বহুমিল হাব্রালের জন্ম চেকশ্লাভাকিয়ার মোরাভিয়ায়। মার্চ ২৮। ১৯১৪। মোরাভিয়া জায়গাটি চেক প্রজাতন্ত্রের পুবে। হাব্রালের (সৎ) বাবা ছিলেন বিয়ার কারখানার ম্যানেজার। চেকশ্লাভাকিয়ার রাজধানী -আমরা জানি প্রাগ। প্রাগে রয়েছে চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানেই আইন নিয়ে কিছুকাল পড়েছেন হাব্রাল। ১৯৪০ সাল থেকে আমৃত্যু বাস করছিলেন প্রাগ শহরেই।
পঞ্চাশের দশকে ছিলেন লৌহ কারখানায় শ্রমিক। ঐ সময়কার পরিবেশ নিয়ে লিখেছিলেন "হাইপার টেক্সট"।
প্রাগে রয়েছে হুসভা নামে একটি সড়ক। সেই হুসাভা সড়কে রয়েছে একটা পাব। পাবের নাম: "গোল্ডেন টাইগার।" এই পাবেই আড্ডা দিতেন হাব্রাল। এখানেই অনেকের সঙ্গে পরিচয়। যেমন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জাতিসংঘে আমেরিকার প্রতিনিধি ম্যাডেলিন অলব্রাইট ।
মজার মানুষ ছিলেন হাব্রাল । যেমন-কবুতরকে দানা খাওয়াতে ভালোবাসতেন। প্রাগে ৫তলা বাড়িতে থাকতেন হাব্রাল। তাঁর অনেক লেখাতেই ৫তলা থেকে পড়ে আত্মহত্যার কথা রয়েছে। শেষ বয়েসে (১৯৯৭। ফেব্র“য়ারি ৩।) হাসপাতালে থাকার সময় কবুতরকে খাওয়ানোর সময় ৫ তলা থেকে পড়ে মারা যান হাব্রাল।
১৯৬৫ সালে ক্রেসকোতে (জায়গাটি প্রাগ শহরের কাছে) একটি কাঠের বাড়ি কেনেন হাব্রাল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাঝে মাঝে সেই বাড়িতে যেয়ে থাকতেন । একটা পন্টিয়াক গাড়ি ছিল হাব্রালের। তখন চেক প্রজাতন্ত্র সোভিয়েত শাসনের অধীন। সারা চেকশ্লাভিকিয়ায় সব মিলিয়ে ৪টি কি ৫টি পন্টিয়াক ছিল। তার মধ্যে হাব্রালের একটি। ক্রেসকোর সেই কাঠের বাড়ি ভরতি কবুতর। বিড়াল। ছাগল। একটা টেলিভিশন। হাব্রাল পা তুলে বিয়ার খাচ্ছেন-চুরুট টানছেন। হাব্রালের একটি অসাধাণ লেখা আছে। “স্যাড স্টোরিজ অভ হ্যাপি পিপলস।” এক কথায় অসাধারণ। দিন কয়েক আগে মুভিটা দেখলাম। এই ছবিতে রয়েছে ক্রেসকোর নির্জন মফসসল জীবন । হাব্রাল নিজেও রয়েছেন ছবিটায়। ছাগলগুলো পন্টিয়াকে তুলে সকাল বেলায় বেড়িয়ে পড়েন। গাড়ি চালাতে চালাতে দানাপানি খাওয়াচ্ছেন ছাগলদের। তা ছাড়া ছবিতে রয়েছে ক্রেসকোর গাছপালা, লোকজন। একেকজন কমিক ক্যারেকটার ...বিজ্ঞ গাধা।
তখন বলেছি তুখোর গল্প বলিয়ে ছিলেন হাব্রাল। অবশ্য তাঁর প্রথম দিককার লেখাগুলি ছিল নিরীক্ষাধর্মী। যেমন, ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম লেখা “ড্যান্সিং লেসনস ফর দ্য অ্যাডভান্স ইন এজ” মাত্র একটি লাইন।
তাঁর সবচে বিখ্যাত উপন্যাস: ক্লোজলি ওয়াচড ট্রেইনস। বিষয়: এক হাবাগোবা তরুণ ও জার্মান দখলে থাকার সময় একটি চেকশ্লাভাকিয়ার একটি রেলষ্টেশন। এই উপন্যাসটির চলচ্চিত্র রুপটি দেখলাম সম্প্রতি।ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট। এক কথায় অসাধারণ।
হাব্রালের অন্য একটি লেখার নাম: “আই সার্ভড দ্য কিং অভ ইংল্যান্ড।”
এখনও দেখা হয়নি। দেখা হলে লিখব।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






