somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসিমভের ফাউন্ডেশন সিরিজঃ বিজ্ঞান কল্প-গল্পে যে ধরণের বই আর লেখা হয় নি এখনও

২৭ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আইজ্যাক আসিমভের "ফাউন্ডেশন" বইটি সেবার অনুবাদ পড়ি সম্ভবত ১৯৯৪ এর দিকে। চমৎকার ঝরঝরে অনুবাদে বইটি পড়ে যে চমৎকার একটি অনুভূতি হয় তার তুলনা নেই। সাই-ফাই প্রেমী সবারই বইটি পড়ার কথা।

গত কয়েকমাস ধরে লাইব্রেরী থেকে এনে শেষ করছি এই সিরিজের বাকী বই গুলি। এই সিরিজে আসিমভ রচিত বই আছে মোট ৭ টি। লেখার ব্যাপ্তিকাল ১৯৫১-১৯৯৩। বইয়ের সময়ের ক্রম আর লেখার ক্রমও এক নয়।

খুব সংক্ষেপে এই সিরিজে যা আছেঃ আজ থেকে হাজার বছর পরের ইতিহাস। মহাশুন্যের সহস্র গ্রহে মানুষ বসতি গেড়েছে। এদের শাসনব্যবস্হা পরিচালিত হয় গ্যালাকটিক এম্প‌ায়ার এর অধীনে ট্র্যানটর গ্রহ থেকে। হাজার বছরের শাসনের দুর্নীতি আর নেতৃত্বহীনতায় এই রাজত্যের অনিবার্য ধ্বংস দেখতে পান হ্যারি সেলডন নামে এক গণিতবিদ। তার আবিষ্কৃত সাইকো হিস্ট্ররি দিয়ে সেলডন বিশ্লেষণ করেন কখন এই গ্যালাকটিক এম্প‌ায়ার ধ্বংস হবে এবং এর পর কিভাবে পুরো বিশ্বজগত ডুবে যাবে এক অসভ্য-নেতৃত্বহীন ভবিৎষতের দিকে। সেলডন এই অবস্হা থেকে উত্তোরণের জন্য গাণিতিক ভাবে প্রণয়ন করেন "ফাউন্ডেশন" এর প্ল্যান। যারা সহস্রবছর পর নতুন ভাবে রচনা করবে এক জ্ঞান-বিজ্ঞান নির্ভর নতুন গ্যালাকটিক এম্প‌ায়ার।



প্রথম বইটি Foundation (1951) হচ্ছে ফাউন্ডেশন রচনার পটভূমি। সিরিজের সবচেয়ে জনপ্রিয়তম বইও এটি। হ্যারি সেলডনের প্ল্যান (সেলডন প্ল্যান), ফাউন্ডেশনের সূচনা (টার্মিনাস গ্রহ থেকে), ফাউন্ডেশনের এগিয়ে যাওয়া এ নিয়ে এই বই।


হ্যারি সেলডন--যাদুকর গণিতবিদ!



Foundation and Empire (1952) সিরিজের ২য় বই এটি। ফাউন্ডেশনের উত্থানের সাথে পড়তি এম্প‌্যায়ারের অনিবার্য সংঘর্ষ এবং সেখান থেকে ফাউন্ডেশনের উত্থান নিয়ে এই বই। বইয়ের দ্বিতীয় অংশে আছে চমক সৃষ্টিকারী 'মিউল' (mule)। সেলডন প্ল্যানকে কিভাবে অকেজো করে দেয় এই মিউল সেটা নিয়েই শেষ হয় এই বইটি। বইটি পড়ে সেলডন ভক্তদের মনে হতাশা জাগবে...তবে কি সেলডন প্ল্যান শেষ?


"মিউল" অসাধারণ যার মানসিক শক্তি।



সিরিজের ৩য় বই Second Foundation (1953)। বইটির নাম হান্ট ফর সেকেন্ড ফাউন্ডেশন হলেও খারাপ হতো না! কোথায় এই সেকেন্ড ফাউন্ডেশন? সেলডন বলে গিয়েছিল এটি: গ্যালাক্সির অন্য প্রান্তে! কোথায় এই অন্য প্রান্ত? সেলডন প্ল্যানের রক্ষক "সেকেন্ড ফাউন্ডেশন" কিভাবে মিউলকে ধ্বংস করে এ নিয়ে জমজমাট বই এটি। হালের ইনসেপশন মূভির সাথে কিছু ফিলোসফিক্যাল মিল পাওয়া যাবে এতে।



সিরিজের ৪র্থ বই Foundation's Edge (1982)। প্রথম তিনটি বইয়ের আমেজ কম পাওয়া যাবে এই বইতে। মূলত ব্যবসায়িক কারণে অনেক পরে লেখা বলে। এই বইতে এসেছে সেকেন্ড ফাউন্ডেশনের খোজ এবং সে সাথে লিজেন্ডারি মিথ "পৃথিবীর" খোজ এর কাহিনী। সে সাথে মানবজাতির ভবিৎষত কার হাতে? ফাউন্ডেশন নাকি সুপার মাইক্রোঅর্গানিজম "গায়া" এর হাতে...সে প্রশ্নও। এই "গায়া" কনসেপ্ট দেখা যাবে হালের হিট মূভি এভাটারে।


শিল্পীর চোখে "গায়া"



Foundation and Earth (1986) ৫ম এই বইটির বেলাতেও একই কথা প্রযোজ্য। সিরিজের প্রথম দিককার বইগুলোর ব্যবসায়িক আউটপুট বলা যায়। তবে পড়তে অবশ্যই খারাপ লাগে না। পৃথিবীর খোজে যাত্রা শেষ হওয়া দলের জন্য বড় চমক অপেক্ষা করে বইয়ের শেষে।



৬ষ্ঠ বই Prelude to Foundation (1988) এ হ্যারি সেলডনের কাহিনী। তার গাণিতিক সাইকো হিস্ট্ররির ইতিহাস, তার পিছনে লেগে থাকা গ্যালাকটিক এম্পায়ারের ইতিহাস। বইটি আগের দুটোর তুলনায় ভালো।



৭ম ও শেষ বই Forward the Foundation (1993) সেলডনের যৌবন বয়সের গল্প। তার আনন্দ-বেদনার গল্প। গুজব আছে এতে আসিমভ পরোক্ষ ভাবে নিজের বায়োগ্রাফি লিখেছেন।

সিরিজজটি পড়তে যেয়ে কয়েকটি জিনিষ চোখে পড়বেঃ মানুষের সীমাহীন বিস্তৃতি এবং জয়। কোন ধরণের রোবট অথবা আ্যালিয়েন প্রাণীর কোন উপস্হিতি বা উল্লেখ না থাকা (গায়া ছাড়া)।

আগামী বছর এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে একটি মুভি আসছে । আশা করা যায় বইয়ের প্রতি অবিচার করবে না এটি।

বই পড়ুয়াদের জন্য মাস্ট রিড। ডাউনলোড লিংক পরে পোষ্ট যোগ করে দিব।

ডাউনলোড লিংকঃ [মিডিয়াফায়ারের একটি লিংক ছিল সবগুলো বই নিয়ে...কারো জানা থাকলে শেয়ার করার অনুরোধ থাকলো]

১/২/৩/৭ সাথে আসিমভের অনান্য বইগুলোও আছে







আরো তথ্যঃ

১. ফাউন্ডেশন সিরিজ উইকি লিংক
২. সাই-ফাই ব্লগ
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:০৫
২০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×