somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের কিছু ইতিহাস

২৫ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ হল যুক্তরাষ্ট্রে সংগঠিত এক আঞ্চলিক বিরোধ যা মূলত মার্কিন ফেডারেল সরকার আর বিপ্লবী ১১ টি দাস নির্ভর প্রদেশের মাঝে সংগঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি জেফারসন ডেভিস এর নেতৃত্বে এই ১১ টি প্রদেশ পুর্বেই নিজেদেরকে মূল যুক্তরাষ্ট্র হতে আলাদা ঘোষণা করেছিল এবং নামকরণ করেছিল কনফেডারেট স্টেটস অব আমেরিকা। তাদের বিরুদ্ধে ছিলো রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন এর ইউনিয়ন সরকার আর মার্কিন রিপাবলিকান দল যারা দাস প্রথার বিস্তারের ঘোর বিরোধী ছিল ।
যুদ্ধের সূচনাঃ
চার বছর ব্যাপী এই যুদ্ধের সূচনা ঘটে ১৮৬১ সালের ১২ই এপ্রিল যখন কনফেডারেট বাহিনী ফোর্ট সামটারে অবস্থানকারী এক ফেডারেল বাহিনীকে আক্রমণ করেন। সেই সূচনাদায়ী খন্ডযুদ্ধটি ফোর্ট সামটারের খন্ডযুদ্ধ নামে পরিচিত। আমেরিকার গৃহযুদ্ধ আন্তঃ প্রাদেশিক যুদ্ধ নামেও পরিচিত অথবা শুধুমাত্র গৃহযুদ্ধ যেটা ১৮৬১ সালে শুরু হয়ে ১৮৬৫ সাল অবধি সংঘটিত হয়ে ছিল যখন আমেরিকার সাতটি দাসরাজ্য আমেরিকান ইউনিয়ন বর্জন করে কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা তৈরী করে। বাকি প্রদেশ বা রাজ্য যেগুলো ইউনিয়নের সাথে থেকে যায় সেগুলো ইউনিয়ন অথবা উত্তর নামে প্রচলিত থাকে। যুদ্ধের শুরুটা হয় দাসপ্রথা সম্পর্কিত খুব ই নগন্য একটি ব্যাপার থেকে আর সুনির্দিষ্টভাবে পশ্চিমা অঙ্গরাজ্যগুলোতে দাসপ্রথার প্রসারন নিয়ে। বিদেশী কোন শক্তি কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি। চার বছর ব্যাপী সেই যুদ্ধে ৬০০ ০০০ এর ও বেশি সৈন্য মারা যায় এবং দক্ষিনের বেশীরভাগ স্থাপনা ধ্বংসের সম্মুখীন হন। কনফেডারেসি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয় একই সাথে শুরু হয় জাতীয় ঐক্য এবং সদ্য স্বাধীন দাসদের তাদের প্রতিশ্রুত অধিকার দেবার অত্যন্ত কঠিন পুনঃনির্মান প্রক্রিয়া। ১৮৬০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আব্রাহাম লিঙ্কনের নেতৃত্বাধীন রিপাব্লিকার পার্টি ইউনাইটেড স্টেটসের অঙ্গরাজ্যগুলোতে দাস্প্রথার বিস্তার এর বিরোধিতা করে। লিঙ্কন জয়লাভ করেন কিন্তু তার দায়িত্বগ্রহনের পূর্বেই ১৮৬১ সালে সাতটি দাসরাজ্য যেগুলোর অর্থনীতি ছিল তাঁত ভিত্তিক কনফেডারেসি গঠন করে। বিদায়ী ডেমক্রেটিক প্রেসিডেন্ট জেমস বুকানন এবং ক্ষমতাসীন রিপাব্লিকানরা এই বর্জনকে বেআইনি বলে প্রত্যাখ্যান করেন। লিঙ্কনের উদ্বোধনি বক্তব্য ঘোষণা করে যে তার প্রশাসন গৃহযুদ্ধ শুরু করবেনা। আটটি অঙ্গরাজ্য ইউনিয়ন বর্জনের আহবান ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করতে থাকে। কনফেডারেট বাহিনী কনফেডারেসির অধীন অসংখ্য দুর্গ দখল করে। তার মধ্যে একটি শান্তি আলোচনা সংঘটিত হয় এবং তা কোন ধরনের সমাধানের পথ দেখাতে ব্যার্থ হয় এবং দুই পক্ষ রণসাজে সজ্জিত হতে থাকে। কনফেডারেটরা আশা করছিল যে ইউরোপিয়ান শক্তিগুলো হস্তক্ষেপ করবে কেননা তারা কিং কটন এর প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। পরিহাসের বিষয় তারা কেউই তা করেনি এবং কেউই সেই নতুন কনফেডারেট শক্তিকে স্বীকৃতি প্রদান করেননি। সহিংসতা শুরু হয় ১৮৬১ সালের ১২ ই এপ্রিল যখন কনফেডারেট ফোর্স ফোর্ট সামটারের উপর গোলা বর্ষন করে। সেটি ছিল ইউনিয়ন বাহিনীর অধীন সাউথ ক্যারোলিনার খুবই গুরুত্বপূর্ণ দূর্গ। লিঙ্কন সেই দুর্গ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিটি অঙ্গরাজ্য হতে সৈন্য সরবরাহের ডাক দিলেন। পরবর্তীতে আরো চারটি দাসরাজ্য কনফেডারেসিতে যোগ দেয় এবার সর্বমোট কনফেডারেট রাজ্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১টিতে। ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর দখল নেয় এবং নৌ অবরোধ সৃষ্টি করে ফলশ্রুতিতে দক্ষিনের অর্থনীতি একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। ১৮৬১ ও ১৮৬২ সালের সময়কালে প্রাচ্যের ভূমিকা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ১৮৬২ সালের হেমন্তে কনফেডারেটরা মেরিল্যান্ডে জড় হয় যেটা কিনা ছিল একটি ইউনিয়ন অঙ্গরাজ্য। পরবর্তীতে ইংরেজ হস্তক্ষেপে কনফেডারেটরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। লিঙ্কন তার বিখ্যাত Emancipation Proclamation ঘোষনা করেন এবং এর মাধ্যমে তিনি দাসপ্রথা রহিত করাকে অভিলক্ষ্য হিসেবে ঘোষনা করেন। ১৮৬২ সালে ইউনিয়ন বাহিনী পশ্চিমাঞ্চলে কনফেডারেট নৌবাহিনীকে ধ্বংস করে এবং তারপর পশ্চিমাঞ্চলের কনফেডারেট বাহিনীর বৃহৎ অংশই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ইউনিয়ন বাহিনীর ভিক্সবার্গ দখলে কনফেডারেসি মিসিসিপির দুইপাশে দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:০৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×