভালোবাসে না। তার ভালোবাসা কেবলই রক্সির প্রতি।

[৫]

রবোট এসে আমাকে আবারও সেই কাঁচের কফিনে ঢুকিয়ে আমার সময় বাড়িয়ে দিয়ে গেছে।

আপনার সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

আমার প্রতি কেন এমন মহানুভবতা দেখানো হচ্ছে জানতে পারি কি ?

দুঃখিত আমি এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অপারগ। তবে আপনি চাইলে আপনার সৃষ্টির উদ্দেশ্য আপনাকে জানানো যেতে পারে। আপনি কি সেটা জানতে আগ্রহী ?

না, এই নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই।

বেশ, তাহলে।

আচ্ছা আমি কি এই ঘরের বাইরে যেতে পারবো ?

অবশ্যই যেতে পারবেন। তবে এই ঘরের বাইরে দেখার মতো তেমন কিছুই আপনি খুঁজে পাবেন না। বাইরে শুধুই বিস্তর মরুভূমি।

আচ্ছা এই ঘরটার নাম কি পিরামিড ?

হ্যাঁ।

হুম ! আচ্ছা আমাকে কি কিছু সিগারেটের ব্যবস্থা করে দেয়া যাবে।

অবশ্যই যাবে। রোবটটি আমাকে কিছু সিগারেট এনে দিয়ে চলে গেলো। আমি সিগারেট ধরিয়ে পিরামিডের ভেতর থেকে বাইরের মরুভূমিতে ঘুরতে বের হয়েছি।

সত্যি এখানে ঘুরে দেখার মতো কিছুই নেই। চারদিকে শুধু মরুভূমির বালু আর বালু। আমি হাটছি বালুর পথ ধরে। হাটতে হাটতে অনেকটা দূরের পথে চলে এসেছি। একটা প্রাসাদ চোখে পড়তেই খুব বিস্মিত হোলাম। দ্রুত প্রাসাদের দিকে এগুচ্ছি। মনের ভেতর অবদমিত কৌতূহল কাজ করছে এই মুহূর্তে।

প্রাসাদের প্রধান দরজার সামনের দুই দিকে দুটি সিংহের মূর্তি। কি অদ্ভুত শিল্প কর্ম ! সিংহ দুটিকে দেখে মনে হচ্ছে যেন জীবন্ত অথচ পাথড়ে খোদাই করে গড়ে তোলা হয়েছে এই অপূর্ব শিল্পকর্ম। প্রাসাদের ভেতরে রাখা এক নগ্ন নারী মূর্তির দিকে চোখ পড়লো। কৃষ্ণাঙ্গ শ্বেত পাথড়ে গড়া মূর্তিটির মুখটি দেখে মনে হলো এমন মায়াবী মুখ আর দ্বিতীয়টি হওয়া কোন সময়তেই সম্ভব নয়। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি এই নারী মূর্তির মায়াবী মুখের আকর্ষণে প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি মূর্তিটির দিকে।

এই প্রাসাদটি ঠিক কত বছরের পুরানো আঁচ করতে পারছিনা। রোবটটি বলছিলো পিরামিডের বাইরে মরুভূমি ছাড়া আর কিছুই নেই। তাহলে কি এই প্রাসাদ সম্পর্কে তাদের কিছুই জানা নেই। অথবা এমনওতো হতে পারে রোবটটি আমার কাছে ইচ্ছা করেই প্রাসাদটি সম্পর্কে এড়িয়ে গেছে। আমি আরও কিছুটা সময় প্রাসাদের ভেতর মূর্তিটির সামনে বসে থেকে ফিরে এলাম পিরামিডে।

কোর আপনি বলছিলেন এই পিরামিডের বাইরে মরুভূমি ছাড়া আর কিছুই নেই। কিন্তু আমি একটা প্রাসাদের সন্ধান পেলাম। বিষয়টা কি বলবেন ?

দেখুন আমি শুধুমাত্র একটি প্রোগ্রাম যা আমার মহারাজের তৈরি করা। আমি তার দেয়া ইন্সট্রাকশনের বাইরে কোন জ্ঞানই রাখি না। প্রাসাদ সম্পর্কে হয়ত আমার মহারাজ বলতে পারবেন।

হুম ! আমার কি মহারাজের সাথে দেখা করে কথা বলার কোন সুযোগ আছে ?

এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে মহারাজের একান্ত ইচ্ছার উপরে।

হুম !

কোর লুসিফারকে মনে হচ্ছে পিরামিডের বাইরে যেতে দেয়ার অনুমতি দেয়াটা ঠিক হয়নি।

মহারাজ সে বলছিলো সে নাকি মরুভূমিতে কি এক প্রাসাদ দেখেছে !

হুম ! কোর এখন থেকে লুসিফারের পিরামিডের বাইরে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

আপনি যেমনটা চাইবেন হে মহারাজ !

কোর তুমি এখন যাও। আমি এখন কিছুটা সময় একা থাকবো। আমি একটা সিগারেট ধরালাম।

[৬]

আমি যেদিন প্রথম অতীত সময়ে এলাম। আমার স্পেস শীপ এসে থামল বিস্তর এক মরুভূমির একটা প্রাসাদের ভেতরে। স্পেস শীপের দরজা খুলে বের হতেই প্রচন্ড রকম একটা ধাক্কা খেলাম অবিকল মিরিন্ডার মতো গড়া এক নারী মূর্তি দেখে। প্রাসাদের দেয়ালে লেখাগুলোর পাঠ উদ্ধার করলাম। এখন থেকে কয়েক হাজার বছর আগে এখানে ছিলো এক বিস্তর জনপদ। আর এই প্রাসাদটি ছিলো সেই জনপদের রাজ দরবার। যে নারী মূর্তিটি দেখা যাচ্ছে তিনি ছিলেন এই প্রাসাদের রানী।

রানীর এক ভাইয়ের সাথে তার পরবর্তীতে বিয়ে হয়। অন্য আরেক রাজার হাতে তার স্বামীর হত্যা হয় কারণ সেই রাজাও রানীর প্রেমে পড়েছিলেন। অবশেষে রানীর যাদুবলে তার স্বামী প্রাণ ফিরে পায়। তাদের এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। পরবর্তীতে সেই সন্তান রাজপাঠ বুঝে নেন। তার সাথে অন্য এক রানীর ভয়ংকর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে তারই জয় হয়। একদিন তিনি হঠাৎ করেই যেন কোথায় উধাও হয়ে যান। তার মা বিশ্বাস করেন তার পুত্র অমর। তিনি একদিন আবারও ফিরে আসবেন।

কোর লুসিফার এখন কি করছে ?

মহারাজ তাকে কাঁচের কফিনে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।

লুসিফারকে জাগিয়ে তুলে আমার কাছে নিয়ে আসো কোর।

জী মহারাজ !

লুসিফার, তুমি কেমন আছো ?

হে মহারাজ ভাল নেই।

কেন ?

আমার মাথায় এখন শুধু একটি প্রাসাদ ঘুরপাক খাচ্ছে।

হুম ! সেটা আমি জানি। তোমাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছিলো সেটা তুমি করোনি কেন জানতে পারি কি ?

হে মহারাজ আমি সেটা ইচ্ছা করেই করিনি। আমার খুব ইচ্ছা ছিলো সম্পূর্ণ জীবিত অবস্থায় আপনার কাছে ফিরে আসার।

তুমি ধারা ৯ এর অনুচ্ছেদ (ক) আইন ভঙ্গ করেছো। এর একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এটা জানার পরেও তুমি আইন ভঙ্গ করেছো। কেন ?

কারণ মহারাজ, আমি জানতাম আপনি আমার এই আইন ভঙ্গের পরেও আমাকে বাঁচিয়ে রাখবেন। কারণ আপনি একজন মহান হৃদয়ের অধিকারী মহারাজ।

আর তুমি এও ভাল করেই জানতে তুমি কাজটা না করলে আমি তোমাকে ঠিকই আমার কাছে জীবিত অবস্থাতেই ফিরিয়ে আনবো আবারও। বাহ ! লুসিফার তুমি তোমার পরিকল্পনায় পুরোপুরি সার্থক হয়েছো।

হে মহারাজ আমার পরিকল্পনা সার্থক হয়েছে।

এখন তুমি চাইছো আমাকে মেরে ফেলে এই জগতের পুরো নিয়ন্ত্রণ তোমার করে নিতে।

হা হা হা হা মহারাজ আপনি ঠিকই ধরেছেন।

লুসিফার তুমি ভীষণ বোকা। তোমার এই পরিকল্পনা এখন আর কিছুতেই সার্থক হওয়া সম্ভব নয়। হ্যাঁ আবার তোমার পরিকল্পনা সার্থক তখনই হতো তুমি যদি আমার দেয়া কাজ অনুযায়ী বাঘা হোরের আবিষ্কৃত সময় নিয়ন্ত্রণ স্পেস শীপ তোমার নিয়ন্ত্রণে নিতে পারতে। কিন্তু তুমি সেটা করতেও পারোনি আর এখন আর সেটা সম্ভবও নয়। বাঘা হোর তার স্পেস শীপে করে চলে গেছে তিন হাজার বছরে। সে আর কখনও সেখান থেকে ফিরে আসবেনা। সে এখন থেকে সেখানেই থাকবে। সে সেখানে গড়ে তুলবে তার নতুন এক পিরামিড দরবার ঘর। এই ক্ষেত্রে বাঘা হোর তার সার্থকতা পেয়েছে। আর আমার আবিষ্কৃত স্পেস শীপ এখন পুরোপুরিভাবে নিষ্ক্রিয়। আমি চাইলেও এখন এটার কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই আমি নিজেই বাঘা হোরের আবিষ্কৃত সময় নিয়ন্ত্রণ স্পেস শীপ পাওয়ার জন্য তোমাকে সৃষ্টি করেছিলাম। কিন্তু তুমি নিজে যেমন তাতে ব্যর্থ হয়েছো; আমার পরিকল্পনাও তুমি ব্যর্থ করে দিয়েছো। এখন আমারও মৃত্যু হবে সেই সাথে মৃত্যু হবে তোমারও। একই সাথে শেষ হয়ে যাবে আমারই সৃষ্ট এই জগতের পুরোটা সময়।

লুসিফার কি ভাবছো ? এখন তুমি চাইলে আমাকে লেজার গান দিয়ে মেরে ফেলতে পারো। জানি লেজার গানটা তোমার পকেটেই রাখা আছে। তবে তাতে করে বিশেষ কোন লাভ তোমার হবেনা লুসিফার। লুসিফার তোমার খুব আফসোস হচ্ছেনা এখন ?

কিসের জন্য আফসোস মহারাজ ?

তুমি মনে মনে চাইছিলে সময় নিয়ন্ত্রণ স্পেস শীপে করে প্রাসাদের সেই সময় ফিরে যাবে। ফিরে গিয়ে রানীকে তোমার প্রেম নিবেদন করবে। কিন্তু তোমার এই আশা যে পূর্ণ হবার নয়।

আপনি হে মহারাজ, সব কিছু সম্পর্কেই অবগত আছেন।

জানো লুসিফার, আমি একবার স্পেস শীপে করে গিয়েছিলাম সেই সময়ের অতীতে। কিন্তু আমি রানীর কাছে আমার প্রেমের নিবেদন করতে পারিনি। আমি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছি; যেভাবে ব্যর্থ হয়েছিলাম ঠিক মিরিন্ডাকে প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে। লুসিফার আমার সময় শেষ হয়ে এসেছে। বিদায় লুসিফার।

আমি একটা সিগারেট ধরালাম। মহারাজের মুখেও একটি সিগারেট ধরিয়ে দিলাম। বিদায়, হে মহারাজ !


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×