স্বর্গ ঘুরে এলাম! আনন্দ বিপদ হাসি কান্না মিলিয়ে অসাধারন একটা ট্যুর!
কলকাতা - শিমলা - মানালি - ধর্মশালা - ডালহৌসি - অমৃতসর - কলকাতা।
ব্যাপ্তিঃ ১১দিন।
বাহনঃ ট্রেন এবং গাড়ি
অর্গানাইজারঃ https://www.facebook.com/chalantikatours/
শুরুতেই বলে নেই, আমি বাজেট ট্রাভেলার নই। বছরে একবারই বড় ছুটি কাটাই বিধায় একটু আরাম আয়েশে কাটাই। সুতরাং আমার খরচ একটু বেশি হয়েছে, আমি বলে দিব কিভাবে কম খরচে আপনারা ঘুরে আসতে পারেন।
আমরা ছিলাম মোট ৬.৫ জন, মানে ৬ জন আর সাথে ৩ বছরের একটা মেয়ে, ওকে নিয়েই আমরা বেশি টেনশনে ছিলাম বাট শি ওয়াজ স্ট্রং!!
এবার আমাদের ঘুরতে যাবার একটাই উদ্দেশ্য ছিল - শুধুমাত্র স্নো দেখা। যারা প্রকৃতি দেখতে যাবেন, তাদের এই সময়ে না যাওয়াই শ্রেয়।
কলকাতা থেকে আমাদের ট্রেন ছিল ৪ তারিখ বিকেল ৬.৪০ এ, হাওড়া স্টেশন থেকে কালকা। আমরা ৬ জন ৪ যায়গা থেকে রওয়ানা দিব। এর মধ্যে আমিই হাওড়া থেকে সব থেকে দূরে ছিলাম, জেমস লং সরনী। বিকেল ৫টায় আমি উবার ডেকে গাড়িতে উঠলাম, ড্রাইভার জাস্ট ট্রিপ অন করল - আর সাথে সাথে এক দাদার ফোন - বাপ্পী বের হয়ো না, ট্রেন ডিলে হয়েছে! গাড়িতে উঠেই নেমে গেলাম আর ৮০ টাকা বেইজ ফেয়ার দিতে হল! কিছুক্ষন পর জানা গেল যে ট্রেন পরদিন সকাল ৮.৪০এ। যেমন তাড়াহুড়ো করে নিচে নেমেছিলাম, তেমনই আস্তে আস্তে উপরে উঠে আসলাম মন খারাপ করে। আমাদের সমস্ত গাড়ী আর হোটেল আগে থেকেই বুকিং দেয়া ছিল, তাই টেনশন বেড়ে গেল।
যাই হোক, ৪ তারিখের ট্রেন পরদিন সকালে ছাড়ল। ইন্ডিয়ান রেলওয়ের একটা বড় সমস্যা হল ওরা ট্রেনের টাইম খুব ভাল ভাবে মেইনটেইন করে। তাই যখন একটা ট্রেন ডিলে হয়, তখন বাকি ট্রেনগুলোর শিডিউল ঠিক রাখার জন্য এই ট্রেন আরো ডিলে করে। প্রতিটা সিগনালে রেগুলার ট্রেন অগ্রাধিকার পায়। এমনকি লোকাল ট্রেনও। আমাদের কালকা পৌছানোর কথা ছিল ৬ তারিখ ভোরে, সেখান থেকে টয় ট্রেনে শিমলা। কিন্তু আমাদের ট্রেন যখন দিল্লী আসল তখনই বুঝে গেলাম, টয় ট্রেন মিস করব। এজেন্সীকে ফোন করে শিডিউল চেইঞ্জ করতে বলা হল। কিছুক্ষন তারা আমাদেরকে আম্বালা নামতে বলল। সেখান থেকে একই গাড়িতে পুরো ট্যুর হবে। মোটের উপর আমাদের ট্রেন ২৩ ঘন্টা ৫০ মিনিট ডিলে হল আমরা যখন আম্বালা পৌছালাম। ৭ তারিখ রাত ২টার দিকে আমরা আম্বালা নামলাম - যেই রাতে আমাদের শিমলাতে থাকার কথা ছিল।
আমরা ট্রেনে থাকাকালীনই কুরুক্ষেত্র আর পানিপথ পার হবার সময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল। এটা ভাল লক্ষন। আপনি যদি ট্রেনে যান আর কুরুক্ষেত্র পার হবার পরে বৃষ্টি পান, মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যাবেন যে স্নো দেখতে পাবেন রাত ২টায় আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং শিমলার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। ভোর ৪.৩০ এ একটা ধাবা থেকে নাস্তা করে নিলাম। তাপমাত্রা তখন প্রায় ৫-৬ ডিগ্রী। আর সাথে ঠান্ডা বাতাস। ভরপেট নাস্তা করে আবার শুরু। একদম ভোরের দিকে আমরা স্বর্গের দরজায়! ধাবাতেই শুনেছিলাম যে আগের দিন বিকেল ৫টা থেকে তুষারপাত হয়েছে শিমলায়। ভোরের মৃদু আলোয় রাস্তার দু পাশের শুভ্র সাদা বরফ আমাদের গেট করে স্বাগত জানাচ্ছে। সে এক অসাধারন অনুভূতি। যেদিকে তাকাই শুধু সাদা আর সাদা। দুনিয়ার কোনো ক্যামেরায় এই সৌন্দর্য্য তুলে ধরা যাবে না। গাড়ির মধ্যের সবাই বাচ্চাদের মত চিৎকার শুরু করে দিয়েছে। ইচ্ছে করে নেমে এক দৌড়ে হারিয়ে যাই সাদার মধ্যে। রাস্তার ২ পাশে উচু উচু পাহাড়, পুরোটাই সাদা। ভোর ৭টার দিকে আমরা শিমলা পৌছালাম। যে হোটেল থেকে আর ৪ ঘন্টা পরে আমাদের চেক-আউট! শিমলাতে আমাদের ১রাত থাকার প্লান ছিল। যাই হোক সকালে নেমে ফ্রেশ হতে গিয়ে দেখি কারেন্ট নেই। গিজার, রুম হিটার কিছুই চলবে না। পরে কিচেন থেকে একটু গরম পানি চেয়ে নিয়ে ফ্রেশ হলাম সবাই। জাস্ট নাস্তা করতে নিচে নামব, আর সেই মুহুর্ত! আবার স্নোফল!! বৃষ্টির মত আকাশ থেকে তুষার পরছে। এই সৌন্দর্য্য ভাষায় বর্ননা করা যায় না। মাথা খারাপ হয়ে গেল সবার। তাপমাত্রা তখন -২ডিগ্রী। আবার এজেন্সীকে ফোন। মানালীতে আমাদের ২ রাত থাকার কথা ছিল, ওখানে ১রাত করে আমাদের যেন শিমলাতে আর ১ রাত দিয়ে দেয়। তারা বলল জানাবে। কিন্তু এবার বিধি বাম। শিমলাতে ঐ হোটেলে রুম খালি নেই। একটু পরে আরো খারাপ সংবাদ এল। হিমাচল রাজ্যের ৭টি জেলায় পুরো ব্লাকআউট। বেশিরভাগ ন্যাশনাল হাইওয়ে বন্ধ। আমি মনে মনে খুশি। দরকার হলে কিচেনে থাকব রাতে, তবু এই সুখ উপভোগ করতে চাই কিন্তু ১১টার দিকে খবর এল যে বরফ কাটার কাজ শুরু হয়ে গেছে, আমাদের এখনি বের হতে হবে, নইলে মানালি পৌছাতে পারব না।
ড্রাইভার আমাদেরকে বলল হেটে কিছুদুর এগোতে, গাড়ি স্লিপ করতেছে। আমরা প্রায় ৩০ মিনিটের মত হাটলাম হাইওয়ে পর্যন্ত। তারপরে গাড়িতে উঠলাম। শুরু হল মানালির উদ্দেশ্যে যাত্রা। পুরো রাস্তায় বরফ আর বরফ। অনেক সাবধানে গাড়ি চালাতে লাগল আমাদের ড্রাইভার। সে রেগুলার রাস্তা ধরে না গিয়ে অনেক নিচে নেমে পাহাড়ি রাস্তা ধরল যাতে বরফ এড়িয়ে তাড়াতাড়ি কুল্লু যাওয়া যায়। কিন্তু, সন্ধ্যার একটু আগে আর একটা দুঃসংবাদ। মানালিতে ভয়াবহ স্নোফল হইছে আবার, আমরা যেন রাতটা কুল্লুর আগে কোথাও থেকে যাই। কুল্লু থেকে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। পরে আমরা মান্ডিতে একটা হোটেলে ঐ রাতটা কাটাই, যে রাতটা আমাদের মানালিতে থাকার কথা ছিল। পরদিন ভোরে নাস্তা সেরেই আবার যাত্রা শুরু করলাম। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে কুল্লু পৌছে গেলাম। Hanging bridge, rafting point, Sams lake, Honuman temple, 3 idiots tunnel ইত্যাদি দেখে দেখে মানালি পৌছাতে সন্ধ্যা হল। 3 idiots টানেল মানে যেই টানেলে 3 idiots মুভির অল্প একটু শ্যুটিং হয়েছে। প্রায় ৫কিমি লম্বা টানেল। পাহাড়ের পেটেরে মধ্যে থাকার অনুভূতি ফিল করবেন ঐ সময়ে, হেহে। মানালিতে পৌছানোর কিছু আগে থেকেই আবার রাস্তার ২ধারে বরফ। আবার রাস্তায় গাড়ি স্লিপ করা শুরু হল। হঠাৎ করে আমাদের গাড়ির পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা। পিছনের গাড়িটা ব্রেক করে সামলাতে পারেনি, স্লিপ করে আমাদের গাড়িতে এসে লাগিয়েছে। বড় কিছু হয়নি যদিও। মানালি পৌছে মল রোডের কিছু আগে পুলিশ গাড়ি আটকে দিল, রাস্তা বন্ধ! হোটেলে ফোন দিলাম, লোকেশন জানার জন্য। ওরে বাব্বা, হোটেল প্রায় ৫কিমি দুরে! এত দুরে ব্যাগ আর ৩ বছরের একটা বাচ্চা নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। আবার এজেন্সীতে ফোন। ওরা ১০ মিনিটের মধ্যে হোটেল চেঞ্জ করে কিছুটা নিচে একটা হোটেলে দিল, তাও প্রায় ২ কিমি। শুরু হল হাটা। এবার, ওখানে ব্যাগ নেবার লোক পাওয়া গেল। ৫০০টাকায় লাগেজ হোটেলে পৌছে দিবে। একজন ঐ লোকের সাথে সাথে গেল। জাস্ট মল রোডটা পার হয়েই সবাই খুশি। রাস্তা ভর্তি হাটু সমান বরফ, আর মাথার উপরে চাদের আলো। সেই আলো আবার বরফে প্রতিফলিত হয়ে কত রংয়ের যে সাদা রং দেখাল। হাতে মোবাইলে গুগল ম্যাপ বের করে হোটেলের দিকে হাটছি, কখনো বরফে শুয়ে পড়ছি, চিৎকার-চেচামেচি, ছোটাছুটি, তুষার ছোড়াছুড়ি - উফ্ফ্ফ। প্রায় ২ ঘন্টা হেটে আমরা ১.৫ কিমি রাস্তা পার হয়েছি, কিছু মনেই হয়নি। আরো ২-৪ কিমি হাটা যেত ওভাবে, হা হা হা। যখন হোটেলে গেলাম, রাত তখন প্রায় ৯টা। একই অবস্থা - বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। রাতে শুধু খাবার জন্য গরম পানি দিল। সেই পানি ১৫ মিনিটও গরম থাকে না। তাপমাত্রা তখন -১ডিগ্রী। দ্রুত আমরা রাতের খাবারের অর্ডার দিলাম। সাথে ২টা বোতলের অর্ডার দেয়া হল। যে যে খায় আর কি।
রাত ১০.৩০ এর মধ্যে খেয়েদেয়ে সবাই শুয়ে পড়লাম। আমি একটু পরপর ওয়েদার আপডেট চেক করছিলাম, কতটা ড্রপ করে তাপমাত্রা দেখার জন্য। রাত ১২টার দিকে আমার ঠান্ডায় ঘুম ভেংগে গেল। তাপমাত্রা দেখলাম -৬ তখন। আমার মনে হচ্ছে কেউ আমার মুখে বরফ চেপে ধরেছে। গায়ে ছিল ২টা ফুল উলের ইনার-ওয়ার এর সেট, ফুল ট্রাউজার, জিন্স প্যান্ট, ২টা টি-শার্ট, স্লিভলেস সোয়েটার, জ্যাকেট আর উপরে ২টা মোটা কম্বল। কিছুতেই আমার কাজ হচ্ছে না। ভয় পেয়ে গেলাম - হাইপোথার্মিয়া হবে না তো আবার। এবার উঠে মুড়ি দিলাম, কম্বল দিয়ে রোল বানালাম নিজেকে, নিজের শ্বাস ছেড়ে ছেড়ে ভিতরে গরম করার চেষ্টা করলাম। আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়লাম। ভোর ৫.৩০ এ ঘুম ভাংগল আবার। এবার দেখি তাপমাত্রা -১০ ডিগ্রী!!! আমি আর ডানে বামে না তাকিয়ে আবার ঘুমানোর ট্রাই করলাম। সকাল ৭.৩০ এ যখন ঘুম ভাংগল তখন মনে হল আবারো স্বর্গে চলে এসেছি। জানালা দিয়ে তাকিয়ে পৃথিবীতে বসে স্বর্গের রূপ দেখে নিলাম। একদম নীল আকাশ, সাথে পরিষ্কার রোদ। একটুও কুয়াশা নেই। একদম ঝকমকে রোদ। আর নিচে শুধু সাদা আর সাদা। দালানের ছাদে, মাঠে, রাস্তায় সব জায়গায় শুধু সাদা আর সাদা। চোখ মনে হচ্ছে ঝলসে যায় এরকম। কেউ যদি কবি হয়, ২-৪টা কবিতা বের হয়ে যেত। যদি লেখক হয়, তবে ২-১টা উপন্যাস লিখে ফেলত। আমি ভাই প্রোগ্রামার মানুষ, সারাক্ষনই জট আটকে থাকে মাথায়, আমি বরং জটটাই ছাড়িয়ে নিলাম
তবে এখানে হল আরেক ঝামেলা। সকালে বাথরুমের গরম পানি দিতে পারছে না কারন ট্যাংকির পানি নাকি বরফ হয়ে গেছে। পরে আমাদের রুমের পানি নিয়ে আবার গরম করে দিল। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিলাম। আমাদের তো এখনই আবার বের হতে হবে ধর্মশালার উদ্দেশ্যে। এবার লাগেজ নেবার লোক পাওয়া গেল না। নিজেরাই যার যার লাগেজ ধরে নামতে লাগলাম। কিছুক্ষন পর পর থেমে থেমে ফটোসেশন আর বরফের মধ্যে দাপাদাপি। মাঝে পেলাম বরফের মাঠ। হাটতে নিলেই হাটু সমান দেবে যায়। শুয়ে গড়াগড়ি করলাম, ছোড়াছুড়ি করলাম, দৌড়াদৌড়ি করলাম - কি যে করি নাই। বুড়া বুড়া মানুষগুলো কিভাবে যে পোলাপাইন হয়ে যায়, এখানে আসলে দেখা যায়। এরপরে শুরু হল ঢাল বেয়ে নামা। রোদ পরে বরফের উপরের স্তর গলে পিচ্ছিল হয়ে গেছে। প্রতিটা পা অনেক সাবধানে ফেলতে হয়। আমি আর একজন বাদে সবাই ৪-৫বার করে পড়ে গেছে। একজনের দেখলাম মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে, তাকে হাসপাতাল নেয়া হচ্ছে। অনেক সাবধানে গাড়ির কাছে এসে দেখি আরেক বিপদ। গাড়ি রাস্তার পাশে বরফ কেটে গর্তে পড়ে আছে। কোনোভাবেই উঠাতে পারছে না, স্লিপ করতেছে। অনেক চেষ্টার পর প্রায় ৮-১০ জন মিলে গাড়ি ধাক্কা দিয়ে উঠানো হয়েছে। তত ক্ষনে কাদা-পানিতে সবার নেয়ে একাকার।
পরের গন্তব্য ধর্মশালা। এবারো ড্রাইভার পাহাড়ি রাস্তায় শর্টকাট ধরল। কিন্তু চালালো অনেক ভাল। যাবার পথে আমরা কয়েকটা জায়গায় সাইট সিয়িং করলাম। ধর্মশালা যখন পৌছাই, শহরটা খুবই ভাল লাগল। মনে মনে খুবই খুশি হতে লাগলাম যে একটু নরমাল ওয়েদারে ২দিন থাকব। তখনই আমাদের ড্রাইভার অনেক উপরে একটা আলো দেখিয়ে বলল, "ঐ যে আলোটা দেখতে পাচ্ছেন, ওটাই আপনাদের হোটেল!" - হায় হায়, আবার হাটা না লাগলে হয়। হোটেলে ফোন দেবার পর তারা জানাল হাটতে হবে না - গাড়ি হোটেল পর্যন্তই যাবে। তাইলে তো ভালই। ধর্মশালার সুন্দর রাস্তা ধরে যেতে যেতে হটাৎ পাহাড়ি রাস্তা শুরু হল। এবার মনে হল রাস্তা পুরো ৬০ডিগ্রী বাকানো! এক একটা মোড় যেন মৃত্যুখাদ! ২টি গাড়ি পাশাপাশি যেতে অনেক সময় লাগে। এর মধ্যে আবার বৃষ্টি হয়েছে এবং রাস্তাও মাটির। আনন্দ উত্তেজনা তখন শেষ। ২-১ টা মোড়ে মনে হয় যে আর রাস্তা নেই তো, ড্রাইভার যায় কই?? এরকম আরো মিনিট ত্রিশ চলার পর, অবশেষে হোটেল পেলাম। জায়গাটার নাম ম্যাকলিওডগঞ্জ। খুবই সুন্দর একটা জায়গা, যেটা বুঝলাম পরদিন সকালে। আমরা পৌছিয়েছিলাম রাত ১১.৩০ এ। রেস্টুরেন্ট নাকি ৮টার দিকেই বন্ধ হয়ে যায়। পরে হোটেলের মালিকের বাসায় ডাল, ভাত আর ডিম রান্না হল, খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন সকালে ঘুমে ভেংগে আমরা আবার স্নো-ফল পেলাম। এবার আসলে স্নো-ফল না, এটা স্নো-বৃষ্টি। বৃষ্টির মত আকাশ থেকে তুষার পড়ছে। ভিজলাম কতক্ষন। পরে নাশতার উদ্দেশ্যে বের হলাম। নাশতা করে চলে গেলাম ভাগসুনাগ ঝর্না (আমি আসলে নামটা ১০০% নিশ্চিত নই) দেখতে। ওখানেও একটা টেম্পল আছে। ভিতর থেকে অনেকটা পাহাড়ি সিড়ি বেয়ে হেটে উপরে উঠতে হয়। অনেক উপর থেকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। যদিও এই সিজনে ঝর্নাটা তেমন দেখা যায় না। বের হয়ে দুপুরে লাঞ্চের পর গেলাম তপোবনে। সেখানেই হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা। তার ঠিক পাশেই বিশাল এক বন - এটারই নাম তপোবন। বনের শুরুতেই হনুমান মন্দির, ওখানে বাজরঙ্গী মন্দির বলে। পাশেই আবার রাম-মন্দির আছে। তপোবনের ভিতরে যে জিনিস আমার বেশি নজর কেড়েছে, তা হল পাহাড়ি লেবু। দেখে মনে হবে যে কমলা, আসলে না। সাইজে অনেক বড় হয় এগুলো, যদিও খেতে তেমন স্বাদ হয় না। সন্ধ্যেতে ফেরার পথে একটা পাহাড়ি রেষ্টুরেন্টে নুডল্স খেলাম সবাই মিলে। এখানে আমাদের হোটেলটা ছিল চিলেকোঠার মত। মানে ছাদের উপরে আমাদের রুম, কিন্তু বাইরে অর্ধেক খোলা। ঐ জায়গায় আমরা রাতে বারবিকিউ করলাম। কনকনে ঠান্ডার মধ্যে বারবিকিউ এর মজাই আলাদা। পাশে বরফ পড়ে আছে, তার পাশে আমরা আগুন জালিয়ে তাপ পোহাচ্ছি
পরদিন সকালে খুবই সুন্দর রোদ উঠেছিল। অপূর্ব সুন্দর এক দৃশ্য দেখলাম। ছাদে দাড়িয়ে চারপাশের তুষারে ভরা উচু উচু পাহাড় দেখে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয়া যায়। ভোরে আমরা একবারে বের হয়ে গেলাম হোটেল ছেড়ে। ডালহৌসি যাবার আগের গন্তব্য স্টেডিয়াম - ধর্মশালা স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের সময় যখন বাংলাদেশের খেলা হয় তখন থেকেই আমি এই স্টেডিয়ামের প্রেমে পড়ে যাই। শুধু চিন্তায় ছিলাম যে ভিতরে ঢুকতে দেয় কিনা। গিয়ে দেখি ভিজিটরদের জন্য ওরা একটু জায়গা খুলে রাখে। ভিতরে ঢুকেই আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল। ওখানে খেলে কিভাবে মানুষ! এত সুন্দর দৃশ্য! নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ১টা ঘন্টা যে কিভাবে কেটে গেল ওখানে বুঝলামই না। বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারও ওখানে ভাল খেলতে পারবে না আমি শিওর। যেদিকেই তাকাবে দৃষ্টি আটকে যাবে। সেখান থেকে বের হয়ে আমরা লাঞ্চ করলাম।
তখন শুরু হল ডালহৌসির উদ্দেশ্যে যাত্রা। ওদিকের রাস্তা আরো বেশি ভয়ংকর। অনেক বেশি আকাবাকা, আর রাস্তা সরু। আমরা যখন ডালহৌসী থেকে প্রায় ৮০-৯০ কিমি দূরে, তখন ডালহৌসীর হোটেল থেকে ফোন। আজ নাকি সেখানে মারাত্মক স্নোফল হয়েছে। আমরা যখন যাব তখন যেন হাটু অবদি যে স্নো-সু আছে (কি যেন একটা নাম আছে, ভূলে গেছি), ঐ গুলো নিয়ে যাই। আমাদের গতানুগতিক জুতো ওখানে চলবেই না একদম। সবার মাথায় হাত, টেনশন - তবু যাব। জানলাম, ঐ জুতো ভাড়া পাওয়া যায় - সেটাই করব। তবু যাবই। তখনই ড্রাইভার বলল, গাড়ি কতদুর যাবে সেটা জিজ্ঞেস করেন তো। আবার ফোন - এবার সর্বনাশের ষোলোকলা!! হোটেলের ৮কিমি আগে গাড়ি থামিয়ে দিবে পুলিশ - রাস্তা বন্ধ। এবার আর কারো মন সায় দেয় না। লাগেজ নিয়ে ৮কিমি হাটা - অসম্ভব। আমাদের বলতেছে, একদিন পরে ঢুকতে। কিন্তু সম্ভব না। সবই আগে থেকে ঠিক করা। আর পরদিনই আমাদের কলকাতা ফেরার টিকেট। আবার এজেন্সীকে ফোন। ডালহৌসীর বদলে আমরা অমৃতসরে একরাত থাকব। ব্যাবস্থা করেন। ১০মিনিটের মধ্যে তারা কনফার্ম করে দিল অমৃতসরের হোটেল। গাড়ি ঘুরিয়ে সোজা অমৃতসর!!
যেতে যেতেই অনেক রাত হল। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে গোল্ডেন টেম্পল যেতে হবে, রাতে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। এটা শিখ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রধান মন্দির। এর আসল নাম হল "শ্রী হরমন্দির সাহিব" - মানে হল ঈশ্বরের ঘর। এটাকে গুরুদয়ারও বলা হয়। শিখ ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে দুনিয়ার সবাই সমান। ধনী, গরিব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধর্ম-কর্ম করা না করা লোক, সবাই-ই সমান। এইটাই ওদের মূলনীতি। আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন ওদের প্রধান প্রার্থনা চলছে। ঐ টেম্পলে একটা লংগরখানা আছে, যেখানে দিন রাত ২৪ ঘন্টা সবাইকে ফ্রী খাওয়ানো হয়। যে কেউ, যখন তখন গিয়ে সেখানে খেতে পারবে। আমরা সেই রাতে ওখানেই খেয়েছিলাম। তবে শীতের রাতে একটু কষ্ট হয়, কেননা আপনাকে জুতা খুলে পা ধুয়ে ওখানে যেতে হবে। জুতা রাখার খুবই সুন্দর সিস্টেম আছে। "রাব নে বানা দে জোড়ি" মুভির একটা গানের শ্যুটিং ওখানে হয়েছিল। গেলে খুবই ভাল লাগবে।
পরদিন সকালে বেরিয়ে পরলাম জালিয়ানওয়ালা বাগের উদ্দেশ্যে। ১৯১৯ সালে বৈশাখী উৎসবের আগের দিন অনেক মানুষ সেখানে জড়ো হয়। তারা জানত না যে তখন মার্শাল ল চলছিল। সেখানে ব্রিটিশ সেনারা টানা দশ মিনিট এলোপাথারি গুলিবর্ষন করে। পরে একটা কুয়োর ভিতরে হাজারখানেক লাশ পাওয়া যায়। এরিয়াটা অনেক বড় এবং খুবই সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে। এর পরে গেলাম লাঞ্চ করতে, খেলাম পাঞ্জাবী আর সাউথ ইন্ডিয়ান থালি। ফেরার পথে কুলফি আর লাচ্ছি খেলাম। কুলফিটা মনে হল পুরাই দুধের ক্ষীর! মাত্র ৩০টাকা দাম। আর লাচ্ছিটা ছিল ২৫টাকা কিন্তু একদম অরিজিনাল টক দই। আমার সুগার থাকা সত্বেও পরপর দুবার খেলাম! এখনো স্বাদ মুখে লেগে আছে।
সেখান থেকে বের হয়ে আমরা চলে গেলাম ওয়াগা বর্ডারে, যেখান থেকে লাহোর মাত্র ২৩ কিমি দূর। সেখানে প্রতিদিন বিকেলে ভারতীয় এবং পাকিস্তানি কিছু সেনা মিলে কুচকাওয়াজ করে। এটাকে ওরা ফ্রেন্ডলি এক্টিভিটি বলে। বছরের ৩৬৫ দিনই এটা চলে। এই বর্ডার দিয়েই লাহোর দিল্লী বাস যাতায়াত করে। ফিরে একটু মার্কেটে ঢুকলাম। এবার আরো অবাক হলাম। অকল্পনীয় কম দাম। আমি মার জন্য আর এক ছোটো ভাইয়ের জন্য একটা চাদর নিলাম। দাম এত কম চাইবে যে আপনার দরদাম করতে লজ্জা লাগবে। বিখ্যাত পৌষমিনার চাদর পাবেন মাত্র ৬০০-৮০০ টাকায়, যেটা ঢাকার কোথাও কোথাও ১৪০০০/- পর্যন্ত নেয়!!! যাদের কেনাকাটার বাহানা আছে, এদের জন্য মাস্ট ভিজিট প্লেস। জায়গাটা অনেকটা আমাদের পুরান ঢাকার মত, একটু ঘিঞ্জি আর অনেক জ্যাম। কিন্তু মানুষগুলো অনেক ভাল। খুবই ফ্রেন্ডলি এবং হেল্পফুল।
সেখান থেকে চলে এলাম স্টেশনে। সন্ধ্যায় ট্রেন ধরে ২দিন পর কলকাতার হাওড়া স্টেশন। এবার মোটের উপর ট্রেন ছিল ৭ঘন্টা ডিলে।
এত বড় ট্যুর কিন্তু অনেক সহজে হয়েছে শুধুমাত্র রাজু-দার কল্যানে। কলকাতা থেকে সমস্ত প্লান তিনিই করে দিয়েছেন। খুবই অল্প সময়ে ২বার হোটেল চেঞ্জ, গাড়ি চেঞ্জ, ট্রেন ডিলে হওয়া সত্বেও খুবই সহজে সব কিছু ম্যানেজ করে দিয়েছেন তিনি - এক কথায় অসাধারন। গত বছর দার্জিলিং ট্যুরও আমরা তার মাধ্যমে করি। বেচে থাকুক রাজু দা আর তার চলন্তিকা
যারা নিজেরা ট্যুর করতে চানঃ
১। ২-৩জন ওখানে না যাওয়াই ভাল, গ্রুপে গেলে মজা পাবেন। যদি কাপল হয়, তাও বলব ৩-৪টি কাপল একসাথে যেতে। কিন্তু যদি ২-৩ জনেই যেতে হয়, তবে কলকাতা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস (খাওয়া সহ) এ দিল্লী আসবেন, পরে সরকারী গাড়িতে কম খরচে শিমলা চলে যেতে পারবেন। হিমাচলে মোটামুটি সব রুটেই সরকারী বাস চলে, খরচ অনেক কম।
২। যদি অন্তত ৭-৮ জনের গ্রুপ হয়, তাহলে কলকাতা থেকে ট্রেনে সরাসরি কালকা বা চন্ডীগড় চলে যাবেন। কলকাতা থেকে চন্ডিগড় পর্যন্ত ৬ জনের ভাড়া পড়বে ১২০০০/- এর একটু কম - এসি থ্রী টায়ারে। আসতে যেতে ২৪০০০/- আরো কমে যেতে পারেন যদি নন-এসি স্লীপারে যান। কালকা গেলে টয় ট্রেনে করে শিমলা ঢুকতে পারবেন। তা না হলে গাড়িতে করে ঘুরবেন। গাড়ি আগে থেকেই রিজার্ভ করে নিলে ভাল, দেরী কম হবে। আমরা ঘুরেছি ৭সিটের জাইলো গাড়িতে। ওরা ভাড়া নেয় দিন প্রতি ৩৫০০/- করে। একটু দরদাম করলে কমেই পাবেন হয়তো। তো যদি ৮দিন থাকেন তবে খরচ পড়বে ২৮০০০/-
৩। হোটেল আগে থেকে বুকিং না করে গেলে, গিয়ে দরদাম করে কমে থাকতে পারবেন। যদি ৬ জন হয় সেখানে ৩টা রুম দিন প্রতি পড়বে ৪৫০০/- ৮ দিনে হবে মোট ৩৬০০০/-। ১৫০০ টাকা করে অনেক ভাল মানেরই রুম পাবেন। আপনি চাইলে ৭০০-৮০০ টাকায়ও রুম নিতে পারেন।
৪। ৮দিন দুপুরে এবং রাতে জন-প্রতি খেতে যদি ১৫০/- লাগে, তবে প্রতি দিন ৬জনের লাগবে ১৮০০/- করে। ৮দিনে মোট লাগছে ১৪৪০০/-
৫। মোট হল ২৪০০০ + ২৮০০০ + ৩৬০০০ + ১৪৪০০ = ১০২৪০০/- মানে জন-প্রতি ১৭০৬৬/- এর একটু বেশি। এটা কলকাতা থেকে ঘুরে আবার কলকাতা পর্যন্ত। এবার আপনি হোটেল এবং ট্রেনের মানটা একটু কমালে আরো কমে ঘুরে আসতে পারেন।
উপরের সমস্ত হিসেব রুপিতে, বাংলাদেশী টাকা তে না।
একটু সমস্যা হল, আপনি যদি না চিনেন বা না জানেন, তাহলে আপনি অনেক জায়গা কভার করতে পারবেন না। কারন অনেক কিছু খুজেই আপনার সময় চলে যাবে। তাই আমি সাজেস্ট করব, যাদের বাজেট একটু বেশি, তারা কোনো ট্রাভেল এজেন্সীর মাধ্যমে যান। এতে অন্তত আপনি যাবার আগেই ঠিক করে নিতে পারেন, কোথায় কোথায় যাবেন। আপনার কাজ শুধু স্টেশন আর হোটেল থেকে গাড়িতে উঠে বসা। গাড়ি সব সময় আপনার দরজায়ই থাকবে সব-সময়। এতে খরচ একটু বেশি পড়লেও ট্যুরটা আরামদায়ক হয়।
এটা আমরা যে গাড়িতে ঘুরেছি, তার ড্রাইভারের নম্বরঃ আপনারা ওর সাথে সরাসরি কথা বলে নিতে পারেন।
আর যদি কেউ এজেন্সীর মাধ্যমে যেতে চান, আমাকে ইনবক্স করলে আমি যাদের মাধ্যমে গিয়েছি, তাদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারব।
আমি এখনো কলকাতায়ই আছি। ট্রেনে করে এবার যাতায়াত করছি ঢাকা থেকে। কলকাতা এসে অনেকগুলো জায়গা ঘুরলাম। আমি কলকাতেতে থাকি আমার পরিচিত একজনের বাসায়। তার এখানে দুটি রুম তিনি ভাড়া দেন। নরমালি ফ্যামিলির জন্য। আমার আগে থেকেই পরিচিত বলে আমি ফ্রেন্ডদের নিয়ে গেলে ওখানে উঠি। ওনারা খুবই আন্তরিক। খাওয়া দাওয়া ওনার ওখানেই। আমাদের ৩বেলা খাওয়া সহ ওখানে খরচ পড়েছে ১৭০০/- এর মত জনপ্রতি দিনপ্রতি। খাওয়া খুবই ভাল মানের। প্রতিদিন ৩-৪টা আইটেম। তিনি নিজেই রান্না করেন। ওনার রান্না অসাধারন। আপনি যা খেতে চাইবেন বললেই রান্না করে দিবে। খাওয়ার সময় আপনার সাথে বসে গল্পও করবেন। পুরো পারিবারিক একটা পরিবেশ। আমাকে ছোটো ভাইয়ের মত স্নেহ করেন। বাসাটা হল জোকা, ঠাকুরপুকুরে। কোনো ফ্যামিলি যদি থাকতে চান, আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি ব্যবস্থা করে দিতে পারব। তবে হ্যা, সবাই ওনার মত ভাল মানুষ না। সুতরাং, যার সাথেই বিজনেস করবেন, নিজে পরখ করে নিবেন আগে।
কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে বা ইনবক্স করতে পারেন।
কিছু কথাঃ
১। ভারতে ট্রেনে ধুমপান নিষেধ। কেউ দয়া করে ধুমপান করবেন না, এমনকি বাথরুমেও না। ধরা পড়লে জরিমানা তো হবেই, দেশের নাম খারাপ হবে। ট্রেনে করে মদ বহন করাও নিষেধ।
২। এটিএম থেকে টাকা তোলা ঝামেলা। অনেক বুথেই টাকা থাকে না, আর থাকলে লাইন থাকে। কোনো ব্যাংক আবার চার্জ কাটে ইন্টারন্যাশনাল কার্ডের জন্য।
৩। আমি ডলারের রেট পেয়েছি ৬৮.৭০ করে। টাকার রেট আরো একটু কম (১লা জানুয়ারীর রেট)। তবে আমি বলব ডলার এন্ডোর্স করে নিয়ে আসতে। টাকা আনাটা বেআইনী ও দেশের জন্য ক্ষতিকর। এত টাকা খরচ করে ঘুরবেন, আর হাজার-খানেক টাকা সরকারকে ট্যাক্স দিতে ক্ষতি কি বলুন?
৪। যেখানেই যাবেন আগে থেকে ওখানকার ম্যাপ মোবাইলের গুগল ম্যাপে সেভ করে নিবেন। গুগল ম্যাপ এখন অনেক স্মার্ট। যখন নেভিগেশন ব্যবহার করবেন, 3G অফ করে রাখবেন, জাস্ট জিপিএস অন করে রাখবেন।
৫। ভারতের নেটওয়ার্কে চার্জ বেশি খরচ হয়, সাথে একটা পাওয়ার ব্যাঙ্ক রাখা ভাল।
৬। পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালাবার সময় ড্রাইভারের সাথে হালকা হালকা কথা বলবেন। নিজে ঘুমাবেন না। আর ড্রাইভারের সাথে রাগারাগি করবেন না। বুঝিয়ে বলবেন।
৭। আমি Airtel সিম নিয়েছি, মোটামুটি সব জায়গায়ই 3G পেয়েছি। কিন্তু Vodafone এর মনে হয় রেটটা কম একটু। পাসপোর্ট দেখিয়ে সিম নিলে পরদিনই চালু হয়ে যায়।
হ্যাপী ট্রাভেলিং।
[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/banglabetar/banglabetar-1485015848-4116d03_xlarge.jpg
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ২:২৭