somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার বুয়া কাহানী.. পর্ব-৩

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পত্রিকার পাতা খুললেই কাজের মেয়েদের নির্যাতনের নানা কাহিনী দেখি যা অবশ্যই ঘৃন্য কিন্তু তারা ও যে আমার মত আবুলদের পেলে নানা ভাবে দেখিয়ে দেয় কত গমে কত আটা তার বর্ননায় আমার এ পর্ব..... আশা করি ভবিষ্যতে সাবধানতার জন্য এ পর্বগুলো আপনাদের ভালো লাগবে।

পর্ব-৩

বুয়া শাশুড়ি আর বুয়া ননদ পর্ব সমাপ্তির পর আমার জীবনে নতুন অধ্যায় শুরু হতে বেশি দেরি হলো না.....। বুয়ায় অভ্যস্ত লাইফ তো আর বুয়া ছাড়া চলে না.......।. এবার শাশুড়ি মহল ছেড়ে হাল ধরলেন আমার মা। আশে পাশে নতুন বুয়া খোজার কাজে মা ব্যর্থ হয়ে গ্রামের পথ ধরলেন যদি কোন কিনারা করতে পারেন আমার জন্য। অতপর ৭ দিন পর মা হাজির হলেন এমন এক মেয়েকে নিয়ে যার ঢাকা শহরে আসার অভিজ্জতা এই প্রথম। সূচনা হলো আমার পরবর্তী পর্বের.........

এ মেয়েটি আক্ষরিক অর্থেই কিছু জানে না ১১/১২ বছরের মেয়ে... খুব ভালো না হলেও খারাপ না দেখতে। শহরে এ প্রথম বলে গ্যাসের চুলা ধরানো থেকে ফ্রিজ/ওভেন সব কিছুই শিখাতে আমার মোটামুটি জান কাবাব.... কিন্তু আমার ম্যানেজারের টিভি ছাড়া আর কোন কিছুতেই আগ্রহ নেই। মাস খানেকের মধ্যেই স্টার প্লাস আর জি বাংলার সব সিরিয়ালের নাম ধাম চরিত্র সবই দেখি মুখস্থ। আচ্ছা দেখুক.. একা বাসায় থাকে সময় কাটাবে কিভাবে... এই বলে তার সিরিয়াল দেখার মহান দায়িত্বে বাগড়া দিলাম না।

কিছুদিনের মধ্যেই দেখলাম বাসার কাজের ব্যাপারে কোনই আগ্রহ আর অবশিষ্ট নেই....টিভির সামনে থেকে সরানোই যায় না...সারাক্ষনই ওই মেয়ের ড্রেসটা সুন্দর..ওই মেয়ের সাজ কি সুন্দর তাই না খালাম্মা ..আরে . খালাম্মা দেখেন কেমুন সাজ দিচে এক্কেরে পরীর লাহান..... আর কাজের জন্য ডাকতে ডাকতে আমার জান নেই.... সে তার সিরিয়াল ছেডে কিছুতেই উঠবে না। অনেক ডাকলে বলে আমি কানে কম শুনিতো তাই আফনের ডাক শুনবার পারি নাই। একদিন বাসায় এসে দেখি হেয়ার স্টাইল চেইন্জ....আরে চুল কেটে দিল কে তোকে...??? আমি তাজ্জব হয়ে দেখি দারুন ভাবে সামনে চুল কাটা..... বললো আয়নার সামনে দাডিয়ে নিজে নিজেই কেটেছে... মনে মনে গুনের প্রসংশা করলেও সামনে একটা বকা দিলাম।

আরেকদিন বাসায় ফিরে দেখি কান্নায় চোখ মুখ ফোলা.. ভয় পেয়ে গেলাম.. কি হয়েছে তোর... বাসার কথা মনে পড়েছে? বাসায় কথা বলবি? শরীর খারাপ?.... সে আমার সকল সন্দেহকে দূর করে বললো...... খালাম্মা, সে কতা আর কইয়েন না আউজ দজ্জাল শাশুড়ি সুন্দর বউটারে এমন অত্যাচার করলো, আফনে না দেখলে বিশ্বাসই কইরবে না..:):):):):)..শেষে নাকি শাশুড়ি ষড়যন্ত্র করে আজ ফাইনাল ভাবে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে আর এমন পাষান স্বামী শাশুড়ির সব মিথ্যা কথা বিশ্বাস করেছে... তাই তার এতো কান্না। এবং তার কান্নায় দুপুরের ভাতও খেতে ভুলে গেছে.. :(( :(( :(( :(( :(( :((

কয়দিন পর এসে বললো খালাম্মা ঐ সিরিয়ালের ঐ মেয়েটার মত আমাকে একটা ড্রেস কিনে দেন না.... আচ্ছা ছোট মানুষ আব্দার করেছে তাই গাউছিয়া যেয়ে খুজেপেতে কিনে দিলাম।..কিন্তু খেয়াল করলাম ইদানিং খুব চমৎকারভাবে সেজেগুজে থাকে অনেকটা হিন্দী সিরিয়ালের মেয়েগুলোর মত... আর সারাক্ষন আযনার দিকে। কাজে তো আগেও মন ছিলনা তবে ইদানিং দেখি সিরিয়াল থেকে বারান্দার দিকে বেশী মন...। যখনই দেখি তখনই বারান্দায়। আরে সারাক্ষন বারান্দায় কি করিস?? প্রশ্ন করলেই বলে কাপড় শুকাই...কাপড় কি সূর্যের তাপ দিয়ে আয়রন করিস নাকি? কিন্তু কিছুতেই তাকে বারান্দায় থেকে সরানো যায় না। বকাঝকা কোন কাজেই আসে না। কি আর করা... যাকগা বলে নিজের কাজে মন দিলাম।/:)/:)/:)/:)

একদিন সকালে উঠেই আমার বর চিল্লাচিল্লি... মোবাইল খুজে পাচ্ছেনা। আমি উলটা বকা লাগালাম বাইরে ফেলে এসে ঘরে চেচামেচি... এর কিছুদিন পর দেখি সে চেচাচ্ছে ওয়ালেটে টাকা কম... আমি ধমক লাগালাম.. বাইরে খরচ করে এসে ঘরে চেচামেচি করো.. কিন্তু আমার মনেও খটকা কারন আমার ব্যাগ থেকে ও প্রায় টাকা উধাও হচ্ছে। আমি আমার ম্যানাজারকে কোনক্রমেই সন্দেহ করি না কারন আগের অভিগ্গতায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে যাই..ওর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নাই।

একদিন খেয়াল করলাম ওর কানে একটা নতুন দুল.. কোথায় পেলি জিগ্গাসা করতেই চমকে উঠলো ..বললো ..আমার আগেই ছিল। আরেকদিন দেখি গলায় মালা.... প্রশ্ন করতেই একই উত্তর। একটু একটু সন্দেহ হলো.. ও পেলো কোথায়??? যাহোক এভাবেই চললো কিছুদিন আর আমাদের ও নিয়মিত এটা সেটা গায়েব হতে থাকলো। কিন্তু আমার ম্যানাজারকে কিছু বলার স্কোপ নেই কারন সে তালা অবস্থায় ঘরে থাকে সে কি করতে পারে????

যাহোক কোন এক শুক্রবারে ভর দুপুরে আয়েশ করে ঘুমাচ্ছিলাম... হঠাৎ একটু ফিস ফিস আওয়াজ শুনে রুম থেকে বের হয়ে যা দেখলাম তাতে আমার আক্কেল গুড়ুম.. আমার ম্যানাজার বারান্দায় একটা দড়ি বেধে কি যেন টেনে নিচ্ছে নীচ থেকে.. উকি দিতেই দেখলাম এক ফেরিওয়ালা আর দড়িতে একটা চুলের ব্যান্ড বাধা। আমাকে দেখেই ফেরিওয়ালা একটা ভো দৌড় দিল। এতক্ষনে বুঝলাম আমার টাকা পয়সা যায় কই...আর ক্লিপ চুড়ি কোথা থেকে আসে...(হিন্দী সিরিয়াল দেখে অনুপ্রানিত হয়ে অবশেষে নায়িকা হবার চেস্টা আর কি.......)।

এবার মাকে ফোন দিলাম তার কাহিনী বর্ননা করে........ এবং ৩য় পর্বের শেষের পর আমার ৪র্থ পর্বের দিকে পা বাড়ালাম.......

আমার আগের দু:খের পর্ব...যদি পড়তে চান......

http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29806271
http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29804363

পরের বর্ননার অপেক্ষায় থাকুন...যদি ধৈর্য্য থাকে আমার আপনার......
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৯
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×