somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার কাজের বুয়া কাহানী.....পর্ব-২ X( X( X( X( X(

২৮ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের এ জীবনে কাজের মেয়েদের ভূমিকা যে কি পরিমান তা আমরা যারা চাকরী করি তারা হাড়ে হাড়ে বুঝি। তারা যে শুধু নির্যাতীত তাই না সুযোগ পেলে নির্যাতন ও করতে পারে তার বর্ননায় আমার এবারের পর্বগুলো। আশা করি ভবিষ্যতে সাবধানতার জন্য এ পর্বগুলো আপনাদের ভালো লাগবে।

পর্ব-২

বুয়া শাশুড়ি আর যাই হোক একটা উপকার করে গেছে আমাদের..... আমরা দুজনে রান্নার সাহস সন্চয় করেছি আর আমার বর তো এই ফাঁকে মহা খুশি..... বাসায় খাওয়ার উপকারিতার উপর সকাল বিকাল নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দেয়া শুরু করেছে।

যাহোক এভাবেই চললো কিছুদিন আমার বর ভালোই সাহায্য করতো কিন্তু কয়দিন যাওয়ার পর মানে নতুন বউ কিছুটা পুরোন হওয়ার পর বন্ধু বান্ধবের খোজ শুরু হলো ...আড্ডা শুরু হলো... আর মোটামুটি আমার ঘাড়ের উপর সব কিছু ছেড়ে দিয়ে এই ১০ মিনিটে আসছি বলে ঘন্টা তিনেকের জন্য নিয়মিত উধাও হতে থাকলো সে।

এভাবে আর কয়দিন ঝগড়া করে পারা যায়... দিলাম শাশুড়ি মাকে নালিশ করে। উনি তো শুনে মহা ক্ষেপা....... তক্ষনি তার এক ছুটা বুয়াকে ম্যানেজ করে পাঠিয়ে দিলেন। শুরু হলো আমার নতুন অধ্যায়।

মেয়েটি মধ্যবয়সী হলেও দেখতে খারাপ না। কয়দিনের মধ্যে মোটামুটি কাজ বুঝে নিল। আমিও মহা খুশি। মাসখানেকের মধ্যেই আমাকে এসে খবর দিল তার এক আত্বীয়ের খোজ পাওয়া গেছে রায়ের বাজার বস্তিতে। আমি কিছু বললাম না... তার সপ্তাহ পরে বাসায় ফিরে দেখি বাচ্চা একটা মেয়ে শাড়ী পড়া আমার বাসায় ঘুর ঘুর করছে... জিঙ্গাস করতেই বললো আমার ভাবী এখানে বেড়াতে এসেছে।.... আচ্ছা থাকুক কয়দিন এ ঘোষনা দিয়ে নিজের কাজে মন দিলাম। কিন্তু কয়দিনের মধ্যেই টের পেলাম কত গমে কত আটা... সে আসার পর থেকে বাসার বাজার করতে করতে আমরা দুজন মোটামুটি কাহিল। সপ্তাহের বাজার দুদিনেই শেষ হয়ে যায় আবার আনি আবার শেষ .... এভাবেই চলছে। কিন্তু ননদ ভাবী ভালোই চলছে........ আমার বাসাও সুন্দর গুছিয়ে পরিস্কার করে রাখে, রান্না বান্না চমৎকার করে.. কিছু বলার আগেই সব হাজির যেন আমার মনের কথা বুঝতে পারে.. আমিওতা মহা খুশি।:):):):):) তাই বাজার নিয়ে তেমন কমপ্লেইন করি না তার সাথে।

তবে কয়দিন থেকে খেয়াল করলাম যে বাসার দাড়োয়ান এতদিন আমাদের পাত্তাই দিত না আজকাল দেখি আমাকে দেখে লম্বা লম্বা সালাম দেয় .......কিছু সমস্যা আছে কিনা তার ব্যাপক খোজ খবর নেয়......আর বলে আপা আপনার ননদ খুবই ভালো বংশের মেয়ে....... এমন ননদ জোটা ভাগ্যের ব্যাপার................।

যেহেতু ফ্লাট এ একা থাকি ও চাকরী করি তাই কারো সাথে তেমন চেনার সুযোগ হয়নি। যাহোক একদিন পাশের ফ্লাটের এক ভাবী সন্ধায় বাসায় ঢুকতেই দেখি দাড়িয়ে আছে দরজার পাসে।বললো....ভাবী, আপনার অপেক্ষায় আছি। যদিও আপনার সাথে পরিচয় নেই তারপরও কিছু কথা বলতাম আপনি যদি আমার ফ্লাটে একটু আসেন। .একটু চিন্তা করে ভাবীর বাসায় গেলাম......উনার ফ্লাটে বসতেই বললো, ভাবী আপনার ননদ যা শুরু করেছে তাতে তো আমাদেরই ফ্লাট ছেড়ে দিতে হবে... মানে (!!!!) আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম.... আমার ননদ কোথা থেকে আসবে ওতো ইউএসতে...। বিস্বয় প্রকাশ করতেই বললো কেন আপনার ফ্লাটে যে মেয়েটা থাকে সেইতো বলে বেড়ায় সে আপনার ননদ ....আমরা তো সবাই জানি যে সে আপনার ননদ আর আর খুব সেজেগুজে ফিটফাট থাকে সবসময়....তাই আমরা বিশ্বাস করি.......আর আপনি যে ড্রেস পড়ে বাইরে যান তাই তো তাকে পড়তে দেখি প্রতিদিন..........প্রায় প্রতিদিন দুপুরে সে বাসায় পার্টি দেয়....হইহূল্লোর করে খুব...... কি সব অদ্ভুত লোকজন আসে আপনার বাসায়.....মনে হয় পাশের কোন বস্তি থেকে আর এতো জোরে সিডি ছাড়ে যে আমার নিজের ফ্লাটেও থাকা দায়। দাড়োয়ানকে কম্লেইন করেছি কিন্তু সে কিছু বলে না কারন প্রায় প্রতিদিনই তার খাবার আপনার বাসা থেকে যায়। আমি কিছু বলার চেষ্টা করেছিলাম কারন আমার মেয়েটার পরীক্ষা চলছে কিন্তু আপনার ননদ এতো বাজে ব্যবহার করেছে কি আর বলবো.........আমি তো আকাশ থেকে মাটিতে পড়লাম আর কি...... আমার ননদ.....!!! B:-) B:-) B:-) B:-) B:-) B:-)

মোটামুটি হার্টফেইল করার অবস্থা আমার। তাইতো বলি আমার বাজার যায় কই....দুজনের সংসারে যা বাজার লাগে তা শুনে সবাই মাথায় হাত দেয়..... প্রায় প্রতিদিন অফিস যাওয়ার সময় কোন ড্রেসই ঠিকভাবে আয়রন করা পাই না কেন.... আমার কসমেটিক্স কোনদিনই ঠিকভাবে পাই না কেন.......প্রতিদিন সন্ধায় সে গায়ে হলুদ মেখে গোসল করে কেন (যদিও আমি হলুদ মাখি না কখনই)......হঠাৎ অফিসে না গেলে প্রায় অপরিচিত লোকজন বাসায় নক করে কেন...(একদিনতো এক লোক আমাকে ধমক লাগালো এই বলে যে আপনি কে? ঘরের মালিককে ডাকেন..)......ফ্রিজে প্রতিদিনই কোকের ক্যান পাওয়া যায় কেন (যদিও আমি কোক আনি না তেমন).... প্রায় পাশের বাসার এতো বদনাম করার চেস্টা করে সে ...???? সব প্রশ্নের উত্তর আস্তে আস্তে মিলাতে পারলাম......

এবার শাশুড়ি মাকে ফোন দিলাম তার কাহিনী বর্ননা করে........ এবং ২য় পর্বের শেষের পর আমার ৩য় পর্বের দিকে পা বাড়ালাম আর কি.....

আমার আগের পর্ব...
http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29804363

পরের বর্ননার অপেক্ষায় থাকুন...যদি ধৈর্য্য থাকে আরকি....
বিদ্র: ছবির জন্য ধন্যবাদ ব্লগার বাকাট্টা ......
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৭
৩৩টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×