somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সোহানী
হাজার হাজার অসাধারন লেখক+ব্লগারের মাঝে আমি এক ক্ষুদ্র ব্লগার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া লেখালেখির গুণটা চালিয়ে যাচ্ছি ব্লগ লিখে। যখন যা দেখি, যা মনে দাগ কাটে তা লিখি এই ব্লগে। আমার ফেসবুক এড্রেস: https://www.facebook.com/sohani2018/

কানাডায় আসার সহজ পথ ........ তরল, কঠিন কিংবা বায়বীয় B:-) ... পর্ব:২

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন, সবাইকেতো আহবান জানালাম কানাডায় আসার জন্য কিন্তু কিভাবে আসবেন আপনি...... ?



হাঁ, আসার তিনটি পথ........ তরল, কঠিন এবং বায়বীয় B:-) কিন্তু কিভাবে !!!! আসেন একটু বিস্তারিত শুনি...............

কানাডায় আসার সবচেয়ে তরল পথ হলো মাইগ্রেশান (সেটা আমরা কম বেশি সবাই জানি..............।) কিন্তু কেন?

বছর দুয়েক আগে ১৩ই ফেব্রুয়ারীতে জার্মান গেছিলাম ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে। এয়ারপোর্ট থেকে ৩০ মিনিটের রাস্তা হলেও ভাই আমাকে দেড় ঘন্টা ঘুড়িয়ে বাসায় পৈাছালো। প্রশ্ন করলে বললো.. সেদিন ছিল জার্মানে বিদেশী প্রতিহত দিবস। ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল, মেরেছিল লাখ লাখ অসহায় নারী-শিশু, তাই বিদেশীদের প্রতি ঘৃনা থেকে তারা এ দিবস পালন করে। কিছু মিছিল, প্লেকার্ড, রাস্তায় বেড়িকেড, পুলিশের সাথে হাল্কা-পাতলা ধাক্কা-ধাক্কি আর বিদেশি পেলে একটু আকটু হেনেস্তা..... তাই এ দিন বিদেশীরা সাধারনত বাইরে বের হয় না। কিন্তু কানাডায় এসে আমি সত্যিই তাজ্জব হয়ে যাই ...... কারন ইমিগ্রেন্টেরা এখানে রাজা মহারাজা। এখানে রেসিজিমতো দূরের কথা ইমিগ্রেন্টরাই সব, হাতে গোনা কয়েকজন অরিজিনাল কানাডিয়ান দেখা যায়।


এখন বর্তমান ট্রুডো সরকার মাইগ্রেশান ল অনেক অনেক সহজ করেছে আর বাড়িয়েছে অনেক সুযো সুবিধা। তাই মাইগ্রেশানই প্রথম সহজ সরল পথ কানাডায় আসার। তবে কিভাবে এ্যাপ্লাই করবেন? প্রথমেই বিনি পয়সার উপদেশ দেই সেটা হলো ভুল্রেও দালাল ধরবেন না। দালাল শুধু আপনাকে ওয়েবসাইট বাংলা করে বোঝাবে, সমস্ত কাগজ অাপনাকেই জোগাড় করতে হবে। তাই আপনি যদি মিনিমাম ইংরেজি পড়তে পারেন তাহলে ভুলেও দালালের খপ্পরে পরবেন না।

একমাত্র সরকারী মাইগ্রেশান ওয়েবসাইট হলো;
http://www.cic.gc.ca/english/

অন্য কোন সাইট কিন্তু নেই। তাই এ সাইটের যাবতীয় তথ্য আগাগোড়া ৫০ বার পড়েন ও সে অনুযায়ী আগান। পয়েন্ট, এডুকেশান, এক্সিপেরিয়েন্স, ইংলিশ স্কোর সহ সব কিছুরই ডিটেইলস বর্ননা আছে, শুধু দরকার ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার। দালালরা এ কাজ করে বলেই তারা এগুলো সহজেই জানে ও বলে দিবে। কিন্তু তার বিনিময়ে যা আপনার কাছ থেকে নিবে তা কিন্তু অনেক।



এবার আসি কঠিন পথ: স্টুডেন্ট ভিসা।

কানাডার আনাচে কানাচে অগা জাগা কলেজে অসংখ্য ইর্ন্টান্যাশানাল স্টুডেন্ট দেখা যায়। এখানে আসার অন্যতম বিকল্প সহজ পথ হলো স্টুডেন্ট ভিসা। এবং এ ইর্ন্টান্যাশানাল স্টুডেন্ট এর বড় অংশই ভারতীয়। আমি প্রথম প্রথম খুব তাজ্জব হতাম, এতো টাকা খরচ করে ওরা কিভাবে আসে!!! কারন কলেজগুলোতে ইর্ন্টান্যাশানাল স্টুডেন্ট এর সেমিস্টার বা কলেজ ফি প্রায় ৪/৫ গুন সাধারন স্টুডেন্ট চেয়ে। তার উপর থাকা খাওয়ার খরচ মিলে বিশাল অংকের টাকা...... এতো ধনী ওরা....। আমার সাথে এক ভারতীয় পান্জাবী ছেলে কাজ করতো ওর সাথে কথা বলে জানতে পারলাম ইন্ডিয়ার পোলাপান কোনরকমে এক সেমিস্টারের টাকা ও ওয়ান ওয়ে প্নেন ফেয়ার জোগাড় করতে পারলেই কানাডার কোন কলেজে এপ্লাই করে ভিসা নেয়। তারপর প্লেন থেকে নেমেই কাজ খোঁজা শুরু করে। যাদের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো তারা কোন বেইজমেন্ট ভাড়া নেয় কয়েকজন মিলে আর যাদের তা নেই তারা কারো না কারো দয়ার উপর থাকে। আর ইন্ডিয়ার বিশাল কমিউনিটি এবং মারাত্বক হেল্পফুল নতুনদের জন্য। বিশেষ করে এখানে পান্জাবী বিশাল কমিউনিটি এবং এরা অসম্ভব সাহায্য করে নতুনদের। কাজ দেয়া, আশ্রয় দেয়া বা খাবার দেয়া... সব কিছুই করে। এটা অনেকটা সার্কেল.... ওরা যখন দাঁড়িয়ে যাবে তখন নতুনদের হেল্প করবে। কানাডার এক কলেজে প্রথম সেমিস্টারে পড়ার সাথে সপ্তাহে বিশ ঘন্টা কাজ করার ওয়ার্ক পার্মিট দেয়। পরে সেটা ৪০ ঘন্টা হয় এবং ওরা এ টাকা ইনকাম করে টিউশন ফি, থাকা খাওয়ার খরচ সব জোগাড় করে ও দেশে টাকা পাঠায়। কি কঠিন প্ররিশ্রম ওরা করে তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। ৪০ ঘন্টা চেক এ কাজ করে আর বাকি সময় কম রেটে ক্যাশ এ কাজ করে মোটামুটি সারারাত সারাদিন সাথে পড়াশুনাতো আছেই নতুবা ভিসা হবে না... বলতে গেলে এ চার বছর ওরা ঘুমায় না রাতদিন পরিশ্রম করে। এভাবে দু'বছর কাটাতে পারলে পিআর এর জন্য এ্যাপ্লাই করে। তার আরো দু'বছর পর সিটিজেনশিপ পেয়ে যায়।

আজাদ ভাইয়ের নীচের লিখাটা পড়তে পারেন। স্টুডেন্ট ভিসার জন্য চমৎকার গাইড।বিদেশে উচ্চ শিক্ষা : প্রতারিত স্বপ্ন আর কনসালটেন্সির বাস্তবতা : আর আপনার করনীয়


শেষে আসি বায়বীয় পথ....... এটা হলো রিফিউজি হিসেবে আসা....অর্থ্যাত বৈধ কাগজ পত্র ছাড়া কানাডায় ঢোকা...।

বর্তমান ট্রুডো সরকার রিফিউজিদেরকে অনেকটা জামাই আদর করে। ট্রাম্প দৈাড়ানো দিসে... সোজা কানাডায়, সিরিয়ায় বোমা চলছে... সোজা কানাডায়, আফ্রিকায় দুর্ভিক্ষ.... সোজা কানাডায়, পাকিস্তানে বোমাবাজি... সোজা কানাডায়, পলিটিকেল ধাওয়া...... সোজা কানাডায়। আর কানাডিয়ান সরকার ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়। তারপর অঢেল সাহায্য........... কিন্তু কিভাবে ঢুকবেন কানাডায় সেটা কিন্তু বায়বীয়...................
-
-
-
আবারো বলছি আমি কোন ইমিগ্রেশান কর্মী নই, নই কোন সমাজ বিজ্ঞানী বা গবেষক... অথবা মাইগ্রেশান নিয়ে আমার কোন পড়াশুনা ও নেই ....। আমার একান্তই চিন্তা-ভাবনা, চারপাশের পরিবেশ, লোকজন এর সাথে কথা বলে যা জেনেছি বা বুজেছি তাই তা নিয়েই এ লিখা এবং নিজ উদ্যোগে এ বনের মোষ তাড়ানোর চেস্টা..... এটি সম্পূর্ন আমার নিজস্ব উপস্থাপনা, নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা। তাই এ নিয়ে উপদেশ বা বাড়তি কিছু যোগ করতে চাইলে মন্তব্যে ঘরে লিখলে আমি এড করে দিব।

-
-
-
উৎসর্গ পত্র: নাম না জানা সে সব হতভাগ্য তরুনদের, যারা জীবনের তাগিদে বিদেশে যেতে চেয়ে স্বর্বসান্ত হয়েছে বা সে সোনার হরিণের কাছে পৈাছানোর আগেই সব শেষ হয়েগেছে। খুব কস্ট হয় যখন দেখি এতো কর্মীর হাতকে আমরা কি অবহেলায় মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেই অথচ ওদেরকে দিয়ে দেশে সোনা ফলানো যেত। একটু যদি সরকার ওদের দিকে তাকাতো... হায়রে অভাগা দেশ!!!!!

আগের পর্ব পড়তে চাইলে..
কেন কানাডা আইবেন !!!

ছবিসূত্র : গুগল মামা
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৯
৩৭টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×