somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবারো প্রকাশ্যে প্রেম নিবেদন !! বিজ্ঞ জনেরা বিচলিত , হায় হায় , কি হলো কি হলো !!

০২ রা জুন, ২০১৬ দুপুর ১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আবার ওপেন প্রপোজ !! বিজ্ঞ জনেরা বিচলিত , হায় হায় , কি হলো কি হলো !! এত অধঃপতন এও কি স'হা যায় !! হায় ! হায় ! মরি মরি জাত গেলো জাত গেলো । ইত্যাদি ইত্যাদি আরও অনেক কিছু । কিন্তু এতো হায় হায় করে কি হবে ? এখনই তো ওদের প্রেম করার বয়স , ওরা তো ওটা করবেই । হয়তো বলবেন এভাবে খোলাখুলি হয়ে কেন , চুরি করে নয় কেন ? কিন্তু প্রেম তো চুরি করে করার জিনিস না , পরকীয়া হলে সেটা চুরি করে করার একটা বিষয় থাকে । প্রেম করাটা তো অন্যায় না , পরকীয়া অন্যায় হতে পারে যেখানে অন্যকে ঠকানোর একটা ব্যপার থাকে । প্রেম করছে করুক না , সমস্যা কি ? এই বিষয়টাকে খুব গুরুত্ব সহকারে বাঁধা দেয়ার ফলেই ছেলে মেয়েরা এই বিষয়টাতেই বেশী আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে এবং তাদের প্রধান কাজ থেকে সরে আসে । একটু বোঝার চেষ্টা করুন ওদের উঠতি বয়সটাকে এবং হরমোনাল পরিবর্তনকে । সব কিছুর সাথে ভারসম্য বজায় রেখে ওদের প্রধান যে কাজ সেদিকে ওদের কিভাবে ধাবিত করা যায় সেই চিন্তা করলেই বোধ হয় বুদ্ধিমানের কাজ হবে ।

আবার কেউ কেউ হয়তো বলবেন আমাদের শাশ্বত সংস্কৃতিতে ওরা আঘাত হেনেছে । কোন সংস্কৃতির কথা বলছেন একটু খোলাসা করে বলবেন কি ? আমি তো জানি যুগে যুগে অনেক গুলো সংস্কৃতির সূচনা হয়েছিলো এবং সময়ের প্রয়োজনে নতুন ধারায় নতুন যুগে গা ভাসিয়েছিল আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতি, এবং এখনো ভাসাচ্ছে । এটাই তো প্রকৃতির নিয়ম , এরকমই তো হয় । নদীর বাঁক যেমন আপনার আর আমার ইচ্ছা অনুযায়ী চলে না এই সংস্কৃতিও তেমনি আপনার আর আমার ইচ্ছার এতোটুকু পরোয়া করে না । সে প্রয়োজন এবং সময় বুঝে বুঝে রঙিন হয়ে আমাদের দিকে ঘুরে ঘুরে তাকাবে । আমি বলছি না সেটার সাথে গা ভাসিয়ে নিঃশেষ হয়ে যেতে । বরং বলছি সেটাকে বুঝতে এবং এর সাথে সুস্থ সহ-অবস্থান কিভাবে করা যায় সেই চিন্তা করতে ।

হিন্দি সিরিয়াল গুলো পাশ্চাত্য কালচার বিকৃত এবং অতিরঞ্জজিত করে প্রচার করে , আর সেগুলোই বাংলার মানুষ ধীরে ধীরে মজ্জাগত করে নিচ্ছে ব্যপক হাড়ে । হিন্দি সিরিয়াল অথবা হিন্দি সিনেমা গুলো পাশ্চাত্যকে নকল করে আর সেই নকল কালচার আবার বাংলাদেশ নকল করে । আর এই নকলের নকল কি ধরনের উদ্ভট হতে পারে তা এই বর্তমান অবস্থা দেখে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করা যায় । কিন্তু কি বা করার আছে , বর্তমান বাংলাদেশের নাটক সিনেমা অথবা টিভি প্রোগ্রাম গুলো কি বর্তমান আধুনিক জেনারেশনকে বিনোদন দিতে সক্ষম ? আমার তো মনে হয় না । এরকম অবস্থায় বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েও তেমন কোন কাজ হবে বলে মনে হয় না । ইন্টারনেট তো বন্ধ নিশ্চয়ই করা যাবে না , সেটাই যদি করা হয় তাহলে তো অন্ধকার ঘরে বন্দীদশার মত অবস্থা হবে । তাই টিভি চ্যানেল বন্ধ করে কোন লাভ হবে না । বরং দেশীয় কালচার , সামাজিক মূল্যবোধ এবং মানুষ হিসেবে ভালো মন্দের জ্ঞান দিতে হবে সরকারি উদ্যোগে এবং পারিবারিক ভাবেও ।


আর এই সামান্য প্রেমটেমে কিছু হয় না , এই খানে জোরালো নিষেধাজ্ঞা না প্রয়োগ করে ছেলে মেয়েরা যাতে মাদকাসক্ত হয়ে না ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিৎ । ছেলে মেয়েরা প্রেম করলে ওদের মধ্যে মাদকাসক্ত হবার সম্ভাবনা কম থাকে । তখন তারা নিজেকে ভালোবাসে অন্যকে ভালোবাসে , তাই নিজের জন্য নিজে ক্ষতিকর কম হয় ।

এই তো কিছু দিন আগে ঘটে যাওয়া কমার্স কলেজের কয়েকটি ছাত্র ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে প্রকাশ্যে প্রেম নিবেদন করার জন্য । আমার মাথায় কাজ করে না এটা কিভাবে বহিষ্কারের করণ হয় !!! আমার জানতে ইচ্ছে হয় কলেজের প্রিন্সিপালের কাছে , সে কি শিক্ষা দিলো তার কলেজের ছেলে মেয়েদের যে তারা কলেজের রীতিনীতি ভঙ্গ করার সাহস করে । কলেজ থেকে কি এই ধরনের বিধি নিষেধ আরোপ করা ছিল যে তারা রাস্তায় প্রকাশ্যে প্রেম করতে পারবে না ? ছেলে মেয়েরা যদি কোন নিয়ম ভঙ্গ করে তাহলে এটা অবশ্যই দেখবার বিষয় যে কর্তৃপক্ষ তাদের " কোড অফ কন্ডাক্টে" এই ধরেনের নিষেধাজ্ঞা রেখেছিল কিনা এবং তারা তাদের ছাত্র- ছাত্রীদের এ ব্যপারে অবগত করেছিল কি না । যদি এ ধরনের কোন নিষেধাজ্ঞা না থেকে থাকে " কোড অফ কন্ডাক্টে " তাহলে ছাত্র ছাত্রীরাদের দোষারোপ করা যায় না এবং তাদের বহিষ্কারের কোন অধিকার নেই কলেজ কর্তৃপক্ষের । আর যদি ওরকম নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকে কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্র ছাত্রীদের অবগত না করে থাকে , তাহলেও তারা ছাত্র ছাত্রীদের বহিষ্কার করার অধিকার রাখে না আইনত , কারণ এমতাবস্থায় কলেজ তাদের কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে । কাজেই এরকম হলে কলেজ কর্তৃপক্ষকে সূ করে দিতে পারে গার্ডিয়ানরা ।

পরিশেষে বলতে চাই , পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে যদি না নিতে পারে কেউ তাহলে ভুগতে হবেই । অবশ্য আস্তে আস্তে মেনেও নেয় মানুষ , শুধু একটু সময় লাগবে এই যা । যেমন ফরেন বডি অর্থাৎ যে কোন ভাইরাস এবং ব্যক্টেরিয়া যখন এটাক করে মানব দেহে তখন মানুষের রি-একশনটা এবনরমাল হবেই , ধীরে ধীরে মানুষ সেগুলো কাটিয়েও ওঠে এবং শরীরও সহজ ভাবে নেয় পরবর্তী ভাইরাল অথবা ব্যক্টেরিয়াল এটাককে । আর , সংস্কৃতি নিয়ে যারা সচেতন তাদেরও আবার বলি , কোন কালচারই এক জায়গায় আটকে থাকে না বা এক নিয়মে চলে না । ধীরে ধীরে অতি সূক্ষ্ম পরিবর্তন হতে হতে আমূল পরিবর্তন আসে । ইতিহাসই এর সাক্ষ্য , ইতিহাস বিশ্লেষণ করে যদি দেখেন তবে দেখা যাবে একেকটি বড় বড় যুগের সূচনা হয়েছিলো সেই সময়ের মানুষের চিন্তাধারা অনুযায়ী । আবার ধীরে ধীরে সময়ের পরিবর্তনে চিন্তাধারা সহ সমাজের রীতি নীতি গুলোও বদলে গেছে , বদলে যেতে বাধ্য এটাই প্রকৃতির নিয়ম ।সময়ের অথবা কালের একটা বিশাল মানচিত্রেকে যদি সামনে আনা যায় তবে দেখা যাবে মৌলিক বলতে আসলে কিছুই নেই বা থাকে না , সবই কালের বিবর্তনে একটার সাথে আরেকটা মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় । তাই বলবো অতো নাগিং না করে পরিবর্তনকে সঠিক ভাবে গ্রহন করুন , এটাই মঙ্গলকর হবে ।

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:২২
৮০টি মন্তব্য ৭৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×