somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উমাইয়া মসজিদ বা দামেস্ক গ্রেট মসজিদের কিছু কথা

২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


উমাইয়া মসজিদ বা অনেকের কাছে দামেস্ক গ্রেট মসজিদ হিসেবেও পরিচিত । এই মসজিদটি দামেস্কের পুরাতন শহরে অবস্থিত যা বিশ্বের বৃহত্তম এবং প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি মসজিদ। মুসলমানদের একটি অংশের মতে এটি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের চতুর্থ পবিত্র স্থান। ৬৩৪ সালে আরব যুদ্ধে দামেস্ক বিজয়ের পর জন দ্য বাপটিস্ট খ্রিস্টান দীক্ষা দান গুরু ইয়াহিয়া এর খ্রিস্টানদের উৎসর্গকৃত স্থানে এই মসজিদটি স্থাপিত হয়। এই মসজিদে এখনো জন দ্য মাপটিস্ট এর মাথা আছে বলে ধারনা করা হয়। এই স্থানটি খ্রিস্টান ও মুসলিম উভয়ই ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্র এবং সম্মানজনক স্থান। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন যে যীশু তার শেষের দিনগুলোতে এখানে আগমণ করেন। সালাদিনের মাজার মসজিদের উত্তরদিকের প্রাচীরের সাথে লাগানো একটি ছোট্ট বাগানে অবস্থিত।


লৌহ যুগে দেমাস্কাস অ্যারাম দামেস্কের অ্যারামিয়ান স্টেটের রাজধানী ছিল। পশ্চিম সিরিয়ার অ্যারামিয়ানরা হাদাদ রাম্মান এর সংস্কৃতির অনুসারী ছিল আর সেই হাদাদ রাম্মান হল বৃষ্টি ও বজ্রপাতের প্রভু। সেই হাদাদ রাম্মান কে উৎসর্গকৃত একটি মন্দিরের স্থানে নির্মিত হয় আজকের এই উমাইয়া মসজিদ। এটা ঠিকভাবে জানা যায় যে তৎকালীন মন্দিরটি দেখতে ঠিক কেমন ছিল কিন্তু এটা বিশ্বাস করা হয় যে মন্দিরটি ঐতিহ্যবাহী সিমিটিক কানানিট স্থাপত্যশৈলী অনুসরণ করে স্থাপিত হয়েছিল জেরুজালেম মন্দির নামে পরিচিত ছিল। এই অ্যারামিয়ান মন্দিরটির একটি পাথর এখনো দামেস্কের জাতীয় যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।


এই ছবিটি প্রার্থনা কক্ষের অভ্যন্তরে জন দ্য বাপটিস্ট এর সমাধী

৬৩৪ সালে মুসলিম আরব শাসক খালিদ ইবন ওয়ালিদ দামেস্ককে নতুনভাবে নির্মাণ এবং অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। সেই দশকের পরে ইসলামী খিলাফত শাসন উমাইয়া রাজবংশের অধীনে আসে। তখন দামেস্ক কে মুসলিম বিশ্বের প্রশাসনিক রাজধানী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ষষ্ঠ উমাইয়া খলিফা আল ওয়ালিদ ৭০৬ সালে বায়জানাইথ ক্যাথেড্রাল এর পাশে একটি মসজিদ নির্মানের জন্য একটি কমিশন গঠন করেন। তার পূর্বে ক্যাথেড্রাল গির্জাটি স্থানীয় খ্রিস্টানরা ব্যবহার করত যা এখনো ব্যবহৃত হয় কিন্তু এই গির্জাটির দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে মুসলমানদের জন্য প্রধান প্রার্থনা কক্ষ মুসাল্লা ছিল। আল ওয়ালিদ মুসাল্লা সহ ক্যাথেড্রাল গির্জাটির বেশিরভাগ অংশ ভেঙে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে মসজিদ নির্মান করেন। যার নির্মানকাজ তিনি ব্যক্তিগত ভাবে পরিদর্শন করেন। এই নতুন মসজিদটি প্রধান মসজিদ হিসেবে ভূমিকা রাখে যা দামেস্ক শহরের নাগরিকদের প্রার্থনার জন্য ব্যবহৃত হত। খ্রিস্টানদের আন্দোলনের মুখে পড়ে দামেস্ক শহরের সব গির্জা খ্রিস্টানদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। মসজিদের নির্মানকাজ শেষ হয় ৭১৫ খ্রিস্টাব্দে তার উত্তরাধিকার সুলায়মান ইবন আব্দ আল মালিক এর শাসনামলে।দশম শতাব্দীর পারস্য ইতিহাসবিদ ইবন আল ফাকিহ্‌ এর মতে এই নির্মানকাজে তৎকালীন ৬,০০,০০০ থেকে ১০,০০,০০০ দিনার ব্যয় হয়। পারস্য, ভারতীয়, গ্রীক এবং মরক্কোর শ্রমিকদের সমন্বয়ে প্রায় ১২,০০০ শ্রমিক এই নির্মানকাজে নিয়োজিত হয়।


১০৭৮ সালে সুন্নী মুসলিম সেলজুক তার্ক এই শহরের শাসনাভার গ্রহণ করেন এবং তিনি আব্বাসিয় খেলাফতের শাসন পুনরুদ্ধার করেন। সেলজুক রাজা তুতুশ ১০৬৯ সালের অগ্নিকান্ডে মসজিদের ধ্বংসপ্রাপ্ত অংশ ঠিক করেন।তারপর দামেস্কের সেলজুক আতাবেগ তথিকিং মসুলের সেলজুক আতাবেগ শরফ আল দীন মওদুদ এর আমলে উমাইয়া মসজিদের পুনঃনির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।
১৪৮৮ সালে মামলুক সুলতান মামলুক কাইতবাঈ এর নামানুসারে মসজিদের কাতিবায় মিনার নির্মিত হয়। সেই মামলুক শাসনামলে এই মসজিদের অনেক উন্নতকরণের কাজ করা হয়। মামলুক শাসনাওলে এই মসজিদের বিভিন্ন স্থানে মার্বেল পাথর দ্বারা সুশোভিত করা হয়। সেই সময় মসজিদের অনেক অংশ পুনরুদ্ধার করা হয়। সেই পুনরুদ্ধার কাজে সিরিয়া এবং মিশরের মামলুক শাসনামলের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।১৫১৬ সালে অটোম্যান সাম্রাজ্যের অধীনে সেলিম I মামলুক রাজপরিবারের কাছ থেকে দামেস্ক বিজয় করেন। উমাইয়া মসজিদে তার শাসনামলের প্রথম জুমা র নামাযে সুলতান নিজে উপস্থিত ছিলেন। অটোম্যান সম্রাট এই ধর্মীয় স্থানটিকে কেন্দ্রিয় পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের জন্য উন্মুক্ত সম্পত্তি হিসেবে ঘোষনা করেন। এই ওয়াক্ফ স্টেটটি শহরের সর্ববৃহৎ স্টেট যেখানে ৫৯৬ জন কর্মকর্তা বা কর্মচারী ছিল।


উমাইয়া মসজিদের প্রধান পুনরুদ্ধার কাজ শুরু হয় ১৯২৯ সালে সিরিয়ায় ফরাসী শাসনামলে এবং ১৯৬৩ সালে সিরিয়া প্রজাতন্ত্রের সময়ে।১৯৮০দশকে এবং ১৯৯০ দশকের শুরুতে সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি হাফেজ আল আসাদ উমাইয়া মসজিদের বিনির্মানের জন্য বিশাল পদক্ষেপ গ্রহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। হাফেজ আল আসাদের এই ধারণা ও কর্মপদ্ধতিকে ইউনেস্কো সমালোচনা করে। কিন্তু সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিতে এই মসজিদটি ঐতিহ্য রক্ষার চেয়ে শহরের প্রতীক হিসেব গ্রহনীয় হত তাই এর বিনির্মান কাজ আরো কমিয়ে আনা হয়। এর বিনির্মাণ কাজ করা হয় শুধুমাত্র এর ঐতিহ্যের প্রতীককে আরেকটু বৃদ্ধির লক্ষ্যে।২০০১ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পল মসজিদটি পরিদর্শন করেন। বিশেষত তিনি জন দ্য বাপটিস্ট এর সংরক্ষিত স্মৃতিচিহ্ন পরিদর্শন করেন। এই প্রথম কোন মসজিদ পোপ পরিদর্শন করেন।
২০১১ সালের ১৫ মার্চ সিরিয়ান গৃহযুদ্ধের সাথে সম্পর্কযুক্ত প্রথম আন্দোলন শুরু হয়। সেই সময় উমাইয়া মসজিদ কমপ্লেক্সের বাইরে ৪০থেকে ৫০ জন মুসল্লী জড়ো হয়ে প্রাক গণতন্ত্রের জন্য শ্লোগান দিতে থাকেন। সিরিয়ান নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত আন্দোলনকারীদের দমন করেন এবং তারপর থেকে ওই এলাকায় শুক্রবারের জুমার নামাযের সময় নিরাপত্তা কর্মীরা একটি অস্থায়ী ব্যারিকেড দিয়ে রাখে বিক্ষোভ দমন করার জন্য।উমাইয়া মসজিদটি আকারে আয়তক্ষেত্র যার আয়তন দৈর্ঘ্যে ৯৭ মিঃ ৩১৮ ফুট এবং প্রস্থে ১৫৬ মিঃ ৫১২ ফুট। একটি বিশাল উঠান মসজিদ কমপ্লেক্সের উত্তরাংশ জুড়ে অবস্থিত এবং হারাম পবিত্র স্থান কমপ্লেক্সের দক্ষিণাংশে। এর উঠান ও আশপাশ এলাকা চারদিকে দেয়ালের সীমানা দিয়ে ঘেরা করা। এই দেয়ালের পাথরের বিন্যাস উচু নিচু, যা মসজিদের ইতিহাসে বিভিন্ন সংস্কারের চিহ্ন বহন করছে। কিন্তু বর্তমান সংস্কার কাজ এই মসজিদের পূর্বের উমাইয়া যুগের স্থাপত্য শৈলী পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এই প্রাচীরকে ঘিরে আছে তৌরণ যা দাঁড়িয়ে আছে অতিরিক্ত পাথরের কলাম এবং জোড় স্তম্ভ দ্বারা। প্রত্যেক দুই কলামের মধ্যে একটি জোড় স্তম্ভ বিদ্যমান। কারণ ১৭৫৯ সালের ভূমিকম্পে এর প্রাঙ্গনের উত্তরাংশ ধ্বসে যায়। এই ধরনের তিনটি তোরণ দ্বারা প্রধান কক্ষের অভ্যন্তর গঠিত।
এই মসজিদের সর্ববৃহৎ গম্বুজটি ডোম্ব অব ঈগল নামে পরিচিত। যার আসল নাম কুব্বাত আন নিস্‌র এবং এটি প্রধান কক্ষের উপরে কেন্দ্রীয়ভাবে অবস্থিত। ১৮৯৩ সালের অগ্নিকান্ডের পর এর কাঠের তৈরী গম্বুজটির স্থানে পাথরের তৈরী গম্বুজটি তৈরী হয়। এর উচ্চতা ৩৬ মিঃ ১১৮ ফুট। এই গম্বুজটি কেন্দ্রীয় অভ্যন্তরীণ তৌরণের উপর অবস্থিত।


উমাইয়া মসজিদ কমপ্লেক্সে মোট তিনটি মিনার আছে।মাধানাত আল আরুস হল নির্মিত প্রথম মিনার যা মসজিদের উত্তরদিকের দেয়ালে অবস্থিত। এই মিনারটি কবে স্থাপিত হয়েছিল তা সঠিক জানা যায় নি। মাধানাত ঈসা মসজিদ কমপ্লেক্সের দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটির উচ্চতা প্রায় ৭৭ মিঃ ২৫৩ ফুট। কয়েকটি উৎস হতে জানা যায় যে এই মিনারট ৯ম শতকে আব্বাসীদের শাসনামলে নির্মিত হয়। কিন্তু এর বর্তমান অবস্থার মিনারটি ১২৪৭ সালে নির্মিত হয়।
মাধানাত আল ঘারবিয়্যা নামেও পরিচিত। এটি নির্মাণ করেন মামলুক সুলতান কাইতবাঈ ১৪৮৮ সালে নির্মাণ করেন ।হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর পরিবার উপস্থিতি ও এখান থেকে ইরাক গমণ এবং কারবালার জিহাদ তারসাথে এই স্থানে তার পরিবারবর্গ ষাট দিন কারাবস ছিলেন সেই কারণে উমাইয়া মসজিদটি শিয়া এবং সুন্নী মুসলিমদের নিকট অতীব গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় তাৎপর্য বহন করে।
ছবিওতথ্যসূত্রঃBBC News। ২০০১-০৫-০৬। সংগৃহীত ২০১০-০৫-২৬।
এবং আরো অন্যান্য সাইট থেকে নেয়া ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ৩:০৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×