somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কে ছিলেন চাণক্য?

২৭ শে নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

chanakya। বর্তমান কালের শিল্পীর আঁকা। মুখচোখে খল ধূর্ততা ফুটে উঠেছে ঠিকই।চাণক্য ছিলেন প্রাচীন ভারতের অন্যতম চিন্তাবিদ। খুব বেশি নৈতিকতার ওপর জোর দেননি চাণক্য। বলেছেন খাড়া গাছ আর ভালো মানুষ ধরাশায়ী হয় আগে। রাষ্ট্রপরিচালনায় তাঁর কুটিল নীতির জন্য তার নাম হয়েছিল কৌটিল্য (Kautilya)। প্রাচীন ঋষিদের তুলনায় চাণক্যের এখানেই ফারাক। ছিলেন বাস্তববাদী। তবে আধ্যাত্মিকতাকে অস্বীকার করেননি। বলেছেন-“The happiness and peace attained by those satisfied by the nectar of spiritual tranquillity is not attained by greedy persons restlessly moving here and there.”কামশাস্ত্রের রচয়িতা যে বাৎসায়ন-তার সঙ্গে অনেকেই চাণক্যর সঙ্গে অভিন্ন মনে করেন। চাণক্যর অন্যনাম বিষ্ণুগুপ্ত।

জৈন সূত্র অনুযায়ী চাণক্যর জন্ম বর্তমান ভারতের গোলা জেলার চনক গ্রামের একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে। পরে অবশ্য আজীবিক ধর্ম গ্রহন করেছিলেন চাণক্য। (ধর্মটি নিয়ে এর আগে লিখেছি)
ছেলেবেলা থেকেই পড়াশোনার ঝোঁক। পরিনত বয়েসে তক্ষশিলায় পড়তে এলেন।
সেকালের তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়টি ছিল বর্তমান পাকিস্থানে। বর্তমান ইসলামাবাদের ৩৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ও রাওয়ালপিন্ডির কিছু উত্তরপশ্চিমে।
তক্ষশিলার কাছেই ছিল গান্ধার নগর ও পুস্কলাবতী, মানে বর্তমান পেশওয়ার।
খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৬০০ খ্রিস্টপূর্ব অবধি তক্ষশিলা হয়ে উঠেছিল হিন্দুবৌদ্ধ সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান।
চাণক্য ছিলেন তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য।
কোন্ বিভাগে?
আমাদের সময়ের বিচারে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। আগেই বলেছি মেধাবী ছিলেন চাণক্য। লিখেছিলেন ১৫ পর্বের রাষ্ট্রনীতি নিয়ে গ্রন্থ: অর্থশাস্ত্র। অর্থশাস্ত্রের অধ্যায়গুলি হল-

* I Concerning Discipline
* II The Duties of Government Superintendents
* III Concerning Law
* IV The Removal of Thorns
* V The Conduct of Courtiers
* VI The Source of Sovereign States
* VII The End of the Six-Fold Policy
* VIII Concerning Vices and Calamities
* IX The Work of an Invader
* X Relating to War
* XI The Conduct of Corporations
* XII Concerning a Powerful Enemy
* XIII Strategic Means to Capture a Fortress
* XIV Secret Means
* XV The Plan of a Treatise

অর্থশাস্ত্র পড়তে চাইলে-

Click This Link

অনেকেই মনে করেন চাণক্যই অর্থনীতির জনক। তাকে ভারতীয় ম্যাকিয়াভিলিও বলা হয়।
যা হোক। তখন ৩২৬ খ্রিস্টপূর্ব। ভারতের সীমানায় আলেকজান্দার গ্রিক সৈন্যদের নিয়ে এসে গেছেন। সেই অঞ্চলে পরিস্থিতি থমথমে।
চাণক্য পাটলিপুত্র চলে এলেন। পাটলিপুত্র তখন মগধের রাজধানী। মগধ শাসন করত নন্দরা। সম্রাটের নাম ধননন্দ, ছিলেন জৈন। চাণক্য চাকরি নিলেন নন্দদের প্রশাসনে। ব্রাহ্মন পরিবারে জন্মালেও তক্ষশিলা থাকার সময় আজীবিক ধর্ম গ্রহন করেছিলেন চাণক্য। কী ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হয় সে বিষয়ে চাণক্যর কিছু ধারণা ছিল। সেসব কথা সম্রাট ধননন্দ কে বলতেই চাণক্যর সঙ্গে সম্রাট ধননন্দর মতবিরোধ হল। সম্রাট ধননন্দ অপমান করলেন। চাণক্য পড়াশোনা করা লোক। তার আঁতে ভীষন লাগল। প্রচন্ড মনক্ষুন্ন হলেন তিনি।
মগধ থেকে নন্দ বংশকে উৎখাত করার শপথ নিয়ে উত্তর ভারতের গভীর অরণ্যে পালিয়ে গেলেন চাণক্য। সেখানেই চন্দ্রগুপ্ত নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হল। যুবকের শারীরিক সৌন্দর্য বুদ্ধিমত্তায় আকৃষ্ট হলেন চাণক্য। যুবকের এমনই সাহস-সে নাকি ঝিলাম নদীর পাড়ে গ্রিক শিবিরে ঢুকে স্বয়ং আলেকজান্দারএর সঙ্গে দেখা করে এসেছে!
উত্তেজিত হয়ে উঠলেন চাণক্য। এমন যুবকই খুঁজছিলেন তিনি।
চন্দ্রগুপ্তর পুরো নাম চন্দ্রগুপ্ত মোরা। মোরা মানে ময়ূর। তা থেকে মৌর্য। ইংরেজিতে Maurya. চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যর পূর্বপুরুষেরা ছিল বিন্ধ্যপর্বতে। ময়ূর পালন করত।
চন্দ্রগুপ্ত নন্দদের উৎখাত করল।
মগধে প্রতিষ্ঠিত হল মৌর্য বংশ।
কাজেই, চাণক্য দুটি কারণে ভারতে ইতিহাসে বিশিষ্ট স্থান দখল করে রয়েছেন।

১/অর্থশাস্ত্র লেখার জন্য।
২/ মগধে মৌর্যবংশ প্রতিষ্ঠায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখার জন্য।
মগধে মৌর্য বংশ প্রতিষ্ঠার পর তার রাষ্ট্রপরিচালনা নীতির প্রয়োগ করার অপূর্ব সুযোগ এল। প্লেটোর মতোই চাণক্যও ঋষিরাজায় বিশ্বাস করতেন। চাণ্যকর মতে ঋষিরাজার গুণাবলী হল-

* Has self-control, having conquered the inimical temptations of the senses;
* Cultivates the intellect by association with elders;
* Keeps his eyes open through spies;
* Is ever active in promoting the security & welfare of the people;
* Ensures the observance (by the people) of their dharma by authority & example;
* Improves his own discipline by (continuing his) learning in all branches of knowledge; and
* Endears himself to his people by enriching them & doing good to them.

আর ঋষি রাজা যা করবে-

* Keep away from another's wife;
* Not covet another's property;
* Practice ahimsa (non-violence towards all living things);
* Avoid day dreaming, capriciousness, falsehood & extravagance; and
* Avoid association with harmful persons and indulging in (harmful) activities.

মৌর্যশাসনে কতটুকু চাণ্যকের নীতিমালা কার্যকরী হয়েছিল সে সব নিয়ে বির্তক আজও চলছে।
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য শেষ জীবনে জৈন হয়ে যান।
তাঁর ছেলে বিন্ধুসার মগধের সিংহাসনে বসেন। (ইনিই সম্রাট অশোকের পিতা)
সম্রাট বিন্ধুসারের আমলেরও উপদেষ্টা ছিলেন চাণক্য।
সুবন্ধু ছিল বিন্দুসারের আরেক উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে বিরোধ বাঁধল চাণক্যর। হয়তো চাণক্যকে হত্যা করেছিল সুবন্ধু।
কিংবা চাণক্য নির্বাসনে চয়ে গিয়েছিলেন।
চাণক্যর মৃত্যু ২৮৩ খ্রিস্টপূর্ব বলে ধারণা করা হয়।

আমাদের কালের জন্য চাণক্যর দুটি উপদেশ-

১/ ব্যাক্তি;

“Before you start some work, always ask yourself three questions - Why am I doing it, What the results might be and Will I be successful. Only when you think deeply and find satisfactory answers to these questions, go ahead.”


২/ প্রশাসন।

"It’s just as difficult to detect an official’s dishonesty as it is to discover how much water is drunk by the swimming fish".

চাণক্যর আরও কোটেশন-

http://thinkexist.com/quotes/chanakya/


আরও জানতে হলে -

http://www.hinduism.co.za/kautilya.htm
Click This Link
http://www.worldofbiography.com/9046-Chanakya/







সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫০
২৫টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×