উসিলা কয়েক প্রকারের হতে পারে: (১)কোন ব্যাক্তিকে উসিলা বানানো (২)নিজের আমলকে উসিলা বানানো ও (৩)কোন বস্তু বা জিনিষকে উসিলা বানানো।
প্রথমত: ব্যক্তিকে উসিলা বানানোর কথা সবাই স্বীকার করে। যেমন:
১। রাসুলের(সা.) সময় উনাকে এবং পরে তার চাচাকে উসিলার কথা উল্লেখ করা।
২। ইবুসুফ নবীর(আ.) ভাইরা তাদের বাবাকে উসিলা করেছিলেন:
قالوا يا ابانا اسـتـغـفر لنا ذنوبنا انا كنا خاطئين
৩। ঈসা নবীর(আ.)অনুসারিরা আরোগ্য ও সুস্থতার জন্য উনাকে খোদার কাছে উসিলা করতেন ইত্যাদি।
আর আল্লাহর সুন্নতে কোন পরিবর্তন হবেনা। যা ছিল তাই থাকবে। এটা কোরানের কথা।
মৃতের জন্যও এটা প্রযোজ্য কেননা মৃত ব্যক্তি জীবিতর ন্যয় কথা শোনে এবং সালামের জবাব দেয়। আর তাইতো নামাজে আমরা সালাম করে বলি:
السلام عليك ايهاالنبي ورحمة اللّه وبركاته
হে নবী আপনার উপর সালাম ও খোদার রহমত বর্ষিত হোক।
তাছাড়া আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর বর্ণনা করেন: শহীদদের রুহ তাদের জেয়ারতকারীর সালামের জবাব দেয়।
(অবশ্য ইবনে তাইমিয়্যাহ রুহের অস্বিকার করে। যার কারণে কেয়ামতের অস্বিকার করে এবং বলে মারা যাওয়া মানে শেষ হয়ে যাওয়া।)
তাই মৃত ব্যক্তিকেও ইতিহাসে আমরা উসিলা করতে দেখি। যেমন:
১। নবীর(সা.) মৃত্যুর পর আলী(রা) নবীকে(সা.) উসিলা করে দোওয়া করতেন আর বলতেন:
بابي انت وامي اذكرنا عند ربك واجعلنا من بالك .
আমার পিতামাতা আপনার উপর কোরবান। খোদার নিকট আমাদের জন্য দোওয়া করুন খোদা যেন আমাদের মনে রাখেন।
২। আলী(র) হতে হাদীসে বর্ণিত যে,রাসুলের(সা.) মৃত্যুর তিনদিন পর একজন আরব এসে নিজেকে নবীর কবরে ফেলে দেয় ও মাথায় কবরের ধুলো মেখে বলে:
يا رسول اللّه قلت فسمعنا قولك , ووعيت عن اللّه سبحانه فوعينا عنك , وكان فيما اءنزل عليك : (ولو انـهـم اذ ظـلـمـوا انـفـسـهـم جـاؤوك ), وقـد ظلمت وجئتك تستغفر لي .
যদি কেউ নিজের উপর জুলুম করে তোমার নিকট আসে। আমিও নিজের উপর জুলুম করেছি এবং তোমার কাছে এসেছি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর।
দ্বীতিয়ত: আমলে সালেহ দিয়ে আল্লাহর নৈকট্টের কথাও আপনি বলেছেন।
তৃতীয়ত:বস্তুকে উসিলা করা। আমরা ইতিহাসের পাতায় এরকম অনেক উসিলার উদাহরণ দেখতে পাই যেমন:
১। গায়ের জামাকে উসিলা করা:হযরত ইউসুফ নবী(আ.) তার নিজের জামাটাকে বাবার জন্য পাঠিয়েছিলেন। তখন ইয়াকুব নবী(আ.) সেটাকে উসিলা করাতে আরগ্য পেয়েছিলেন যা কোরানের কথা।
তাছাড়া আলীর(আ.) মা যখন মৃত্যু বরণ করেন নবী করিম(সা.) কিছুক্ষনের জন্য তার কবরে শুয়ে ছিলেন এবং গায়ের জামা খুলে মৃতের মুখের নিচে দিতে বললেন। কারণ জিজ্ঞেস করাতে বললেন: কবরে শুলাম এ জন্য যে খোদা তার কবরকে প্রশস্ত করুক। আর জামা দেয়ার উদ্দেশ্য হল এই যে,-যদি খোদার ইচ্ছা হয়- জাহন্নামের আগুন যাতে না পৌছায়। (মুসনাদে আহমাদ, ৩'য় খন্ড, ২২৬ পৃষ্ঠা, মদীনার ইতিহাস বইতে)
২। গায়ের ঘামকে উসিলা করা: আনাস ইবনে মালিক হতে রেওয়ায়েত আছে যে, রাসুল(সা.) যখন উম্মে সালিমের গৃহে বিশ্রাম করতেন সে তখন রাসুলের(সা.) গায়ের ঘাম তাবার্রুক ও বাচ্চাদের শেফার(আরগ্য) জন্য জমা করে রাখতেন। নবী করীম(সা.) ঘুম থেকে জেগে বললেন সঠিক কাজটি করেছ। (সহীহ মুসলিম, ৭'ম খন্ড, বাবে কুরবে নবী(সা.) বিন্নাস ওয়া তাবার্রুকেহিম বিহ)
অবশ্য এরূপ ঘটনা অনেক রয়েছে যেমন: ওযুর পানি সংগ্রহ করা, মাথার চুল সংগ্রহ করা, এমনকি হাদীসে রাসুলের(সা.)মলের জন্যও বর্ণনা করা হয়েছে।
৩। কবরকে উসিলা করা: কাসেম ইবনে মোহম্মদ ইবনে আবু বকর(র) হতে বর্ণিত: সাহাবারা রাসুলের(স.) কবর তৈরি করেন এবং প্রথম যে ব্যক্তি রাসুলের(সা.) কবরের মেরামতের কাজ করেছে ওমর ইবনে খাত্তাব ছিলেন।
সাহাবারা রাসুলের(সা.) স্ত্রী উম্মে হাবিবার মাযার তৈরি করেন। যা ওয়াবিদের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়। ইত্যাদি ইত্যাদি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



