somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাদীস নিয়ে মিথ্যাচার ও তার জবাব...............

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইতিপূর্বের লেখায় বলেছিলাম অপেক্ষা করুন সালাতে বুকের উপর হাত বাধার কথা কোন সহীহ হাদীসে নেই বরং এটি সম্পূর্ন অসত্য। এবং তা প্রমানসহ উপস্থাপন করা হয়েছে বুখারী , মুসলিম , তিরমিযী এবং নাসাঈ থেকে। এবার উপস্থাপন করা হবে আবু দাউদ ও ইবন মাজাহ থেকে। আল্লাহ উত্তম সহায়ক।

বুকের উপর হাত বাধার কথা বুখারী মুসলিম তিরমিযী এবং নাসাঈ শরীফে নেই।
আবু দাউদ ও ইবন মাজাহতে আছে যার বর্ননা অত্যন্ত দুর্বল।


আবু দাউদের বর্ননা :
আমাদের নিকট বর্ননা করেছেন আবু তাওবা থেকে আলহায়সামু অর্থাত ইবন হুমায়দ থেকে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন মুসা থেকে তাউস (র) তিনি বলেন রাসূল (সা) নামাজরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বেধে রাখতেন।

প্রথমত : হাদীসটি মুরসাল। এবং অধিকাংশ মুহাদ্দিসের মতে মুরসাল হাদীস যঈফ মারদুদ (দুবল ও বর্জনীয় )। এবং যেহেতু ফিকহের ক্ষেত্রেও আপনারা মুহাদ্দিসেকিরামের মত প্রাধান্য দিচ্ছেন তাই আপনারা এই হাদীস দিয়ে দলীল দিতে পারেন না। এবং দলীল দিতে চাইলেও বলতে হবে হাদীসটি যঈফ। কেননা এটি মুরসাল হাদীস।
তাহলে কিভাবে একটি যঈফ ও মারদুদ (দু্বর্ল ও বজর্ণীয়) হাদীসকে সহীহ বলার অপচেষ্টা করা হল ? স্পষ্ট করে বলূন কিভাবে এটি সহীহ হাদীস ?

দ্বিতীয়ত : হাদীসটির রাবী (বর্ননাকারী) সুলায়মান বিন মুসা মৃত্যুর পূবে স্মৃতিশক্তি লোপজনিত দূবলতায় পড়েছিলেন। তাই তার হাদীস আর সহীহ থাকেনি।
তৃতীয়ত : হাদীসটির সনদ খেয়াল করুন সেখানে বলা হচ্ছে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন মুসা। অথচ সাওরী(র) এর মত হল নাভীর নিচে হাত বাধা।

চতুর্থত : আবু দাউদ তার মারাসীলেএ্ই হাদীসাটি সংকলন করেছেন কিন্তু তাতে ছুম্মা ইয়াশুদ্ধু বায়নাহুমা এর স্থলে রয়েছে ছুম্মা ইয়াসবিকু বিহিমা আলা সদরিহি।
এতএব আবু দাউদ গ্রন্থে থাকা বুকের উপর হাত বাধার একটিমাত্র হাদীস তাতেও আবার যঈফের বহু কারন বিদ্যমান। এতএব সমস্ত দিক বিবেচনায় হাদীসটি আবু দাউদের নাভীর নীচে হাত বাধার হাদীসের চেয়ে অধিক দূবল।

এবার আমরা ইবনে মাজাহর হাদীসটি পর্যালোচনা করব : আসুন আমরা হাদীসটি বিভিন্ন গ্র্রন্থে সনদ সহ দেখি :

সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৮০৯ : ‍
আমাদেরকে বর্ননা করেছেন উসমান ইবন্আবী শায়বা আমাদের বর্ননা করেছেন আবুল আহওয়াস থেকে সিমাক বিন হারব থেকে কাবীসা বিন হালব থেকে তার পিতা তিনি বলেন : নবী (সা) আমাদের সালাতে ইমামতি করতেন এবং তিনি তার ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন।

কাবীসাহ ইবন হালব থেকে তার পিতা বলেন রাসূল (সা) কে আমি তার ডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে ফিরে যেতে দেখেছি। আর তাকে দেখেছি এটিকে (হাতকে) তার বুকের উপর রাখতে।

হাদীসটি আরো বর্নিত হয়েছে দারা কুতনীতে কিন্তু তাতে বুকের উপর অংশটি নেই।
আর তিরমিযী ও মুসনাদে আহমাদেও হাদীসটি বর্নিত হয়েছে তাতে বুকের উপর অংশটি নেই।

এবং হালব এর হাদীসটি সিমাক বিন হারব এককভাবে বর্ননা করেছেন। অর্থাত রাবী সিমাক একক সকল বর্ননায়। আর একাধিক জারাহ তাদীলের্ ইমাম তাকে শিথিল (দুর্বল) বলেছেন। আর নাসাই বলেছেন তিনি যদি কোন মূল মতন এককভাবে বণনা করে তাহলে তা দলীল হবে না। কারন তাকে যুগিয়ে দেয়া হত আর তিনি যোগান গ্রহন করতেন (মীযানুল ইতিদাল খ ২ পৃ২৩২)
এতএব আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে বুখারী মুসলিম তিরমিযী নাসঈ এর কোনটি্েই বুকের উপর হাত বাধার ব্যাপারে কোন হাদীস নেই।
আবু দাউদ এবং ইবন মাজাহতে আছে যা অত্যন্ত দূবল। এবং এই দুবর্লতার কারন দেয়া হল। এবং ইবনে খুযায়মার বর্ণনা জাল (বানোয়াট) কমপক্ষে মুনকার যা জাল বা মাউযুর কাছাকাছি।

এবং আবদুর রউফ ভাই ব্লগারদের যে বিভ্রান্ত করেছেন (যেমন তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন বুখারী , মুসলিম, তিরমীযী ইত্যাদী। তিনি রেফারেন্স দিয়েছেন যেমন বুখারী ১০২ পৃ: প্র: খ: আযীযল হক। হা: ৪৩৫ ১ম খ: আ: প্র: হা: ৬৯৬ । অর্থাত তিনি বুঝিয়েছেন বুখারী শরীফের ১০২ পৃষ্ঠা প্রথম খন্ড আযীযল হক। হাশিয়া (ব্যাখ্যা)৪৩৫, ১ম খন্ড আ: প্রকাশনী হাশিয়া (ব্যাখ্যা) ৬৯৬। অর্থাত তিনি হাদীসের রেফারেন্স দিচ্ছেন হাদীস গ্রন্থের তাদের মতমত ব্যাখ্যা গ্রন্থ দিয়ে। অথচ স্বাভাবিকভাবে ব্রগাররা ভাববে তিনি বোধ হয় হাদীস গ্রন্থের রেফারেন্স দিয়েছেন। আর এভাবেই ধোকা খাবে ব্লগারগন। )তাই আমি ভাইকে অনুরোধ জানাব এভাবে রেফারেন্স না দিয়ে স্পষ্ট লিখে দিবেন ব্যাখ্যাগ্রন্থ। তা না হলে আপনি না চাওয়া সত্বেও পাঠক ধোকা খাবে যার দায় আপনি এড়াতে পারেন না। আমার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে আন্তরিকভাবে দু:খিত। নি:সন্দেহে মুমিনরা পরষ্পর ভাই। ক্ষমা সুন্দর দষ্টিতে দেখবেন।আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝার তেৌফিক দান করুন।


পূর্বের পোষ্ট- Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×