somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার বুয়া কাহানি..................................... পর্ব-৬

০৪ ঠা মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন পর ফিরে আসলাম আমার বুয়া মেগা সিরিয়াল নিয়ে... জানি আপনারা রাজনীতি নিয়ে প্যাচাল পারতে পারতে বোর হয়ে গেছেন তাই একটু রিফ্রেস টনিক নিয়ে আমি হাজির হলাম বুয়া পর্ব নিয়ে .....



আজ যদি হুমায়ুন স্যার বেঁচে থাকতেন তাহলে আমার কাজের বুয়াদের কাহিনী শুনে নির্ঘাত একশত পর্বের নাটক লিখে ফেলতেন। যেহেতু সে সুযোগ আপনারা পাচ্ছেন না তাই আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .... আমার কাজের বুয়া সমাচার পর্ব। আশা করি ভবিষ্যতে সাবধানতার জন্য এ পর্বগুলো আপনাদের ভালো লাগবে। /:)/:)/:)/:)/:)/:)

তো যা বলছিলাম...
শাশুড়ি, ননদ ও প্রেমিক বুয়া যাওয়ার পর কান ধরলাম বয়স্ক মহিলা আর না .... সবাই বুদ্ধি দিল অল্প বয়স্ক মেয়ে রাখো তাতে তোমাকে কান ধরে উঠা বসা করাবে না আর ওদের নিয়ন্ত্রন সহজ হবে।

শুরু হলো নেক্সট্ বুয়ার খোজঁ.... মা, শাশুড়ি, খালা, নানু সবাই এক যোগে খোজঁ শুরু করলো। এবং নানু এক দালাল মহিলার খোজঁ দিল যে বাড়ি বাড়ি কাজের মেয়ে দিয়ে যায় ......। যাক ইনিশিয়াল পর্যায়ে আমার মা দালালকে যাবতীয় রিকোয়ারমেন্ট দিল এবং অত্যাশ্চার্য যে মাত্র একদিনের ভিতরেই সে ১৪/১৫ বছরের একটি মেয়েকে হাজির করলো। (পরে বুঝলাম ওরা সবার রিকোয়ারমেন্টই পূরন করে তবে তা তিন থেকে ছয় মাসের জন্য এবং প্রতিবারই গাড়ি ভাড়া, দালাল ফি ও একটি করে নূতন শাড়ি নিয়ে থাকে। এবং আমার দালাল তার ও তার ছেলে মেয়ে সহ তিন সংসার এই টাকায় চালায়)।

যাক নুতন মেয়েটিকে আমার প্রথম দেখায় পছন্দ হয়ে গেল। খুবই শান্ত, লাজুক... চোখ তুলে কথাও বলে না..... কাজ শেষে রান্না ঘরের এক কোনায় বসে থাকে। অনেক জোর করে টিভির সামনে বসাই... কথায়ই বলেনা। আমার হাজবেন্ড আমাকে নিয়ে খুব হাসাহাসি করলো... তোমার মনের মত এ মেয়েকে আবিস্কার করলা কেমনে!!!!!!

যাক সুখে শান্তিতেই কাটছিলো দিনকাল। মাস কয়েক পর খেয়াল করলাম মেয়েটি সারাদিনই তার রুমে থাকে... কাজ কর্মে খুব একটা মন নেই। সারাক্ষনই খুব সেজেগুজে থাকে, ঠোটে লিপিস্টিক, চোখে কাজল.... যা খুবই দৃষ্টিকটু লাগে। রুমে উকিঁ দিলে দেখি প্রায় কি যেন লিখছে.......। আমি ভাবলাম পড়াশুনা করে, ডেকে জিঙ্গাস করলে কিছুই বলে না ... চুপ থাকে। বেশি ঝামেলা তৈরীর চেস্টা না করে নিজের কাজে মন দিলাম কারন আমি সারাদিন বাইরে থাকি ও যদি কিছু লেখা পড়া করতে চায় করুক না। আমি তার জন্য কিছু বই খাতা কিনে দিলাম।

আমার ফ্লাট বাসার সিড়িঁর নীচে দাড়োয়ানের ছোট ঘর। সব বাসায় যেমন থাকে আর কি। একদিন একটু আগে বাসায় ফিরতেই খেয়াল করলাম আধো অন্ধকারে কে যেন ছায়ার মতো সরে গেল দাড়োয়ানের ঘরের দিকে। এতো ব্যস্ততার মাঝে ওই দিকে তাকানোর সময় নেই....... বাসায় ফিরেই দেখি বাইরে থেকে ছিটকিনি বন্ধ আর পিছনেই আমার এ্যাসিসটেন্ট দৈাড়ে আসছে। কোথায় গেছিস বলতেই বললো ময়লা ফেলতে। আমি একটু হালকা বকা লাগালাম যে ঘর খোলা রেখে বাইরে যাস্ যদি চুরি হয়.... এভাবে প্রায় সে দিনের বেলা বা সন্ধ্যার পর ও উধাও হতে থাকলো।

সামনে ঈদ, শ্বশুর বাড়ি যাবো তাই কেনা কাটা ,অফিস, কাজ নিয়ে মারাত্বক ব্যস্ত। বাসায় থাকি না বললেই চলে... ভোরে বের হই আর রাত দুপুরে আসি। যাবার আগেরদিন ব্যাগ গোছাতে মারাত্বক ব্যাস্ত কারন ভোর ৫.৩০ এ ট্রেন। হঠাৎ রাত ১১.৩০ টায় কলিং বেল বাজতেই আমার এ্যাসিসটেন্ট দৈাড় দিল দরজা খুলতে। এতো রাত এ কে আসছে আমি এগিয়ে গেলে সে দরজা বন্ধ করে দেয়। কে বলতেই বললো আমার খালাতো ভাই আসছে মা চিঠি দিয়েছে। তোর খালাতো ভাই !!!!!!!!!!! তাজ্জব হলাম... তোর তো এ কূলে কেউ নেই ঢাকায় ???? বেশি দূর জেরা করতে পারলাম না আমার হাজবেন্ড মাঝে নাক গলালো.... ওর কি কোন আত্বীয় থাকতে পারে না???? আরো উল্টা ওর হয়ে আমাকে ঝাড়ি দিল।

যাহোক এভাবে ঈদ পার করলাম কিন্তু আমার মনে খটকা লেগে থাকলো। কে আসলো, কেন এতো রাতের বেলা আসলো আবার বসতে ও বললো না। কোন আত্বীয় এতো দিন শুনি নাই এখন হঠাৎ !!!!!!! যেহেতু আগে আমি এ্যাসিসটেন্ট নিয়ে বিস্তর অভিঞ্জতা অর্জন করেছি তাই ব্যাপারটা সহজে মেনে নিলাম না।

বাসায় ফিরেই ওকে চোখে চোখে রাখলাম। পাশের বাসার ভাবীকে ব্যাপারটা শেয়ার করলাম। ভাবী খুব ফরেজগার মানুষ, খুব একটা বের হোন না বাসা থেকে। তারপর ও ব্যাপারটা দেখবেন বলে আস্বস্ত করলেন।

ঠিক দুইদিন পর আফিস থেকে বাসায় ফেরার পর ভাবী আমাকে বাসায় ডাকলেন। অনেক ওয়াজ নচিহত এর পর মাথা ঠান্ডা রেখে ওনার যাবতীয় তথ্য শুনতে বললেন।...........তথ্যগুলো হলো এই....... ১) দুপুর বেলা যখন মোটামুটি সব নিরব থাকে তখন আমার বাসায় কালো করে একটা ছেলে আসে। ২) রাতে বা দিনের বেলা যখন আমরা বাসায় থাকি তখন আমার এ্যাসিসটেন্ট দাড়োয়ানের ছোট ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকে। ৩) দিনের মোটামুটি বাকি সময় সে বারান্দায় সেজেগুজে দাড়িয়ে থাকে ও রাস্তার অপর দিকে অনেকগুলো ছেলে দাড়িয়ে থেকে পাথর দিয়ে বেধে চিঠি ছুড়ে দেয় এবং এর কয়েকটি দোতালায় ও পড়ে। যথারীতি দোতালার ভাবী অবজেকশান দিয়েছে কিন্তু দাড়োয়ান উল্টা তাদের বাসা ছাড়ার হুমকি দিয়েছে। এবং আতংকের কথা ছেলেগুলোর মধ্যে একটি আবার পাড়ার মাস্তান।................

যাবতীয় তথ্য জানার পর আমি কোন গর্তে ঢুকবো বুঝতে পারছিলাম না। আমার হাজবেন্ড বাসায় ছিল না তখন। বাসায় ফিরে মাথায় বরফ ঢাললাম তারপর চুপচাপ আমার হাজবেন্ড এর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মনে হলো দুই ঘন্টা না আমি অনন্ত কাল ওর জন্য অপেক্ষা করছি। এতো বছরে ওর জন্য এতো গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করিনি।

তারপর কাহিনী কি আর........... তার ব্যাগ খুলে অসংখ্য প্রেম পত্র, অনেকগুলো ভিডিও (কিসের ভিডিও তা আর নাই বললাম)... উদ্ধার করলাম। যাহোক আমি ধৈর্য্য নিয়ে প্রতিটি প্রেম পত্র পড়লাম এবং আবিস্কার করলাম যে সে খুব শীঘ্রই পালিয়ে যাওয়ার প্লান করেছে এবং বাসায় কি কি জিনিস আছে তার বর্ননা এবং কি কি জিনিস নেয়া যায় তার বিশদ প্লান।

পরিশিষ্ট: পত্রপাঠ বিদায় এবং নতুন কাহিনীর জন্ম লাভ। তবে এবার আমরা সহ বিদায় হয়েছি এলাকা থেকে কারন পাশের ভাবী আমাদের পরামর্শ দিলেন তাড়াতড়ি বাসা ছেড়ে দিতে নতুবা আমরাই বিপদে পড়তে পারি।

আমার আগের পর্ব যদি পড়তে চান.............
http://www.somewhereinblog.net/blog/belablog/29880812
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৫
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×