somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

জীবন এখানে যেমন ............. আমার প্রবাস জীবনের ডায়রী...ছাড় ছাড় ছাড় ;) ;)

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ছাড়.... ছাড়.... ছাড়....১০% ছাড়, ৭০% ছাড়.... ছাড়.... ছাড়.... ছাড়....



কানাডায় এসে দেখি ছাড়ের রাজত্ব। প্রতি সাপ্তাহে কম করে কেজি খানিক ফ্লায়ার বাসায় দিয়ে যায়। ফ্লায়ার মানে কোন দোকানে কি ছাড় এবং কত পার্সেন্ট ছাড় দিচ্ছে তার বিশদ বিবরন। এবং সে ছাড়ে কোন ফাকি-ঝুকি নাই সত্যিকারেরই কম দাম।

কানাডায় আসার পর প্রথম প্রথম নাক উচুঁ করে পাশের বাসার ভাবীর সাথে গল্প করতাম, "দেখছেন ভাবী এরা কেমন কৃপন, ১০ সেন্ট ছাড় দিয়েছে তা ও পত্রিকায় ছেপে বাড়ি পৈাছে দেয় আবার সবাই হুমড়ি খেড়ে সে ছাড়ের জিনিস কিনতে যায়। শুধু তাই না, প্রতিটিটা দোকানে দোকানে ঢু মারে ও কিনে যেখানে যা ছাড় দেয়।" যাইহোক সে সব ছাড়কে তোয়াক্কা না করে আমি আমার মতো সংসার গোছাতে লাগলাম... আমার ধারনা ছিল যে তারা নিশ্চয় বাংলাদেশের মতো বেশী দাম লিখে তারপর ছাড় দেয়। যাহোক অনেক কিছুর মধ্যে ৪০ ডলার দিয়ে একটা ফিল্টার জগ কিনলাম ওয়ালমার্ট থেকে। এবং তার ঠিক পর সাপ্তাহে দেখি ওটাতে ৫০% ছাড় দিয়ে দাম হয়েছে ২০ ডলার। নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছে করলো তারপরও ঠিক হলাম না। কদিন পর এক জোড়া বুট ও ৩টা টি শার্ট কিনেছিলাম। তার ১৫ দিন পর দেখলাম ১০০ ডলারের জুতা ৩৫ টাকা আর ২২ ডলারের টি শার্ট ৬ ডলারে ছাড় দিয়েছে... এবার বাকি চুল ছিড়ার অবস্থা। যাহোক চাল ডাল তেল সব কিছুতেই ছাড় থাকে কোথাও না কোথাও এবং অনেক কমে। যেমন গত মাসে ১৭ ডলারের চাল ছাড় দিয়ে হয়েছে ৯ ডলার.... কিনে নিলাম অনেক প্যাকেট। আরেক সাপ্তাহে তেল এ ৯ ডলারের পরিবর্তে ৫ ডলার। কিনে নিলাম কয়েক মাসেরটা.... এভাবে আমার ছাড়ের জীবন শুরু এবং বাকী ভাবীদের মতো আমিও ফ্লায়ার ধরে খোঁজা শুরু করি কোথায় কি ছাড়.... হাহাহাহাহাহা... জীবন যেখানে যেমন।


ছাড়ের আসল রাজত্ব শুরু হয় ক্রিসমাসের সময়। ব্লাক ফ্রাইডে মানে নভেম্বরের শেষ শুক্রবার ও বক্সিং ডে মানে ক্রিসমাসের পরের দিন থাকে মহা ছাড়। ৭০%-৮০% ছাড় থাকে বড় বড় নাম করা স্টোরের সব জিনিসে...শুধুমাত্র একদিনের জন্য। মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে... ভোর থেকে শুরু হয় কেনা কাটা। কাস্টমারের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও অনেক সময়। তাই সে দিনেই সাহস করি হাডসন বে এর মতো দোকানে শপিং করার কারন সেখানে ১০০ ডলারের জিনিস ৪০০ ডলারে বিক্রি হয়। তবে বক্সিং ডে তে সবচেয়ে বেশী থাকে ইলেকট্রিক আইটেমে ছাড়। যে টিভি বা ল্যাপি ৮০০ ডলার তা হয়তো পাবেন ৫০০ ডলার। আর ফার্নিচারে থাকে অনেক ছাড়...... বড় বড় ফার্নিচার সপগুলো প্রথম ১০ কাস্টমারকে ৮০% ছাড় দিল তার পরের ১০ জনকে ৫০% ছাড়.......... ছাড়ের এ সত্যিকারের মৈাসুম ক্রিসমাসের সময় থাকলে ও অন্য সময়ও কম বেশী ছাড় থাকে।


তবে ভালোলাগে ঈদ বা পুজা বা ক্রিসমাসে যখন যেটা বেশী প্রয়োজন সে জিনিসে ছাড় দেয়। যেমন রোজায় ছোলা, খেজুর সহ সব আইটেমে ছাড় থাকে, আবার যখন থ্যাংকস্ গিভিং ডে থাকে তখন টার্কিতে ছাড় দেয়। আমাদের দেশের মতো না যে রোজা আসলেই ১০ টাকার বেগুন ১০০ টাকা ....। সাধারন মানুষকে বিপদে ফেলে ব্যবসা করার বুদ্ধি মনে হয় শুধু আমরাই জানি......



এবার শুনুন আসল রহস্য। প্রফিট মার্জিন নিয়ে পড়ানোর এক পর্যায়ে প্রফেসারকে জিজ্ঞাসা করছিলাম, প্রফেসার, বে এর মতো কোম্পানি ৭০% ছাড় দিয়ে কেমনে ব্যবসা করে? স্যার বললেন, অংক করো.... বে এর যেকোন প্রডাক্ট এর প্রফিট মার্জিন ৪০০%। তো একটা শার্ট ওরা কিনে ১০ ডলারে চায়না থেকে। তারপর অন্যান্য কস্ট যোগ করার পর দাম দাড়ায় ৫০ ডলার। তো ৪০০% মার্জিন মানে বিক্রির দাম ২০০ ডলার। ৭০% ছাড়ের পর দাম ৬০ ডলার। তো লাভ তারপরও কত??? ১০ ডলার!!!!!!!!!! আর লাভ তো ওরা প্রথম ১০০ পিস বিক্রি করেই তুলে ফেলে... বাকিগুলো ফাও B:-) B:-)B:-)

তাই মোরাল: যদি পয়সা বাচাঁতে চান কানাডায় তাহলে কেনার আগে ছাড় দেখুন ও মনের আনন্দে কেনা কাটা করুন.....

ভালো থাকেন আজ এ পর্যন্ত..........
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:২৭
৫৩টি মন্তব্য ৫৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×