somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: তিতা-কটূর খপ্পরে

১৯ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনে আছে তো শেষ রাতে অশথ গাছে ঘুম ভাঙ্গার পর নীলপরি রাকা পরির দেশে কোনওমতে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিল, আর ঘুমিয়ে পরার পর একটা স্বপ্ন দেখছিল? আমি কিন্তু তোমাদের সেই স্বপ্নের কথাই লিখে যাচ্ছি। এই যে পিদিম বাঘ হল এটাও কিন্তু রাকা স্বপ্নেতেই দেখল।
তুমি বলবে, রাকা তো এখানে নেই , রাকা তাহলে কী করে পিদিমদের দেখতে পেল?
কেন মনে নেই, আমি তোমাদের আগেই বলেছি আমরা যেমন থাকি, সেই রকম রাকা স্বপ্নের সবখানে নাও থাকতে পারে।
কেন এমন হয়?
পরিদের স্বপ্ন এমনই হয়। হ্যাঁ, এটাই নিয়ম।
হ্যাঁ, এখন রাকার স্বপ্নের বাকিটা শোন।


আকাশ-পথে এই প্রথম পৃথিবীতে নামছিল রাকার ছোট বোন আঁকা। রাকার মতন আঁকাও কিন্তু নীল পরি। যেমন ওর বড় বোন রাকাও নীল পরি। হ্যাঁ। ওর বোনই হল রাকা যার সঙ্গে এই বইয়ের শুরুতে পিদিমের দেখা হয়েছিল ।
চাঁদের গা ঘেঁষেই আকাশপথ। পরির দল হাত ধরে গোল হয়ে ভাসতে ভাসতে নীচে নামছিল। আজ আকাশে মস্ত বড় একটা চাঁদ উঠেছে বলে আকাশপথটা জোছনায় টইটম্বুর হয়ে ছিল। আঁকার যে কী ভালো লাগছিল। ও খুশি আর আনন্দের মধ্যে ডুবে যাচ্ছিল।
আকাশের পথটা দিয়ে নামতে নামতে আঁকা ভাবছিল নীচের ওই পৃথিবীটা কী সুন্দর। আর এই চাঁদের আলো ছড়ানো আকাশপথটাও কী সুন্দর। উড়তে এত ভালো লাগছে। আগে যে কেন আসিনি। মা শুধু-শুধু এতদিন আসতে দেয়নি। আসতে দিলে কী এমন হত। মা বলত, ছোটদের পৃথিবীতে নামার নিয়ম নেই।
এই নিয়ম যে কী, তা আঁকা মোটেও বোঝে না।
হলুদ পরি আফসানা আজও ভুল করে বসল। ও দলছুট হয়ে আজও সাদা মেঘের ভিতরে ঢুকে গেল আইসক্রিম মনে করে। দৃশ্যটা দেখে নীলপরি রাকা, লালপরি সাবা আর সবুজপরি আনিলার কী হাসি। খয়েরি পরি আইরিনও হাসছিল।
কেবল আঁকা বুঝল না কেন ওরা হাসছে।
হলুদ পরিটা বেশ পেটুক নারে? আনিলা বলল। রাকা বলল, আসার আগে মা সবাইকে একবাটি করে পায়েস খাইয়ে দিল। আর এক্ষুনি ওর খিদে পেয়ে গেল!
শুনে সবাই হি হি করে হেসে উঠল। আঁকা এবারও বুঝল না কেন ওরা হাসছে। না বুঝলেও ও একটু মুচকি হাসল। সবাই হাসছে যখন তখন একেবারে না হাসলে যে ওড দেখায়।
ওদিকে সাদা মেঘের মধ্যে ঢুকে ভুল বুঝল আফসানা । এ কী! এ তো আইসক্রীম না। শুধুই সাদা মেঘ। ভুল বুঝে ও পরির দলে ফিরল। মুখটা লাল হয়ে উঠেছে। আড় চোখে একবার অন্যদের দেখে নিল। আনিলা খোঁচা মারতে ভুলল না। কী রে, কেমন আইসক্রীম খেলি?
আফছানা কিছু বলার আগেই পরির দলটা ঝিলিমিলি নদীর ধারে নামল।
আঁকা ভাবল এটাই তা হলে ঝিলিমিলি নদী? বাহ্, কী সুন্দর। চাঁদের আলোয় নদীতে রুপো গলা পানির ঢল। নদীর পাড়ে ছড়ানো অনেকটা বালির পাড়, পাশেই ঘাসের বন। বাতাসে দুলছে। দিনের আলোর মতন হয়ে আছে।
আনিলা গান ধরল:

আমরা হলাম পরি
নাচি আর ঘুরি।
হাতে দিই তালি
চোখে নেই কালি ।

আঁকা কেবল আশেপাশে ঘুরে বেড়াতে লাগল। ও আজই প্রথম এল কি না। পরিরা সবাই ভাবল, থাক, আঁকাটা ঘুরে বেড়াক। কী আর হবে। আমরা তো কাছেই আছি।
বালুচরের কাছেই ঘাসের বন। বাতাসে ঘাসগুলি দুলছিল। বালির ওপার ঘাসেদের ছায়া পড়ে আছে আর তাতে কী মায়াময় হয়ে আছে সবকিছু। আঁকা হাঁটতে হাঁটতে ঘাসেরর বনের কাছে চলে এল।
পরিদের গান তখনও শোনা যাচ্ছিল:

আমরা হলাম সুখি
আমরা গান করি,
ফুলের মালা পরে
নাচি ঘুরি ঘুরি ।

গানটা লিখেছে রাকা। সুর দিয়েছে আনিলা। গাইছেও আনিলা। আজ অবশ্য অন্যরাও গাইছে। গাইছে আর ঘুরে ঘুরে হাত ধরে নাছছে।
আঁকা হাঁটতে হাঁটতে ঘাসের বনের ভিতরে চলে এল। ওখানেই তো পিদিম ঘুমিয়ে ছিল। ঘুমিয়ে থাকা পিদিমকে দেখে আঁকা ভাবল: এ আবার কে? ঘাসের বনের মধ্যে ঘুমিয়ে রয়েছে। ইস, এ মনে হয় খুবই গরীব। এর ঘরবাড়ি নেই। নইলে এ খোলা আকাশের তলায় ঘাসের বনেই বা ঘুমিয়ে থাকবে কেন? ভাবতেই আঁকার মন খারাপ হয়ে গেল। ভাবল, এ মনে হয় এখানেই থাকে। তার মানে এ হল পৃথিবীবাসী। কিন্তু এ দেখতে অনেকটা ভূতের মতন কেন?
অনেকক্ষন ধরে আকাশ থেকে শিশির পড়ছিল পিদিমের চোখের ওপর। আর তাতেই পিদিমের ঘুম ভেঙ্গে গেল। ও চোখ কচলে উঠে বসল। এখন রাত না দিন? রাত হলে - এখন কত রাত? পিদিম হাই তুলে ভাবল। অনেক ক্ষন কি ঘুমালাম? ভেবে চোখের সামনে আঁকাকে দেখে ভীষনই অবাক হয়ে বলল, আরে রাকা তুমি?
আঁকা সাংঘাতিক অবাক হয়ে বলল, আমি রাকা নই তো।
পিদিমও সাংঘাতিক অবাক হয়ে বলল, তুমি রাকা নও? তা হলে তুমি কে বল তো?
আঁকা বলল, আমার নাম আঁকা। আমি হলাম একটা নীলপরি। আমার বয়স ছয় বছর।
পিদিম কী ভেবে বলল, বুঝেছি। তা নীলপরি রাকা কি তোমার বোন হয়?
হ্যাঁ, তাই তো।
পিদিম বলল, এইবার বুঝেছি। তা তুমি কি রাকাদের সঙ্গে এসেছ?
হ্যাঁ,ভাই। আমি আজই প্রথম এলাম। তুমি কে ভাই?
পিদিম বলল, আমার নাম পিদিম। আমি একটা সাদা ভুত। আগে শহরে ছিলাম। এই মাসখানেক হল এই গড়পাড়া গ্রামে এসেছি।
ও। এই গ্রামের নাম বুঝি গড়পাড়া?
হ্যাঁ, তাই তো।
আমায় তাহলে গ্রামটা ঘুরে দেখাও না। আমি জীবনে গ্রাম দেখিনি। এই প্রথম এলাম কিনা।
পিদিম ভাবল, এ যখন রাকার বোন হয় তখন একে গ্রামটা ঘুরিয়ে দেখানো যায়। এত রাতে জোছনারা ঘুমিয়ে পড়েছে নইলে তোমাকে ওখানে নিয়ে যেতাম। পিদিম বলল, গ্রাম দেখবে? এ আর এমন কী। তা হলে চল তোমায় ঘুরিয়ে সব দেখাই।
চল। খুশি হয়ে আঁকা বলল।
পিদিম আঁকাকে নিয়ে খালপাড়ের দিকে যেতে লাগল। অশথ গাছের দিকে একবার তাকাল। কোনও সাড়াশব্দ নেই সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে মনে হল।
আঁকা জিগ্যেস করল, তুমি বললে তুমি শহরে ছিলে। তাহলে শহর ছেড়ে এখানে কেন এলে ভাই?
পিদিম বলল, অনেক দুঃখে ছেড়েছি। ওখানে লোকজন বেশি। রাস্তায় জ্যাম। ঠিকমতো হাঁটতে পারিনা। আর রাত্রিবেলা ইলেকট্রিকের আলো জ্বলে। লোকজন অনেক রাত পর্যন্ত টিভি দেখে। ভয় দেখালে ভয় পায় না। শহরের ছোটরাও আমাদের দেখে মানে ভুতেদের দেখে টিটকিরি দ্যায়। তাই মনের দুঃখে শহর ছেড়েছি।
কথা বলতে-বলতে ওরা খালপাড়ের বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে গ্রামের পথে নামল। পথটা উঁচু। একধারে খাল আর অন্যপাশে ধানের ক্ষেত। রাতের গ্রাম জোছনায় ভেসে অপরুপ হয়ে ছিল আর চারদিক ভারি শুনশান করছিল। নিশুতি রাত একেই বলে। নীলাভ আকাশে ডানা মেলে উড়ে গেল কোনও রাতচরা পাখি। মাঝে-মাঝে অবশ্য নির্জনতা ভেঙ্গে দূরের বিলাইমারি জঙ্গল থেকে শেয়ালের ডাক ভেসে আসছিল। আর কান পাতলে ঝিঁঝিদের একটা ডাকও শোনা যায়। রাঘবদের দিঘীতে একটা কাতলা মাছে ঘাইয়ে দিঘীর জলে যে শব্দ উঠল তাও কান পাতলে শোনা যায়।
আঁকা জিগ্যেস করল, পিদিম তুমি যে শহর ছেড়ে এখানে থাক, তোমার কষ্ট হয় না?
পিদিম বলল, হয় না আবার?
কেমন?
পিদিম বলল, এখানে খাওয়াদাওয়ার কষ্টই বেশি। শহরের থাকার সময় পেটভরে কেক-পেষ্ট্রি-বার্গার-পিৎসা খেতাম। বেইলী রোডের কাছেই থাকতাম কিনা। আর ঘন্টায় ঘন্টায় চা-কফি না হলে কোক-স্প্রাইট। এখানে কফি আর কোক তো দূরের কথা চা জোটানোই মুশকিল। এখানে সবাই কাঁচা মরিচ দিয়ে পান্তাভাত খায়। টকটক লাগে খেতে। আহা আবার যদি শহরে ফিরে যেতে পারতাম।
কথা বলতে বলতে ওরা তালপুকুরের পাশে ময়নার মাঠে চলে এল।
আঁকা বলল,একটু জিরিয়ে নিই অনেকক্ষন হাঁটা হল।
হ্যাঁ সেই ভালো।
ওরা একটা বকুল গাছের তলায় দাঁড়াল। এই বকুল গাছেই বাঘের ভয়ে চড়ে বসে তখনও ঠকঠক করে কাঁপছিল তিতা-কটূ।
ওরা ডালপালার আড়ালে লুকিয়ে থেকে আঁকা আর পিদিমের কথা বেশ ভালো করেই শুনতে পেল।
আঁকা বলল, ভাই পিদিম, তখন তুমি পান্তাভাতের কথা বললে না? আমি কিন্তু জীবনে কখনও পান্তাভাত খাইনি। জানত, পরির দেশে পান্তাভাত হয় না। কাঁচা মরিচ ডলে ডলে আমার এখন ভারি পান্তাভাত খেতে ইচ্ছে করছে যে।
এক ঝাঁক মশা কামড়াচ্ছিল। পিদিম পাটা ঝেরে বলল, ধ্যাত, তুমি পান্তাভাত কী খাবে । বরঞ্চ তুমি দইমিষ্টি খেতে চাইলে খাওয়াতে পারি, আমাদের দেশে প্রথম এলে। তা ছাড়া এখন তো আর পান্তাভাত পাওয়া যাবে না। এখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। তা ছাড়া পান্তাভাত হয় সকাল বেলায়। তুমি না হয় কাল সকালে খেও।
তুমি জান না আমি পরি। আমাদের যে সূর্যি ওঠার আগেই পরির দেশে ফিরে যেতে হবে। না না আমি এখনই পান্তাভাত খাব। এ এ। বলে আঁকা কেঁদে উঠল।
আঁকটা কথায়-কথায় কাঁদে দেখছি। পিদিম মুশকিলে পড়ল। এত রাতে তো আর পান্তা পাওয়া যাবে না। হয়তো মিষ্টি দেখলে আঁকার কান্না থামতে পারে। রাতের বেলা গড়পাড়ার হাটের ময়রারা রাত জেগে দইমিস্টি বানায়। ওর জন্য বরং হাট থেকে এক কে.জি রসগোলা নিয়ে আসি। হ্যাঁ, এখন হাটে যাওয়াই ভালো। পিদিম বলল, ঠিক আছে তুমি এখানে দাঁড়াও। আমি দেখছি কোথাও পান্তাভাত পাওয়া যায় কিনা। বলেই, পিদিম চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে গেল।
বকুল তলায় দাঁড়িয়ে আঁকার কাঁন্না কিন্তু থামল না। পান্তা খাবে বলে নয়। পান্তা তো পিদিম আনতে গেছে। আঁকার পায়ে একটু পরপর কী যেন কামড়াচ্ছিল। আঁকা তাই ব্যাথা পেয়ে কাঁদছিল। আসলে আঁকাকে কামড়াচ্ছিল মশারা। কিন্তু আঁকা তো মশাই চেনে না, কারণ পরির দেশে তো মশাফশা পাওয়া যায় না। ওদিকে মশারা পরিদের রক্ত পেয়ে ভারি খুশি। এমন বড় একটা পাওয়া যায় না।
পিদিম আর আঁকার কথাবার্তা শুনে তিতা-কটূর ঠকঠকানি কমল। তিতা ফিসফিস করে বলল, সন্ধ্যের মুখে যতই বাঘের মুখে পরি ভাগ্য ভালই মনে হচ্ছে। কী বলিস? গাছের নীচে জলজ্যান্ত একটা নীলপরি দাঁড়িয়ে আছে।
কটূ চাপা গলায় বলল, ঠিকই বলেছিস। নীচের ওটাকে সার্কাসের মালিক রব্বানীর কাছে তুলে দিয়েই সাদা ঘোড়াটা বাগাব। হ্যাঁ, ভাগ্য ভালো। নইলে একটা পরিই-বা কেন হাঁটতে হাঁটতে গাছের তলায় এসে দাঁড়াবে। বলে কটূ নামতে লাগল।
তিতা বলল, এত শখ করে নীচে নামছিস যে? বাঘের কথা মনে নেই?
কটূ বলল, আসলে ওটা বাঘ ছিল না।
তাহলে?
ওটা বিশু বহুরুপির কাজ।
কী করে বুঝলি? তিতা জিগ্যেস করল।
কটূ বলল, নইলে এতক্ষনে বাঘ দুএকবার গাছতলা দিয়ে যেত না। একবারও গর্জন করতে শুনেছিস?
না তো।
তাহলে? নাম। বলেই তিতাই প্রথম সরসর করে নীচে নেমে এল। নেমে এসে আঁকার সামনে দাঁড়াল। কটূও নেমে এল। আঁকা বড় বড় চোখ করে তাকালো। বলল, তোমরা কে ভাই? এই গাছ থেকে নেমে এলে? তোমরা কি গাছে থাক?
না ভাই আমরা গাছে থাকি না। আমরা বাসায় থাকি। আমার নাম তিতা।
আর আমি হলাম কটূ। আমরা এই গ্রামেই থাকি। তুমি পান্তাভাত খেতে চাও তো?
হ্যাঁ।
তা হলে আমাদের সঙ্গে চল। আমরা তোমাকে পান্তাভাত খেতে দেব।
আঁকা আমতা-আমতা করে বলল, তোমাদের সঙ্গে যাবো ...কিন্তু ... কিন্তু পিদিম যে আমার জন্য পান্তাভাত আনতে গেল।
কটূ বলল, ও তো আমাদের বাড়িতেই গেল।
আঁকা বলল, ও। তা হলে চল তোমাদের বাড়িই যাই। ওখানেই তাহলে পিদিমকে দেখতে পাব।
আঁকা খুব খুশি হল। পৃথিবীর মানুষেরা খুব ভালো। মনের কথা বুঝতে পারে। ও খুশি মনে তিতাকটূর সঙ্গে চলতে লাগল। জিগ্যেস করল, পান্তাভাত খেতে নাকি টক টক?
তিতা কটূর দিকে চেয়ে চোখ টিপে বলল, হ্যাঁ। খেলেই বুঝবে।
ওরা হাঁটতে হাঁটতে খাল পেরিয়ে, ঘন বাঁশের ঝাড় পেরিয়ে, গ্রামের শ্মশানটা পেরিয়ে গ্রামের শেষ প্রান্তে বিলাইমারির জঙ্গলে চলে এল। জায়গাটা ভাল না। সাপখোপের ভয়ে লোকে সচরাচর এদিকে আসে না। এখানেই একটা কাঠের ঘরে ছিল তিতাকটূর গোপন আস্তানা। কাঠের ঘরটা পুরনো হলেও মজবুত। চারিদিকে গাছপালায় ঘেরা। ঝিলিমিলি নদীটার পাড় এখান থেকে খুব কাছে।
ওরা একতলা কাঠের বাড়ির সামনে এসে থামল।
আঁকা জিগ্যেস করল, এটা তোমাদের ঘর?
তিতা পকেট থেকে চাবি বার করে দরজা খুলতে খুলতে বলল, হ্যাঁ। মাথার ওপর দিয়ে একটা বাদুড় উড়ে গেল। দূর,হতচ্ছাড়া বলে সে পকেট হাড়তে দেশলাই জ্বালাল। তারপর হ্যারিকেন জ্বালালো। ঘরে বড় সর একটা টেবিল। টেবিলের ওপর নানা রকমের বাতিল জিনিসপত্র। নষ্ট টিউবলাইট, বাল্বের হোল্ডার, একটা নষ্ট টেবিল ল্যাম্প, কালো রঙের স্কচটেপ, বড় একটা রেঞ্জ, ন্যাপথলিন, রঙের টিউব, খালি আতরের শিশি। এইসব।
তিতা কটূকে বলল, তুই এখানে থাক। আমি বরাব্বানীর সঙ্গে দেনদেবরার করে আসি। বলে তিতা বাইরে চলে গেল।
টেবিলের পাশে একটা হাতলভাঙ্গা চেয়ারে বসতে বসতে আঁকা বলল, ও কোথায় গেল ভাই?
তোমার জন্য পান্তা আনতে। বলেই কটূ একটা সিগারেট ধরাল। নতুন অভ্যেস করছে বলে খকখক করে কাশল কিছু ক্ষন।
কটূর নাকমুখ দিয়ে ধোঁওয়া বেরুচ্ছে বলে আঁকা অদ্ভূতভাবে ওর দিকে চেয়ে রইল।
ওদিকে মাঝরাত পেরিয়ে গেছে বলে হাটে তেমন সাড়াশব্দ নেই। কুকুরগুলোও লেজগুটিয়ে শুয়ে পড়েছে কোনও বেঞ্চের তলায়। মধু ময়রার দোকানে কেবল আলো জ্বলে রয়েছে। দোকানের লোকদের ভয় দেখানো জন্য পিদিম সত্যিকারের ভুতের রুপ ধরে দোকানের ভিতরে ঢুকল। আসলে ভয় দেখানোর দরকার ছিল না। মধু ময়রা দোকানে ছিল না। তার ছেলে যদুময়রা ততক্ষনে মিষ্টি-টিষ্টি বানিয়ে নাক ডেকে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘরের বাতি নেভানো। কিন্তু পিদিম স্পষ্টই দেখল রসগোল্লার কড়াইটাই সবচে বড়। ও গপগপ করে ডজনদুই রসগোল্লা গিলে ফেলল আগে। গিলে ঘরের কোণে কলসী থেকে ঢক ঢক করে পানি খেল। আহ। কী শান্তি। পিদিম এবার ধীরেসুস্থে দেখেশুনে একটা মাটির হাঁড়িতে গুনে গুনে বারোটা রসগোল্লা নিল। কমই নিল। আঁকা অত রসগোল্লা খেতে পারবে না। ও গপগপ করে ডজনদুই রসগোল্লা গিলেছে বলে পিদিমের আর আজ রাতে রসগোল্লা না খেলেও চলবে।
রসগোল্লা নিয়ে চোখের নিমিষে বকুল গাছের তলায় ফিরে এল পিদিম।
কিন্তু এ কী! বকুল গাছের তলায় আঁকা দাঁড়িয়ে নেই তো। সর্বনাশ! আঁকা কোথায় গেল? ছোট্ট এইটুকুনি পরি, যদি পথ হারিয়ে ফেলে? পিদিমের বুকটা ধক করে উঠল। এদিক-ওদিক খুঁজে যখন আঁকাকে পেল না তখন ওর সারা শরীর হিম হয়ে গেল আর হাত থেকে রসগোল্লার হাঁড়িটা পড়ে গেল।
পিদিম বকুল গাছের দিকে চাইল। মশার কামড়ে অস্থির হয়ে আঁকা ওখানে উঠে বসে নেই তো। ভাবতেই পিদিম সরসর করে গাছের ওপরে উঠে এল। না, আঁকা এখানেও নেই। বকুলগাছের পাতার ফাঁকে মস্ত একটা চাঁদ। রাতের বাতাসে পাতার সরসর শব্দ উঠছে কেবল।
ও বকুল গাছ থেকে নেমে এল।
গেল কই পরিটা? ও দিঘীর দিকে তাকাল। ওখানে পড়েটরে যায়নি তো? দীঘির জলে চাঁদের ছায়া। ছোট ছোট ঢেউ। দূরে শেয়াল ডাকল একবার। সমস্ত গ্রামটা নির্জন হয়ে রয়েছে।
পিদিম বাতাসের গতিতে একবার পুরো গ্রামটা ঘুরে এল।
না, আঁকা কোথাও নেই। তালগাছের মাথায় দেখল, নেই। মসজিদের পাশে নারকেল গাছের মাথায় দেখল, নেই। গ্রামের প্রতিটি ঝোপঝারে দেখল, নেই। এমন কী জোছনাদের বাড়ির ছাদেও দেখল, নেই। নেই, আঁকা কোথাও নেই।
পিদিমের এখন সত্যি সত্যি কান্না পাচ্ছে। ইস, আঁকা তাহলে হারিয়ে গেল। রাকা ওর বন্ধু আর আঁকা ওরই বোন। তা হলে এখন রাকার কাছে মুখ দেখাব কী করে? ভাবতে ভাবতে ও অশথ গাছের তলায় চলে এল। তারপর গাছের গুঁড়িতে বসে কাঁদতে লাগল।
অশথ গাছের বাশিন্দারা সবাই ঘুমিয়ে ছিল। এখন পিদিমের কান্নায় জেগে উঠল। সবাই সরসর-খড়খড়- ছড়ড় ছড় শব্দে গাছ তলায় নেমে এল।
কী হয়েছে পিদিম? দাঁড়কাক গড়ান জিগ্যেস করল।
গড়ানের প্রশ্নের উত্তর দিল না পিদিম । বরং কাঁদতে থাকল।
ফিঙে পাখি চিরি বলল, আহা বলই না কী হয়েছে পিদিম? তুমি কাঁদছ কেন?
কুটুস নামের কাঠবেড়ালীটা বলল, কী হয়েছে বল না? কাঁদছো কেন? না বলে আমরা বুঝব কী করে?
পিঁপড়ের দল লালসারি বলল, কী হয়েছে পিদিম? আমরা কি তোমার উপকারে আসতে পারি?
পিদিম কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, শুনে কী করবে। সর্বনাশ যা হওয়ার তাতো হয়েই গেছে।
ভূতুম নামের কাছিমটা চমকে উঠে বলল, কার সর্বনাশ হয়েছে ? আমি তো মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না।
এরপরও পিদিম চুপ করে থাকল।
কী ব্যাপার বলবে না কী হয়েছে? গড়ান বলল।
পিদিম এরপরও চুপ করে থাকল। আর কাঁদতে থাকল। তখন ভুতুম নামের সেই কাছিমটা বলল, চল ভাই, আমরা সবাই চলে যাই। পিদিম যখন বলবেই না কী হয়েছে। চল আমরা আরাম করে ঘুমাই গিয়ে। মিছিমিছি মজার ঘুম বাদ দিয়ে পিদিমের নাকি গলায় কান্না দেখে লাভ নেই। পিদিমের ব্যাপার পিদিমই সামলাবে। চল।
কুটুস শাসিয়ে বলল, কাঁদতে চাও তো অন্যখানে যাও পিদিম, এখানে কেঁদে-কেঁদে আমাদের ঘুম ভাঙ্গিয়ো না।
চিরি বলল, হ্যাঁ সেই ভালো। এখন চল আমরা ঘুমাই।
ওরা সবাই চলে যাচ্ছে দেখে পিদিমের বুকটা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। বিপদের দিনে বন্ধুরা চলে যাচ্ছে। ও মরিয়া হয়ে বলল, দাঁড়াও দাঁড়াও বলছি। তোমরা যেও না। প্লিজ।
ওরা সব ফিরে এল।
পিদিম তখন সব খুলে বলল। কে রাকা আর কে আঁকা। আঁকার সঙ্গে দেখা হল কোথায় আর আঁকা পান্তাভাত খেতে চাই তখন তালপুকুরের পাশে ময়নার মাঠে বকুল গাছের তলায় আঁকাকে দাঁড় করিয়ে রেখে গড়পাড়ার হাটে মিষ্টি আনতে গেল, এসে দেখল যে আঁকা নেই। সেই দুঃখেই তো পিদিম এখন বসে কাঁদছে।
সব শুনে ফিঙ্গে পাখি চিরি ওকে এক হাত নিল। বলল, আঁকা এইটুকুনি পরি যখন তখন ওকে ফেলে তুমি হাটে গেলে কোন আক্কেলে বলি শুনি?
পিদিম মাথাচুলকে বলল, কথাটা তখন মাথায় আসেনি যে।
গড়ান গম্ভীর গলায় বলল, রাকারা এখন কোথায়?
পিদিম বলল, মনে হয় ওরা এখনও ঝিলিমিলি নদী ধারে।
চিরি বলল, ওদের কাছেও তো চলে যেতে পারে আঁকা। ওদের একটা খবর দেওয়া দরকার । হাজার হলেও আঁকা রাকার ছোটবোন।
পিঁপড়ের দল লালসারি বলল, যাই আমরাই খবর দিয়ে আসি।
না তোমরা গেলে দেরি হয়ে যাবে, যাই, আমিই বরং যাই, ওদের দুঃসংবাদটা দিয়ে আসি। বলেই চিরি আকাশে উড়ল। কুটুস বলল, আমরাও না হয় আঁকাতে খুঁজতে বেরোই। হাজার হলেও ও আমাদের অতিথি। ওর ক্ষতি হলে আমাদের দুর্নাম হবে।
পিদিম বলল, হ্যাঁ তাই যাও। আমি এখানেই থাকি। রাকার সঙ্গে আমার কথা বলার দরকার।
ওরা ঘুরে যেতেই পিদিম বলল, শোন। আঁকা দুষ্টুলোকের খপ্পরেও পড়তে পারে। আমি সেরকম তিনজনকে সন্ধেবেলায় মানিকদের আমবাগানে দেখেছি। ওরা জোছনাদের গরুটা চুরি করে দুষ্টু একটা লোকের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছিল। যদি দেখ আঁকা সেরকম কারও হাতে পড়েছে তা হলে আমাকে খবর দিও। তোমরা কিছু করতে যেও না।
আচ্ছা। বলেই আকাশে উড়ল গড়ান।
কুটুসটাও একলাফে ওপাশে খালের ধারে অদৃশ্য হল। লালসারি আর ভুতুমও বসে রইল না। ওরা উত্তর আর পশ্চিমে গেল খুঁজতে।
অশথ গাছের তলা ফাঁকা হয়ে গেল। পিদিম একাই বসে রইল। ওর বুকে খুব যন্ত্রনা হচ্ছে। আঁকাকে যদি না-পাওয়া যায়। রাকা নিশ্চয়ই ওকেই দোষ দেবে।
ওদিকে কিন্তু পরিদের দলটাও আঁকাকে খুঁজছিল।
ঝিলিমিলি নদীর ধারে নাচতে নাচতে গাইতে গাইতে হঠাৎই মনে পড়ল এ কী ! আঁকা গেল কোথায়? সত্যিই আঁকা কোথাও নেই। ওরা ঘাসের বনের ভিতরে আঁকাকে খুঁজল। নেই।এখন কী করা যায়। ওরা বালুচরে ফিরে এসে গোল হয়ে বসে ভাবতে লাগল।
আনিলা বলল, ইস, আমরা আঁকাকে হারিয়ে ফেললাম। এখন পরির দেশে ফিরে কী করে মুখ দেখাব।
সাবা বলল, আমিও তাই ভাবছি।
রাকা কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, আঁকাকে না-পেলে কী হবে।
আফসানা শান্ত্বনা দিয়ে বলল, ভাবিস নে রাকা দেখবি ঠিকই একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
এমন সময় আকাশ থেকে নেমে এল চিরি। পরিদের মাঝখানে বালির ওপর নেমে বলল, আঁকা কি তোমাদের কাছে?
আফসানা বলল, না তো।
চিরি জিগ্যেস করল, তোমরা কি আঁকা কে খুঁজছ?
দীপা অবাক হয়ে বলল, হ্যাঁ। কিন্তু তুমি জানলে কি করে?
চিরি বলল, রাকা কে?
অবাক হয়ে রাকা বলল, আমি। তুমি কে?
চিরি বলল, আমার নাম চিরি। আমি হলাম একটা ফিঙে পাখি। আমি পিদিমের বন্ধু।
ও, পিদিম, ওতো আমার বন্ধু হয়। তুমি তাকে চেন? বলতে বলতে রাকা উঠে দাঁড়াল।
চিরি লেজ নাচিয়ে বলল, চিনি না মানে। ওই তো পিদিম ওই অশথ গাছের তলায় অপেক্ষা করছে। চল আমরা সেখানে যাই।
চল।
পিদিম রাকাদের আসতে দেখে উঠে দাঁড়াল। রাকাকে সব খুলে বলল। কেমন করে আঁকার সঙ্গে দেখা। আঁকা পান্তাভাত খেতে চাইল। তারপর কী হল। এইসব। চুপ করে সব শুনে কান্না কান্না গলায় রাকা বলল, এখন কী হবে? ওকে না পাওয়া গেলে ফিরে মাকে কী বলব।
চিরি শান্ত্বনা দিয়ে বলল, ভাবিস নে রাকা দেখবি ঠিকই একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
তোমার কথাই যেন ঠিক হয় ভাই। এই দ্যাখোনা আমার বুক কী সাঙ্ঘাতিক কাঁপছে।
আইরিন বলল, আমরা যখন ঝিলিমিলি নদীর ধারে গান করছিলাম আর নাচছিলাম, ঠিক তখনই আঁকা হারিয়ে গেল।
পিদিম ভাবল, এক রাতেই আঁকা দুবার হারিয়ে গেল। ভারি আশ্চর্য তো!
রাকা কাঁদছিল বলে সবার মুখ গম্ভীর হয়ে গেল। রাকাকে জড়িয়ে ধরে শান্ত্বনা দিতে লাগল আফসানা । কাঁদিস না রাকা। দেখিস ঠিকই আমরা আঁকাকে খুঁজে পাব।
চিরি বলল, হ্যাঁ এরই মধ্যে আমাদের বন্ধুরা আঁকাকে খুঁজতে বেরিয়েছে।
ঠিক হল চিরির সঙ্গে পরিরা সবাই আঁকাকে খুঁজতে বেরোবে। আর পিদিম এখানেই থাকবে। তেমন খবর পেলে তখন বেরোবে।
ওরা পুব আর দক্ষিনে আঁকাকে খুঁজতে গেল।
পিদিম একা একা অশথ তলায় মন খারাপ করে বসে রইল। ওর বারবার রাকার কান্নাভেজা মুখটির কথা মনে পড়ল। রাকা কি আমায় দোষী মনে করল? আমি আঁকাকে রেখে হাটে গেলাম। আর তাতেই তো আঁকা হারিয়ে গেল। যেকরেই হোক আঁকাকে খুঁজে বার করতেই হবে। এমন কী আমার প্রাণের বিনিময়ে হলেও।
পিদিম মন খারাপ করে এই সমস্ত ভাবছিল। এমন সময় গড়ান উড়ে এসে গাছের গুঁড়ির ওপর বসল। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, পিদিম, পিদিম আমি না আঁকাকে দেখেছি।
পিদিম চমকে উঠে বলল, আঁকাকে দেখেছ? কোথায়?
গড়ান বলল, সালমাদের আমবাগান পেরিয়ে যে নীলপানার খাল ...
হ্যাঁ।
সেই নীলপানার খাল পেরিয়ে গেলে ঘন বাঁশের ঝার ...
হ্যাঁ।
সেই ঘন বাঁশের ঝারটা পেরিয়ে আর নিমতলীর শ্মশানঘাট ...
হ্যাঁ।
সেই শ্মশানঘাটটা পেরিয়ে গেলে বিলাইমারির জঙ্গল ...
হ্যাঁ
ওখানেই। জান তো, বিলাইমারির জঙ্গল জায়গাটা ঘোর জঙ্গল মতন। জঙ্গলের দক্ষিন দিকটায় চলে গেলে ঝিলিমিলি নদীর পাড়। সেখানেই একটা কাঠের ঘর। চারিদিকে গাছপালায় ঘেরা। আমি উড়তে উড়তে হাঁপিয়ে গেলাম। ভাবলাম কোথাও খানিক বসি। ভেবে একটা লিচু গাছের ডালে বসলাম। নীচে একটা কাঠের বাড়ি। জানালা খোলা। ভিতরে আলো জ্বলে আছে দেখে আমার কৌতূহল হল। উড়ে কপাটে বসতেই ভিতরে উঁিক মেরে দেখি একটা চেয়ারে একটা নীল পরি বসে রয়েছে। ওই আঁকা না-হয়ে যায় না।
বিলাইমারির জঙ্গলটা ভালোই চেনে পিদিম। ওখানেই তো মালাকে খুঁজে পেয়েছিল আর বাঘ হয়ে গরুচোরদের ভয় দেখিয়েছিল পিদিম। পিদিমের সন্দেহ তবু ঘোচে না। সে বলল, কী ভাবে বুঝলে যাকে দেখেছ সেই আঁকা, অন্য কেউ নয়?
গড়ান বলল, আমি যে রাকাকে আগেই দেখেছি। আঁকা অবিকল ওর বড় বোনের মতন দেখতে।
ঘরের ভিতরে কজন লোক দেখলে?
গড়ান বলল, দুটো ছোট্ট ছেলে আর দুটো লোক। একজন বেঁটে করে আর একজন ভীষন মুশকো।দেখতে।
পিদিম বলল, বুঝেছি। আঁকার সংবাদ আনার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। বলেই বিদ্যুতের গতিতে গ্রামের শেষ প্রান্তে বিলাইমারির জঙ্গল। তারপর কাঠের বাড়িটা খুঁজতে শুরু করল।
গড়ানও অন্যদের আঁকার খবর দেওয়ার জন্য আকাশে উড়ল।
আগের পর্বের লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:৫০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×