তেহরানে হেমন্ত
প্রথমে বাতাসে ও পরে পাতায় অদ্ভূত ফিসফিস
রাস্তার চঞ্চল বালকেরা নেমে আসে নিচে
ঠান্ডায় ওরা আশ্রয় নিয়েছিল বিছানায়
দেখছি, কী ভাবে মানুষ দৃশ্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয় চোখ
সংগীত ভালোবেসে
যখন বাতাস বয়-ভিতরের কান্না যেন ঘূর্নি হয়ে ওঠে
পার্কে অবসর নেওয়া মানুষের উদ্বিগ্ন চোখ
তাদের গন্ডদেশে লেপ্টে আছে গভীর অস্থিরতা
নারীরা দ্রুতগামী হয়; লম্বা অস্থির সারি
সবাই কাঁপছে, কচি পাতারা দেখছে
চোখহীন ভিজে টুকরো টুকরো হয়ে বাতাস
নারীকে ঘিরে রাখছে প্রেমে
প্রেমিকের বুকের ওপর যেমন রাখা হয় কাঁধ
-শীত লাগছে, হঠাৎ শীত লাগছে, তোমার কি শীত করছে না?
-না, তোমার চুম্বন আমাকে উষ্ণ রেখেছে।
তারপর সোয়ালো পাখিদের দিকে অবতল ধারালো ঠোঁট তাক করে;
একটা স্থূল কাক উড়ে গেল দিগন্তের দিকে
বাতাসে বন্যতা, কাকের চিৎকার: অগ্নিবলয়ের ঋতু আসছে: আমি তোমার সম্রাট!
শাখাগুলোতে লুটপাট শুরু হল সন্ধ্যায়
যেন এর শেষ নেই
তারপর বৃষ্টির স্ফুলিঙ্গ-বাতাস
রাস্তার আলোয় অজস্র ছোট ছোট ভেজা রঙিন সিঁড়ি আকাশ থেকে নেমেছে
ছাতা ছাড়া খালি হাতে মানুষ হাঁটছে
মাথার ওপর খবরের কাগজ তুলে ধরে
উজ্জ্বল উত্তর থেকে রাত্রি ধেয়ে চলেছে কৃষ্ণকায় দক্ষিণের দিকে
আর পর দিন
পৃথিবীর রাস্তাগুলো সব সুগন্ধে ভরপুর
পাতার স্তুপ থেকে এসেছে আফিমের ঋতু
পৃথিবীতে অদ্ভূত এক ঝিমুনি নেমেছে
এবং একঘেঁয়ে প্রহরে হেমন্ত মানব
তার কাঠের বর্শা দিয়ে খোঁচা মারছে মৃত পাতার খাদ্যে

রেজা বারাহেনি
ইরানের তাবরিজ শহরটায় তুর্কিদের সংখ্যা বেশি।

ইরান। উপরে তাবরিজ শহরটা দেখা যাচ্ছে।

তাবরিজ
কবি রেজা বারাহেনির জন্ম তাবরিজে। ১৯৩৫ সালে ; কবির মাতৃভাষা তুর্কি হলেও ফারসি ভাষায় লিখতেন। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকান ও ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপনা করেছেন বারাহেনি।

ইরানের শাহের ছবি
শাহের আমলে কবিকে নির্যাতন করা হয়েছে। বন্দি করা হয়েছে। শাহের পতনের পর কবি আবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন।

ইসলামী বিপ্লব ...
ইসলামী বিপ্লবের পর বারাহেনি আবার চাকরিচূত্য ও বন্দি হন।

ইরানের কবি রেজা বারাহেনি: শত নির্যাতনেও অটল
বর্তমানে বারাহেনি কানাডায় আছেন। নির্বাসনে। কবিতা ছাড়াও প্রচুর উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখেছেন বারাহেনি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





