সময় কখনো থেমে থাকে না............
সময়ের সাথে সাথে জীবন যাত্রার মান,প্রযুক্তিরও উন্নয়ন ঘটছে। আমাদের প্রতিদিনের জীবন যাত্রাকে সহজ থেকে সহজতর কারার জন্য নানান উপাদান চলে আসছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন আমাদের জন্যই কিন্তু তার আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়ের কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় মাধ্যম।
প্রযুক্তি হয়তো আমাদের জীবন যাত্রা অনেক সহজ করছে ঠিকই কিন্তু ভালোবাসা,আবেগ,বিশ্বাস ভালো লাগা অনুভূতিগুলো কেমন জানি কমিয়ে দিচ্ছে। তেমন এক মাধ্যম চিঠি,
যা আজ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে.................. আমি তার-ই সর্ম্পকে নিজের কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।
চিঠি............
মাএ দু'টি অক্ষর কিন্তু গভীরতা অনেক বিশাল। এর মাঝেই লুকিয়ে থাকতো কতো কথা, কত অবেগ, কত চাওয়া-পাওয়ার আকূলতা,ব্যাকূলতা,দুঃখ-সুখ, এক কথায় সকল অনুভূতির প্রকাশ। এক সময় মানুষ কতো প্রতীক্ষায় থাকতো এক টুকরো কাগজের আশায়। যার মাঝে লিখা থাকতো প্রিয়জনের সুন্দর কিংবা অসুন্দর বর্ণমালার সারিবদ্ধ বাক্যমালা। যখন চিঠি টা হাতে পাওয়া হতো তখন হাতের লিখা কেমন তা গুনাই ধরা হতো না কি লিখা আছে এর ভিতরে তা পড়ার উত্তেজনায়। মা সন্তানকে, সন্তান পিতাকে, ভাই বোনকে, স্বামী স্ত্রী কে, প্রেমিক প্রেমিকাকে, বন্ধু কিংবা আত্নীয় স্বজনকে ....... কতো আবেগে,ভালোবাসায় বলতো "যেথায় যেমন থাকো একটা চিঠি দিও"। এ চাওয়াতে যে আদেশ, আবদার,অধিকারের সুপ্ত অনুভূতি লুকানো তা আর অন্য কোন মাধ্যমেই খুঁজে পাওয়া যায় না।
চিঠি লিখার জন্য দরকার সময়। যখন কাউকে চিঠি লিখা হয় তখন তার কথাও মনে মন ভাবতে হয়, তাকে ভেবেই লিখতে হয়, যা অন্য কোন মাধ্যমের জন্য প্রয়োজন হয় না। এই ভাবনার ভিতরে কাজ করে আন্তরিকতা। আন্তরিকতা ছাড়া চিঠি লিখা সত্যিই দুষ্কর। এই লিখার মাধ্যমেই কল্পলোকের অনুভূতিতে থাকা যায় প্রিয় মানুষটির সান্নিধ্যে অনেকক্ষণ।
আজ মানুষ অনেক ব্যস্ত। ব্যস্ততার সাথে সাথে কমেছে মানুষের আন্তরিকতাও। যার জন্য আজ যদি কাউকে চিঠি লিখার কথা বলি ভাবালেশ মুখেই বলে দেয় এখনও "ব্যাকডেটেড " রয়ে গেছি। আর নতুন প্রজন্মের কাছে চিঠি তো আরও জঘন্য একটা জিনিস।
আজ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমি অভ্যস্ত মোবাইল,ই-মেইল ইত্যাদী নিত্য নতুন উন্নত যোগাযোগের মাধ্যমের সাথে। আমি সাধুবাদ ও জানাই এতোসব উন্নতির জন্য কিন্তু সত্যি কথা যদি বলি আমি এখনও চিঠি কে অনেক পছন্দ করি। প্রায়ই কোন বন্ধু এখনো হয়তো অজান্তেই বলে ফেলি তুই তো এখন আর চিঠি দিস না...। কারন একটা ফোন, এস,এম,এস কিংবা একটা ই-মেইল এর জন্য যতখানি মমতা লাগে চিঠি লিখতে তার চেয়ে অনেক বেশী দরদ লাগে। যা সত্যিই আমি অনেক অনেক মিস করি।
এখনও আমি একটা চিঠির আশা করি। কেউ আমায় লিখলে যথাসাধ্য চেষ্টা করি তার উত্তর দেবার জন্য। চিঠি লিখার চেয়ে চিঠি পড়া যে কতো মজার তা চিঠি'র সাথে যারা পরিচিত তারা সবাই আমার চেয়ে বেশীই জানে। আর অনেক দিন পর পুরনো কোন চিঠি পেলে তা পড়ার যে অনুভূতি......তার কথা নাই বা বললাম
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:২২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




