জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া সু চী'র বক্তব্য শুনে আমার যেটা মনে হচ্ছে সেটা হলো এই সু চী'র হাতে মিয়ানমারের কোন ক্ষমতাই নাই। সব ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে। সু চী পুতুল মাত্র। আজকের এই বক্তব্য দিয়ে সু চী মিয়ানমার ও তার জনগনের ইজ্জত রক্ষা করার চেষ্টা করছেন মাত্র।
কারণ, সেনাবাহিনী যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে সেটা সু চী স্বীকার করা এবং পাবলিকলি বলার ক্ষমতা ও সাহস রাখে না। এমনটা করলে তাকে হয়তো আবার গৃহবন্দি করা হবে। হয়তো হত্যা ও করা হতে পারে। অন্যদিকে মিয়ানমারে যা ঘটছে তা তিনি একেবারে অস্বিকারও করতে পারেন না, এবং বিশ্ববাসির সমালোচনা ও প্রতিবাদ অগ্রাহ্যও করতে পারেন না।
আবার সব প্রকাশ্যে বলে দিলে একদিকে সেনাবাহিনীর সাথে শত্রুতা সৃষ্টি হয়, অন্য দিকে বিশ্বের বুকে মিয়ানমার এক্টি অসভ্য জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মিয়ানমারের জনগন এক ধরনের হুমকির মধ্যে পরে যাবে। এবং বিভিন্ন অবরোধের মাধ্যমে মিয়ানমারকে সংকীর্ন করা হলে দেশের জনগন বড় ধরনের বিপদে পরে যাবে। একদিকে পাগল সেনাবাহিনীর পাগলামী থামানো যাচ্ছে না অপরদিকে সাধারণ জনগনকেও রক্ষা করার চিন্তা করতে হচ্ছে এই মহিলা নেতা সু চী'কে। এমনই একটি উভয় সংকটপুর্ন পরিস্থিতিতে আছেন অং সান সু চী।
শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তটাও সেনাবাহিনীরই ছিলো। কারণ এমনও হতে পারতো যে, জাতিসংঘে গেলে সকল বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের জেরার মুখে সব সত্য বলে দিয়ে দেশকে বিদেশী অগ্রাসনের মুখামুখি ফেলে দিলো, এবং সু চী আমেরিকাতেই রয়ে গেলো তখন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সমগ্র বিশ্বের সাথে যুদ্ধের মুখামুখি হতে হবে। সেই আশংকা থেকেই অং সান সু চী'কে জাতিসংঘের অধিবেশনে যেতে দেয়া হয় নি।
যদি এমনটা সত্য হয় তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য খুব এক্টা ভালো না। তারা সহসাই এই হত্যাযজ্ঞ থামাবে না। তারা কোনদিন সব রোহিঙ্গাদের ফেরত নিবে না। তাদের জাতীয় পরিচয় দিবে না। রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে সমুলে ধ্বংস করতে পারলেই কেবল তারা কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিবে, এবং সেটাও নিবে যাদের কাছে মিয়ানমারে কাগজপত্র আছে। বাকিদের বাংলাদেশেই রেখে দিতে চাইবে। এবং এই ক্রাইসিস দীর্ঘদিন চলতে থাকবে।
কাজেই সামগ্রিক বিবেচনায় আমার কাছে অং সাল সু চী'কে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতের পুতুলই মনে হচ্ছে।
ফলে চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হলে সু চী কে সম্পুর্ণ স্কিপ করে সরাসরি সেনাবাহিনীর সাথে ডিল করতে হবে। সমস্ত চুক্তি, আলোচনা সব সেনাবাহিনীর সাথেই করতে হবে।