somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঙ্গালীর টয়লেট বিবর্তন

১৭ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এক প্রিয় স্যার পরিবেশ প্রকৌশলের ক্লাস নেওয়ার সময় প্রায়ই বলতেন...আমরা যে ওয়াশরুম বলতে টয়লেট বুঝি, এটা আসলে ঠিক না। ওয়াশরুম/বাথরুম মানে হলো যেখানে গোসল করা যায়, আর টয়লেট মানে যেখানে ডিফিকেশন (বাংলা হলো 'হাগু') করা যায়।

বাঙ্গালী জাতির আদিলগ্ন হতে মানুষ নদীর ধারে হাগু করতে যেত। সে সময় বাড়ীর মধ্যে হাগুখানা থাকাকে চরম ঘৃণ্য বিষয় মনে করা হতো। লোটা (বদনা) হাতে নদীর ধারে...ঝোপের পাশে..মাঠের চিপায় লোকজনদের আনাগোনা দেখা যেত (জেন্ডার ইস্যু: মহিলারা সাধারণত: অন্ধকারে কাজ সারতো)।



মানুষ বাড়ার চাপে যখন খোলা জায়গা কমে গেল...প্রাইভেসীর স্বার্থেই মানুষ তখন ডোবা/জলা ইত্যাদির উপর টাট্টিখানা তৈরি করলো...অনেক সময়ই গাছ/কাঠ ইত্যাদির ঠুনকো পাটাতনের উপর তৈরি হতো এই বিপদজনক জিনিষ।



সমসাময়িক কালে আর এক ধরণের টাট্টিখানা ছিল। টয়লেটের নীচে থাকতো টিনের বালতি। জমাদার প্রতিদিন এসে সেটা পরিষ্কার করতো। দীর্ঘদিন এই ব্যবস্হা প্রচলিত ছিল। কালের বিবর্তনে জাতিসংঘ ইত্যাদি সংস্হা এলো...তারা বললো ছিঃ! এই ভাবে কেউ হাগু করে...এটা খুবই অস্বাস্হ্যকর! এরপর এলো নিরাপদ হাগুর ব্যবস্হা। শুরুটা হলো গর্ত করে এর উপর পাস্টিক/কংক্রিটের পাটাতন বসিয়ে হাগুর ব্যবস্হা।



কালে এলো সেফটি ট্যাংকির ব্যবস্হা। যাতে পানি বা মাটি দূষিত না হতে পারে। এতে টয়লেটের নীচের গর্তটি ইট দিয়ে বাধাঁই করা হলো।



একটা পয়সাওয়ালারা এটার উন্নত সংস্করণ বের করলেন...যার নাম হলো ইন্ডিয়ান প‌্যান (লো কমোড)। ফ্ল্যাট বাড়ীতেও এটার বাধ্যতামূলক প্রচলন হলো। কিন্তু ফ্ল্যাশ নষ্ট বা পানি না থাকার বিড়ম্বনায় মানুষকে অস্বস্তিতে রাখতো।



ইউরোপিয়ান হাই কমোডও জায়গা দখল করলো। যদিও প্লাম্বারদের ত্রুটির কারণে এতে ইয়ে পড়ে পানি উঠে গায়ে লাগতো বলে বহু লোকই এটা ব্যবহারে অনীহা দেখাতো।



এরপর এলো বিলাশবহুল বাথরুম বা টয়েলট।



বাইরের কালচারে বাথরুম/টয়লেট হলো এমন একটা জায়গা যেখানে আপনি সম্পূর্ণ প্রাইভেসী নিয়ে মনের আনন্দে নিজের মত করে সময় কাটাতে পারবেন...চিন্তা ভাবনা করতে পারবেন...বই পড়তে পারবেন।


ফুটনোটঃ পড়াশোনার বাইরেও এইখানকার সবরকম হাগুখানায় আমার ইয়ে করার অভিজ্ঞতা আছে (প্রথমটি একেবারেই ছোটবেলায়)।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:০৪
৬২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×