মিশরে এসে আমার প্রথমে থাকার ব্যবস্থা হলো 'একটি ফরেন স্টুডেন্ট হোস্টেলে। সেখানে ১০ জন বাঙালি এবং আরো বিভিন্ন দেশের ছাত্ররা থাকতো। এক বাংলাদেশি ছাত্র ছিল মাথা থেকে পা পর্যন্ত জোব্বায় ঢাকা। সুন্নতি লম্বা দাড়ি। তবে তিনি অধিক কথা বলার গুনে গুনান্বিত হয়ে নামের আগে সেই খেতাবটাও পেয়েছিলেন। তিনি খেলাধুলা পছন্দ করতেন এবং যথেষ্ঠ মিশুক প্রকৃতির ছিলেন। এলাকার ছেলে পেলে তাকে খেলার সময় ডেকে নিয়ে যেতো। মজার বিষয় হলো পুলাপান গুলা যখন তাকে ডাকতে আসতো তখন তাকে কেহ দুলাভাই কেহ আব্বা বলে ডাকতো। কেহ ডেকে বলতো আব্বা খেলতে আসো কেহ বলতো দুলাভাই খেলতে আসো। এই সব শুনে বাকি বাঙালিরা হেসে মরতো। আমার প্রথম প্রথম মজার মনে হলেও বিষয়টা খারাপ লাগতো।
১৫/২০ দিন পর আমি হোস্টেল ছেড়ে অনেক দুরে বাসা নিলাম। আমার বাসার এলাকার পুলাপান আবার আমার ভক্ত হয়ে গেল। খেলার সময় আমাকে ডাকতো। রাস্তায় বের হলেই পুলাপান ডাকাডাকি করত। অনেক মজা করতো। আমিও ভাষা শিখার জন্য তাদের সাথে সময় কাটাতাম।
বছর খানেক পর সেই ভদ্রনোক আমার এলাকাতে চলে আসলো। এবং সেই একই কাজ শুরু করলো। কউকে বলতো আমার নাম 'আব্বা' কাউকে বলতো আমার নাম 'দুলাভাই'। সবাই তাকে এই নামেই ডাকা শুরু করলো। বলতো আব্বা তুমি কই খেলতে নাম। দুলাভাই তোমার অপেক্ষায় আছি, এই সব।
আমি তো এটা মেনে নিতে পারি না। আবার সত্য ঘটনা পুলাপানদের বলতেও পারি না।
অবশেষে কৌশল অবল্বন করে পুলাপানদের ডেকে বললাম ওর নাম হলো মনে করো অনন্ত। ও তো বয়সে তোমাদের বড় তাই ওকে ভাই বলে ডাকবা। আর আমাদের দেশে ভাইকে বলে 'শালা'। কাজেই এখন থেকে তাকে 'শালা' অথবা 'অনন্ত শালা' বলে ডাকবা। সবাই রাজি হলো। এবং কথা মত খেলার সময় হলে বিল্ডিং এর নিচে থেকে পুলাপানে 'ঐঈঈঈ শালা' ঐঈঈ শালা বলে ডাকাতো। কেই আবার ডাকতো: 'অনন্ত শালাাাা....... ও শালা অনন্ত........ । ব্যস কেল্লা ফতেহ, এইবার শালায় যাবে কই। এখন এলাকার বাঙালিরা উল্টা ঐ হুজুরকে নিয়ে মজা করতে লাগলো। পরে একদিন সে পুলাপানের সাথে কম্রমাইজে আসলো। বললো আমার নামা শালা ও না আব্বা ও না দুলাভাই ও না। আমার নাম অনন্ত (ছদ্ম নাম) এখন থেকে শুধুমাত্র এই নামে ডাকবা।
মিশরের ডায়েরি পর্ব -২। (আব্বা দুলাভাই থেকে শালা অতপর কম্প্রমাইজ)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???
তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???
আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।
১ম ধাপঃ
দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি
গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন
জানা আপুর আপডেট
জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।
বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন
বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।
এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন