somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতা প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকে সফল রুপদানের জন্যকিছ প্রস্তাব ও ৮ দফা দাবী ।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই গভীর শ্রদ্ধা নিয়ে স্বরন করছি সেই সকল বীর শহীদের যাদের আত্মত্যাগর আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভুখন্ড, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ছিল সম্পূর্নরুপে অসাম্প্রদায়ীক চেতনা। আপনারা অনেই দেখেছেন গতকাল দেশের সর্ব বৃহত্ত ঈদগাহের ইমাম সাহেব এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। এতে এ কথাই প্রমান করে জামাত শিবির শুধু মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দল নয়, ইসলাম বিরোধী দলও বটে। যারা মনে করেন জামাত শিবির ইসলামী দল দেশের সর্ব বৃহত্ত ঈদগাহের ইমাম সাহেব আশা করি তাদের সেই ভুল ভেঙ্গে দিয়েছেন।
আন্দোলনকে সফলতার শিখরে পৌছানোর জন্য প্রথমেই আমাদের সকল মত ও পথের তরুন প্রজন্মকে নিয়ে একটি সর্ব দলীয় স্বাধীনতা প্রজন্ম কমিটি গঠন করতে হবে। যেই কমিটিতে থাকবে ব্লগার, অন লাইন এক্টেভিটিস, ও বিভিন্ন মতাদর্শের তরুন প্রজন্ম।
সেই সাথে থাকবে কিছু সুনির্দিষ্ট দাবী দাওয়া।

নিম্নে কিছু দাবী তুলে দেয়া হলো। সকলকে অনুরোধ করব এই দাবীগুলোর সাথে প্রয়োজনীয় দাবী সমূহ যোগ করে একটি পরিমার্জিত দাবী নামা তৈরী করার জন্য এগিয়ে আসতে।

আমাদের দাবী ৮দফা

দফাঃ ১, সকল যুদ্বাপরাধী ও রাজাকারদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় সরকারী ভাবে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের লিষ্ট তৈরী করতে হবে। সরকারী প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে রাজাকারদের সামাজিক ভাবে বয়কট ও তাদের প্রতিষ্ঠান সমূহ জাতীয় করন করতে হবে। যদি কোন ব্যক্তি বা মহল তাদের সাথে কোন প্রকার সামজিক সম্পর্ক ও লেন-দেন করে তবে উক্ত ব্যক্তি বা মহলকেও একই পরিনতি ভোগ করতে হবে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারি জামাতসহ যে সকল দল হানাদারদের সহযোগীতা করেছে , সে সকল রাজনৈতিক দল গুলোকেও ৭১ এর হানাদারদের সহযোগীতার অপরাধে জাতীয় সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষনা করতে হবে।

দফাঃ ২, যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের সর্বচ্চ শাস্তি নিশ্চত করনের জন্য ৭১ এ শহীদ ও নির্যাতিত পরিবার গুলোকে বিচার কার্যের সাথে সম্পৃক্ত করে তাদের পূর্ব পুরুষদের রক্তের ঋন শোধ করার সুযোগ দিতে হবে।

দফাঃ ৩, জার্মানির ফ্যাসিস্ট পার্টিকে যেমন যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছিল তেমনি পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর সহযোগী জামাত , ছাত্র সংঘ (যা ইসলামি ছাত্র শিবিরে রুপান্তরিত) , মুসলিম লীগ , পি পি পি (অবলুপ্ত), নেজামে ইসলাম প্রভৃতি কে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে আপরাধ সংগঠিত করার দল হিসাবে প্রতিষঠানিক ভাবে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক এবং তাদের বিচারের জন্য আইন প্রণয়ন করা হোক

দফাঃ ৪, দেশের খ্যাতিমান আইন বিদগনকে বিচার কাজে সহযোগিতা করার জন্য আহবান করতে হবে। যাতে করে দেশের সাধারন জনগনের কাছে পরিস্কার হয়ে যায় কারা যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারের বিচারের বিপক্ষে।

দফাঃ ৫, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট ছিলঃ
(ক) একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভুখন্ড, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত।
(খ) কমিটমেন্ট ছিল সকল শ্রেনী পেশার জনগনের অধিকার ও কর্তৃত্ব, অর্থনৈতিক মুক্তি, শোষনহীন সমাজ ব্যবস্থা, সাম্প্রদায়ীক চেতনা ও সুস্থ-সন্ত্রাসমুক্ত দেশ।
প্রথমটি অর্জিত হলেও দ্বিতীয়টি অসমাপ্তই রয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার বান্ধব বিভিন্ন মহল প্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছে দেশ ও বিদেশে এই বলে যে, স্বাধীনতা প্রজন্ম চত্বরে ঢল নামা লক্ষ জনতার জড়ো হওয়াটা সরকারের একটি মহলের কাজ। অতএব অবিলম্বে দ্বিতীয় কমিটমেন্টটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারকে তারুন্যের এই গন জাগরনকে সন্মান প্রদর্শন করতে হবে।
দফাঃ ৬, অবিলম্বে দেশের প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে ৭১ এর শহীদের তালিকা তৈরী করে গ্রাম ভিত্তিক শহীদের নামের তালিকা সহ একটি ফলক তৈরী করতে হবে। যাতে করে দেশের সকল মানুষ তাদের জন্য কোন বিশেষ দিনে শ্রদ্ধা না দেখিয়ে বরং প্রতিনিয়ত শ্রদ্ধা দেখানোর সুযোগ পায়। এবং সেই সাথে গ্রাম ভিত্তিক রাজাকারদের তালিকা প্রনয়ন করতে হবে যাতে করে বাংলার মানুষ ৭১ এ তাদের কৃত কর্মের জন্য সামাজিক ভাবে বয়কট ও ঘৃনা প্রকাশ করতে পারে। এবং এই লিষ্ট তৈরীতে স্থানীয় সাধারন মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

দফাঃ ৭, চলমান আইন সংশোধন করে নিশ্চিত করতে হবে , মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৪৯ ধারা মোতাবেক 'রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার' "( Article-49, Prerogative of mercy)" আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কতৃক সাজা প্রাপ্তদের জন্য প্রয়োগ করতে পারবেন না

দফাঃ ৮, উপরে উল্লেখিত ৭ দফা যদি সরকার পূরন না করে তবে বর্তমান আন্দোলনকে বিস্তৃতিরত করে এবং দলীয়করন যেন না হয় সে জন্য সারা দেশে বিগ্রেড গঠন করা হবে সে লক্ষ্যে দেশের সর্বত্র গ্রাম, পাড়া, মহল্লা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শ্রমিকপ্রতিষ্ঠান, কর্মচারীপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠান সহ সকল স্তরে এবং সকল পর্যায়ে অতি দ্রুত ব্রিগেড গঠন করা হবে। ব্রিগেড গঠনের কাজটি সারা দেশে এবং সকল কর্ম ক্ষেত্র ব্যাপী হবে। এক একটি গ্রামে, এক একটি ইউনিয়নে, এক একটি শিল্প এলাকায়, এক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, এক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একাধিক ব্রিগেড গঠন করা হবে এবং এই ভাবে সারা দেশে কয়েক হাজার , এমনকি কয়েক লক্ষ ব্রিগেড সদস্য থাকবে যতদিন না আমাদের দাবী মানা হবে। প্রয়োজনে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৪
৪৬টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×