somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাখপতি ছাত্র!

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান ব্যাংক ঋণ-নির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কোন ভাবেই দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব নয়, কারণ এই দারিদ্র্যই বর্তমান ব্যবস্থার মূল জ্বালানী, কোন অবস্থাতে সবাই ঋণ পরিশোধে সক্ষম হবে না. অতি অবশ্যই একটা অংশকে ডিফল্টার হতে হবে অপর অংশকে নিয়মিত রাখতে। এর কারণ ঋণ বাজারে অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি করে বলে প্রোপাগান্ডা চালানো হলেও আদতে ঋণ সূদের মাধ্যমে বাজারের অর্থ চুষে নেয় বলে সব ঋণ পরিশোধের মত অর্থই বাজারে থাকে না। । বর্তমান পৃথিবীর উৎপাদন ন্যায্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বন্টিত হলে পৃথিবীতে দারিদ্র্য শব্দের জন্মই হত না! পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানী তথা ‘দরিদ্রের’ পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা, সে জন্য ঋণ গন্দমের ন্যায় কার্যকরী. একবার খেলে আর রটার্নের সূযোগ নাই। উন্নয়নের ডামাডোলে মৌলিক মানবাধিকার পরিপন্থী ও প্রত্যক্ষ শোষণের সবচেয়ে কার্যকরী, উপরন্তু ভীষণ লাভ জনক ও সস্তা উপায় ঋণ নামক গন্দমে বাজার সয়লাভ হয়ে যায়! অর্থনীতিবিদ নামক ভাড়াটে পীর আউলিয়াদের প্রলোভনে পা দিয়ে মানুষ গোগ্রাসে গিলছে এই গন্দম, তবে এ বিষয়ে ইভের কোন প্ররোচনা তো ছিলই না বরং অনেক ক্ষেত্রেই তাদের বারণ উপেক্ষা করেই আদম ভোগের আশায় সুখ বিসর্জন দিয়েছে।

দীর্ঘকাল ইভেরা নিজে এই গন্দম খায়নি কিন্তু হঠাৎই এক হ্যামিলনের বাঁশি ওয়ালার ‘গন্দম খাওয়া আমার অধিকার, আমার মানবাধিকার’ নামক রাপ সং এর ইলিউশানে ইভদেরও ডিলিউসন শুরু হয়, আর উইপোকার মত দলে দলে তারাও গন্দম খায়। এই বাঁশিওয়ালাার অপূর্ব বাজন ভঙ্গির কারণে প্লেগের চেয়ে দ্রুত একটা গন্দম খোর সভ্যতা গড়ে উঠেছে আর পূঁজি পেয়েছে অফুরান ‘দরিদ্রের’ ভাণ্ডার। আমার ধারণা এই বাঁশি ওয়ালার মগজ পুঁজি রসে চুবানোর ফলে বাস্তবে ঋণ দিয়ে দারিদ্র্য সৃষ্টির পথ সহজ ও তরান্বিত করেও আবার দারিদ্র্যকেই যাদুঘরে পাঠানোর হ্যালুসিনেশনে ভুগেছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই বাঁশি ওয়ালা ক্ষতিকর ভাইরাস পণ্যের মিথ্যা গুন গান করে বেচার জন্য এক সময় আত্মগ্লানিতে অনুতপ্ত হবেন, প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও। কোটি কোট মানুষকে ঋণ পরিশোধের কোন উপায় ছাড়াই ঋণের জালে আটকে ফেলার জন্য এই বাঁশি ওয়ালার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নৈতিক দাবি আমি কোন দিনও পরিত্যাগ করব না। যদিও এই বাঁশি ওয়ালার এখন আর গন্দম ফেরী করে বেড়ানোর দরকার পরে না তাই তিনি এখন তার নিজস্ব বহুতল বিপনীতে সেবা ব্যবসার দোকান দিয়েছেন, বেচা বিক্রি এখনও ততটা এখনও জমেনি, তবে আগেরটির মত বাঁশি ওয়ালার নতুন গান, “চাকরী করি না, চাকরী বেচি” তত দ্রুত জনপ্রিয়তা না পেলেও সম্ভাবনা বেশ ভাল, তাছাড়া অত্যন্ত শক্তিশালী মার্কেটিং নেটওয়ার্ক থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারেও এর বেশ সম্ভাবনা আছে. ইতোমধ্যে অনেক দেশেই ফ্রানসাইজি খোলা হয়েছে এবং হচ্ছে।

পূর্ব পাপের অনুতাপেই সজ্ঞানেই হোক বা নয়া ইনোভেশনের অন্তর্নিহীত গুনের কারণেই হোক তার বর্তমান পণ্য এই মুহূর্তে এই শ্রেণীতে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভাল পণ্য। সঠিক ভাবে ব্যবহৃত হলে তিনি যে মহাপাপ করেছেন তার অনেক খানি মোচন হতে পারে। অন্তত তাত্ত্বিক ভাবে বাজারে ঋণ বিহিন পূঁজি সরবরাহের কারণে তার নতুন পণ্যটিকে আমি নৈতিক ও আদর্শিক ভাবে শত ভাগ সমর্থন করি তবে পণ্যের গুনগত মান এখনও সন্তোষ জনক নয়, আরও মানোন্নয়ন দরকার অবশ্য একটু বিলম্বে হলেও বাজারই এক সময় তা মন্থর গতিতে হলেও করবে। মাইক্রোক্রডিট আমাদের জীবনে যে গভীর ক্ষত হয়ে বসে আছে এই ক্ষত সারাতে প্রকৃত পক্ষে দরকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল যার পদাংক অনুসরন করে গড়ে উঠবে একটা তরুন উদ্যোক্তা প্রজন্ম যা আমাদের আসল প্রয়োজন। আর এ জন্য আগে দরকার একটা উদ্যোক্তা ছাত্র প্রজন্ম যারা কেবল শিক্ষার দাস না হয়ে শিক্ষার শ্রষ্টা হবে, মান্ধাতা আমলের বস্তাপচা অচল শিক্ষার বদলে নতুন প্রজন্ম পাবে নিত্য নতুন শিক্ষা। শিক্ষার নূন্যতম যোগ্যতা হল তা মানুষকে বেঁচে থাকতে সক্ষম করবে আর তা কেবল তাদের সনদেই লেখা থাকবে না, প্রমাণ হিসাবে ছাত্র জীবনের স্বাভাবিক অংশ হিসাবে বাস্তবে তাদের পূঁজী সৃষ্টি হবে, আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শেষে নিজে কিছু করার জন্য নিজেদেরই 'সীড মানি' থাকবে, এদের মধ্যে কেউ কেউ হবে লাখপতি ছাত্র!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:৪২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×