আমি ব্যাক্তিগত ভাবে কোন দলকে ঠিক ওভাবে সাপোর্ট করি না। বলতে গেলে রাজনীতি নিয়েই কথা বলতে যাই কম। কিন্তু আওয়ামী লীগ এবার ক্ষমতায় এসেও তো দেশের জন্য খুব ভাল কিছু করছে তা না। তার উপর জনগনের মুডটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার জন্য খালেদার বাড়ি নিয়ে টানাটানি। এটা সবাই বুঝে। কারণ ১/১১ এর পর বিএনপি ছিল মৃতপ্রায়। এখন একটু একটু করে জেগে উঠছিল,গুছিয়ে নিচ্ছিল ঘরে বসে বসে। অনেক জাতীয় ইস্যুতেও বিএনপিকে রাজপথে টেনে আনা যায়নি। এটাই ছিল আওয়ামীলীগ এর সামনে শেষ সুযোগ বিএনপিকে রাজপথে টেনে এনে আবার ভঙ্গুর করে দেয়ার। বাড়ি দখল করেছে বাকশালী কায়দায়। আর বিএনপি স্রেফ ওদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ঈদের আগে হরতাল দিয়েছে। একটা ঘৃণ্য কাজ করেও তাই আওয়ামী লীগকে ততটা কটূক্তি শুনতে হয়নি যতটা হয়েছে বিএনপিকে তাদের এই হরতাল এর জন্য।
আদালত রায় দিয়েছে। তার উপর একটা স্থগিতাদেশ টি এইচ খান নিয়েছিলেন। তিনি নিয়েছেন অসুস্থতার কথা বলে এবং সেটা ছিল মুলতবি করার আদেশ। যদিও সেটা প্রচলিত অর্থে স্থগিতাদেশ নয় কিন্তু সাধারণত এরকম আদেশ থাকলে আগের রায়টা কার্যকর করা হয়না। খালেদার ব্যাপারে সরকার কেনই বা এতোটা হিংস্র হয়ে উঠল হুট করে সেটাও বোধগম্য নয় যে সেই আইনের ফাঁক ফোঁকড় বের করেই আইএসপিআর কে কাজে লাগিয়ে রাতারাতি তাকে উচ্ছেদ করতে হবে। এবং সেটা ঈদের ঠিক আগে আগে।২৯ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করলে কি এমন ক্ষতি হত? দেশ কি ধংস হয়ে যেত? নাকি এই বাড়ির জন্য দেশের কিছু লোক না খেয়ে ছিল? এই অসহিস্নুতার রাজনীতি আমাদের পরিহার করা উচিত।
অনেক শুশীলকেই বলতে শুনেছি খালেদা জিয়া বাড়িটা ছেড়ে দিলেই পারতেন। আসলে আমিও ব্যাপারটার সাথে কিছুটা একমত। তবে আমার যেটা মনে হয়েছে ফখরুদ্দীন সরকার এবং আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে খালেদা জিয়ার সব এক এক করে কেড়ে নিচ্ছিল বা নিয়েছে এরপর হয়তো বা এই বাড়ি রক্ষাটাকেই উনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। একটা বাড়ি কিছু না। উনি এরকম ১০টা বাড়ি কিনার যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু সম্মানটুকু নিয়ে উনি এ বাড়িতে থাকতে চেয়েছিলেন। সেটা যখন পেলেন না তখন আবেগটুকু আর ধরে রাখতে পারেননি মিডিয়ার সামনে। এটা বাড়ির জন্য কান্না নয়। এটাকে আমার কাছে অপমানের কান্না,অসহায়ত্তের কান্না বলেই মনে হয়েছে।এই কান্না নিয়েই আওয়ামীলীগের মন্ত্রী-এমপিরা যখন টক-শোতে সমালোচনা করেছে নগ্ন ভাবে, আমার কাছে ওদেরকে বিকৃত রুচির মানুষ ছাড়া কিছুই মনে হয়নি।ব্লগেও দেখেছি অনেকে না বুঝেই নেচেছে কুঁদেছে।
এই কান্না শুধু খালেদার বলেই নয়,হাসিনার হলেও আমি সমান সম্মানই করতাম। এতটুকু সম্মান পাবার মত নেত্রী নিশ্চই উনারা?
যে বিএনপি কিছুদিন আগেও ঘরকুনো হয়ে বসে ছিল। তারা এখন আবার রাজপথে। হরতাল গেছে,আবার কাল আরেকটা হবে। আবার আসবে। আওয়ামীলীগ গতবার ১৫০ দিনের উপরে হরতাল দিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল এবার বিএনপি শুরু করতে যাচ্ছে। আসলেই আমি হরতাল সাপোর্ট করি না। আমার কেন যেন মনে হয় বিএনপিও বহুদিন ধরে হরতাল না দেয়ার পক্ষপাতীই ছিল। কিন্তু হরতাল না হলেতো আগামী ৩ বছর পর মানুষ বিএনপির কোন খারাপ দিক বের করতে পারবে না। আওয়ামীলীগের জন্য সেটা মাইনাস পয়েন্ট। তাই চাপাও,দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাও নীতি গ্রহণ করেছে আওয়ামীলীগ। আর বিএনপি দিচ্ছে সেই পাতা ফাঁদে পা।
আর আমজনতা? আমরা পাচ্ছি হরতাল।দেশের কি আদও কোন লাভ হচ্ছে দুই দলের কামড়াকামড়িতে?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



