somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

বেকার বন্ধুদের জন্য ফ্রি উপদেশ (এ পর্ব শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য ছেলেদের প্রবেশ সম্পূর্ন নিষেধ) ........ পর্ব-৫

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
পরের পর্ব-বেকার বন্ধুদের জন্য ফ্রি উপদেশ (এ পর্ব বিশেষভাবে মেয়েদের জন্য ছেলেদের প্রবেশের কোন প্রয়োজন নেই) ........ পর্ব-৬



আমার আজকের পর্ব শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য কারন আমি আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় দেখেছি মেয়েরা কতটা নিগৃহীত চাকরীর প্রতিটি পদক্ষেপে... কি প্রমোশন ক্ষেত্রে... কি সাবোর্ডিনেট হিসেবে ... কি বস্ হিসেবে.......। তাই তোমাদেরকে সর্তকতা মূলক ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বর্ননা দিতে আজকে আমার এ লিখা। অনেক বড় হওয়াতে লিখাটা দু'ভাগ করেছি, আশা করি তোমাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে।

কাজের ক্ষেত্রে পরিবেশ একটা বিশাল ফেক্টর কারন আমি আপনি দিনের ৮০% সময় অফিসে থাকি। আর এ সময়টা যদি আমরা ভালো না থাকি তাহলে বাকি ২০% .... মানে জীবনটাই অতীষ্ট হয়ে যায় । আমি এমনও দেখেছি মেয়েরা শুধুমাত্র পরিবেশের কারনে চাকরী ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে আর যারা পারেন না তারা কতটা অসহ্য মানষিক যন্ত্রনা ভোগ করেন প্রতিদিন তা আমরা শুধু মেয়েরাই জানি বা বুঝি.....।

মেয়েরা, তোমরা যারা চাকরীতে ঢুকি ঢুকি অবস্থায় আছো বা অলরেডি জব করছো তারা দেখবা অফিসে কত ধরনের পুরুষ সহকর্মী আছে ..;);););););। আর মেয়েদেরকে মেয়ে মানুষ হিসেবে আলাদা প্রানীই ভাবে তারা মানুষ হিসেবে নয় এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই তোমাকে একজন পুরুষের তুলনায় অনেক বেশী স্ট্রাগল করতে হয় নিজেকে প্রতিস্ঠা করতে। তুমি যদি এ স্ট্রাগলে ধৈর্য্য হারাও তাহলে তুমিই হেরে গেলে সে পুরুষটি নয় কিন্তু.... কারন তোমার হেরে যাওয়ার মধ্যেই তার জয় হয়েছে এবং সে তাই চেয়েছে। তা নিশ্চয় তুমি করতে দিতে পারো না। আমার এ ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায় যেদিন আমি একজন নামকরা ব্যাংকের মহিলা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টেকে আমার কাছে কাঁদতে দেখেছি সেদিন আমি খুব হতাশ হয়েছিলাম........................।

এখন আসি কর্মক্ষেত্রে পুরুষ সহকর্মীরা তোমাকে কি চোখে দেখে ............ এ ক্ষেত্রে আমরা অর্গানিজেশানকে দুভাগে ভাগ করতে পারি......... ১) কর্মাশিয়াল সেক্টর ২) এনজিও সেক্টর।

প্রথমেই আসি এ কর্মাশিয়াল সেক্টর..........

আমার মতে এ কর্মাশিয়াল সেক্টরে মেয়েদেরকে দেখে স্রেফ লাক্স এর বিজ্ঞাপন B-)) B-)) B-)) B-)) । মানে তারা তোমাকে জীবন্ত মডেল ভাবে। তুমি অলওয়েজ হাসবা, সুন্দর সুন্দর সেক্সি পোসাক পড়বা যাতে তোমার শরীর চমৎকারভাবে দেখা যায়, হাসতে হাসতে তুমি তাদের গায়ে গড়িয়ে পড়বা, তোমার স্পর্শকাতর যায়গাগুলিতে যখন খুশি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অনিচ্ছায় হাত দিবে, যখন তখন আড্ডায় দেতে উঠবা। আর তুমি যদি এগুলা না করতে পারো বা তাদের সাথে তাল দিতে না পারো বা নিজের ব্যাক্তিত্ব নিয়ে চলো তাহলে তুমি গেছো... তুমি একটা খেত, আনকালচার্ড, গাউয়া, অনাধুনিক ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। আর এ ক্ষেত্রে তোমার অনেক মেয়ে সহকর্মী ও তাদের পাশে জুটে যাবে। .......... অনেক সময় দেখবা ... তোমার প্রমোশান নাই, কাজের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন নাই এমন কি কখনও কখনও চাকরী ও নাই।

এরপর আসি এনজিও সেক্টর.......... আমার মতে মেয়েদের জন্য এটি একটি ভালো যায়গা। কারন জেন্ডার নামক একটি অধ্যায় এখানে আছে। মেয়েদের কর্ম মূল্যায়ন, প্রমোশন বা ব্যাবহার বিধির একটি চমৎকার গাইডলাইন থাকে। অনেক ইন্টারন্যাশানাল এনজিও বা বড় ন্যাশানাল এনজিও গুলো এ ধরনের গাইডলাইন মানতে বাধ্য থাকে। ভিতরে তোমাদের উপর ক্রোধ থাকলে কঠিন জেন্ডার পলিসির কারনে তোমাকে কিছু করে উঠতে পারে না। যার দরুন মেয়েরা অনেকটা সেইফ থাকে এক সেন্সে।



এখন আসি অর্গানিজেশানের পুরুষ সহকর্মীদের সম্পর্কে বিবরন............

তুমি তোমার অফিসের চারপাশে বেশ কয়েক ধরনের পুরুষ প্রজাতি দেখবা। যেমন এক ধরনের প্রেমিক পুরুষ ....... তাদেরকে আমরা বলি ছোক ছোক পুরুষ (মানে আমরা মেয়ে কলিগরা আর কি)। তাদের বৈশিস্ট্য হচ্ছে যাবতীয় মেয়ে দেখলেই তাদের প্রেম প্রেম খেলতে, একটু কথা বলতে, একটু ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। এরা কিন্তু খুব একটা হার্মফুল হয় না। কারন তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই সুন্দরী বউ বা প্রেমিকা আছে। কিন্তু বাড়তি পাওনা হিসেবে এরা এসব করে। তোমার সাথে একটু লান্চ যাওয়া বা আড্ডা বা অনলাইনে চেট করার বাইরে কিছু করার সাহস তাদের নাই। তাই তোমাদেরকে বলছি তাদের প্রেমে ভুলেও পড়বে না। কারন তারা তোমাকে কোনক্রমেই দীর্ঘ মেয়াদি সম্পর্কে জড়াবে না। উপরোন্তু তাদের বউ বা প্রেমিকা তাদের হাজবেন্ড এর পতিশোধ তোমার উপর তুলতে পারে বা তোমার ক্ষতি করতে পারে।



এবার আসি দ্বিতীয় শ্রেনী................, আরেক ধরনের পুরুষ হচ্ছে বড় ভাই বা গার্ডিয়ান সূলভ। এরা তোমার বড় ভাই হিসেবে অলওয়েজ আসতে চাইবে বিশেষ করে আনমেরিড মেয়েদের সাথে..........., তোমাকে গাইড করতে চাইবে, এটা করবে না ....সেটা করবে না.... ওর সাথে মিশবে না .... ইত্যাদি.. ইত্যাদি.. ইত্যাদি.. বলবে। এবং সময় অন্তে দেখবা তুমি তার প্রেমে হাবুড়ুবু খাচ্ছো। ওরা তোমার প্রেমে পড়ে না বাট তোমকে প্রেমে ফেলার চেস্টা করে। অতএব সময় থাকতে সাবধান।

এবার আসি তৃতীয় শ্রেনীর পুরুষ ... এরা হলো বিদ্বেষী পুরুষ। মেয়েদের দেখলেই ওরা যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে। মেয়েদের কোন কাজেরই তাদের কাছে স্বীকৃতি নেই। আর বস হিসেবে যদি এমন কাউকে পাও তাহলে মরছো তোমরা.......। আমার ধারনা তারা ব্যাক্তি জীবনে চরম কোন ছেকা খেয়েছিল তার ফলস্বৃতিতে তোমার উপর শোধ নিতে চায়..।:((:((:((:((:((:((:((। এক্ষেত্রে আমার উপদেশ ..... সমান সমান কর্মী অর্থ্যাৎ সহকর্মী হলে এদের এড়িয়ে যাও আর বস্ হলে পরবর্তী সুযোগ না আসা পর্যন্ত সহ্য করো ......... না পারতে বিরোধে যাবে না। আর অধ:স্থন কর্মী হলে কষে ধমক লাগাও আশে পাশে ঘেষতে দিবে না। তারা রাস্তা ঘাটে তোমার গুনকীর্তন করার চেস্টা করবে আর তুমি ১০০% কানে তুলা দিয়ে নিজের কাজে মন দিবা।



এবার আসি চতুর্থ শ্রেনীর পুরুষ ... এরা হলো জ্ঞানী পুরুষ। এরা ভাবে মেয়েদের মাথাভর্তি শুধু গোবরে ভরা। যাবতীয় জ্ঞানের আঁধার হচ্ছে পুরুষরা। মেয়েদের মাথা থেকে যে চমৎকার কাজ বের হতে পারে তা তারা কোনক্রমেই বিস্বাস করে না। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে ঠনঠন....... তাই তোমাদের যেকোন কাজ নিজের বলে চালিয়ে দিতে দ্বিধা করে না। আর সে শ্রেনী যদি বস্ হয় তাহলে তো লাইফ মোটামুটি হেল.......। আর তোমাকে সর্বদা জ্ঞান দিতে দিতে অস্থির করে ফেলবে......। কিন্তু বাস্তবে দেখবা তোমার জ্ঞান অনেক বেশী.....। ডোন্ট বি আপসেট.... বি কুল..। রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন.... ধৈর্য্য ধরো একসময় না একসময় তোমার কাজের মূল্যায়ন হবেই... ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করো।

এ কয় শ্রেনী ছাড়াও আরো অনেক শ্রেনী আছে তাদের মোকাবেলা তোমরা নিজেরাই করতে পারবে। তাই আর বর্ননায় গেলাম না।

এতো বললাম নেগেটিভ কথা... এর বাইরে পজিটিভ কথা ও আছে। এ কয় প্রকারের বাইরে ও অনেক সহকর্মী আছে যারা তোমাকে নিস্বার্থভাবে সাহায্য সহযোগীতা করবে। তুমি তাদেরকে বিশ্বাস করতে পারবে, নির্ভরশীল হতে পারবে, যেকোন বিষয়ে পাশে পাবে। সেরকম সংখ্যাই কিন্তু অনেক বেশী কিন্তু তোমাকেই তা খুঁজে বের করতে হবে। আর অফিসের অন্যান্য মেয়ে সহকর্মী সম্পর্কে পরের লিখায় বিস্তারিত নিয়ে আসবো......

এবার আসি অফিসে তোমাদের ভূমিকা নিয়ে কিছু কথা....... তোমরা কি করবা.. কিভাবে তোমরা নিজেদেরকে প্রতিস্ঠিত করবে......... নাহ্ থাক পরের লিখায় বাকি টুকু..... আজ এটুকু থাক...........

আমার আগের উপদেশ যদি পড়তে চাও....
http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29911890
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ ভোর ৫:৫৪
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×