somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবার ফিরে পেতে ইচ্ছে করে,কবে পাবো ফিরে............../:)

২২ শে জুন, ২০১০ দুপুর ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ লিখতে বসে মনে হলো অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছি..............


আজ কত মনে প্রানে চাই সে দিন গুলোকে ফিরে পেতে কিন্তু পারছি না পেতে।



খুব কষ্ট লাগে মাঝে মাঝে জীবনটা এমন কেন? বন্ধন কখনোই পুরনো হয় না,ভালোবাসা কখনোই মরে যায় না,তা যেই সম্পর্কই হউক না কেন। যার জন্য-ই আমি আজো স্বপ্ন দেখি। যারা আজ আমার এই স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের কাছে আমি চিরঋণী। সেই দুজনের একজন আমার বাবা। যিনি হয়তো এই পৃথিবীর মানুষের কাছে কোন গুরুত্বপূর্ণ কেউ না কিন্তু আমার কাছে তিনিই আমার পৃথিবী। তাকে নিয়েই আজ আমার কিছু কথা............................ কিছু স্মৃতি সবার সাথে শেয়ার করা।


ছোটবেলায় যখন গ্রামে থাকতাম,তখন আমার একটা অভ্যাস ছিল ভোরে ঘুম থেক উঠে সাবার জুতা জোড়া সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা।আমি ছোটবেলায় হাঁটতে চাইতাম না। কোলে উঠতে চাইতাম। যদি কোলে না নিতো তখন রাস্তায় বসে থাকতাম। এমনও হইছে বাবা হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে গেছে কিন্তু পিছনে ফিরে দেখে আমি দূরে রাস্তায় বসে আছি।তখন বাবা আবার পিছনে এসে আমায় কোলে নিয়ে বলতো "আর নতুন জুতা কিনে দিবো না কিন্তু" বাবা-মা আজও আমায় যখন সেই কথা বলে চোখের সামনে অস্পষ্টভাবে ভেসে উঠে সেই দিনগুলোর ছবি।

আগে একটা রুটিন ছিল বাবার সাথে ফযরের নামায পড়ে প্রাতভ্রমনে বের হওয়া। আমায় সাথে নিয়ে না গেলে যেনো তার হাঁটার স্বাদ পূর্ণ হয়না। তাই আমি ঘুম ঘুম চোখে বাবার হাত ধরে যেতাম মসজিদে তারপর ভ্রমনে। এমনও হইছে মসজিদে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি তারপর বাবা আমায় ঘুম থেক উঠিয়েছেন এবং আমায় সাথে নিয়ে গেছেন। প্রাতভ্র্রমন শেষ করে একসাথে নদীতে গোসল করতে যেতাম। শীতকালে আমি সারাক্ষন নদীর পাড়ে বসে থাকতাম ঠান্ডা পানির ভয়ে। বাবা বার বার বলতো আয় তাড়াতাড়ি আমি কিন্তু চলে যাচ্ছি। যখন দেখতাম বাবার গোসল প্রায় শেষ তখন ঝুপ করে নেমে দুটো ডুব দিয়ে উঠতাম। তখন বাবা আমায় বলতো তোর গোসল তো হয়নি এটা তো কাউয়া গোসল (কাকের মতো যে গোসল আর কি)।

প্রথম যেদিন স্কুলে গেলাম সেদিন বাবা আমায় নিয়ে গেল। পরের দিন বাবা আমায় নিয়ে যাচ্ছে আমিও মহা আনন্দে আগে আগে হাঁটছি কারন আমি তো জানি বাবা আমার পিছনে আছে ই। কিছুক্ষন পর কি মনে করে তাকিয়ে দেখি বাবা নেই। কোথায় গেল?? খুঁজে না পেয়ে নিজে নিজে স্কুলে চলে গেলাম। পরে বাসায় আসার পর বাবা মা কে বলছে "তোমার ছেলের সাথে আমার আর যাওয়ার দরকার নেই ও একাই যেতে পারে,আজ একা একা গেলো তো"

প্রতি ঈদে বাবা আর আমি একসাথে নামাযে যেতাম। নামায পড়ার পর দু'জন কোলাকুলি করতাম। যদি এই কাজটা না করতে পারতাম তবে মনে হতো ঈদ ই হয়নি। এখন জীবনের প্রয়োজনে ঈদ সবগুলো বাবা-মা'র সাথে করা হয় না। যখন নামাযের সালাম টা ফিরাই তখন ভীষন অনুভব করি বাবর বুকের উঞ্চ স্পর্শ।




আমার কোন ভাইবোন না থাকায় আমার বন্ধু,অভিভাবক,আদর,শাসনকর্তা বলতে আমার বাবা-মা ই সব। তাদের নিয়ে এতো স্মৃতি তা পর্ব আকারে লিখা যাবে। কিন্তু যে ভালোবাসা আমার রক্তে প্রতি অণুতে মিশে আছে তার বহিঃপ্রকাশ লিখার চেয়ে কর্ম দ্বারই করতে চাই তাই আপনাদের কাছে বলছি যে- তাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে তারা সুস্থ,সুন্দর থাকে।তাদের জন্য যেনো আমিও কিছু করতে পারি যেমনটি তার আমার জন্য করেছিল এবং এখনও করছে। কোনদিনই পারবো না তাদের ঋণ শোধরাতে কিন্তু নিজের সাধ্যমত সকল চেষ্টা করার মন মানুষিকতা,সামর্থ্য যাতে আল্লাহ সবসময় ই রাখে সে জন্য আমায় দোয়া করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১০ দুপুর ২:০৫
৫টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×