পৃথিবীতে দুই ধরনের নারী আছে-এক : দেবী , দুই : পাপোষ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
জসীম উদ্দিন অসীম:
পৃথিবীতে দুই ধরনের নারী আছে। এক ধরনের নারী হলেন দেবীর মতো। অন্য নারীর মান হলো পাপোষের মতো। পৃথিবীর প্রায় সব জিনিসকেই এ দু’ভাগে বিভক্ত করা চলে। কেউ যখন বলে , কিন্তু আপনি এটা বললেন কেন ? আমি বলি , পাবলো পিকাসো বলেছেন ,পৃথিবীতে দু’ধরনের নারী আছে। এক : দেবী , দুই : পাপোষ। দেবী হলে সংসার হয়। দেবীর পায়ে মানুষ মাথা ঠুকে আর পাপোষে উল্টো পায়ের জুতোর তলা মুছে। কিন্তু এটাই কি সঠিক উত্তর ? কিংবা আমিও কি সব উত্তর জানি?
আমার দ্বারা কী হবে , এটা দ্রুত বুঝে না নিলে জীবনের ফাঁক গলে সময় চলে যাবে। আমার একদা’র একমাত্র গুরু মহান কার্লমার্কসও তার কবিতায় এমনটিই বলেছেন-‘পথ বহুদূর। নষ্ট করার মতো সময় নেই।’ তিনি অন্য এক কবিতায় বলেছেন-‘হয় শক্ত হাতে টানো দাঁড়, অথবা ছেড়ে দাও, যে দিকে যায় যাক।’ কিন্তু তার এ শেষ কথার সঙ্গেই আমি এখন তাল মিলিয়েছি , ছেড়ে দিয়েছি দাঁড়।
এই যে দেবী আর পাপোষ , এটা সব জায়গাতেই রয়েছে। সাহিত্যেও। যখন আমি দেবীর প্রতিমূর্তি তৈরি করতে পারিনি , তখন কেবল পাপোষের পর পাপোষ তৈরি করেছি। এই যেমন কিছু স্মৃতি বলে শেষ করা। এটা এখন আমার এক ধরনের দায় হয়ে গেছে। নিজের কাছেই। শিল্পীত করার মতো সময়-শ্রম এখন কি সম্ভব? হয়তো ডায়েরি হবে অথবা রিপোর্টিং। কিন্তু আমার এসব গুচ্ছ গুচ্ছ ঘটনার শিল্পীত প্রকাশের জন্য আমাকে আরও অপেক্ষা করতে হবে। তাই আমার লেখার মান নিয়ে আমার এখন খুব মাথাব্যথা নেই। কারণ বৈশিষ্ট্যগতভাবেই আমি বলি বেশি , লিখি বেশি , মান তাই খুব কম। একসময় ভাবতাম সিরিয়াস হবো প্রবন্ধ সাহিত্য নিয়ে। কিন্তু বামপন্থী রাগমিশ্রিত গদ্য আমাকে একটি জায়গায় স্থির করে দিয়েছে। ১৯৯২ সালে কুমিল্লার প্রবীণ সাংবাদিক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী আমাকে দিয়ে জোর করে আকস্মিক একটি প্রবন্ধ লিখিয়ে তার পত্রিকা সাপ্তাহিক ‘আমোদ’ এ ছেপেছিলেন। রোহিঙ্গা নির্যাতনের ওপর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিসেব করে দেখেছি আমি , আমার কোনো প্রতিভা নেই।
রবীন্দ্রনাথকে বুর্জোয়া কবি আমিও বলেছি। নকশালরা তো রবীন্দ্রমূর্তি পেলেই ভাঙ্গতো। পরে দেখলাম রবীন্দ্রনাথ রক্তের মতো বিকল্পহীন। অন্তত আমাদের জীবনে। আমি যখন পুরোপুরিই নাস্তিক ছিলাম , কেন যে তখনও তার ভাববাদী ‘গীতাঞ্জলি’ ভালো লাগতো। আজকাল যে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রকাব্য পাঠ দিবস পালন করা হয় , তা রবীন্দ্র প্রতিভার কতো বড় স্বীকৃতি। কেবলমাত্র পাপোষ তৈরি করলে এটি সম্ভব ছিল না।
যেহেতু আমার প্রতিভা নেই , তাই এখন সাধারণ কিছু কাজ করতে চাই। বলা চলে ওই পাপোষের মতোই। কাজে যেহেতু লাগিনি , সেহেতু এখন মানুষ দেখতে চাই এবং নোট রাখতে চাই। বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে সময় সুযোগ নিয়েও কাজ করা যাবে। ভালো কাজও করলাম না , নষ্টও হতে পারলাম না। নষ্ট হলেও তো জঙ্গলদস্যু বীরাপ্পনের মতো আমার মাথার মূল্য হতো ৫ লাখ রূপী।
তবে পৃথিবীতে এখন দেবীর চেয়ে পাপোষের মূল্যই বেশি। কারণ দেবী বাজারের কাছে আত্মসমর্পণ করেন না। অন্যদিকে বাজারের জন্য পাপোষ দারুণ পুঁজি। গোটা সমাজেই এখন পাপোষের কদর বেশি। কাঁচা মরিচ দিয়ে যত ব্যবসা হয় , গোলাপফুল দিয়ে তত হয়না। কারণ প্রায় সব লোকই কাঁচামরিচ কেনেন , গোলাপ কেনেন কতজন ? ফলে একদা প্রচন্ডভাবে বাজারবিরোধী হয়েও বর্তমানে নিজেকে আমি একটু একটু করে বিক্রি করতেও চেষ্টা করছি। কারণ টিকে তো থাকতে হবে। হিসেব অনেকই করেছি। বাড়ির দলিল , গাড়ির লাইসেন্স , পরিচয়পত্র এসবের জায়গা পূরণ করতে পারে না কোনো উঁচুদরের চিত্রকর্ম অথবা কবিতা অথবা নান্দনিক গান। পৃথিবীতে দুই ধরনের নারী আছে। এক ধরনের নারী হলেন দেবীর মতো। অন্য নারীর মান হলো পাপোষের মতো। পৃথিবীর প্রায় সব জিনিসকেই এ দু’ভাগে বিভক্ত করা চলে। যেহেতু আমার প্রতিভা নেই , তাই এখন সাধারণ কিছু কাজ করতে চাই , বলা চলে ওই পাপোষের মতোই। একদা প্রচন্ডভাবে বাজারবিরোধী হয়েও বর্তমানে নিজেকে আমি একটু একটু করে বিক্রি করতেও চেষ্টা করছি। কারণ টিকে তো থাকতে হবে।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।
১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।