somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার লেখার কোনো নাম নেই-২ (তছলিমা নাছরিন ও সাইদী দুজনের ভাগ্য)

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তছলিমা নাছরিন ও দেলোয়ার হোসেন সাইদীর কর্মফল দেখে আমার খুব মায়া হচ্ছে। তছলিমা নাছরিন ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের ছাত্রী ছিলেন। তখন থেকেই তার মনে লেখক হয়ে নাম করার ইচ্ছে জেগেছিলো। তিনি একজন এম.বি.বি.এস ডাক্তার ডিগ্রী অর্জনকারী। কিন্তু ডাক্তারী ডিগ্রি তাকে লেখিকা হতে বাঁধা দেয় নি। আমার পরম শ্রদ্ধেয় শফিক রেহমান এর সম্পাদনায় সাপ্তহিক যায়যায়দিন পত্রিকায় তাছলিমা নাছরিন নারীর অধিকার সক্রান্ত কথাবার্তা লিখতে থাকেন। যা পড়লে যে কোনো মুক্তচিন্তার পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যের বিবেকবোধে কিছুটা হলেও হোচট খাওয়াবে। তিনি বিয়ে করেন বাংলাদেশের এক ক্ষনজন্মা উজ্জ্বল প্রতিভা রুদ্ধ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ্ নামের কবিকে।
রুদ্ধ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ্ কি আসলেই আত্নহত্যা করেছিলেন কিনা তা আমি স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করতে পারছি না। তাসলিমা নাসরিন যখন বিখ্যাত নারীবাদী বক্তা হিসাবে প্রচুর নাম করেন তখন এক শ্রেণীর মানুষ তার পিছনে লেগে যায়। তৎকালীন বাংলার মুসলিম সমাজের বজ্রকন্ঠ দেলোয়ার হোসেন সাইদী মানে অনেক ডিমান্ডফুল ওয়াজ নছিয়তকারী সমাজপতি। তিনি ওয়াজ মেহফিলে তছলিমার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে লেখিকা তাছলিমার বইয়ের কিছু কিছু হাদিসের দোহাই দিয়ে তাকে সাধারণ মানুষের কাছে ডাইনি বানিয়ে ফেলেন। যার মধ্যে রুশদ ইবনে কাজী বর্ণীত একটি হাদিসের প্রসংগ আছে। পরবর্তিতে তসলিমা নাছরিন তখনকার মুসলিম সমাজের ধিক্কারের পাত্রী রূপে পরিগনিত হয়ে ওঠেন। তারপরে তাছলিমার বিরুদ্ধে নিয়মিত বিরতিতে আক্রমন হতে থাকে। আজ দেখুন সেই তাছলিমা নাছরিন ও দেলোয়ার হোসেন সাইদী দুজনই কতো বিতর্কিত ও নির্বাসীত।
হায়রে অপবাদের পরিনাম! আপনারা বলছেন সত্যের প্রকাশ হয় না। হয় বন্ধু সত্য মানুষের জীবন থেকে মানুষকে শিখায়! আমার মনে আছে ১৯৯৬ইং সালে আমি স্কুল পালিয়ে আমি সালমান শাহ্ অভিনিত “তোমাকে চাই” সিনামাটি বড় পর্দায় দেখেছিলাম। তাতে একটি গান ছিলো, “ভালো আছি ভালো থেকো।। আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ।। দিও তোমার মালাখানী বাউলের এই মনটারে.....” এই লিরিকের রচয়ীতা কে জানেন? সেই তছলিমা নাছরিনের এক সময়ের প্রেমিক রুদ্ধ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। হায়রে নিয়তির খেলা!!! সেই রুদ্ধ মোহাম্মদ শহিদুল্লা আর সালমান শাহ্ আজ দুজনেই আকাশের তারা হয়ে ভক্তের হৃদয়ে আছেন। সালমান সাহ আর উত্তম কুমারের মতো এতো ন্যাচারাল বাঙালী অভিনেতা আর কোনোদিনও জন্মাবে কিনা সন্দেহ আছে। তাদের প্রধান স্টাইল ছিলো নিজেদের স্বাধীন ভাবে অভিনয় করে মানুষের কাছে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। দেখুন আজ তছলিমা নাছরিন আর দেলোয়ার হোসেন সাইদী দুজনেই বিখ্যাত চূড়ায় চড়ে অনের টাকা পয়সার মালিক হয়েছেন ঠিকই। কিন্তু দুজনই যে ভাগ্যের প্যাচে বন্দি!!! তারা কি এমন পাপ করেছেন যে তাদের এই নিষ্টুর পরিনতি হলো। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখুন বন্ধু!!! আজও সন্ধ্যা তারার মাঝে রুদ্ধ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ আর সালমান শাহ কে খুজে পাবে। তারপরও অনেক অন্ধকারের পরে আলো আসে। এই তছলিমা নাছরিন আর দেলোয়ার হোসেন সাইদী দুজনেই আবারও আত্মসুদ্ধির মাধ্যমে তাদের পাপ মোচনের সুযোগ পাওয়ার অযোগ্য নয়। তাছলিমা নাছরিন কে আমি যতটা না একজন লেখিকা হিসেবে সম্মান করি তার চেয়ে অনেক সম্মান করি রুদ্ধ মোহাম্মদের মতো একজন সত্যিকারের গুণীর সাথে সংগে প্রেমের মাধ্যমে সংসার করতে পেরেছিলো। সত্যিকারের প্রেমিক কখনও মরে না। সে তার প্রিয়ার হৃদয়ে থাকবেই। প্রেম যে এক সত্যির নাম। সত্যিকারের প্রেমের কখনও মরন হয় না। তোমাদের কাছে আমার আকুল রিকোয়েষ্ট তোমরা কারও মেকাপকে ভালো না বেসে তার হৃদয় কে ভালোবাসতে শেখো। দেখবে সেই হৃদয়ের ভালোবাসা কখনও হারায় না। আজ আমার প্রাণ ভরে মনে পড়ছে এই মিথ্যে মায়ার যাতাকলে পড়ে তরুনদের মাঝ থেকে সত্যি মনপ্রান দিয়ে ভালোবাসার ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। ভালোবাসা মুখমন্ডলের চেহারা দিয়ে হয় না হৃদয় দিয়ে হয়। সত্যিকারের ভালোবাসা বেচে থাকে ভালোবাসার মধ্যে। আর মিথ্যে মিথ্যে ভালোবাসা বেঁচে থাকে বাজার থেকে পঁচামাছ নিয়ে আসা ও পিয়েজ কাটা চোখের পানির মধ্য।
আমার খুব করে আমার প্রানের চেয়ে প্রিয় প্রিয়াকে। যাকে আমি অনেক অনেক ভালোবাসতাম। আজও ভালোবাসী। আজও তাকে কাছে পেতে চাই। তার সাথেই আমার সংসার ধর্ম পালন করতে চাই। এরই নাম ভালোবাসা! সত্যিকারের ভালোবাসা কখনও ফুরিয়ে যায় না। সে যে অনেক বেশী টেকশই। ভালোবাসা কে যারা যুতো স্যান্ডেল মনেকরে নিয়মিত সেলাই করে তারা বোঝে না ভালোবাসা দিয়ে জীবনের সব যুদ্ধকে মোকাবেলা করা সম্ভব।
আজ এই ক্ষনে আমি তছলিমা নাছরিন কে স্পষ্ট ভাবে বলে দিতে চাই “তাছলিমা তুমি নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে দেখো রুদ্ধ কি তোমাকে ঠকিয়েছে নাকি তুমিই রুদ্ধকে ঠকিয়েছো, এতো ধন সম্মত্তির বিনিময়েও তাকে কি তুমি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবে? না পাবরে না।” আর দেলোয়ার হোসেন সাইদীকে স্পষ্ট ভাবে প্রশ্ন করতে চাই যে তাছলিমা নাছরিনকে নিষিদ্ধ করার জন্য আপনি আপনার ভক্তদের লেলিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ইসলামের দ্বায়িত্ববোধ নামের সাময়িক আন্দন কি আপনার সামনে আপনার সন্তানের মৃত্যু দেখেও উপলব্দি করতে পারেন নি? হায়রে নিয়তির খেলা। সত্যি তার প্রমাণ দেখাবেই। একজন দায়িত্বশীল মুসলিম নেতা কখনও তার ভক্তদের লেলিয়ে দেন না বরং তার কাছে যাকে অপরাধী মনে হয় তাকে কাছে ডেকে তার ভুল সংশোধন করে দেয়। আমি আমার অবস্থান তুলে ধরছি। আর তা হলো তাছলিমা নাছরিনের এই বাংলাদেশে আসার অধীকার আছে। তিনি বাংলাদেশের জন্মসূত্রের নাগরিক। তার অধিকার আছে তার ছেলেবেলা, ও জীবনের চরম মূহুর্তের দিনগুলো যেখানে কাটিয়েছেন, সেই বাংলাদেশ এ ফিরে আসার। আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা ক্ষমা করতে জানি। ক্ষমা যে পরম ধর্ম। ধৈর্য ও ক্ষমা দিয়ে লোভকে বিষর্জন দিলে তাতে নিজের মধ্যে সত্যের আগমনের পথ আরও সহজ হয়। আসুন আমরা আমাদের বাংলাদেশকে নিজেদের মতো করে সাজাই।

আমার সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করতে চাইলেঃ
https://www.facebook.com/asif.ud

অসম্ভবের আত্মপ্রকাশ :: আপনার ভিতরের বাংলাদেশী চেতনাকে জাগিয়ে তাকে বাস্তবায়ন করার সময় এসেছে বন্ধু!!!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×