প্রথমবারের মতো যুব চ্যাম্পিয়ান হবার পথে একটাই কলংক... মানকড়। ক্রিকেটীয় আইন বিচারে তোমরা না হারলেও নৈতিকতার বিচারে জিম্বাবুয়ের সাথে গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচটিতে তোমরা নিশ্চয় হেরেছ। জিতেও তাই শুনতে হয়েছে বিশেষজ্ঞসহ ক্রিকেটপ্রেমীদের তীব্র সমালোচনা। তথাপি এবং অবশ্যই জীবনের মতোই ক্রিকেটও সুযোগ আসে। বিজয়ী তারাই যারা এই সুযোগ শুধু গ্রহণ করে এবং এর সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটায়। অভিনন্দন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সমালোচনার জবাব তো এভাবেই দিতে হয়।
ক্রিকেট পণ্ডিতদের কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্বর্ণ যুগের ক্রিকেটের গল্প শুনে বড় হয়েছি। জানিনা, এই তরুণ তুর্কিরা কতোদূর যেতে পারবে বা তাঁদের স্বর্ণযুগ ফিরবে কিনা? এই আশংকার পিছনে কারন দু'টি। প্রথমত, বৈশ্বিক ক্রিকেট যে দেশগুলো ক্রিকেট খেলে আসছে তাদের ক্রিকেট বোর্ডের শক্তিমত্তা তাদের দলগত ক্রিকেটের শক্তিমত্তার উপর প্রচ্ছন্নভাবে হলেও প্রভাব ফেলে। উদাহরণ- ভারত, অস্ট্রেলিয়া। অস্বীকার করার উপায় নেই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট বোর্ড আর্থিকভাবে সবল তো নয়ই, তাদের খেলোয়াররাও বোর্ডের কাছে কোন ব্যাপারে জবাবদিহিতা দিতে বাধ্য নয়। এর উদাহরণ অতীতে অনেকবারই দেখা গিয়েছে। সাম্প্রতিক উদাহরণ- ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপ টি-২০ বর্জনের হুমকি!
দ্বিতীয়ত, ভালো না শোনালেও এটাই সত্য দ্বীপ দেশরাষ্ট্রগুলো নিয়ে গঠিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বীপঅঞ্চলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করা নিয়ে আলাদা কোন গর্ব কাজ করে না। গেইল, লারা কিংবা স্বর্ণযুগের ভিভিয়ান রিচার্ডসরা একক খেলোয়াড়ী নৈপুণ্যে টেনে এনেছেন এই দল'কে। এখনো এই একক নৈপুণ্যগুলোই টেনে নিচ্ছে এদের। সাথে যুক্ত হল ক্রিকেটীয় শিষ্টাচারহীন কাজ- এই 'মানকড়'! ৯০ দশক থেকে খেলা দেখতে শুরু করা এই আমি আমার সময়ের আন্ডারডগ এবং পোড় খেতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটির একঅর্থে সমর্থক ছিলাম। কিন্তু ভবিষ্যতের এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সমর্থন করবো কিনা তা ভাববার বিষয়!
পরিশেষে, ভারতীয় ক্ষুদে ক্রিকেটারদেরকেও অভিনন্দন। আদতে ফাইনালের আগপর্যন্ত কোনধরণের প্রতিদন্ধীতার মধ্যেই যেতে হয়নি দলটিকে।
টুর্নামেন্টের চমক নির্দ্বিধায় নেপাল।
আর টুর্নামেন্টের প্রাণ ছিল বাংলাদেশ।
মিরাজরাই ছড়ি ঘুরাবে ভবিষ্যতের ক্রিকেটবিশ্ব। এটা বিশ্বাস করি, এটা বিশ্বাস করতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৬