somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাঙাবনের রাজাবনে (উৎসর্গ: ধুসর গোধুলি)

২৩ শে জুলাই, ২০০৬ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকদিন ধরেই দূরে কোথাও যেতে খুব ইচ্ছা করছে। কিন্তু কই যাব? কার সাথে যাব? যাওয়ার জায়গা যা আছে সব একদিনের জন্য। দিনে গিয়ে দিনে আসা টাইপ। আমার যে খুব কয়েক দিনের জন্য যেতে ইচ্ছা করছিল পরিচিত সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে! সুযোগ এসে গেল। কাঙাবনের রাজধানী ক্যানবেরায় যাওয়ার জন্য অ্যাশ আপু খুব করে ধরেছে। ওর মা বাবা আর বোনেরা সিডনী থাকে, কিন্তু ও পড়াশোনার জন্য পাশের প্রদেশ ক্যানবেরায় থাকে। অ্যাশ আপুকে মা বেশ করে চিনে, আমাকেও চিনে, অবিশ্বাস করার মত কিছু এখনও করি নি, তাই মায়ের কাছ থেকে তিনদিনের ছুটি নিতে অসুবিধা হল না। সাথে আসল তাসিন আর ইমু। গ্রুপের বাকিরা আসতে পারল না, বাসা থেকে অনুমতির অভাবে। অবশ্য অসুবিধে নেই, আমরা 2010 সালে বিশ্ব ভ্রমনে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ । শুধু বন্ধুরা। নো বয়জ এলাউড। এর মধ্যে কেহ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেলে টু ব্যাড। তাহাকে পিছনে রাখিয়া যাওয়া হইবে! খরচ বাঁচানোর জন্য বেছে বেছে যেই দেশগুলোতে চেনা জানা মানুষ আছে সেখানে যাব। এক্ষেত্রে সামহোয়ার ইন বিশেষ উপকারী প্রমানিত হইবে। (পাঠক ভয় খেয়ে যাওয়ার আগে বলে রাখি, এখনও পর্যন্ত এই স্বপ্নের কোন বাস্তব ভিত্তি নেই, কিন্তু আমরা যাবই... দেখেন না তারিখ ঠিক ঠাক, টাকা জোগাড়টাই এখন একমাত্র সমস্যা! )

আমার ভ্রমনটা ঠিক 'পর্যটকের' ভ্রমন ছিল না। টুরিস্ট টাইপের মানুষেরা চায় যতটা সম্ভব কম সময়ে এবং কম খরচে একটা এলাকার বিখ্যাত সব জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে এবং ঘুরে যে দেখা হয়েছে সেটার প্রমানস্বরুপ এক গাদা ছবি তুলতে। আমি শুধুই ক্লান্তি কাটাতে, স্রষ্টার পৃথিবীর সুন্দরতম জায়গাগুলো দেখে নিদারুণ ভাল লাগায় মগ্ন হওয়ার জন্য ঘুরা ঘুরি ভালবাসি, একেবারেই প্ল্যান ছাড়া। যখন যা সামনে আসে তখন তা করা টাইপের। প্রচলিত অর্থে 'দর্শনীয়' স্থানের চেয়ে সঙ্গ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ সাধারণ জায়গা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার মত প্ল্যানহীন, চিন্তাহীন (বা আজাইরা চিন্তায় ভরপুর) সঙ্গী চাই, হাসাতে আর হাসতে পারলে সবচেয়ে ভাল। যত বেশি মিসম্যানেজমেন্ট হয়, আমার তত মজা লাগে। এবারেরটা এসব বৈশিষ্ট্যে ভরপুর ব্যাড়াছ্যাড়া টাইপের ভ্রমণ ছিল, তাই নিয়ে ব্যাড়াছ্যাড়া ধরণের লেখা ছাড়ছি। ঘাটতি পূরন করতে সাথে ছবি দিয়ে দিচ্ছি আচ্ছা মতন।

ক্যানবেরা ঘুরতে যাওয়ার আগে শহরটা সম্পর্কে জানুন তো... ক্যানবেরা অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী। সবচেয়ে ছোট্ট প্রদেশ বা উপপ্রদেশ। টেরিটরি। ক্যানবেরার ইতিহাসটা মজার। 1900 সালে যখন পুরো অস্ট্রেলিয়ার খন্ড প্রদেশগুলো মিলে একটা বড় দেশ হল তখন গোল বাঁধল সংসদ ভবন কই হবে তাই নিয়ে। সব প্রদেশের মানুষেরা তো বিশাল চিল্লাপাল্লা, আমাদের এখানেই হতে হবে। শেষ মেষ রাজনৈতিক নেতারা ঠিক করলেন, রাজধানী হবে সব প্রদেশের বাইরে, একটা আলাদা প্রদেশ সৃষ্টি করে ওখানে। বেছে নেয়া হল এক টুকরো অনাবাদী ভূমি, ব্যাস, ওটাই আবাদ করে হল নতুন প্রদেশ ক্যানবেরা--আদিবাসীদের ভাষায় এই শব্দের অর্থ 'দি মিটিং প্লেস' বা মিলন স্থান। এটা ক্যানবেরার একটা মজার ব্যপার। সাধারণত সব বড় বড় শহর, রাজধানী গড়ে উঠে কল কারখানা, জন বসতিকে কেন্দ্র করে, ধীরে ধীরে ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে। ক্যানবেরা পুরো শহরটাই আগে জায়গা বেছে তারপরে খুব ভাল করে ডিজাইন করে ভেবে চিন্তে গড়ে তোলা হয়েছে।

সিডনী থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দুরে ক্যানবেরা। পাঁচ ঘন্টার পথ। আগে একবার গিয়েছিলাম, বাসার সবার সাথে, গাড়িতে করে। এবার আমরা ক'জন মেয়ে হালকা স্বাবলম্বী অ্যাডভেঞ্চারের জন্য বেছে নিলাম বাস।

(চলবে)

[ইটালিক]বি:দ্র: এই সিরিজের নামে অরিজিনালিটি নেই, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি মুখফোড়ের ছড়ার। পুরো সিরিজটাই উৎসর্গ করলাম ধূসর গোধুলীকে।[/ইটালিক]
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×