আসুন প্রথমেই একটি পরীক্ষা দেওয়া যাক। সহজ MCQ পদ্ধতি। দেখা যাক কে কত নম্বর পান।
একটি MCQ পরীক্ষা, পূর্ণমান ৫ (সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন দিন)
১। আপনি কাকে ভোট দেবেন
অ। আপনাকে যে গুম করবে [ ]
আ। আপনাকে যে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করবে [ ]
ই। উপরের কাউকেই না [ ]
২। আপনি কাকে ভোট দেবেন
অ। যে রাজপুত্র বিদেশের মাটিতে বসে দেশের বিষেদ্গার করবে এবং বখরা নেবে [ ]
আ। যে রাজপুত্র দেশের মাটিতে বসে বখরা নিয়ে বিদেশে পাচার করবে [ ]
ই। উপরের কাউকেই না [ ]
৩। আপনি কাকে ভোট দেবেন
অ। যে ফুলবাড়ীয়া কয়লা খনি হরে-দরে বেচে দেবে [ ]
আ। যে ফ্রিতে ট্রানজিট দিয়ে আপনাকে সিঙ্গাপুরের স্বপ্ন দেখাবে [ ]
ই। উপরের কাউকেই না [ ]
৪। আপনি কাকে ভোট দেবেন
অ। যে ইয়াসমিনকে ধর্ষনের পর উন্মুক্ত ভ্যানে প্রদর্শনের জন্য রেখে দেবে [ ]
আ। যে সীমাকে নিরাপদ হেফাজতে ধর্ষনের পর হত্যা করবে [ ]
ই। উপরের কাউকেই না [ ]
৫। আপনি কাকে ভোট দেবেন
অ। যে বিগত সরকারের দুর্নীতের রেকর্ড ভঙ্গ করবে [ ]
আ। যে বিগত সরকারের দুর্নীতের রেকর্ড ভঙ্গ করবে [ ]
ই। উপরের কাউকেই না [ ]
ঐচ্ছিক কেস স্টাডি (উপরের MCQ যদি খুব বেশী কঠিন মনে হয়, তবে আপনি এই কেসটি সমাধান করুন): পূর্ণমান ৫
বর্ণনাঃ আপনি নির্দোষ, তথাপি আপনাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে! এখানে যুক্তি-তর্কের কিছু নেই। আপনি বাংলাদেশের নাগরিক, এই মৃত্যুদন্ড যে কোন সময়ই আসতে পারে এবং সেটা এসে গেছে! বুঝতেই পারছেন এবার আপনার পালা।
অপশন ১: আপনার মৃত্যু আপনি মেনে নিয়ে ঠিক করুন, কার হাতে মৃত্যু চান:
অ। একজন আপনাকে ধারাল আস্ত্রের আঘাতে হত্যা করবে
আ। অন্য জন একটু অল্প ধারাল আস্ত্রের আঘাতে হত্যা করবে
অপশন ২: অথবা আপনি পালিয়ে যেতে পারেন অথবা আপনি মৃত্যু অস্বীকার করে লড়াই করতে পারেন।
ঈঙ্গিত: দ্বিতীয় অপশনটি আপনাকে আপাত সত্য প্রেক্ষাপটের বিপরীতে সম্ভাব্য অন্য আয়াসযোগ্য সমাধানের সূত্র হিসেবে দেওয়া হল। এবার এর প্রেক্ষিতে অপরাপর সম্ভাব্য সমাধান সমূহ বিবেচনা করে সবচাইতে গ্রহণযোগ্য সমাধানটি প্রস্তাব করুন।
প্রশ্ন: আপনি কি করবেন? আপনি কি প্রথম অপশন গ্রহণ করবেন?
মীমাংসিত কেস স্টাডি (উদাহরণ): বাজার সমাচার: টাকার মূল্য বোঝেন, ভোটের মূল্য বোঝেন না?
আপনি উপরের কোন সমস্যারই সমাধান করতে পারছেন না! তবে আসুন, কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে আলোচনা করা যাক। আপনি বাজারে গেলেন কিছু কিনতে। দেখলেন আপনি যা কিনতে চাইছেন শুধু দুটি অবশিষ্ট আছে। আপনি কোনটি কিনবেন।:
অ। পচাটি
আ। অপেক্ষাকৃত কম পচাটি
ই। উপরের কোনটিই না
ঠিক আছে, আপনাকে আর সমাধান করতে হবে না। বরং আসুন উপরে বর্ণিত ঐচ্ছিক কেস স্টাডিতে প্রদত্ত ঈঙ্গিতের আলোকে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা আলোচনা করা যাক।
আপনার বুদ্ধি-বিবেচনা যদি ঠিক থাকে তবে আপনি কোনটিই কিনবেন না; বরং আপনি আরও একটি বা দুটি বা প্রয়োজনে আরও বেশী বাজার ঘুরে ভালোটি কিনবেন। যদি সাধ্যে কুলায় তাহলে বিদেশ থেকে আনিয়ে নেবেন! নতুবা আপনি অন্য কিছু যা ভালো কিন্তু পরিপূরক হতে পারে সেটা কিনবেন। অথবা অন্য কোন কিছু যেটা ভালো;বুঝে শুনে খারাপটি নয় মোটেও! এখন তবে জানতে পারি তথাকথিত অল্প খারাপজনকে কোন হিসেবে ভোট দিতে হবে? কোন বিলাসিতায়!
অপেক্ষাকৃত কম খারাপ বস্তুটি হয়ত অল্প মূল্যে ক্রয়ের সুযোগ আপনার সামনে ছিল! কিন্তু আপনি সুযোগটি না দিয়ে অধিকন্তু সময় নষ্ট করে এবং অধিক বিনিময় মূল্য প্রদান করে (হতে পারে অন্য বাজার যাচাই করবার জন্য সেখানে গমনের খরচ এবং ভালো বস্তুর জন্য আধিক মূল্য প্রদান) অন্য কোথাও থেকে ভালো কিছু কেন কিনবেন?
আপনার নগদ টাকার মূল্য আছে, আমার ভোটের মূল্য নেই! পাঁচ বছর পর পর এসে চাইলেই ফ্রী পাওয়া যায় আমাকে অত্যাচারের নগদ লাইসেন্স?
পদার্থ বিজ্ঞান পাঠ, বাধ্যতামূলক কৃষি শিক্ষা এবং অর্থনীতির চাহিদা ও যোগান তত্ত্ব:
ইদানিং দেখছি শ্রোয়েডিঙ্গারের বিড়ালের মাধ্যমে অনেকেই দেশের ঘোলাটে পরিস্থিতি ব্যাখ্যার চেষ্টা করছেন। পদার্থ বিজ্ঞান আমি ভালো বুঝি না; আমি মিশ্র প্রজাতির ছাত্র। তবে জানতে চাই কোয়াণ্টাম মেকানিক্স, শ্রোয়েডিঙ্গারের বিড়াল, ব্ল্যাক হোল এই পড়ে/পড়িয়ে দেশের কি উপকার হবে! আমরা কি মহাবিশ্ব অভিযানে বের হব? পদার্থ বিজ্ঞান কি সলিমুদ্দির খালি পেটে ভাতের যোগান দেবে, না তার বউয়ের মাংসল শরীর ঢাকতে মোটা কাপড় সরবরাহ করবে? বাংলাদেশে পদার্থ বিজ্ঞান পড়ানোর কি যুক্তি আছে? পদার্থ বিজ্ঞান পড়ে তা এদেশে কোন কাজে লাগানো হবে? এই এত দিনে শ্রোয়েডিঙ্গারের বিড়াল দিয়ে দেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যার চেষ্টা যা একটু নজরে আসল। এর পরিবর্তে সবাইকে কৃষি শিক্ষা পড়ানো অধিক যুক্তিযুক্ত নয় কি; যেখানে কৃষি আমাদের অর্থনীতির প্রাণ এবং চালিকা শক্তি? কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আমরা বাড়ীর পাশের চার ইঞ্চি খোলা জায়গায় দুটো ভালো পেঁপে উৎপাদন করে অর্থনীতিতে কিছু আবদান রাখতে পারতাম, বাজারের উপরও চাপ কিছুটা কমত। ফলে বাজারে জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য এমনিতেই ঠান্ডা মেরে যেত! তা না করে আমরা কি প্রথম ধাপ না পেড়িয়েই দশম ধাপে পা রাখতে চাচ্ছি পদার্থ বিজ্ঞানের গূঢ় তত্ত্ব অধ্যয়নের মাধ্যমে?
পদার্থ বিজ্ঞান যেহেতু সমস্যার আপাত সমাধান দিতে পারছে না, কাজেই আসুন না একটু অন্য কোন বিদ্যে প্রয়োগ করে দেখি সমাধান একটা কিছু পাওয়া যায় কিনা?
অর্থনীতির একটি চমৎকার বিষয় হল চাহিদা ও যোগান আইন (Law of Demand & Supply) (Law of)। এই আইনের মূল কথা হচ্ছে বাজারে যে পণ্য/সেবার চাহিদা আছে তার যোগান তৈরী হবে; চাহিদা না থাকলে যোগান বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলা যায় সেখানে খারাপ রাজনীতির চাহিদা আছে! কথাটা আসলে এইভাবে পুরোপুরি সত্য নয়, বরং অনেকাংশে ভোক্তা (জনগণ) এখানে নিরুপায়।
তাহলে কি ঐচ্ছিক কেস স্টাডি এবং মীমাংসিত কেস স্টাডি (উদাহরণ) মিথ্যে প্রতপাদন হয় না? অর্থাৎ যদি ক্রেতা নিরুপায় হয়।
না, তা হয় না, যদিও ক্ষেত্র বিশেষে তা হতে পারে। বরং আমরা যদি বর্ণিত ঈঙ্গিতের আলোকে ব্যাখ্যা করবার চেষ্টা করি তাহলে দেখব আমদের আরো অনেক সম্ভাব্য সমাধানের পথ আছে। যে সব পথ আমাদের খারাপ রাজনীতির চাহিদা সংক্রান্ত প্রতিপাদনকে ভুল প্রমাণ করতে সক্ষম।
তার একটি সম্ভাব্য উপায় হচ্ছে ‘না ভোট’! ‘না’ ভোটের মাধ্যমে আমরা দেখাতে পারি আমরা নিরুপায় হয়ে খারাপ রাজনীতিবিদদের ভোট দিয়েছি। এখন তাদের আর চাই না। সেটা হবে নতুন পণ্য (সৎ রাজনীতিবিদ) সংক্রান্ত চাহিদার একটি সংকেত। ‘না’ ভোটের মাধ্যমে আমরা সেই সংকেতটিই প্রদান করতে চাই। এমন চমৎকার সুযোগ কোন বিলাসিতায় (কম খারাপ জনকে ভোট প্রদান!) হারানোর অবস্থা আমাদের নেই। আমি আমার পায়ে কুড়াল মারতে চাই না। যদি আপনি আমাকে এ বিষয়ে পীড়াপীড়ি করেন তবে বুঝতে হবে আপনি লেজ কাটা বাঁদর, এখন আমার লেজটিকে অনর্থক প্রমাণ করতে চাইছেন। যদি অজানা থাকে, তবে জেনে রাখুন বাঁদরের লেজের প্রয়োজন আছে।
একটি Ethical Dilemma:
আসুন আরো একটি কেস নিয়ে আলোচনা করা যাক। তবে এবারে কিছুটা নৈতিকতা সংক্রান্ত ফ্লেভার মিশিয়ে বিষয়টাকে আরো একটু জটিল করবো। কারণ জীবনটাই যে জটিল!
আপনি একটি ট্রেনের চালক। এটি এমন একটি ট্রেন যে তার ‘লাইন’ চালকের ইচ্ছেমত বদলাতে পারে। আপনি ট্রেনটি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন এমন সময় দেখতে পেলেন আপনি যে লাইনে ট্রেনটি চালাচ্ছেন, সেই লাইনে ৫ জন ছেলে খেলছে। এই লাইনটি দিয়ে চলতেই আপনাকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। পাশাপাশি অন্য আরেকটি লাইন আছে, কিন্তু সেটা আর ব্যবহৃত হচ্ছে না এবং সেই লাইনে অন্য একটি ছেলে একা খেলা করছে। আপনি এখন সেই স্থানের কাছে এসে পড়েছেন যেখানে আপনি রেল লাইনটি পরিবর্তন করতে পারেন। এখন আপনি যদি ৫টি ছেলের জীবন বাচাতে ট্রেনের লাইনটি পরিবর্তন করেন তার মানে হল আপনি সেই ছেলেটিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিলেন যে তার জন্য নিরাপদ লাইনের উপর খেলছিল। তা না করে আপনি ট্রেনকে নিজস্ব তার লাইনে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, যার অর্থ আপনি ৫টি ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলেন।
সিন্ধান্ত আপনার হাতে! আপনি কি করবেন?
আপনার সিদ্ধান্ত যাই হোক এখানে Leo Velski Julian-এর মতামতটি আপনার জন্য তুলে ধরছি। অনুবাদের কষ্টটুকু আর করলাম না।
The great critic Leo Velski Julian who told the story said he would not try to change the course of the train because he believed that the kids playing on the operational track should have known very well that track was still in use, and that they should have run away if they heard the train's sirens. If the train was diverted, that lone child would definitely die because he never thought the train could come over to that track! Moreover, that track was not in use probably because it was not safe. If the train was diverted to the track, we could put the lives of all passengers on board at stake! And in your attempt to save a few kids by sacrificing one child, you might end up sacrificing hundreds of people to save these few kids.
While we are all aware that life is full of tough decisions that need to be made, we may not realize that hasty decisions may not always be the right one. "Remember that what's right isn't always popular... and what's popular isn't always right." Everybody makes mistakes; that's why they put erasers on pencils.
একজন তথাকথিত তুলনামূলক কম খারাপ ব্যক্তিকে নির্বচনের মাধ্যমে আমি আরও সমূহ ব্যপক ক্ষতির দায় নিতে পারি না যদি আমাকে সঠিক সংকেত প্রেরণের সুযোগ দেওয়া হয়। নিরুপায় অবস্থার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণকে তুলনামূলক কম খারাপ ব্যক্তিকে নির্বচনে বাধ্য করার অর্থ খারাপ ব্যক্তিরা তাদের চাহিদার কৃত্রিম গ্রাফটিকে জনগণের দ্বারা সত্যায়িত করিয়ে নিতে চান! এই অতি বিলাসিতার কোন সুযোগ আমাদের নেই।
বর্গা চাষী সলিমুদ্দির কিলাস ফাইভে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি প্রাপ্তি এবং ‘না ভোট’:
কলিমুদ্দির ছাওয়াল সলিমুদ্দি কিলাস ফাইভে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাইলো। কলিমুদ্দি ভাইবলো তার ছাওয়াল জজ-ব্যারিষ্টার পরাই হয়াই গেলো। গাঁও-গ্যারামে কয় জনের ছাওয়াল জজ-ব্যারিষ্টার হইবের পারে? সেই কবে চৌধুরী বাড়ির এক ছাওয়াল ব্যারিষ্টারি পরছিল, তার পর এই বুঝি সুযোগ আইসলো তার ছাওয়ালের। কলিমুদ্দির সাথে সাথে সলিমুদ্দিও স্বপন দেখা শুরু পরাই কইরেই দিল। কিন্তু কলিমুদ্দির বংশে কিলাস ফাইভের উপরে আর কেউ কুনো দিন যায় নাই। কলিমুদ্দি কিছু ফের না পায়া বাজারে চায়ের দোকানে একদিন সাঁঝের বেলা কথাডা পাইরল দশ জনার সামনে। চেয়ারম্যান না, সাক্ষাত চেয়ারম্যানের চ্যালা-চামুন্ডারা সেই খানে উপস্থিত আছিলো। তারার হাসি দেহে কিডা! তয় তাগোর পরামর্শ ফালায়া দেওয়ার মত আছিল না। চাষ-বাস করতি কলিমুদ্দির জন-মনিষ লাগে, গরীব কলিমুদ্দি যদি সলিমুদ্দিক ক্ষেতের কামে লাগায় তালি কি কলিমুদ্দির খরচা বাচে না! নগদ প্রাপ্তি কেডা না বোঝে। ‘না ভোট’ পায়া সলিমুদ্দি ক্ষেতের কামে লাইগ্যা গেল। আইজ সলিমুদ্দি কিলাস ফাইভে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্ত বর্গা চাষী! চ্যালা-চামুন্ডার আখাম্বা কোন মতে কিলাস ফাইভে পাশ করা ছাওয়ালরা টাকার জোরে জজ-ব্যারিষ্টার।
সারমর্ম: না ভোটের অধিকারটি বিভিন্নভাবে সমাজের একটি অংশের কাছে আছে। তারা সেই ভোট প্রয়োগের অনৈতিক ক্ষমতা এবং অধিকারটি হাতছাড়া করতে রাজি না, কারণ তারা জানে ‘না ভোটের’ একটি শক্তি আছে। ‘না ভোটের’ সঠিক প্রয়োগ সলিমুদ্দিদেরকে সামনে এগোনোর সুযোগ করে দিতে পারে। আমরা কি আমাদের অধিকার সম্বন্ধে অসচেতন থেকেই যাব। ‘না ভোট’ আমার অধিকার!
শেষ কথা:
দেশের লোক ভালো করেই জানে ভোটের মাধ্যমের সরকার পরিবর্তন করা যায়। ৭০-এর নির্বাচন দেখুন, জনগণ কিন্তু সঠিক ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিল। তবে সেটা বাস্তবায়ন হয়নি সেই জন্য দায়ী ছিল ক্ষমতায় আসীন ব্যক্তিবর্গ। এবং জনগণ কিন্তু সেটার দায় সুদে আসলে মিটিয়ে দিয়েছে প্রথম সুযোগেই। তাই নয় কি? বাংলাদেশের স্বাধীনতা কি কি সেই প্রমাণ বহন করে না?
যদিও খুব ছোটবেলার কথা, তবুও যতদূর মনে করতে পারি জিয়ার সময় ভোট প্রদানে স্বতস্ফূর্ততা ছিল। আমি আমার বাবার সাথে ভোট কেন্দ্রে গিয়েছিলাম; চারিদিকে উৎসবের আমেজ ছিল। এরশাদের সময়ের নির্বাচনগুলো দেখুন, জনগণ বুঝেছিল বলেই ভোট প্রদানে আগ্রহ ছিল না সেই সময়। ভোট কেন্দ্রগুলো খাঁ খাঁ করত। তার চাইতে রাজপথে মানুষের আগ্রহ ছিল অনেক বেশী। নব্বই থেকে পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় কি ভিড় উপচে পড়েনি? জনগণ জানে ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করা যায় এবং এটাও ভালো করেই জানে কোন সময় সেটা করা যায়। তাহলে এই সচেতন জনগোষ্ঠীকে কেন আরও সচেতন করে তোলা নয় এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সুযোগ করে দেওয়া নয়?
আর নিশ্চয় বিভিন্ন মেয়াদী পরিকল্পনা সম্বন্ধে আমরা অবগত আছি – স্বল্প মেয়াদী, মধ্যম মেয়াদী, দীর্ঘ মেয়াদী। স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে পড়ে থাকলেই হবে না, একই সাথে মধ্যম এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করতে হবে। তবেই দীর্ঘ মেয়াদের উন্নতি করা যাবে।
সব কিছুর বিবেচনায় একজন ‘অপেক্ষাকৃত কম খারাপ’ মানুষকে নির্বাচিত করার মাধ্যমে নিজের ক্ষতি সাধনের মত বিলাসিতা দেখানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কাজেই এহেন অবিবেচনা প্রসূত বিলাসিতা না দেখাতে চাইলে ‘না’ ভোটের কোন বিকল্প নেই।
এই পোষ্টের প্রেক্ষাপট মশিউর মামা ১-এর এই পোষ্টে Click This Link করা মন্তব্য যেখানে তিনি বলেছেন ‘না ভোট’ হচ্ছে বিলাসিতা।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১২ রাত ১০:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



