somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লালন একবার বলেছিলেন: এ দেশেতে এই সুখ হলো/ আবার কোথা যাই না জানি ...

১২ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ যতই গানের এই ধ্যানী মানুষটি বিশ্বের মানবতাবাদী মানুষের মন জয় করে নিচ্ছেন, ততই প্রতিক্রিয়াশীলদের আক্রমনের শিকার হচ্ছেন!

ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীলেরা যেদিন লাঠিসোটা নিয়ে বাউল-ভাস্কর্য ভাঙ্গতে গেল- সেদিন প্রায় সারাদিনই লালনের এই গানটা আমার খুব মনে পড়েছিল-

এ দেশেতে এই সুখ হলো,
আবার কোথা যাই না জানি।

গানটা কবে লিখেছিলেন লালন? কোন্ বিপর্যয়কর অবস্থায় লিখেছিলেন? কেন তাঁর দেশত্যাগের ইচ্ছে হয়েছিল? কারা তাঁকে মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছিল?
মূলস্রোতের নয়- বরং, ইসলামের এক বিশেষ ব্যাখ্যার বা মতবাদের অনুসারী ছিলেন লালন; যে কারণে সারাজীবনই মূলস্রোতের বিরাগভাজন হয়ে ছিলেন । নিরাকারের বদলে ভিতরের ঈশ্বররুপ সহজ মানুষ ভজতে বলেছিলেন লালন -মূলস্রোতবাদীরা বিরাগভাজন তো হবেই।

ভজ মানুষের চরণদুটি
নিত্য বস্তু হবে খাঁটি।

এসব কথার কোনও মানে হয়!

শুনি মলে পাব বেহেস্তখানা
তা শুনে তো মন মানে না।

এসব কথার কোনও মানে হয়!
এসব গানের গূঢ় সৌন্দর্য তৎকালীন মূলস্রোতের মহাজনের বোঝেনি। বোঝার কথাও নয় শিল্পবিরোধীদে।প্রমান আছে-তৎকালীন একজন মৌলভি এই মন্তব্য করেছিল-গান হিসেবে লালনগীতি নাকি উচ্চাঙ্গের নয়। কাজেই-
লালনও যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন সমানে। গেয়েছিলেন-

শোনায়ে লোভের বুলি,
কেউ নেবে না কাঁধের ঝুলি।

কিংবা

বিশ্বাসীদের দেখাশোনা করে লালন এ ভূবনে ...

এর মানে: তোমরা যে এত ধর্ম ধর্ম কর ...দেখব কতটুকু বিশ্বাস কর।
লালনকে তাই গোঁড়াদের এত ভয়। বিশ্বাসের কথা বলে যে সব সময় বিশ্বাস-এর স্থির থাকা যায় না - ঘোর বিশ্বাসীরা সেটা ভালো করেই জানে । কাজেই, তাদের নামাজ আর "পারসোনাল মিরাজ" হয়ে ওঠে না। কাজেই, যে ধর্ম প্রচার করতে হয় অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে - সে ধর্ম প্রচারের জন্য মাঝে মাঝে পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর সাহায্য দরকার হয়! আর লালন দূর থেকে বলেন-

বিশ্বাসীদের দেখাশোনা করে লালন এ ভূবনে ...

লালনভক্তরাও আজও তাই করছেন। করবেন।
তখন বলছিলাম যে-লালন ইসলামের এক বিশেষ ব্যাখ্যার বা মতবাদের অনুসারী ছিলেন ; তাঁর পূর্বপুরুষ; সেই মহাত্মা সুফিরা মুগল সম্রাটদের ভোগবাদের তীব্র বিরোধীতা করেছিল। ইতিহাস সাক্ষী: সেই শুদ্ধত্মাদের বন্য হাতির পায়ে নিচে পিষে পিষে মেরে ফেলা হয়েছিল!
মাঝে মাঝে এমন সময়ও আসে। যখন লালনকে লিখতে হয়-

এ দেশেতে এই সুখ হলো,
আবার কোথা যাই না জানি।

গানটা কবে লিখেছিলেন লালন?
কোন্ বিপর্যয়কর অবস্থায় লিখেছিলেন?
কেন তাঁর দেশত্যাগের ইচ্ছে হয়েছিল?
কারা তাঁকে মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছিল?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আজ আমাদের জানা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ৮:৪৭
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×