somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাদের কার্ণিশে কাক

২৩ শে এপ্রিল, ২০০৭ বিকাল ৪:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে মনে হয় - জীবন যেন অনেকগুলো পাসওয়ার্ডে আঁটকে আছে। ইয়াহুর দু'টা, হটমেইলের একটা, জি-মেইলের একটা, ইন্টারনেট লগ ইনের একটা; এরকম অনেকগুলো পাসওয়ার্ড। সিক্যুরিটির জন্য সব আলাদা আলাদা। অনেকদিন পর ইয়াহু চ্যাটে ঢুকতে গিয়ে পাসওয়ার্ড এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল। শেষে মিললো - 'আকাশনীলা'। সরণের পাসওয়ার্ডগুলো এরকম। সব বাংলায়, কেউ অনুমান করতে পারবে না। এই যেমন 'আকাশনীলা' লিখতে গিয়ে শেষে এ দিতে হবে দু'টা!

ইয়াহু চ্যাটের বাংলাদেশ রূমগুলো জমজমাট। খালি নেই। সতের নম্বর রূমে ঢুকে সরণ অবাক হয়ে যায়। রনি ফোরটুয়েন্টি নামে একজন অনবরত গালি দিয়ে যাচ্ছে, নি:শ্বাসও ফেলছে না। রনি ফোরটুয়েন্টির স্ল্যাং স্টক দেখে সরণের চোখ মুখ লাল হয়ে উঠে। কিছুক্ষণ পর মাইক পাল্টায়। এবার মাইক নেয় বল্টু১২৩। তার টার্গেট রনি ফোরটুয়েন্টি এবং তার পরিবারের সদস্যরা। বল্টু১২৩ এর পূর্বপুরুষ নি:সন্দেহে বাসে করে মলম বেচতো, বল্টু১২৩ একটানা গালি দিচ্ছে, ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিকও ছেড়েছে। সরণের অস্বস্তি লাগে।
৩৫ নম্বর রূমে ভিজিটর কম, ১৮ জন। ওখানে ঢুকে দেখে একজন অডিও গান ছেড়ে রেখেছে - "রাতের তারার মতো একদিন নীরবে অন্ধকারে যাবো ঝরে/আমার সকল গান তবুও তোমাকে লক্ষ্য করে"। সানী জুবায়েরের গান। সরণ চোখ বুঁজে শুনে। এ গান নিয়ে মজার একটি স্মৃতি আছে। একদিন রিক্সা করে মহাখালী থেকে কাকলী মোড়ে এসে নামলো সে। সীলের পাশে রিক্সা থামলো। খাঁ খাঁ দুপুর, রাস্তা কেমন যেন খালি। হঠাৎ মনে হলো অনেক দূর থেকে অদ্ভুত এক গান ভেসে আসছে। ডানে একটু এগিয়ে অনুমান করে আবুল উলিয়া মিউজিক কালেকশনস থেকে আসছে এ গান। দোকানে গিয়ে জানতে পারে - শিল্পীর নাম সানী জুবায়ের, এলবাম - নির্জন স্বাক্ষর। সিডি কিনে, বাসায় ফিরে মন্ত্রমুগ্ধের মতো বাকী গানগুলো শুনেছে সে।
চ্যাটরূমে সানি জুবায়েরের গান শেষ হলে, কেউ একজন হিন্দি গান শুরু করে। 'ম্যায় হু কন? ম্যায় হু কন? ম্যায় হু ডন ডন ডন'।
বিরক্তি লাগে।
জুলিস নামে একজনকে অনলাইনে দেখা যাচ্ছে। বয়স ১৮, ফিমেল, লোকেশন লাস ভেগাস।
নক করতেই অটোমেটিক মেসেজ আসা শুরু হলো, লিংক দেখো, ওয়েব ক্যাম - - -। সরণ ইগনোর করে।

গোলাপকাঁটা নামের একজন কে দেখা যাচ্ছে। সরণ নক করে।
সরণ: হাই! এ এস এল প্লিজ!
গোলাপকাঁটা: য়্যু ফার্স্ট।
সরণ: ২৫,এম, ঢাকা
গোলাপকাঁটা: সেম হিয়ার, গেট লস্ট
সরণ: হোয়াট'স আপ?
গোলাপকাঁটা: আয়্যাম নট গে!
সরণ ভ্যাবাচ্যাকা খায়।

৪৩ নম্বর রূমে মাত্র একজন। সরণ ওখানে যায়।
বেলা।
সরণ নক করে - : এটা কী টু ফোর ফোর ওয়ান ওয়ান থ্রি নাইন?
মিনিট খানেক পার হয়ে যায়, আওয়াজ নেই।
সরণ 'বাজ' দেয়।
বেলা: কী সমস্যা?
সরণ: এটা কী টু ফোর ফোর ওয়ান ওয়ান থ্রি নাইন?
বেলা: জ্বী না, এটা বেলা বোসের বাসা না।
সরণ: তাহলে কার বাসা? আপনি কোন বেলা?
বেলা: আপনি কী চাকরী পেয়েছেন যে বেলাকে জানাবেন?
সরণ: পেলে তো অবশ্যই জানাবো, আপনি কোন বেলা?
বেলা: আমি কোনো বেলা না
সরণ: তাহলে? বেলা বিস্কুট?
বেলা: :-), আপনি চিটাগাংয়ের লোক?
সরণ: না, আমার বন্ধুর বাড়ী চিটাগাং, ওদের বাসায় বেলা বিস্কুট খেয়েছি।
বেলা: আপনাদের বাড়ী কোথায়?
সরণ: বাংলাদেশে।
বেলা: :-) বাংলাদেশের কোন জায়গায়?
সরণ: ছোট এই দেশে এতো ভাগ কেন? ধরেন আমরা একই শহরে।
বেলা: ওকে
সরণ: :-/
বেলা: আজকে যেতে হবে, পরে কথা হবে।
সরণ: মে আই অ্যাড ইউ?
বেলা: আমি ইনভাইটেশন পাঠাচ্ছি।
একটু পর ইনভাইটেশন পেয়ে সরণ মেজেঞ্জার লিস্টে যোগ করে; বেলা।

(???চলবে???)
৩২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×