somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

আমার নিকটতম প্রতিবেশীরা.............

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আমার কুকুর প্রতিবেশীরা....



কুকুর প্রজাতিকে সবসময় আমি সমীহের চোখে দেখি কারন আপনি তাদের বিরুদ্ধে কোন আইন প্রয়োগ কতে পারবেন না। মানে কোন আইনেই তাদেরকে জেলে ভরতে পারবেন না, এমনকি তারা কামড়ালে আপনি তাদের কামড় ও দিতে পাবেন না। তাই আমি তাদের কখনই কুত্তা নামে ডাকি না, সবসময় কুকুরই বলি আর ১০০ হাত দূরে থাকার চেস্টা করি। কিন্তু ভাগ্য চক্রে আমার চর্তুদিকের প্রতিবেশীদের এক বা একাধিক কুকুর আছে আর তারা মনে হয় জানে যে অামি তাদের বিশেষ সমীহের চোখে দেখি তাই তারা কেন যেন আমাকে সহ্যই করতে পারে না। অামি কেন আমার ছায়া দেখলও তারা এমনভাবে চেচানো শুরু করে যে তাদের জাতভাইরা যারা জিমুচ্ছিল তারা ও ঘর ছেড়ে বের হয়ে চেচায় যেন বিখ্যাত চোরের সন্ধান পেয়েছে এইমাত্র। আর বিশেষকরে রাতের বেলা এক যন্ত্রনা তৈরী হয়েছে কারন তাদের চেচামেচিতে সবাই মোটামুটি ঘর থেকে বের হয়ে আসে ..... আমি যতই চুপিসারে আসি না কেন, ওদের হাত থেকে মুক্তিই মেলে না।

আমার এ দূরাবস্থা দেখে অবশেষে এক প্রতিবেশী এর সমাধান বের করে..... তো ওর ভাষ্য মতে এ পাড়ার সবা্রই কুকুর আছে শুধুমাত্র আমার ছাড়া, কুকুর প্রজাতিরা এটা জেনেগেছে তাই আমি কুকুর পালা শুরু করলেই এ অবস্থা থেকে মুক্তি মিলতে পারে :( :( :( .. সুখে থাকতে ভুতে কিলায় আর কি !!!!

আমার বৃদ্ধ প্রতিবেশী....



আমার ঠিক পাশের বাসায় এক ৮০ উর্ধ্ব বৃদ্ধা বাস করেন। সকাল বিকাল রাত দিন সারাক্ষনই তাঁকে বারান্দায় বসে থাকতে দেখি আর মাঝে মাঝে হৃইল চেয়ারে ঠেলে ঠেলে বাজার করতে দেখি। আমাকে দেখলেই একগাল হেসে হাই বলে তার কুকুরটাকে সামাল দিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। খুব কৈাতুহল হয়, একা একা অতিশয় এক বৃদ্ধা বাজার করে, রান্না করে, ঘর পরিস্কার করে বাইরের ঘাস পরিস্কার করে। কখনই কাউকে দেখিনি তার কাছে আসতে। একদিন বন্ধের দিন তার পাশে যেয়ে বসলাম, খুব খুশি হলো... এতো কথা একসাথে বলা শুরু করলো যে কথার খেই হারিয়ে ফেললো। কখনো মেয়ের ছবি দেখিয়ে তার গল্প শুরু করলো তারপরেই নাতি নিয়ে শুরু করলো.... . সে যে কি দুস্ট তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না.....কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবে সেটাই বুঝতে পারছে না। অনেক গল্প শোনার পর অনেক ছবি দেখার পর ওকে প্রশ্ন করলাম তোমার মেয়ে নাতি কয়দিন পর আসে। ও একগাল হেসে বললো, নাতির যখন বয়স ৬ তখন একবার একদিনের জন্য এসেছিল, এসব গল্প সে সব বয়সের আর এখন তার বয়স ২৮। মানে ??? তোমার মেয়ে কখন আসে?? শেষ ১৪ বছর আগে এসেছিল আর আসতে পারেনি। কারন জব, সংসার নিয়ে এতো ব্যাস্ত থাকে যে আমাকে দেখতে আসতে পারে না। কেন গত মাসেই তো সামার ভেকেশোন গেলো... পাল্টা প্রশ্ন করলাম.... বৃদ্ধা একগাল হেসে বললো এতো চমৎকার সামার ছেড়ে আমার কাছে কেন আসবে?... এতো সহজভাবে কথাগুলো বললো নিজেই মনে মনে আমার দেশের বাবা-মায়ের কথা মনে করলাম। আমরা অনেক ভাগবান ও আমাদের বাবা-মা ও ভাগ্যবান।

আমার ইয়াং প্রতিবেশী....



মেয়েটির সাথে প্রায় প্রতিদিনই বাস এ দেখা হয়। আমার থেকে দু'বাসা পড়ে থাকে। ওকে চোখে পড়ে কারন ওর ড্রেস-আপ। মোটামুটি সংক্ষিপ্ত ড্রেস এর সংজ্ঞা আবার নতুন করে শিখছি। আমি জানি উইরোপ কান্ট্রিতে ড়্রেস নিয়ে কমেন্ট করা বা সরাসরি তাকানো অন্যায় কিন্তু প্রতিদিন এরকম খোলামেলা ড়্রেস পড়লে চোখের আর কি দোষ বলুন :P :P :P :P ...... ও তো তাকাবেই। যাহোক একদিন নিজ থেকেই বললো, তুমি এশিয়ান? তোমাদের দেশের ছেলেরা অনেক স্লিম বাট হ্যান্ডসাম... মজা করে বললাম, পাত্র কি দেখে দিব?...

একদিন বলেই ফেললাম, তুমি এ ধরনের ড়্রেস পড়ো কেন?
ওর সহজ উত্তর, ছেলেরা পছন্দ করে তাই।
বললাম; তাতে তোমার লাভ? ওরা কি কেউ তোমাকে বিয়ে করবে?
ওর উত্তর: একদিন না একদিন করবে।
মানে কি? আর তুমি ততদিন ফ্লাট করে যাবে!!!
কি করবো বলো, ছেলেরা তো শুধু ফ্লাটই করে বিয়ে আর করে না।
আমি বললাম, তোমাদের দেশে ৭ বছর থেকে স্কুলে এডাল্ট এডুকেশান শেখায়, ফ্রি কনডম বিলি করে!!!!!! আর তোমাদের সংসার সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৫ বছর টিকে কারন তোমরা বোর হয়ে যাও.... একই মুখ প্রতি বছর দেখতে ভালো লাগে না তাই ড্রেস এর মতো তোমরা বয় ফ্রেন্ড/গার্ল ফ্রেন্ড পাল্টাও। লিভ টুগেদার করতে করতে ও বয় ফ্রেন্ড/গার্ল ফ্রেন্ড পাল্টাতে পাল্টাতে বিয়ে করার কথা ভুলে যাও। যখন শেষ বয়সে এসে বিয়ে করো তখন বাচ্চা জন্ম দেয়া বা পালার তো অবস্থা থাকে না। হায়রে উন্নত দেশ !!! আমরাতো দেখি অনেক ভালো আছি সে তুলনায়। পরিবারিক মূল্যবোধ অনেক বড় ব্যাপার আমাদের কাছে। বাবা-মাকে ওল্ডহোমে নয় নিজের কাছে রাখতেই বেশী ভালোবাসি। বিয়ে করি ভাঙ্গার জন্য নয় গড়ার জন্য.... সেক্সই মূল বিয়য় নয় আমাদের কাছে... ভালোবাসা/শ্রদ্ধাবোধ/সেক্রিফাইস আমাদের সংসারকে টিকিয়ে রাখে বছরের পর বছর।
.
.
.
.

এ লিখাটা আমার বাবা-মায়ের জন্য.... তাদের ৫০তম বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছেন গত ২৭ এ সেপ্টেম্বর এ।

সবাই ভালো থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:৩৭
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×