somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: কবি ও শঙ্খমালা

২৭ শে জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১২০০ খ্রিস্টাব্দ। বাংলায় তখন সেনশাসন চলছে। ‘কবি ও শঙ্খমালা’ সে সময়েরই এক বিয়োগান্তক উপাখ্যান। সেই উপাখ্যানের নায়িকা শঙ্খমালা গঙ্গার ঘাটে বসে জলে ফুল ভাসিয়ে দিচ্ছিল। কুরচি, নাগলিঙ্গম আর কাঁঠালচাঁপা। শেষ বিকেল। গঙ্গানদীতে নানা রঙের আলোর খেলা আর বাতাসের তোরে ঢেউগুলির ভেঙে ভেঙে যাওয়া। তাই চেয়ে চেয়ে দেখছিল অষ্টাদশী শঙ্খমালা । আর দেখছিল নদীর ওপাড়টা। অষ্টাদশীকে কেমন অস্থির দেখায়। হঠাৎ চেয়ে দেখল একটি ফুলভরতি নৌকা এদিকেই আসছে। নৌকা ভরতি কত ধরণের যে বৈশাখি ফুল- কুরচি, নাগলিঙ্গম আর কাঁঠালচাঁপা। নৌকায় বসে বৈঠা বাইছে শ্যামলবরণ সুঠাম চেহারার এক তরুণ; সে তরুণের নাম দীপঙ্কর। দীপঙ্করের কাঁধ অবধি দীর্ঘ চুলের ঢেউ। চোখ দুটি স্বপ্নমাখা। দীপঙ্করের বাড়ি নদীর ওপারে একটি বৌদ্ধগ্রামে । দীপঙ্করের পিতা প্রফুল্লর ফুলের বাগান আছে। দীপঙ্কর গঙ্গার ঘাটে ঘাটে ফুল বিক্রি করে। গঙ্গার ঘাটে ঘাটে কত না মন্দির । শিবমন্দির, মহাকালের মন্দির। পূজারীরাই ওর ফুল কেনে। ফুল বিক্রি করতে এসে একদিন শঙ্খমালার সঙ্গে পরিচয়। ফুল বিক্রি আর কি। সব ঘাটে বিকিকিনি করতে নেই। দু’জনে বসে কত কথা হয়। দীপঙ্কর কবি। সে শঙ্খমালাকে নিজের লেখা কবিতা শোনায়।
শঙ্খমালা ঠিক করেছে আজ কবিকে দেখা দেবে না। বাগানের বকুল গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকবে। শঙ্খমালাদের বাগানে কত যে ফুল আর ফলের গাছ। বাড়ির নাম যে জন্য ‘পুষ্পবাটিকা’। শঙ্খমালার বাবা গঙ্গারাম দত্ত শখ করে এই বাগানবাড়িটি করেছেন। গঙ্গারাম দত্ত ছিলেন লক্ষণাবতী নগরের নগরশ্রেষ্ঠী (ব্যাঙ্কার)।
শঙ্খমালা উঠে দাঁড়ায়। তারপর দ্রুত পায়ে বাগানে চলে আসে। বাগানে শেষবেলার আলোয় পাখ-পাখালির ডাক। শঙ্খমালা বকুলগাছের পিছনে এসে দাঁড়ায় । ওর দীর্ঘশ্বাস পড়ে। হয়তো ওর বাবা বেঁচে নেই বলে কিংবা বাড়িতে একজন দুঃশ্চরিত্রা সৎ মায়ের অত্যাচার আছে বলে।
শঙ্খ? শঙ্খ? শঙ্খমালা? কোথায় তুমি? কবি ডাকে।
না। শঙ্খমালা দেখা দেবে না।
মায়াহরিণী কিন্নরী ওদিকার রসমঞ্জরীর ঝোপ থেকে বেড়িয়ে এল। ইতিউতি তাকাচ্ছে। কিন্নরী কি দুষ্ট! কবির সামনে অভিনয় করছে। একটি ধূসর বর্ণের শশক (খরগোশ) দৌড়ে পালাল। একটি ময়ূর বসে ছিল হরীতকী গাছে। ময়ূরটি উড়াল দিল ।
শঙ্খ? শঙ্খ? শঙ্খমালা? কোথায় তুমি? কবি ডাকে।
শঙ্খমালা তবু বেরয় না আড়াল থেকে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসে কেবল। অষ্টাদশীরা সাধারণত দুষ্টুই হয়। শঙ্খমালাও দুষ্ট।
ওদিকে দীপঙ্করের চোখেমুখে হতাশা ফুটে উঠেছে। সে কাঁধ ঝাঁকায়। কিন্নরী তাকে কি যেন বলতে চায়। বলতে পারে না। কিন্নরী কথাভাষাহীন অবোধ প্রাণি বলেই বলতে পারে না। দীপঙ্কর পায়ে পায়ে নদীর ঘাটে ফিরে যায়।
তারপর তার নৌকা দূরে ভেসে চলে যায়।
তখন গঙ্গার বুকে সূর্য ডুবছিল।

সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহূর্ত। লক্ষণাবতী নগরের শৌল্কিক অধিকরণ (শুল্ক কার্যালয়) থেকে বেড়িয়ে এল অভিরাম দাস। মাঝবয়েসি অভিরাম দাস এর বলিষ্ট গড়নের পুরুষ। গায়ের রং শ্যামলার দিকেই। চৌকো মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ধবধবে সাদা রঙের ধূতি আর ঘিয়ে রঙের উড়–নি। দেখলেই বোঝা যায় তার পূর্বপুরুষ কর্নাটকের। বাংলায় সেনায়ণের পর বাংলায় এসেছিল ভাগ্যান্বষনে।
অভিরাম দাস একটি ধূসর বর্ণের ঘোড়ার পিঠে লাফিয়ে উঠল। হৃষ্টপুষ্ট কৃষ্ণকায় ঘোড়াটি পশ্চিমদেশিয় । ইদানীং এই তেজি ঘোড়াগুলি পশ্চিমদেশিয় বণিকগণ লক্ষণাবতী নগরে নিয়ে আসছে। অভিরাম দাস ঘোড়াটি বেশ চড়া দামেই কিনেছে। সে শৌল্কিক, কর আদায় করে; ওই বিভাগের ভাগ্যলক্ষ্মী বরাবরই উর্ধ্বগামী।
অভিরাম দাস স্বভাবে নির্ভীক। সে দুলকি চালে চলেছে; গন্তব্য - পুষ্পবাটিকা; নগরশ্রেষ্ঠী গঙ্গারাম দত্তের বাড়ি। গঙ্গাপাড়ের ওই বাড়িটিতে আজকাল সন্ধ্যার পর যায় অভিরাম দাস। গঙ্গারাম দত্তের বিধবা পতিœ প্রিয়াদেবী অভিরাম দাস- এর প্রণয়ী। মধ্যবয়েসি প্রিয়াদেবী সুন্দরী। শরীরময় শেষ যৌবনের জেল্লা। চোখে মাদকদৃষ্টি।
পুষ্পবাটিকার সামনে এসে অভিরাম ঘোড়া থেকে নামল। ছায়া ছায়া অন্ধকার থেকে এক ভৃত্য এসে তার হাত থেকে অতি বিনয়ের সঙ্গে লাগাম নেয়। মাটিতে অবহেলায় রৌপ্য মুদ্রা ছুড়ে দেয় অভিরাম দাস। তারপর পুষ্পবাটিকায় প্রবেশ করে। সমস্ত বাড়ি খাঁ খাঁ করছে। ধূপের গন্ধ ছড়ানো সিঁড়ির দু’পাশে মশাল। অভিরাম ওপরে উঠতে থাকে। এ সময়ে তার শরীরে শিহরণ খেলে যায়। এর কারণ কি এই যে পরলোকগত নগরশ্রেষ্ঠী গঙ্গারাম দত্ত ছিলেন সত্ত্বিক পুরুষ-তারই দ্বিতীয়া স্ত্রী প্রিয়াদেবী তার শয্যাসঙ্গীনি? হতে পারে। তাছাড়া অভিরাম দাস বিবাহিত। তার স্ত্রী বিজয়া অত্যন্ত পতিঅন্তপ্রাণ এবং অতি ধর্মপরায়ণা; তার কন্যা দুটিও লক্ষ্মী। অথচ সে কামিনীর নিষিদ্ধ প্রণয়ে মত্ত হয়ে পড়েছে।
একে কি বলে? নিয়তি?
গঙ্গারাম দত্ত অভিরাম দাস-এর পূর্বপরিচিত। গঙ্গারাম দত্ত বেঁচে থাকতেই এ বাড়িতে আসত অভিরাম। গঙ্গারাম দত্ত পরলোকগমন করার পর প্রিয়াদেবীর অনুরোধেই অভিরাম বিধবার সহায় সম্পত্তির দেখাশোনার দায়িত্ব নেয় ... তার আগে গঙ্গারাম দত্তের বড় কন্যা শঙ্খমালার জন্মের পর গঙ্গারাম দত্তের প্রথমা স্ত্রী বিমলার পা দুটি অবশ হয়ে পড়েছিল। তারপর কয়েক বছর রোগে ভুগে বিমলা মারা যায়। গঙ্গারাম দত্ত সে সময় একবার কর্ণসুবর্ণনগর গিয়েছিলেন। প্রিয়াদেবী সেই কর্ণসুবর্ণনগরেরই মেয়ে। প্রিয়াদেবীকে বিপতিœক গঙ্গারাম দত্ত দ্বিতীয়া স্ত্রীরূপে গ্রহন করেছিলেন।

একটি বড় কক্ষে প্রদীপ জ্বলে ছিল। বাতাসে বেলফুলের সুবাস। কক্ষের মাঝখানে একটি অলংঙ্কৃত আসনে বসে ছিল প্রিয়াদেবী। তপ্তকাঞ্চনবর্ণা নারীর ফরসা ঢলোঢলো শরীর।ঈষৎ লালচে চুল, নীলাভ চোখ; ভারী দুটি স্তন আর পুরুষ্ট রঞ্জিত ঠোঁটে কামনার তৃষ্ণা । পঞ্চাষোর্ধ বয়সেও যৌবনের রেখা অপসৃত হয়নি। অভিরাম দাস ঝুঁকে প্রিয়া দেবীকে চুম্বন করে। তারপর সিধে হয়ে দাঁড়িয়ে পাশের আসনে বসে। অভিরাম মদিরার গন্ধ পায়। প্রিয়াদেবী মদিরা পানে সিদ্ধিলাভ করেছে।
চোখে গভীর কটাক্ষ হেনে প্রিয়াদেবী বলে, এই নাও খাও। বলে অভিরামকে এক পাত্র মদিরা দেয় প্রিয়াদেবী ।
অভিরাম পানপাত্র নিয়ে চুমুক দেয়। বেশ ঝাঁঝালো স্বাদ। জিনিসটা পশ্চিমদেশীয়। কিছুকাল হল লক্ষণাবর্তীতে যবন-আফগান বণিকেরা আসছে। তারাই হাতির দাঁত, অশ্ব আর শুকনো ফলের পাশাপাশি মদিরাও নিয়ে আসছে।লক্ষণাবতীর অভিজাত মহলে সে মদিরার কদর আছে।
এই নাও দেখ। বলে প্রিয়াদেবী একখানি ভোজপাতা দেয় অভিরামকে।
কি এটা? অভিরামের কপাল কুঁচকে গেছে।
ওই অজাতটার কোবতে। প্রিয়াদেবী হিসহিস করে বলে।
অজাত মানে? দীপঙ্করের?
হ্যাঁ গো। তারই।
অভিরাম অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, এটা তুমি পেলে কোথায়?
শঙ্খের ঘরে গো শঙ্খের ঘরে। বলতে বলতে প্রিয়াদেবীর আঁচল স্খলিত হয়ে যায়। ফরসা ভরাট স্তনের নীলশিরা দৃশ্যমান হয়। অভিরাম চোখ সরিয়ে নিয়ে ভোজপাতা চোখ বোলায় ...

অরুণ বরুণ যুগল নয়ন
কাজল লজ্জিত ভেল।
কনক কমল উপরে ভ্রমর
খঞ্জন করএ খেল।

আশ্চর্য! এ যে বাংলায় লেখা ! অভিরামের চোখেমুখে ঘোর বিস্ময়ের ছাপ পড়ে। দীপঙ্কর ছেলেটি যে বাংলায় কবিতা লিখেছে এ কথা জানাজানি হলে নির্ঘাৎ ছেলেটির বিপদ ঘনিয়ে আসবে। কারণ- অবাঙালি সেনরা বাংলায় সাহিত্যচর্চা নিষিদ্ধ করেছে। সেনরা কর্ণাটকী ধর্মান্ধ ব্রাহ্মণ। তারা দেবভাষা সংস্কৃতে সাহিত্যচর্চার পক্ষপাতী।
জানালার বাইরে থেকে ঘোড়ার ডাক ভেসে আসে। ঘরের বাতাসের বেলফুলের সুবাস যেন হঠাৎ ঘন হয়ে ওঠে। প্রিয়াদেবী মদিরার পাত্রে চুমুক দেয়। তার চোখের মনি রক্তিম হয়ে উঠেছে। আপন মনে গজগজ করে প্রিয়াদেবী বলতে থাকে, অজাতটা জাতে বৌদ্ধ, আবার কোবতে নিকে। শঙ্খ বলে কিনা তারে বিয়া করব। ছ্যা ছ্যা ছ্যা। ব্রাহ্মণকইন্যের মুখে একি কথা শুনি মহেশ্বর। আমারে তুমি ক্ষেমা কর, ক্ষেমা কর মহেশ্বর। এই কথা শুনে আমার ঘিন্না হয় প্ররভু বড় ঘিন্না হয়। মহেশ্বর তুমি বুদ্ধুটাকে রৌরব নরকে পাঠাও।
অভিরাম শ্বাস টানে। চোখ সরু করে প্রিয়াদেবীর দিকে তাকায়। মধ্যবয়েসি ঢলোঢলো শরীর থেকে যৌবন ঠিকরে বেরুচ্ছে। কর্ণসুবর্ণ নগরের সব মেয়েই কামিনী কিনা -সেটি অভিরাম জানে না, সে কখনও কর্ণসুবর্ণ যায়নি। তবে প্রিয়াদেবী আমূল কামিনী। এই নারী পুরুষকে আনখশির দাহ করতে জানে, এ নারী পার্বত্য ¯্রােতস্বিনীর মতন উদ্দাম, রতিক্ষিপ্তা। অভিরামের হঠাৎই মনে হল এ নারী কুহকী নয় তো। সেদিন প্রিয়াদেবী মদিরা পান করার সময় বলল, মহারাজা লক্ষ্মণসেনের সময় ঘনিয়ে এল বলে। শুনে চমকে উঠেছিল অভিরাম। এ কী বলল প্রিয়াদেবী! দোদন্ড প্রতাপশালী যে লক্ষ্মণসেন, যিনি সমৃদ্ধশালী লক্ষণাবতী নগরের প্রতিষ্ঠাতা তার ...তার সময় ফুরিয়ে এসেছে? প্রিয়াদেবী উন্মাদিনী হয়ে যায় নি তো ...
অভিরাম বলল, এখন আমার উঠতে হবে প্রিয়া।
সে কী! কেন? কেন? কেন? এখনি চলে যাবা কেন প্রিয়ে? ফরসা গালে গাঢ় অভিমানের রক্তিম আভা ফুটে উঠেছে।
অভিরাম বলল, আজ আমার হলায়ুধ মিশ্রর বাটিতে নেমতন্ন আছে।
প্রিয়াদেবী উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে-ওহ্! মহারাজ লক্ষণসেনের অমাত্য হলায়ুধ মিশ্র! তিনি তো তোমার নিকট আত্মীয়-না?
হ্যাঁ। বিজয়া বড় দিদির স্বামী।
কি আশ্চর্য! আমি ... আমি সেকথা ভুলেই গিছলাম। তারে তুমি আইজ অজাত বৌদ্ধটার কোবতেটা দেও। সে যেন রাজার কানে কডাডা তুলে। ওরে শূলে চড়ানোর ব্যবস্থা কর দাস। তারপর তুমি শঙ্খরে বিয়ে কর । বিয়ে করে তুমি এখানেই থাক। তোমারে আর চাকরি করতে হবে না। আমার স্বামীর সাত রাজার ধন আছে। বলে এক ঢোক রক্তিম মদিরা গিলে প্রিয়াদেবী।
ঘরের আবছা অন্ধকারে অভিরামের চোখ দুটি কেমন হিং¯্র বেড়ালের মতন ধকধক করে জ্বলে ওঠে। প্রিয়াদেবী সঠিক স্থানে আঘাত করেছে। আহ! বসে বসে পরলোকগত নগরশ্রেষ্ঠী গঙ্গারাম দত্তের সাত রাজার ধন উড়িয়ে দিতে পারলে মন্দ হয় না। তার আর শৌল্কিক অধিকরণে কাজ করতে ভালো লাগে না। শ্বেত প্রদর রোগে ভোগা বিজয়াকেও ভালো লাগে না তার। অথচ অষ্টাদশী শঙ্খমালা কি নরম, সতেজ আর রূপবতী। অভিরামকে ভীষণ টানে। শঙ্খমালার রূপে প্রিয়াদেবীর উগ্রতা নেই, সে জন্যই টানে। শঙ্খমালার অঙ্গে এক ধরণের কোমল সূচি শুভ্রতা আছে অভিরামে যা পিষ্ট করতে ইচ্ছা করে। অভিরাম বেড়ালের মতন হাসে। দীপঙ্কর কে শূলে চড়ানো কঠিন কাজ না। ছেলেটি বাঙালি-এটি তার প্রথম অপরাধ; তার দ্বিতীয় অপরাধ - সে বজ্রযানী তান্ত্রিক বৌদ্ধ। আর এই বাঙলা কবিতাটি সেনবিধানে ছেলেটির জন্য যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুই অনিবার্য ...

পরদিন পূর্বাহ্নে অমাত্য হলায়ুধ মিশ্র রাজপ্রাসাদে পৌঁছলেন। হলায়ুধ মিশ্র মাঝবয়েসি পুরুষ। তিনি মহারাজা লক্ষ্মণসেনের প্রিয় অমাত্য। তার কারণ আছে। হলায়ুধ মিশ্র ভেষজ এবং জ্যোতিষশাস্ত্রেও সুপন্ডিত । এই দুটি গুণের প্রতি রাজারাজড়াদের দূর্বলতা থাকে।
চর্তুদিকে বৈশাখ মাসের রোদ ঝলমল করছিল। মনোরম রাজপ্রাসাদটি গঙ্গার তীর ঘেঁষে । গঙ্গার দিক থেকে মৃদুমন্দ বাতাস বইছিল।
মহারাজা লক্ষণসেন পারিষদ পরিবেষ্টিত হয়ে বসে রয়েছেন। হলায়ুধ মিশ্র এদের মধ্যে একজন দীর্ঘদেহী বলিষ্ট বৃদ্ধকে দেখে মুগ্ধ হলেন। বৃদ্ধের গায়ের রং পাকা পেয়ারার মতন। পরনে দীর্ঘ ঢোলা কালো পোষাক। মাথায় সাদা কাপড় জড়ানো। গলায় ঝলমলে মুক্তার মালা। মুখমন্ডলে শুভ্র দাড়ি, ভ্রু যুগলও শুভ্র। চোখের মনি নীলাভ-ধূসর।
মহারাজা লক্ষ্মণসেন হলায়ুধ মিশ্র কে ইশারায় ডেকে তাঁর পাশে বসালেন। মহারাজাকে আনন্দিত মনে হল। নিজের প্রতিষ্ঠিত নগরে বসে গৌরবের সঙ্গে শাসন করছেন। এমন সৌভাগ্য ক’জন শাসকের হয়।
মহারাজা ঝুঁকে হলায়ুধ মিশ্রকে বললেন, এঁর নাম জালালউদ্দীন। ইনি পারস্যের তাবরীয নগরের অধিবাসী। ইনি একজন পশ্চিমদেশিয় সাধু। গভীর ঐন্দ্রজালিক শক্তির অধিকারী।
হলায়ুধ মিশ্রও পশ্চিম দেশিও সাধুর বিষয়ে কৌতূহলী হয়ে উঠলেন। তিনি জানেন মহারাজের অতিপ্রাকৃত বিষয়ে আকর্ষন রয়েছে।
দরবেশের পুরো নাম আবুল কাশেম মখদুম শাইখ জালাল উদ্-দীন তাবরীযী। তিনি সহসা চিৎকার করে উঠলেন, খামোশ! পারিষদবর্গ চমকে উঠল। বৃদ্ধের চোখ দুটি আগুনের গোলার মতন গনগন করছে। বৃদ্ধ সাধুর হাতে একটি সফেদ ষষ্টি। ষষ্টির মাথায় হাতির দাঁতে তৈরি সিংহমস্তক। যেখানে সবাই বসে রয়েছে তার সামনেই একখানি সুপরিসর প্রাঙ্গন। রোদ ঝলমল করছিল। প্রাঙ্গনের দু’পাশে আমগাছ। প্রাঙ্গনে শুকনো পাতা। বৈশাখি বাতাস শুকনো পাতা সরসর শব্দে সরিয়ে নিচ্ছে। প্রাঙ্গন থেকে একটি প্রশস্ত সিঁড়ি নেমে গেছে গঙ্গার ঘোলা জলে। রৌদ্র চিকিমিকি নদীতে একটি বড় পন্যবাহী বজরা নৌকা ভেসে আছে। বৃদ্ধ সাধু বজরা তাক করে ধীরে ধীরে তাঁর হাতের ষষ্টিটি তুললেন। বজরাটি জল থেকে নৌকা শূন্যে উঠে এল। সভায় গুঞ্জন উঠল। স্বয়ং মহারাজার মুখ অবধি বিস্ময়ে ঝুলে গেছে। বৃদ্ধ সাধু আবার হাতের ষষ্টি ধীরে ধীরে নামাতেই বজরা নৌকাটি শূন্য থেকে জলের ওপর নেমে এল।
মহারাজা অভিভূত হলেন। লক্ষনাবতী নগরে সাধুর জন্য একটি উপাসনালয় এবং থাকার জন্য স্থায়ী একটি সুরম্য অট্টালিকা ব্যবস্থা করার জন্য মন্ত্রপাল (মন্ত্রী) কে নির্দেশ দিলেন।

মধ্যাহ্নে মহারাজা খেতে বসেছেন। মহারাজার সামনে কাঁসার পাত্রে কুমারী চালের ভাত; পঞ্চব্যঞ্জনের বাটি। পিছনে দাসীরা বসে বাতাস করছিল। হলায়ুধ মিশ্র মহারাজার সঙ্গেই মধ্যাহ্নের আহার করেন। পাশে একজন জ্যোতিষি ও কবিরাজ থাকলে মহারাজাও নিশ্চিন্ত হন। পশ্চিমদেশিয় যবনদের কাছে রাজ্য হারাবে -এমন দুঃস্বপ্ন দেখার পর থেকে মহারাজা আজকাল অনিদ্রায় ভুগছেন । হলায়ুধ মিশ্র মহারাজাকে জবাকুসুম তেলের নির্যাস দিয়েছেন মস্তকে মর্দনের জন্য। কাজ হয়েছে নাকি।
পশ্চিমদেশিয় সাধুর ভোজবাজী দেখে মহারাজ প্রসন্ন ছিলেন। খেতে খেতে হলায়ুধ মিশ্র মহারাজাকে লক্ষণাবতীর এক বৌদ্ধ বাঙালি তরুণের বাংলা চর্চা করার কথা সব খুলে বললেন ।
হুমম। মহারাজ গম্ভীর হয়ে উঠলেন। তারপর রুই মাছের ঝোল দিয়ে ভাত মাখতে মাখতে বললেন, আগে তারে বন্দি কর। তারপর কি করতে হবে আমি তোমায় যথাসময়ে বলে দিব ।

ম্লান আলোর বিকেল। দীপঙ্কর ফুল ভরতি নৌকাটি ভেড়াল পুষ্পবাটিকার ঘাটে। দূর থেকেই দেখেছে শঙ্খমালা ঘাটে বসে নেই। তার বুকে গভীর বিষাদ জমে উঠেছে। ঘাটে নেমে বাগানে এল সে। কিন্তু, শঙ্খমালা কে কোথাও দেখতে পেল না। সেদিনও অষ্টাদশী দেখা দিল না। তাহলে কি শঙ্খ আমারে এড়িয়ে চলছে? এই প্রশ্নে তীরবিদ্ধ হল কবিপ্রাণ।
শঙ্খ? শঙ্খ? শঙ্খমালা? কোথায় গেলা তুমি? কবি কাতর কন্ঠে ডাকে।
না। শঙ্খমালা নেই। কেবল মায়াহরিণী কিন্নরী ওদিকার রসমঞ্জরীর ঝোপ থেকে বেড়িয়ে এল। ইতিউতি তাকাচ্ছে।
শঙ্খ? শঙ্খ? শঙ্খমালা? কোথায় গেলা তুমি? কবি আবার কাতরকন্ঠে ডাকে।
বকুল গাছের কাছে নেই তো?
দীপঙ্কর ওদিকে যেতেই সশস্ত্র সেনসৈনরা ওকে ঘিরে ফেলল ...
তখন সূর্য ডুবছিল।

শঙ্খমালা দোতলার একটা ঘরে বন্দি।

হলায়ুধ মিশ্র লক্ষণাবতী নগরের ভূগর্ভস্থ বন্দিশালায় এলেন। ঢাকা দেওয়া খড় বিছানো সরু গলি। দু’পাশে মশাল জ্বলে আছে। দু’পাশে কারাকক্ষ আর নির্যাতন কক্ষ। হলায়ুধ মিশ্র শিউরে উঠলেন। তিনি লক্ষণাবতী নগরীর একজন স্বাধীন ও সম্মানিত নাগরিক । এই জন্যে তিনি পরমেশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞতা জানালেন।
হলায়ুধ মিশ্র শেষমাথায় একটি কারাকক্ষ সামনে এসে দাঁড়ালেন। প্রহরী সসম্মানে কপাট খুলে দেয়। এই সম্মানটুকু তিনি সেনরাজ্যের সর্বত্রই পান। তিনি ধীর পায়ে গুমোট কারাকক্ষে প্রবেশ করলেন। অন্ধকার কারাকক্ষে মলমূত্রের তীব্র গন্ধ। তবে প্রহরীর হাতে একটা মশাল আছে। সে আলোয় দেখা গেল দীপঙ্কর হাঁটুর ওপর মাথা রেখে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে। পাশের দেয়ালে তার ছায়া পড়েছে।
হলায়ুধ মিশ্র নিজেও কাব্য চর্চা করেন। তিনি কাল বিলম্ব না করে কন্ঠস্বর নরম করে বললেন, দীপঙ্কর। মহারাজ তোমারে একখানি শর্ত দিয়েছেন। সে শর্ত পালন করলে তুমি মুক্তি পাবে।
দীপঙ্কর চুপ করে থাকে।
হলায়ুধ মিশ্র দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তিনি কবি বলেই কবির অভিমান বোঝেন। সেনরাজ্যে বাংলার চল নেই। বাংলায় সেনায়ণের পর থেকে দেবভাষা সংস্কৃত প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। সেনরাজ্যে বাংলায় কাব্যসাহিত্য নিষিদ্ধ। ফলে বাংলায় যে ভাষাটি এতকাল স্বাভাবিক নিয়মে বিকশিত হচ্ছিল তাকে সরিয়ে রাজকার্যে এবং সাহিত্যে সেনরা সংস্কৃত ভাষা চাপিয়ে দিয়েছে। অথচ দীপঙ্কর ছেলেটি বাংলায় কবিতা লিখেছে! আশ্চর্য! হলায়ুধ মিশ্র অভিভূত হয়। এরা মাটির ভাষা ধরে রেখেছে আজও। যখন লক্ষণাবর্তী নগরের নগরশ্রেষ্ঠী, প্রথম সার্থবাহ, প্রথম কুলিক, প্রথম কায়স্থ, চৌরোদ্ধণিরক, শৌল্কিক, দাশাপরাধি, তবিট, পুস্তপাল, মহাক্ষপটলিক, জ্যেষ্ঠ কায়স্থ, ক্ষেত্রপ, প্রমাতৃ, মহাদন্ডনায়ক, ধর্মাধিকার, মহাপ্রতিহার, দান্ডিক, দান্ডপাশিক, দন্ডশক্তি, কোষ্টপাল, প্রান্ডপাল, অমাত্য, মহামাত্য, সেনাপতি, করম, অধ্যক্ষ, দূত, মন্ত্রপাল, মহাপীলুপতি, মহাগণস্থ, যূথপতি ... সবাই ... সবাই ... সবাই বাংলাকে অবজ্ঞা করে সংস্কৃত চর্চা করছে কেবলমাত্র কর্নাটকী ব্রাহ্মণ প্রভূদের মন রক্ষা করার জন্য! আশ্চর্য! কেবল ফুলবিক্রেতা বৌদ্ধ দীপঙ্কর এদের মতো নয় ...ও বাঙালি বলেই বাংলা দীপঙ্করের মায়ের ভাষা। সে ভাষার মায়া ত্যাগ করতে পারেনি সে। ছেলেটি হয়তো সংস্কৃতকাব্য পাঠ করে; তবে লেখার বেলায় ছেলেটি সংস্কৃত ভাষায় লিখে না, মায়ের ভাষায় লিখে। হলায়ুধ মিশ্র বুঝতে পারেন দীপঙ্কর কী সের টানে চার পঙতির কবিতা লিখেছে। ও বাঙালি; ওর পূর্বপুরুষ কিরাত/নিষাদ। তার রক্তধমনীতে আজও কিরাত/নিষাদের মাদল বেজে চলেছে।
হলায়ুধ মিশ্র এবার মজা করে বললেন, মহারাজ বড়ই সদাশয়, লোকে তাই কয়। মজারাজ চটিলে অবশ্য রক্ষা নয়।
কবি চুপ করে থাকে।
হলায়ুধ মিশ্র ভাবলেন, দীপঙ্কর কবি। অসাধারণ কবি। নইলে সে কীভাবে লিখে ফেলল-অরুণ বরুণ যুগল নয়ন/কাজল লজ্জিত ভেল। না। একে শূলে চড়ানো যাবে না। কিন্তু দীপঙ্কর কি মহারাজার শর্তে রাজী হবে? এই ভেবে হলায়ুধ মিশ্র বললেন, তোমার কপাল ভালো কবি। কারণ মহারাজ এদানীং এক পশ্চিমদেশিয় সাধুর ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতা দর্শনে মুগ্ধ হয়েছেন। মহারাজা তাই নরম হয়েছেন। তোমারে তোমার কবিতার সংস্কৃত ভাষায় রূপান্তর করতে হবে। করলেই তোমার মুক্তি। মহারাজের এই হইল শর্ত।
কবি চুপ করে থাকে।
হলায়ুধ মিশ্র আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে কারাকক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন ...

একজন ফুলবিক্রেতা বৌদ্ধ কবিকে শূলে চড়ানো হবে।
লক্ষণাবতী নগরে বিদ্যুতের বেগে সে সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল। চতুর্র্দিকে সাড়া পড়ে গেল। অনেক দিন নগরে চাঞ্চল্যকর ঘটে না। দীপঙ্কর সবার পরিচিত। সবাই ওর কাছ থেকে ফুল কিনেছে। সে ফুলে পুজা দিয়েছে।
সুতরাং দীপঙ্করের আসন্ন মৃত্যুসংবাদে সেনরাজ্য তার ভুক্তি- বিষয়- মন্ডল- বীথি ও গ্রামসহ কেঁপে উঠল।

বন্দিনী শঙ্খমালা কাঁদছে। কাঁদলেও অষ্টাদশীকে আরও সুন্দর দেখায়। ওকে আজ দাসীরা সাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে। চোখের জলে মুছে যাচ্ছে বেদনার্ত মুখে চন্দনের প্রলেপ। শঙ্খমালার বুকে বৈশাখি ঝড়। হৃদয়ে ভীষণ যন্ত্রণা আর আসন্ন হিমশীতল মৃত্যুর অনুভূতি।

অনেক রাতে অভিরাম দোতলায় শঙ্খমালার ঘরে ঢোকে। সে আজ ঈষৎ মাতালই ছিল। সে বড় একটা পাপ করবে আজ। অষ্টাদশীকে পিষ্ট করবে। সচেতন থেকে এমন কান্ড করা যায় না। সে জন্যই যৎসামান্য পান করে এসেছে ... এত ক্ষণ প্রিয়াদেবীর ঘর ছিল অভিরাম। পথের কাঁটা দূর হয়েছে বলে প্রিয়াদেবী প্রজাপতির মতন নাচছিল। কামিনী আজ দেহ উজার করে অভিরামের মনপ্রাণ ভরিয়ে দিল। তবে আজও প্রিয়াদেবী বলল ... মহারাজা লক্ষ্মণসেনের শাসন আর কয়দিন-সময় ঘনিয়ে এল বলে। শুনে চমকে উঠেছিল অভিরাম। এ কী বলল প্রিয়াদেবী! দোদন্ড প্রতাপশালী যে লক্ষ্মণসেন, যিনি লক্ষণাবতী নগরের প্রতিষ্ঠাতা তার ...তার সময় ফুরিয়ে এসেছে? প্রিয়াদেবী উন্মানীণি হয়ে গেল কিনা ...
অভিরাম জানে, সেনশাসন নয়, আসলে ব্যক্তিই ফুরিয়ে এসেছে। লক্ষণাবতী নগরে পাপ অবাধ হয়ে উঠেছে। এখন ...আর ভাবতে পারছিল না সে ...নরম ফুলের ওপর শক্ত কীটের মতন ঝাঁপিয়ে পড়ল অভিরাম ...

তারপর অনেক রাতে শঙ্খমালা চেতনা ফিরে পেয়েছিল। সমস্ত বাড়ি তখন থমথম করছিল। শঙ্খমালা ধীরে ধীরে উঠে বসে। আবছা অন্ধকারে একটি পুরুষ-শরীর টের পেয়ে ঘৃনায় সমস্ত শরীর রি রি করে উঠল ওর। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চাইল ও। হাঁটতে কষ্ট হয়।
ঘর থেকে বেরিয়ে ধীরে ধীরে নীচে নেমে আসে ও ।
নীচের বাগানে চাঁদের আলো আছে। সেই আলো আজ আর ভাল লাগল না। আজ আর আকাশের অলীক বিভায় মুগ্ধ হল না দুঃখিনী মেয়েটি। আজ ওই শুভ্র আলো ওর কাছে অর্থহীন মনে হল। শেষবারের মতন বকুল গাছটার দিকে তাকাল।
কিন্নরী কই? শেষবার ওকেও একটিবার দেখার ইচ্ছে ছিল।
না দেখা হল না। হায় ...
শঙ্খমালা নদীর ঘাটে আসে ...ঘাটের পৈঠায় বসে। নির্জন নদীটি চাঁদের আলো নিয়ে জেগে আগে। নদীর বুকে জেলে নৌকা। তার টিমটিমে আলো। হঠাৎই শীতল-উতল বাতাস ঝাপটা মারে দুঃখিনী মেয়েটিকে। নদীজলের আঁশটে গন্ধ পায় মেয়েটি। নদীর ও পাড়টা ঝাপসা দেখায় । ওপাড়ে একটি গ্রাম আছে। ওই গ্রামে এক তরুণ ফুলওয়ালা ছিল। সে নৌকা ভরতি ফুল নিয়ে আসত ... সে আর আসবে না । শঙ্খমালার অঙ্গে অনেক ফুল জড়ানো ছিল, তার অনেকগুলিই পিষ্ট হয়েছে। অনেকগুলিই আবার অক্ষত রয়েছে। শঙ্খমালা একে একে পিষ্ট ও অক্ষত ফুলগুলি জলে ভাসিয়ে দেয়।
তারপর জলে নেমে যায় শঙ্খমালা ...


১.এই গল্পের কবিতাখানি কবি আলাওল এর লেখা বৈষ্ণবপদাবলীর থেকে নেওয়া। (কবিতাসূত্র: আজহার ইসলাম এর ‘বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস’; প্রাচীন ও মধ্যযুগ)
২.বরেন্দ্র অঞ্চলে মুসলিম ইতিহাস-ঐতিহ্য বইতে অধ্যাপক ড. এ কে এম ইয়াকুব আলী লিখেছেন-শাইখ জালাল উদ্-দীন তাবরীযী লক্ষ্মণাবর্তী নগরে এসেছিলেন। তিনি যে রাজা লক্ষ্মণ সেনকে অলৌকিক ঘটনা দেখিয়েছিলেন সে কথারও উল্লেখ রয়েছে। (পৃষ্ঠা;১৫)
৩.মহারাজ লক্ষ্মণ সেন কম বৌদ্ধবিদ্বেষী ছিলেন। (সূত্র: আবদুল মমিন চৌধুরী রচিত প্রাচীন বাংলার ইতিহাস।)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ১০:১৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×