somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাপন (গল্প)

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অপরূপ সুন্দরী নারীটি নিশ্চই এতোক্ষণে আপনার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে?
এরকম দমবন্ধ করা সুন্দরীদের দেখা শুধু টিভির পর্দাতেই মেলে, তাই না? তার এই অস্বাভাবিক সৌন্দর্যই দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য যথেষ্ট। তার উপর এমন একজন নারী যদি বসে থাকেন একটি হুইল চেয়ারে এবং চোখের দৃষ্টিতে থাকে অতল গহ্বরের শূণ্যতা, তাহলেতো কথাই নেই। অদম্য কৌতুহল জাগবেই।
একটা রোড অ্যাকসিডেন্টের পর থেকে তার এই অবস্থা। তিন বছর ধরে তার জীবন এই হুইল চেয়ারের সঙ্গে বাঁধা পড়ে আছে। দুর্ঘটনায় যে তিনি শুধু চলার ক্ষমতাই হারিয়েছেন তা নয়; ওই ভয়াবহ ঘটনার পর থেকে তার কোনো ধরনের বোধশক্তিই কাজ করছে না। এমন কি হাতের একটা আঙ্গুল পর্যন্ত নাড়ানোর ক্ষমতা হারিয়েছেন তিনি। প্রতিদিনের প্রতিটি কাজ, প্রতিটি মুহুর্তে তার প্রয়োজন হয় অন্যের সাহায্যের।
পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পর্যন্ত তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তার শারীরিক সমস্যার কোনো সমাধান মেলেনি। এ পৃথিবীর ডাক্তারি সাস্ত্র এখনো তার চিকিৎসা করার মতো এতোটা উন্নত হয়নি। মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত থেকেই তিনি হারিয়ে ফেলেছেন সব রকম বোধশক্তি।
ভাবছেন, এমন একটি জড়বত মানুষকে কেন এই পার্টিতে নিয়ে আসা? অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত ভাবনা।
চিকিৎসকরা বলেছেন, তাকে বেশি বেশি করে মানুষের মধ্যে নিয়ে যেতে হবে। সামাজিত অনুষ্ঠানগুলো, যেখানে বেশি মানুষের সমাগম, অড্ডা, হুল্লোড় আর হৈচৈ হয়, সে জায়গা গুলোতে বেশি বেশি যাওয়া আসা করলে তার মৃত মস্তিষ্কে আবারও প্রাণের সঞ্চার হতে পারে। সে জন্যই তাকে এখানে নিয়ে আসা।
এতো কিছু আমি জানলাম কিভাবে? ওহহো বলাই হয়নি। আমি এই দুর্ভাগা নারীর সৌভাগ্যবান স্বামী। এমন একটি বিরল সৌন্দর্যের সঙ্গে যে সারাক্ষণ থাকার সুযোগ পাচ্ছে তাকে আপনি সৌভাগ্যবান না বললে কাকে বলবেন? আমার হাতের পানপাত্রটি দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। মাত্র চার-পাঁচ পেগে আমার কিছুই হয় না। এর চেয়ে অনেক বেশি পান করেও আমি একেবারে হাত সোজা রেখে ড্রাইভ করতে পারি। নেশার ঘোরে আমি কথা বলছি না।
বুঝতে পারছি, আমার স্ত্রীর দুর্ঘটনার বিষযটি পুরোটা জানার জন্য ভেতরে ভেতরে দারুন আগ্রহ অনুভব করছেন। এ ঘটনা জানতে হলে এর পেছনের গল্পটাও আপনাকে শুনতে হবে। ততোক্ষণ সময় হবে তো?
একটু ভালো করে দেখুন তো, আমাকে দেখে আপনার কী মনে হচ্ছে? ওই অপ্সরার পাশে খুব বেশি বেমানান? বড়লোকের একমাত্র সন্তান, তার উপর যদি হয় সুদর্শন এবং প্লেবয়, তাহলে কী কী ঘটতে পারে নিশ্চই তার কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারবেন।
ঠিক ধরেছেন, মেয়েদের পেছনে অকাতরে টাকা উড়ানো, জামা বদলানোর মতো গার্লফ্রেন্ড পরিবর্তন, অর্থেও বিনিময়ে ঘনিষ্ট নারীসঙ্গ লাভের জন্য বছরে কয়েকবার ব্যাংকক ভ্রমন...এমনি হাজানো গুণের অধিকারি ছিলাম আমি। আর এসব কাজের জন্য সঙ্গী বা বন্ধুবান্ধবেরও কোনো অভাব ছিলো না। স্বভাবতই এ ধরণের আমোদ-ফুর্তির অর্থজোগান পুরোটাই আসতো আমার কাছ থেকে।
আমোদ-ফুর্তিতে দিনগুলো ভালোই কাটছিলো।
বাবার কাছ থেকে বার বার তাগাদা আসছিলো অফিসে বসার জন্য। মাঝে মধ্যে যেতামও গুলশানের সাজানো-গোছানো ঝকঝকে ঝলমলে অফিসটাতে। কিছুক্ষণ বসার পরই আমার দম বন্ধ হয়ে আসতো। অফিসেই শুরু করলাম আড্ডা দেওয়া। বন্ধুবান্ধবকে ডেকে এনে চলতো আড্ডা। কিন্তু এ যুগের আধুনিক করপোরেট অফিসগুলোর মতো আমার অফিসটিও পুরোপুরি ননস্মোকিং। রুমের দরজা ভিড়িয়ে ড্রিংস চললেও সিগারেট টানা নিয়ে পড়তাম বিপাকে। কেউ কেউ আবার রীতিমতো গাঁজায় অভ্যস্ত। তাদের জন্য সমস্যাটা আরো প্রকট। বুঝতেই পারছেন, এই গুরুতর সমস্যার সমাধান না করেতো আর অফিসে বসা যায় না! তাই অফিসের সঙ্গে সম্পর্কটা আবারও ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে শুরু করলো।
বাবাও মনে হয় হাফ ছেড়ে বাঁচলো। অফিসটাকে যেভাবে মাছের বাজার কওে তুলছিলাম, তার চেয়ে শূণ্য গোয়াল অনেক ভালো।
একদিন দুপুরে গেলাম অফিসে। পকেটে রেস্তো কমে আসলেই আমার পদধুলি পড়ে অ্যাকাউন্স সেকশনে। ক্যাশ নিয়ে ফিরে আসছি, এমন সময় তাকে দেখে যেন অকষ্মাৎ আমার হৃদকম্পন থেমে গেল। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো। পাথরের মতো এক জায়গায় আমি জমে গেলাম। চারপাশের সবকিছু ঝাপসা হয়ে আমার দৃষ্টিজুড়ে শুধু তার ছবিটাই ভেসে রইলো। এমন নিটোল-নিখুঁত সৌন্দর্য আর কখনোই আমার চোখে পড়েনি।
কতোক্ষণ পর জানিনা, সম্বিত ফিরে পেয়ে আমি ছুটলাম এইচআর সেকশনে।
এই মেয়েটি সম্পর্কে আমার সবকিছু জানতে হবে, সব কিছু।
পাকা খেলোয়াড় আমি। দক্ষ স্ট্রাইকারের মতো জালে বল ঢোকানোর জন্য স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে ফেলি। আমার হাতে মেয়েটি সম্পর্কে সব তথ্য চলে এসেছে। এখন পরিকল্পনা আঁটতে বাধা নেই। মেয়েটি প্রায় ছয় মাস আগে আমাদের অফিসে অ্যাডমিন সেকশনে জয়েন করেছে। সে অবিবাহিত, অবশ্য বিবাহিত হলেও তাতে আমার কিছু যায় আসে না। বরং ভালোই হতো। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে জানি, অবিবাহিত মেয়েদের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে বিবাহিতদেও পটানো অনেক বেশি সহজ।
যাই হোক, অফিসে খুব কম যাই বলে এতোদিন আমার চোখে পড়েনি। ইশ্ কত্তোবড় মিস হয়ে গেল! ছয় মাস ধরে এমন একটা জিনিস আমার হাতের কাছেই ছিলো, অথচ আমি জানতেই পারলাম না!
এর পর থেকে অফিসে নিয়মিত হয়ে যাই। ঝেড়ে-মুছে ঠিক করা হয় আমার চেম্বার।
পরিকল্পনার প্রথম ভাগ বাস্তবায়ন করি তাকে অ্যাডমিন থেকে বদলি করে ডিরেক্টর অপারেশনস, অর্থাৎ আমার সেকশনে নিয়ে এসে। কিছুদিন পর সরাসরি আমার পিএস পদে বসাই। আর এভাবেই পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে পৌছাই।
এবার সরাসরি কাজে নেমে পড়ি।
এাঝে মধ্যেই নানা ছলছুতোয় তাকে দেরি করিয়ে দেয়া, নির্জন অফিসে অনেকক্ষণ আটকে রেখে এটাসেটা নিয়ে অর্থহীন আলাপে সময় কাটানো- এসব চলতে থাকে। মনে মনে নিজের উপরই বেশ বিরক্ত হই। একটা মেয়ের পেছনে এতোটা সময় বিনিয়োগ করা কতোটা যুক্তিসঙ্গত হচ্ছে সেই হিসেব মেলানোর চেষ্টা করি। অবশ্য অতিবড় সৌভাগব্যবানরাই শুধু তার মতো এমন মেয়ের সন্ধান পায়!
আমার চেষ্টা চলতেই থাকে। কিন্তু সাধারন মধ্যবিত্ত পরিবারের এই মেয়েটি তার চারপাশে ঋজু ব্যক্তিত্বে এমন একটি অদৃশ্য দেয়াল তুলে রেখেছে, যা ভেদ করা আমার মতো সিঁধেল চোরের পক্ষে সম্ভব নয়। মাঝে মধ্যে হতাশা যখন চরমে পৌছে তখন ভাড়া করা সুন্দরীদের কাছে যাই। এতে মনের জ্বালা মেটে না, আরো দ্বিগুণ হারে জ্বলতে থাকে।
দিন কেটে যায়।
হাজারো চেষ্টায় সম্পর্কটা কাঠখোট্টা অফিসিয়াল সম্পর্কের বাইরে নিয়ে যেতে পারি না। এ অবস্থায় তার সম্পর্কে আরো বিষদ জানার জন্য একটা ফেউ লাগাই তার পিছে। মেয়েটির প্রতি দিনের গতিবিধির অনুপুঙ্খ প্রতিবেদন পেশ করবে আমার কাছে। জানতে পারি, কানাডা প্রবাসী প্রেমিকের জন্য অধীর আগ্রহে দিন গুনছে সে। এ বছরের শেষভাগে দেশে ফিরে বিয়ে কওে একেবারে বইকে নিয়েই কানাডা ফিরে যাবে।
মাথায় আগুন ধরে যায়। ইচ্ছে করে এই অদৃশ্য প্রতিপক্ষের টুটি চেপে ধরি। কিংবা মগজে ঢুকিয়ে দেই তপ্ত সিসা। তাকে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি।
যতোটুকু চিনেছি, খুব সহজে এই মেয়ে ধরা দেবে না। দামি গিফট কিংবা ইউরোপ ট্যুরের মতো প্রস্তাবে ঢলে পড়ার মতো মেয়ে সে নয়।
একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নেই।
বাবা-মাকে রাজি করাই তার বাড়িতে প্রস্তাব পাঠাতে। বিষ্মিত হলেও আমার আর দশটা আব্দারের মতো এটাও মেনে নেন তারা। আমার বিশ্বাস, এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করা একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য অসম্ভব। তাই এই চরম সিদ্ধান্তটা নেই। বিয়ের পর সাধ মিটে গেলে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে ডিভোর্স দেওয়া যাবে; সে রাস্তাতো খোলাই থাকলো। আসলে যে কোনো মূল্যে তাকে পাওয়ার জন্য আমি তখন মরিয়া হয়ে উঠেছি। যতোটা না তার সৌন্দর্য, তার চেয়ে অনেক বেশি আমার ইগোর কারণে। কোনো মেয়েকে আমি চেয়ে পাইনি এখন পর্যন্ত এমনটি হয়নি। যাকে চেয়েছি, তাকেই হাসিল করেছি। টাকার বিনিময়ে কিংবা কৌশলে, যখন যেটা খাটে।
কিন্তু এবার আমার হিসেবে একটু ভুল ছিল।
এই মেয়েটি বা তার পরিবার আর দশজনের মতো নয়।
সরু গলির ভেতর তাদেও ভাড়া বাড়ির সামনে দাঁড়ানো আমাদেও বড় বড় গাড়িগুলো দু পক্ষের দুস্তর ব্যবধানের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকলো। আমাদের দামি পোষাকের সামনে তাদের আটপৌড়ে মধ্যবিত্ত ড্রইং রুমটা আরো বেশি মলিন হয়ে গেল। কিন্তু তাদের ব্যক্তিত্বের কাছে একেবারে নিষ্প্রভ হয়ে গেলাম আমরা।
না, আপত্তিটা তার কাছ থেকে আসেনি। তার বাবাই জানিয়ে দিলেন মেয়ের পছন্দের কথা। কানাডা থেকে ছেলেটি আসছে খুব শিগগিরই, সামনের মাসেই মেয়ের বিয়ে দেবেন।
জীবনের কোথাও হার না মানা আমার বাবা এই প্রথম পরাজয় মেনে নিলেন।
আমার মাথায় আগুন ধরে গেল। সকল বিবেচনাবোধ হারিয়ে ফেলি আমি। উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটতে থাকি। মাথা ঠান্ডা করতে কয়েকজন বন্ধুবান্ধব নিয়ে দেশের বাইরে গিয়ে কিছুদিন কাটিয়ে আসি; যেমনটি আগেও বহুবার গিয়েছি। কিন্তু এবার কিছুতেই আমার মন বসেনা। সফর সংক্ষিপ্ত করে তাই দেশে প্রত্যাবর্তন।
ইতিমধ্যেই সে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে।
একদিন হঠাৎ পথে দেখা। সঙ্গে কানাডা প্রবাসী প্রেমিক, যে আর কিছুদিনের মধ্যেই সম্পর্ক পাল্টে স্বামী হতে যাচ্ছে।
আমি স্রেফ উন্মাদ হয়ে গেলাম।
প্রতিশোধ আমাকে নিতেই হবে, কার বিরুদ্ধে, কিসের প্রতিশোধ, সেটি আমার নিজের কাছেও পরিষ্কার নয়। কিন্তু অসহ্য এক জ্বালা আমাকে নিরন্তর তাড়া করে ফিরে।
এক রাতে বাড়ি ফিরছি। পেটে প্রায় এক বোতল তরল। হাত কাঁপছে। চোখেও মনে হচ্ছে কিছুটা ঘোলাটে দেখছি। ঠোটের কোনে সিগারেট ঝুলিয়ে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে যাই।
একটা রিক্সার গায়ে হেডলাইটের আলো পড়তেই চমকে উঠি।
ভুল দেখছি নাতো! হেডলাইটটা ডিপারে দিয়ে ভালো করে তাকাই। না, ভুল হয়নি একদম। আমার প্রতিপক্ষ রিক্সায় হাওয়া খেতে খেতে যাচ্ছে।
আমার ভেতরের পশুটা জেগে উঠে। এই মোক্ষম সুযোগ। রাত কিছুটা গভীর হয়ে এসেছে বলে রাস্তা এখন অনেকটাই নীরব। আগে-পিছে না ভেবেই রিক্সা বরাবর সজোরে গাড়িটি চালিয়ে দেই। রিক্সাওয়ালা ছিটকে পড়ে। আর সরসারি গাড়ির সামনের চাকার নীচে পিষে যায় আমার পথের কাঁটা।
আমার সামনে সময় যেন স্থির হয়ে যায়।
পাশের সিটে বসা বন্ধু তাড়া দিতে থাকে দ্রুত ওই জায়গাটা ছেড়ে পালানোর জন্য। কিন্তু আমি স্থির হয়ে যাই। রিক্সায় সে সেও আছে তা ছিল আমার ধারনার বাইরে। গাড়ির আলোতে দেখতে পাই রাস্তায় চিৎ হয়ে পড়ে আছে সে, মাথার পেছনে কালচে তরলের পুকুর। কথা বলার শক্তি নেই। কিন্তু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। সেই দৃষ্টির সামনে কুঁচকে যাই আমি; আমার আন্তরাত্মা হিম হয়ে আসে।
এর পরের দিনগুলো আমার কাটে বোধহীন।
টানা এক মাস মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে সে। কাঠের একটি পুতুলের মতো জড়।
কীভাবে আমার সঙ্গে বিয়ে হলো? সেটা ভাই আরেক গল্প, অন্যদিন বলা যাবে।
গত তিনটি বছর ধরে আমি তার সঙ্গে আছি। দুর্ঘটনার দিন যে দৃষ্টিতে সে আমার দিকে তাকিয়েছিলো, আজো তার চোখে আমি সেই দৃষ্টিটাই দেখতে পাই। এতে আছে সীমাহীন ঘৃণা। একবুক ঘৃণা নিয়ে আমার সঙ্গে তাকে বাস করতে হচ্ছে। কিন্তু উপায় কী বলেন?
আমি ছাড়া তার প্রয়োজনের বিষয়গুলো আর কেউ সেভাবে বুঝতে পারে না। তখন চামচে করে পানি বা স্যুপ খাওয়াতে হবে, কখন বিছানায় শোয়াতে হবে, কখন বাথরুমে যেতে হবে- এ সবই বুঝতে পারি শুধু আমি।
না, সে মুখে কিছু বলতে পারে না। কিন্তু আমি ঠিক ঠিক বুঝতে পারি।
জানেন, আমি এখন মদ, সিগারেট- সবকিছু ছেড়ে দিয়েছি। আমাকেতো অনেক দিন বাঁচতে হবে। অন্তত যতোদিন তার স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরে না আসছে ততোদিন।
ওহহো, আমার হাতের গ্লাস দেখে অবাক হচ্ছেন? না ভাই, এতে বিভ্রান্ত হবে না। আমি সত্যি কথাই বলছি। আজ আমাদের তৃতীয় অ্যানিভার্সারি। এই বিশেষ দিনটিতেই শুধু একটু পান করি।
ডাক্তাররা বলেছেন খুব ক্ষীণ হলেও তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে। আমার মনে হয় আমার প্রতি ঘৃণাটাই তাকে ফিরে আসতে সাহায্য করবে। ভালোবাসায় না হোক, অন্তত ঘৃণা নিয়েও যদি সে ফিরে আসতো!
আমাদের জন্য দোয়া করবেন। (শেষ)




১৬টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×